Recent Tube

ও আল্লাহ, তুমি দয়া করো, মায়া করো, ক্ষমা করো; - আব্দুস সালাম আজাদী।

 

  ও আল্লাহ, তুমি দয়া করো, মায়া করো, ক্ষমা করো।
      --------------------------------- 

   দুয়ার এই ভাষাটা আমার নয়, এটা আমার প্রিয় বন্ধু ও ভাই কবি রহমাত আলী পাতনীর। এক রমাদ্বানে কোন এক রাতে দারুল উম্মাহতে তার মুখ থেকে আসা এই দুয়াটা আমাকে ব্যকুল করে কাঁদিয়ে ছিলো। 

  সিলেটের মানুষ, ১৯৭১ এর পরে আসেন বিলেতে, ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, এবং অবশেষে কবি। 

   তিনি কষ্ট-কবি ছিলেননা, রনেসাঁর কবি ছিলেন, জাগৃতি ছিলো তার ভাবে-ভাষায়-শব্দে ও অলংকারে। রেনেসাঁ সাহিত্য মজলিসের সভাপতি ছিলেন অনেক অনেক বছর। 

   রেনেসাঁর এক মজলিসে আমি একবার রবাহুত হই। তাজ্জব হলাম সভাপতির চেয়ারে তাকে দেখে। ভাবলাম একেএম আবু তাহের চৌধুরি, শিহাবুজ্জামান কামাল, ডঃ আবুল কালাম আজাদ, সাঈদ চৌধুরিদের তিনি কিভাবে সভাপতিত্ব করেন?! ও আল্লাহ, সভাপতির ভাষণে তিনি তার বিদ্রোহির ধাচে লেখা রক্ত হাল্কা করে ফুল্কির গতি ছুটানো এমন এক কবিতা আবৃত্তি করলেন, যা শুনে আমার মত গেঁয়ো হুজুর অভিভূত হয়ে ছিলো। 

  তিনি ইসলামকে বুঝেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। তিনি বুঝেছিলেন ইসলাম পালন করে দাড়ি রেখে মুমিন মুত্তাক্বির চেহারা নিলে, কিংবা ইসলামি কোন গ্রুপের সাথে কাজ করলে আধুনিকতার কোন ব্যত্যয় ঘটেনা, মর্যাদার কোন ঘাটতি আসেনা, হয়না কেও সামাজিক ভাবে হেয়। কাজেই তিনি দাওয়াতে ইসলামের সদস্য হয়েে ম্রিয়মান হননি কোনদিন। তিনি বুঝেছিলেন, ইসলাম শুধু ইবাদাত ধর্মী জীবন দেয়না, দেয় জীবনের নবতর গতি, দেয় মালাইকার চেয়ে উঁচু হবার জাগৃতি, দেয় মানুষকে আকাশের চাদোয়া ছোয়ার দূর্বিনীত কাংক্ষা, অথবা দেয় মানব সমাজের সার্বিক পরিবর্তনের আকাশীয় দিগদর্শন। 

   তিনি বড় হয়েও বিনয় আনতে পারতেন, তিনি সৃষ্টিসুখের কল্লোলেও নিজকে খাপে ভরতে পারতেন, তিনি বয়সী হয়েও নবজাতক থেকে শুরু করে নবযুবাদের সাথে মিশতে পারতেন অনায়াসে। তিনি ভালোবাসতে জানতেন, সেখানে মেশিনের পোড়া গন্ধ না, জান্নাতি মিশকের ভান্ডার থাকতো। তিনি কাছে আসতেন, সেখানে কোন ভণিতার কাপড়ে আড়াল হতেন না। তিনি আপন করতেন, সেখানে কোন ভৌগলিক চৌহদ্দী সীমারেখা টানতোনা। 

   তিনি হাসতে পারতেন, হাসাতেও জানতেন; তিনি খেতেন, কিভাবে খাওয়াতে হয় তাও রপ্ত করেছিলেন; তিনি শত্রুকেও যায়গা দেয়ার মানসে বুকটাকে প্রশস্ত করে দিতেন। 

   তার মৃত্যতে কেঁদেছি, কারণ এই বুকে তার বুকের উষ্ণতা লেগে আছে আজো, এই মনে তার মন ছোঁয়ার আসমানী সুরভি জেগে আছে এই মুহুর্তেও। আমি ভাবতেও পারছিনা, রহমত আলি পাতনি আমাদের ছেড়ে গেছেন। 

   "যাও প্রিয় যাও বিহিশত পুরে তোমায় নিতে হুর বালা
দাঁড়িয়ে থাকুন পথের পারে হাতে নিয়ে ফুল মালা"।
---------------------------------------------------------------
লেখকঃ  ইসলামি চিন্তাবিদ লেখক গবেষক আলোচক ও দাঈ। 

Post a Comment

0 Comments