Recent Tube

আল্লাহর রাসূলের শত্রুর পরিচয়; --শামীম আজাদ।

আল্লাহর রাসূলের শত্রুর পরিচয়;
--------------------------

     মহান আল্লাহ তার নবী প্রেরণ করার সাথে সাথে নবীদের অনেক শত্রু তৈরী করেছেন। আর তা অতীতে ছিল, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতে কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। নবীর শত্রুরা হবে অপরাধী ও দুস্কৃতিকারী। আল্লাহ বলেন-
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا مِنَ الْمُجْرِمِينَ وَكَفَى بِرَبِّكَ هَادِيًا وَنَصِيرًا 
এবং এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য দুস্কৃতিকারীদের মধ্য হতে শত্রু করেছি, আর পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারী হিসেবে আপনার রবই যথেষ্ট।
সূরা ফুরক্বানঃ ৩১

   এই শত্রুগুলো হবে মানুষ ও জিন এর মধ্য থেকে 
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِينَ الإنْسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا وَلَوْ شَاءَ رَبُّكَ مَا فَعَلُوهُ فَذَرْهُمْ وَمَا يَفْتَرُونَ  وَلِتَصْغَى إِلَيْهِ أَفْئِدَةُ الَّذِينَ لا يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ وَلِيَرْضَوْهُ وَلِيَقْتَرِفُوا مَا هُمْ مُقْتَرِفُونَ 
এবং এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য শয়তানদেরকে শত্রু করেছি মানুষের ও জিনের মধ্য থেকে, তারা একে অপরকে চাকচিক্যপূর্ণ কথা দ্বারা ওয়াহী করে থাকে যেন (একে অপরকে) ধোঁকা দিতে পারে, আর যদি তোমার রব ইচ্ছা করতেন তাহলে তারা তা করতে পারত না, সুতরাং তাদেরকে ও তারা যা রচনা করে, তা বর্জন কর। (তারা ওয়াহী করে এ কারণে যে) যারা আখেরাতের প্রতি ঈমান আনে না তাদের অন্তর যেন তাদের (চাকচিক্যপূর্ণ কথার) দিকে আকৃষ্ট হয়, এবং তারা যেন তাতে সন্তুষ্ট হয় আর তারা যে পাপ অর্জন করেছে তারাও যেন সে পাপ অর্জন করে। সূরা আন‘আমঃ ১১২-১১৩

  যারা রাসূলকে নিয়ে বিদ্রূপ করে, গালি দেয় তারা মুসলিম নয় 
قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ لا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ 
তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর হুকুম-আহকামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে বিদ্রূপ করছিলে? তোমরা ওযর পেশ কর না, তোমরা ঈমান আনার পরও অবশ্যই কুফরী করেছ। 
সূরা আত্-তাওবাহঃ ৬৫-৬৬

  যারা রাসূলকে নিয়ে বিদ্রূপ করে তাদের সাথে চলাফিরা ওঠা বসা করা যাবে না 

وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلاَ تَقْعُدُوْا مَعَهُمْ حَتَّى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهِ إِنَّكُمْ إِذًا مِثْلُهُمْ إِنَّ اللهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْكَافِرِيْنَ فِيْ جَهَنَّمَ جَمِيْعًا 
আর নিশ্চয় তোমাদের প্রতি কুরআনের মাধ্যমে এই বিধান নাযিল করেছেন যে, যখন আল্লাহর আয়াত সমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ করতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা অন্য কথার আলোচনা করে, অন্যথায় তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুনাফেক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামের মধ্যে একই জায়গায় সমবেত করবেন।
সূরা নিসাঃ ১৪০

   যারা রাসূলকে নিয়ে বিদ্রূপ করে, গালি দেয় তাদের শাস্তির বিধান 
إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الأرْضِ فَسَادًا أَنْ يُقَتَّلُوا أَوْ يُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُمْ مِنْ خِلافٍ أَوْ يُنْفَوْا مِنَ الأرْضِ ذَلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ  إِلا الَّذِينَ تَابُوا مِنْ قَبْلِ أَنْ تَقْدِرُوا عَلَيْهِمْ فَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ 
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এবং জমিনে ফাসাদ (দাঙ্গা-হাঙ্গামা) সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা তাদেরকে শূলে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্ত ও পাগুলো বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে, এটি হল তাদের জন্য দুনিয়ার লাঞ্ছনা আর তাদের জন্যে আখেরাতে রয়েছে কঠোর শাস্তি। তারা ছাড়া, যারা তওবা করে তোমরা তাদের উপর নিয়ন্ত্রণ লাভের পূর্বে; জেনে রাখ, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
সূরা মায়েদাঃ ৩৩-৩৪

ইবনে আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: “যে ব্যক্তি তার দীনকে পরিবর্তন করে তাকে তোমরা হত্যা কর”। (সহীহুল বুখারী)

আবু মূসা আশ‘আরী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, একজন মানুষ ইসলাম গ্রহণ করার পর আবার ইহুদি হয়ে যায়। এমন সময় মু‘আয ইবনে জাবাল (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) আবু মূসা আশ’আরী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এর নিকট আসেন যখন তাঁর নিকট ঐ মুরতাদ ব্যক্তি উপস্থিত ছিল। মু‘আয (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বললেন: এর কী হয়েছে? আবু মূসা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, ইসলাম গ্রহণ করার পর আবার সে ইহুদি হয়ে গেছে। মু‘আয (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, যতক্ষণ না একে হত্যা করা হবে ততক্ষণ আমি সাওয়ারী থেকে অবতরণ করবো না। ফলে আবু মূসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হুকুম করলেন এবং লোকটিকে হত্যা করা হলো। এরপর হযরত মু‘আয রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু অবতরণ করলেন। (সহীহুল বুখারী: ৪৩৪১, সহীহ মুসলিম)

রাসূলের ঠাট্টা-বিদ্রূপকারীকে যে হত্যা করবে তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে না
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে গালিদাতা জনৈক ইহুদীকে জনৈক মুসলিম শ্বাসরোধ করে হত্যা করলে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার রক্তমূল্য বাতিল করে দেন (আবু দাউদ: ৪৩৬১, ৪৩৬৩, সুনানু নাসাঈ: ৪০৭৬)।

আমরা শাস্তি প্রদানে ব্যর্থ হলে সেই শাস্তি আল্লাহ প্রদান করবেন 
ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ شَاقُّوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَمَنْ يُشَاقِقِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ 
এটা এ কারণে যে, তারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করেছে আর যে আল্লাহ ও রাসূলের বিরোধিতা করে নিশ্চয়ই সেক্ষেত্রে আল্লাহ শাস্তি প্রদানে অত্যন্ত কঠোর। 
সূরা আনফালঃ ১৩

وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ رَسُولَ اللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ 
আর যারা আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব। সূরা আত্-তাওবাহঃ ৬১

তারা যেদিকে ফিরে যেতে চায় আল্লাহ তাদেরকে সেদিকে ফিরাবেন 
وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا
আর যে রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তার জন্য হিদায়াত স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও এবং মুমিনের পথের বিপরীত পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে ফেরাব, যেদিকে সে ফিরে যেতে চায় এবং তাকে প্রবেশ করাব জাহান্নামে আর তা কতো নিকৃষ্টতর আবাসস্থল।
সূরা আন-নিসাঃ ১১৫

মুরতাদদের কর্মসমূহ নষ্ট হয়ে যাবে 
وَمَنْ يَرْتَدِدْ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَيَمُتْ وَهُوَ كَافِرٌ فَأُولَئِكَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ 
আর তোমাদের মধ্য থেকে যে তাঁর দীন থেকে ফিরে যাবে অতঃপর কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, ফলে ঐসব লোকদের তাদের আমলসমূহ দুনিয়া ও আখেরাতে নষ্ট হয়ে যাবে, এবং তারাই আগুনের অধিবাসী হবে, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।
সূরা বাকারাঃ ২১৭

وَالَّذِينَ كَفَرُوا فَتَعْسًا لَهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ  ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ 
আর যারা কুফরী করেছে তাদের জন্যে রয়েছে দুর্গতি এবং তিনি তাদের কর্ম বিনষ্ট করে দিবেন। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা অপছন্দ করে, অতএব আল্লাহ তাদের কর্মসমূহ ব্যর্থ করে দিবেন।
সূরা মুহাম্মদঃ ৮-৯

وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلالا مُبِينًا
আর যে আল্লাহকে ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করবে সে সুস্পষ্ট পথভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট হবে।সূরা আহযাবঃ ৩৬

মুরতাদদের দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহ শাস্তি দিবেন
إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُهِينًا 
নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহ তাদের প্রতি লানত করেন এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত করে রেখেছেন অপমানজনক শাস্তি। সূরা আহযাবঃ ৫৭

إِنَّ الَّذِينَ يُحَادُّونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ كُبِتُوا كَمَا كُبِتَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَقَدْ أَنْزَلْنَا آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ مُهِينٌ 
নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে তাদেরকে অপদস্থ করা হবে যেমনভাবে অপদস্থ করা হয়েছিল তাদের পূর্ববর্তীদেরকে, আর অবশ্যই আমি নাযিল করেছি সুস্পষ্ট প্রমাণাদি আর কাফেরদের জন্যে রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।
সূরা মুজাদালাহঃ ৫

إِنَّ الَّذِينَ يُحَادُّونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ فِي الأذَلِّينَ 
নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে তারা চরম লাঞ্ছিতদের অন্তর্ভুক্ত। 
সূরা মুজাদালাহঃ ২০

যারা রাসূলকে নিয়ে বিদ্রূপ করে, গালি দেয় তাদের পরকালের শাস্তি 
مَنْ يُحَادِدِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَأَنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدًا فِيهَا ذَلِكَ الْخِزْيُ الْعَظِيمُ
যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে নিশ্চয়ই তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন সেখানে সে চিরকাল থাকবে, এটিই হল চরম লাঞ্ছনা।
সূরা তাওবাহঃ ৬৩ 

وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا 
আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করবে অবশ্যই তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন, সেখানে সে চিরকাল থাকবে। 
সূরা জিনঃ ২৩

وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَتَعَدَّ حُدُودَهُ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيهَا وَلَهُ عَذَابٌ مُهِينٌ 
যে আল্লাহ ও তার রাসূলকে অমান্য করবে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করবে, তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন, সেখানে সে চিরকাল থাকবে; আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।
সূরা নিসাঃ ১৪

পরিশেষে বলতে চাই সাহাবীগণসহ সর্বযুগের ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত, যে ব্যক্তি কাফের ও মুরতাদ তাকে হত্যা করা ওয়াজিব (ইবনু তায়মিয়াহ, আস-সারেমুল মাসলূল ২/১৩-১৬)। তবে তা প্রমাণ সাপেক্ষে আদালতের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব সরকারের (কুরতুবী)। এ দায়িত্ব পালন না করলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের কিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। ঐ ব্যক্তি তওবা করলে তার তওবা কবুল হবে। কিন্তু মৃত্যুদন্ড বহাল থাকবে। এটাই হল বিদ্বানগণের সর্বাগ্রগণ্য মত (উসায়মীন, লিকাউল বাবিল মাফতূহ ৬/৫৩)।

Post a Comment

0 Comments