Recent Tube

বিতি কিচ্ছাপর্ব-৬১; নুর মুহাম্মদ চৌধূরী।

  
                                     বিতি কিচ্ছা
                                        পর্ব-৬১;

মজ্জাগত গোলামীর জিঞ্জির
---------------------------------------------------------------
         দুধে পানি মিশিয়ে অথবা চালে পাথরকণা মিশিয়ে লাভ লোকসানের গাণিতিক ব্যাপার স্যাপার দিয়ে কচিকাঁচার মস্তক আজ কালিমালিপ্ত। বাস্তব জীবনে তার বিপুল প্রভাবে সমাজ তথা জাতি আজ টালমাটাল। দীর্ঘ একশত নব্বই বৎসরের ফিরিঙ্গী শাষনে পিষ্ট এই জাতিকে চরম অসাধূতার প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করে তুলল যারা :তারা আসলেই বড্ড জাহেল এবং প্রতারক জাতি সন্দেহ নাই। তা না হলে আজ অবধী কোন ধূরন্ধর ব্যাক্তিকে "ব্রিটিশ "বিশেষণে আখ্যায়িত করা হবে কেন? নৈতিক মানে চরম অসৎ এই জনগোষ্ঠী কিন্তু সততাকে শুধুমাত্র একটি হাতিয়ার বা পলিসি হিসাবেই ব্যবহার করেছে। তাইতো  তারা বলে থাকে"Honesty is the best policy ". কখনওই তারা প্রকৃত সৎ হয়নি, হতে চায়ওনি। তাইতো সততার ভড়ং গায়ে মেখে ওরা সততাকে Policy হিসাবে গ্রহন করে নিয়ে দিব্বি দিনাতিপাত ঠিকই করেছে। সেই হেতু ওরা চরম চাতুরীর আশ্রয় নিয়ে এতদঞ্চলের আদম সন্তানদেরে চাতুরী, ধুকাবাজী শিক্ষা দিতে উদ্যত হয়েছিল। এতএব আজ আমরা এমন এক বিচিত্র জাতিসত্তার অধিকারী যে আমাদের মধ্যে নাই কোন পারস্পরিক ঐক্য, নাই বিশ্বাস, নাই পারস্পরিক কল্যানকামীতা। এগুলো আমাদেরকে পাঠিগণিতের পাঠদানের মাধ্যমেই শিক্ষা দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে।

        কিন্তু ফিরিঙ্গীরা বিদায় নেবার তিহাত্তর বছর পার করার পরও আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ধূরন্ধর এই জাতীর অনুকরণ অনুসরণ বাদ দিতে রাজী হই না। আমরা সুশীল মানুষ গড়ার ফর্মুলায় পাঠ পরিক্রমা সাজিয়ে নেবার গরজ দেখাই না। উল্টো আরো মারাত্মক বা বিচিত্র রকমের পাঠ্যাভ্যাসে আমাদের প্রজন্মকে কলুসিত করার সর্বনাশী পদক্ষেপে যার পর নাই ব্যস্ত। ফলশ্রুতিতে ইতিপুর্বে আমরা চুরের খনি হিসাবে সীকৃতি লাভ করেছি বটে। অতঃপর ডাকাতির পর ডাকাতিতে সিদ্ধহস্ত  হতে হতে এবার আমরা কোথায় যে করেছি যাত্রা  তা আমরা নিজেরাই হয়ত জানিনা।

         কালে ভদ্রে ইবলিসী অথবা ফটকাবাজীতে অভ্যস্ত কোন ব্যাক্তির ধার ঘেসেন  না কেউ। কদাচিৎ যদি কেউ দূর্ভাগ্যবশতঃ এহেন ভদ্রলোকের! মেহমানদারীতে পড়েই যান; তবে দুই হাতে কান ধরে তওবা করেন,  আর বলেন" আল্লাহ এমন বৃটিশের পাল্লায় যেন আমার দূশমনও না পড়ে।"  এখানে বৃটিশ শব্দটি ফটকাবাজ ও ইনলিসের প্রতিশব্দ হিসাবে ব্যবহার হয়েছে। এই ব্যবহার কোন নিছক ছেলেমি নয়। দীর্ঘ একশত নব্বই বছরে ভোক্তভোগীরা হাড়ে হাড়ে টের পাইয়েই তবে এমন উপনাম উপহার দিয়েছেন । 

             তারপরও জাতি হিসাবে আমরা  মজ্জাগতভাবেই গোলামীর জিঞ্জির গলে পরে খুশি থাকতে পছন্দ করতে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম কিনা; ভাববার অবকাশ দরকার নয় কি?

Post a Comment

0 Comments