Recent Tube

বাংলাদেশের মুসলমানরা মজলুম এবং মাহরুম। মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুর রহিম।

বাংলাদেশের মুসলমানরা মজলুম এবং মাহরুম।


 আমি যে বলছি বর্তমান সময়ে আমরা মজলুম, এর অর্থ—নানাভাবে আমাদের উপরে জুলুম করা হচ্ছে। সব চেয়ে বড় যে-জুলুমটি করা হচ্ছে আমার দৃষ্টিতে, যা অত্যন্ত সাংঘাতিক এবং অত্যন্ত মারাত্মক, তা হচ্ছে আমাদের জাতীয় জীবনে কোন আদর্শ, কোন দিক-নির্দেশনা নেই। কিসের ওপর ভিত্তি করে এ জাতি চলবে, কোন আদর্শের অনুসারী হবে, তা কেউ বলতে পারছেনা। কাজেই এ ব্যাপারে আমাদেরকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। যা
আমাদের প্রাপ্য, যা আমাদের হক, যা ছাড়া কোন জাতি চলতে পারেনা, পরিচিতি লাভ করতে পারে না—তা আমাদের কেউ দিচ্ছে না। প্রতিটি জনগােষ্ঠির, প্রতিটি জাতির একটি নিজস্ব আদর্শ থাকে। জাতির জনগণ সে আদর্শ দ্বারা লালিত-পালিত হয়। দেশ তথা রাষ্ট্র-সরকার-সমাজ -সবকিছুই সে আদর্শ দ্বারা পরিচালিত হয়। দেশে যত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকে—নিচ থেকে উপর পর্যন্ত সব কিছু তারই আলােকে তারই আদর্শে গড়ে ওঠে আর সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আজকে যদি আমাদেরকে কেউ জিজ্ঞেস করে আমাদের অর্থাৎ বাংলাদেশী জনগণের জাতীয় আদর্শ কি? তবে তার কোন জবাব দেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। আপনারা যারা এখানে সুধী রয়েছেন, চিন্তাশীল , ব্যক্তিরা রয়েছেন, আপনারা কেউ কি বলতে পারবেন আমাদের জাতীয় আদর্শ কি? বলতে পারবেন না, কারণ সে সম্পর্কে আমাদের কোন সুস্পষ্ট। ধারণাই নেই। কেউ কেউ বলে আমরা মুসলমান, কেউ বলে আমরা আবার কেউ বলে আমরা বাংলাদেশী । আসলে আমরা যে কি, জাতীয়ভাবে তার কোন ফায়সালা করা হয় নাই। তাই এর জবাবও আমরা সত্যি অর্থে দিতে পারছিনা।
আমাদের পরিচিতি নিয়ে, জাতীয় আদর্শ নিয়ে চলছে এক গভীর চক্রান্ত এটা বুঝার মতাে বিবেক-বুদ্ধি থাকা সত্ত্বেও মরা নির্বিকারভাবে বসে আছি; কিন্তু কেন ?

দেশে যখন কিছুটা মুসলিম চেতনাসম্পন্ন লােকেরা ক্ষমতায় আসে তখন আমাদের ধারণা দেয়া জাতি হিসেবে আমরা মুসলমান। আবার যখন ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা বাঙালী বাঙালী চেতনার ধারক-বাহক, তখন জাতি হিসেবে আমাদের পরিচিতি করানাে হয় বাঙালী। আবার যখন বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি ক্ষমতায় আসন গ্রহণ করে তখন আমাদের পরিচিতি করানাে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী জাতি হিসেবে। অর্থাৎ ক্ষমতাসীনরা যখন যে চিন্তার অনুসারী হয়, জনগণকে তখন সে হিসেবে বিকে দরবারে পরিচিত করানাের চেষ্টা করা হয়। এ এক আজব দেশ। দেশের জনগণকে নিয়ে এভাবে এক আজব খেলা শুরু হয়েছে। 

যাই হােক মুসলিম নামধারী সংখ্যাগরিষ্ঠ লােক হিসেবে আমরা অবশ্যই বলব যে, আমরা জাতি হিসেবে মুসলমান। আর এটা ঐতিহাসিকভাবে সত্য যে, এখানকার লােকেরা মুসলমান বলেই ১৯৪৭ সনে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তি কালে আমরা ভােট দিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে একত্মতা ঘােষণা করেছিলাম এবং জাতি হিসেবে পরিচিত ছিলাম মুসলমান হিসেবে।

বাংলাদেশের মুসলমানরা মজলুম এবং মাহরূম বইয়ের ৪-৫ পৃষ্ঠা, 

Post a Comment

0 Comments