Recent Tube

শাহরিয়ার কবির সাহেবদের বক্তব্যের সাথে যাদের কথার মিল রয়েছে: তানজিল ইসলাম।

শাহরিয়ার কবির সাহেবদের বক্তব্যের সাথে যাদের কথার মিল রয়েছে:
  ------------------------------------
ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী হুজুরের সাথে লাইফ আলোচনায় শাহরিয়ার কবির সাহেবের বক্তব্যের মূল কথা হল- 'রাষ্ট্র হবে ইসলাম মুক্ত, রাষ্ট্র পরিচালায় ইসলামের প্রবেশ নিষেধ। মুসলিম জনগণ আধ্যাতিকভাবে ধর্ম পালন করবে এবং রাষ্ট্রীয় সংবিধান মেনে চলবে তবে ইসলামের নামে রাজনীতি করে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না।' তার এ মন্তব্যে আমি বিচলিত হইনি। কারণ তিনি হয়তো নাস্তিক মনা লোক এবং ইসলাম সম্পর্কে জাহেল। সুতরাং তার আলোচনায় এমন ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আব্বাসী হুজুর কুরআন সুন্নাহর আলোকে তার বক্তব্যের যথার্থ জবাব দিয়েছেন। আল্লাহ তাকে ইকামতে দ্বীনের জন্য কবুল করুন।
.
পরিতাপের বিষয় হল- ইসলামের ব্যানার ব্যবহার করে একশ্রেণির দরবারী অালেম বিশেষ করে অধিকাংশ আহলে হাদীস ইকামতে দ্বীন বিরোধী বক্তব্য প্রদানে যখন এমন কথা বলে থাকে তখন খুবই বিচলিত হই। তারাও বলেন, ব্যক্তিগত ভাবে সালাত আদায়, সাওম পালন করাই ইকামতে দ্বীন। ইসলামী রাজনীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়ভাবে আল্লাহর আল্লাহর বিধি-বিধান ও আইন বাস্তবায়ন করার কাজকে তারা ক্ষমতা দখল বলে ব্যঙ্গ করে। মজার ব্যাপার হচ্ছে দ্বীন প্রতিষ্ঠাকারীদের বিরুদ্ধে “ক্ষমতা লোভের” এ অপবাদ চিরকাল ক্ষমতাসীন লোকেরা ও তাদের তোষামোদী দরবারী গোষ্ঠীই লাগিয়ে এসেছে। অর্থাৎ তারা যেন একথা বলতে চায় যে, তারা নিজেরা ও তাদের মহান প্রভুরা যে ক্ষমতা লাভ করেছেতা যেন তাদের জন্মগত অধিকার। তা অর্জন করার ও তা দখল করে রাখার জন্য তারা কোনক্রমে 'ক্ষমতা লোভী' বলে অভিযুক্ত হতে পারে না। 
.
তারা তাদের দুনিয়াবী স্বার্থ রক্ষা করতে নবী রাসূলগণের বিরুদ্ধেও মিথ্যাচার করতে দ্বিধা করে না। তাই নির্দ্বিধায় তারা তাদের বিভিন্ন বক্তৃতা, বিবৃতি ও লিখনীর মাধ্যমে বলে থাকেন নবীগণ একদিনের জন্যেও রাষ্ট্র ক্ষমতার মালিক হননি। (গালীব, ইক্বামতে দ্বীন: পথ ও পদ্ধতি, পৃঃ ১৩) (নাউযুবিল্লাহ)
অসংখ্য, অগণিত নবী রাসূলগণ ইসলামী রাজনীতি করেছেন এবং ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে আল্লাহ প্রদত্ত বিধান দ্বারা শাসনকার্য পরিচালনা করেছেন। এ বিষয়ে অনেক দলিল কুরআন হাদীসে মজুদ আছে। আমি রেফারেন্স সহ একটি হাদীস পেশ করছি।- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺑَﻨُﻮْ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴْﻞَ ﺗَﺴُﻮْﺳُﻬُﻢْ ﺍﻷَﻧْﺒِﻴَﺎﺀُ ﻛُﻠَّﻤَﺎ ﻫَﻠَﻚَ ﻧَﺒِﻲٌّ ﺧَﻠَﻔَﻪُ ﻧَﺒِﻲٌّ ﻭَﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﺎ ﻧَﺒِﻲَّ ﺑَﻌْﺪِﻱْ ﻭَﺳَﻴَﻜُﻮْﻥُ ﺧُﻠَﻔَﺎﺀُ . 
বনী ইসরাঈলের নবীগণ তাঁদের উম্মাতকে (আল্লাহ প্রদত্ত বিধান দ্বারা) শাসন করতেন। যখন কোন একজন নবী মারা যেতেন, তখন অন্য একজন নবী তাঁর খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করতেন। আর আমার পরে কোন নবী নেই। তবে অনেক খলীফা হবে (যারা আল্লাহর বিধান রাষ্ট্র পরিচালনা করবে)।
(সহীহ বুখারী, হাঃ৩৪৫৫; সহীহ মুসলিম হাঃ১৮৪২; মুসনাদে আহমাদ, হাঃ৭৯৪৭; সুনান ইবনে মাজাহ হাঃ২৮৭১; ইবনে হাজার, ফাতহুল বারী ৬/৪৯৫, ৮/১১০, ১০/৫৭৭)
.
বিঃদ্রঃ হাদীসে উল্লেখিত ﺗَﺴُﻮْﺱُ শব্দটি ﺳﻴﺎﺳﺔ 'সিয়াসাহ' থেকে উদগত। যার অর্থ 'রাজনীতি'। এ হাদীস দ্বারা অকাট্য ভাবে প্রমাণিত হয় যে, আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) সহ অসংখ্য নবী রাসূলগণ রাষ্ট্রক্ষমতায় সমাসীন হয়ে আল্লাহর বিধান দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালা করেছেন। তবে আমাদের নবীর পর আর কোনো নবী হবে না। তাই যারা আল্লাহর বিধান দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন তারা হলেন খলিফা, যাদের সংখ্যাও অগণিত। সুতরাং যেসকল মর্দে মুজাহিদ আল্লাহর দ্বীন রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য (ইসলামী) রাজনীতি করে তারাই প্রকৃত ﻭﺭﺛﺔ ﺍﻷﻧﺒﻴﺎﺀ নবীদের ওয়ারিছ। পক্ষান্তরে যারা ইসলামী রাজনীতির বিরোধীতা করে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তারাই আল্লাহদ্রোহী, তাগুতপন্থী ও নবীদের দুশমন।

Post a Comment

0 Comments