Recent Tube

হাদীস অধ্যায়ন।


হাদীস অধ্যয়ন
রাহে আমল ১ম খন্ড ;
১৬৩-২০৭ পর্যন্ত।

নারী গৃহের কর্ত্রী 
১৬৩.
وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ: « كُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتهِ: الإمَامُ رَاعٍ وَمَسؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ في أهلِهِ وَمَسؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ في بَيْتِ زَوْجِهَا وَمَسْؤُولَةٌ عَنْ رَعِيَّتِهَا، وَالخَادِمُ رَاعٍ في مال سيِّدِهِ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ » متفقٌ عَلَيْهِ

ইবনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘প্রতিটি মানুষই দায়িত্বশীল, সুতরাং প্রত্যেকে অবশ্যই তার অধীনস্থদের দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। দেশের শাসক জনগণের দায়িত্বশীল, সে তার দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জবাবদিহী করবে। পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্বশীল, অতএব সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীগৃহের দায়িত্বশীলা, কাজেই সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিতা হবে। দাস তার প্রভুর সম্পদের দায়িত্বশীল, সে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থের দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।’’
বুখারী ২৫৫৮, ৮৯৩, ২৪০৯, ২৫৫৪, ২৭৫১, ৫১৮৮, ৫২০০, ৭১৩৮, মুসলিম ১৮২৯, তিরমিযী ১৭০৫, আবূ দাউদ ২৯২৮, আহমাদ ৪৪৮১, ৫১৪৮, ৫৮৩৫, ৫৮৬৭, ৫৯৯০, রিয়াদুস সলেহিনঃ ৬৫৮

সন্তানের প্রশিক্ষণ 
১৬৪.
اِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: مَا نَحَلَ وَالِدٌ وَلَدَهُ نُحْلًا أَفْضَلَ مِنْ أَدَبٍ حَسَنٍ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন পিতা তার সন্তানকে যা কিছু দান করেন তন্মধ্যে সর্বোত্তম দান হলো সুশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ।
জামিউল উসুল, মিশকাত

নামাযের জন্য অভ্যস্ত করা
১৬৫.
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مُرُوا أَوْلاَدَكُمْ بِالصَّلاَةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرِ سِنِينَ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ ‏"‏ ‏.‏
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের সন্তানদের বয়স সাত বছর হলে তাদেরকে সলাতের জন্য নির্দেশ দাও। যখন তাদের বয়স দশ বছর হয়ে যাবে তখন (সলাত আদায় না করলে) এজন্য তাদেরকে মারবে এবং তাদের ঘুমের বিছানা আলাদা করে দিবে।
আবু দাউদ ৪৯৫

সুসন্তান সাদকায়ে জারিয়া
১৬৬.
وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: « إِذَا مَاتَ الإنْسَانُ انْقَطَعَ عَمَلُهُ إِلاَّ مِنْ ثَلاثٍ: صَدَقةٍ جَارِيَةٍ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ، أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ ». رواه مسلم

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘‘যখন কোন মানুষ মারা যায়, তখন তার কর্ম বন্ধ হয়ে যায় । কিন্তু তিনটি জিনিস নয়; (১) সাদকা জারিয়াহ, (২) যে বিদ্যা দ্বারা উপকার পাওয়া যায় অথবা (৩) সৎ সন্তান যে তার জন্য দুআ করে ।’’ (মুসলিম)

মুসলিম ১৬৩১, তিরমিযী ১৩৭৬, নাসায়ী ৩৬৫১, আবূ দাঊদ ২৮৮০,৩৫৪০, আহমাদ ৮৬২৭, দারেমী ৫৫৯٫ রিয়াদুস সলেহিন ৯৫৬

কন্যা সন্তানকে সুশিক্ষা দানের সুফল 
১৬৭. 
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:مَنْ آوٰى يَتِيمًا إِلٰى طَعَامِه وَشَرَابِه أَوْجَبَ اللهُ لَهُ الْجَنَّةَ أَلْبَتَّةَ إِلَّا أَنْ يَعْمَلَ ذَنْبًا لَا يُغْفَرُ. وَمَنْ عَالَ ثَلَاثَ بَنَاتٍ أَوْ مِثْلَهُنَّ مِنَ الْأَخَوَاتِ فَأَدَّبَهُنَّ وَرَحِمَهُنَّ حَتّٰى يُغْنِيَهُنَّ اللهُ أَوْجَبَ اللهُ لَهُ الْجَنَّةَ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللهِ! وَاثْنَتَيْنِ؟ قَالَ:وَاِثْنَتَيْنِ حَتّٰى قَالُوْا: أَوْ وَاحِدَةً؟ لَقَالَ: وَاحِدَةًوَمَنْ أَذْهَبَ اللهُ بِكَرِيمَتَيْهِ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ وَمَا كَرِيمَتَاهُ؟ قَالَ:عَيْنَاهُ. 
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন ইয়াতীমকে নিজের খাদ্য-পানীয়তে ঠাঁই দেবে, তার জন্য আল্লাহ তা‘আলা নিশ্চয় জান্নাত অবধারিত করে দেবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সে এমন কোন পাপ না করে, যা মার্জনা করা হয় না। যে ব্যক্তি তিনটি কন্যা বা তিনটি বোনকে প্রতিপালন করবে, তাদের শিষ্টাচার শেখাবে এবং অনুগ্রহ ও অনুকম্পা প্রদর্শন করবে, যতক্ষণ না আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে পরমুখাপেক্ষিতা হতে মুক্ত করেন, তার জন্য আল্লাহ তা‘আলা জান্নাত অবধারিত করেছেন। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল : হে আল্লাহর রসূল! দু’ কন্যা বা দু’ বোনের লালন-পালনে কি সাওয়াব হবে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ দু’জনের ব্যাপারে একই সাওয়াব মিলবে। যদি কেউ (সহাবায়ে কিরাম) এক বোন বা কন্যার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতেন, তবে তার সম্পর্কেও রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটাই বলতেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা যে ব্যক্তির দু’টো প্রিয় বস্তু নিয়ে গিয়েছেন, তার জন্য জান্নাত অবধারিত রয়েছে। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! তার প্রিয় বস্তুদ্বয় কি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তার চক্ষুদ্বয়। 

কন্যা সন্তানকে মর্যাদা ও দানের সুফল 
১৬৮.
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ، وَأَبُو بَكْرٍ ابْنَا أَبِي شَيْبَةَ - الْمَعْنَى - قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ أَبِي مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، عَنِ ابْنِ حُدَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنْ كَانَتْ لَهُ أُنْثَى فَلَمْ يَئِدْهَا وَلَمْ يُهِنْهَا وَلَمْ يُؤْثِرْ وَلَدَهُ عَلَيْهَا - قَالَ يَعْنِي الذُّكُورَ - أَدْخَلَهُ اللَّهُ الْجَنَّةَ ‏"‏ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرْ عُثْمَانُ يَعْنِي الذُّكُورَ ‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন,  রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির ঘরে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সে যদি তাকে জীবন্ত কবর না দেয় এবং তাকে অবজ্ঞা না করে এবং তার পুত্র সন্তানকে তার উপর প্রাধান্য না দেয় তাহলে আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। বর্ণনাকারী ‘উসমান ‘পুত্র সন্তান’ কথাটি উল্লেখ করেননি।
মিশকাত ৪৯৭৯, আবু দাউদ ৫১৪৬

কন্যা সন্তান জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভের উপায় 
১৬৯.

وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ : دَخَلَتْ عَلَيَّ امْرَأةٌ وَمَعَهَا ابنَتَانِ لَهَا تَسْأَلُ، فَلَمْ تَجِدْ عِنْدِي شَيئاً غَيْرَ تَمْرَةٍ وَاحدَةٍ، فَأعْطَيْتُهَا إيَّاهَا فَقَسَمَتْهَا بَيْنَ ابْنَتَيْها ولَمْ تَأكُلْ مِنْهَا، ثُمَّ قَامَتْ فَخَرجَتْ، فَدَخَلَ النَّبيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَينَا، فَأخْبَرْتُهُ فَقَالَ: «مَنِ ابْتُليَ مِنْ هذِهِ البَنَاتِ بِشَيءٍ فَأحْسَنَ إلَيْهِنَّ، كُنَّ لَهُ سِتراً مِنَ النَّارِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, এক মহিলা তার দু’টি মেয়ে সঙ্গে নিয়ে আমার নিকট ভিক্ষা চাইল। অতঃপর সে আমার নিকট একটি খুরমা ব্যতীত কিছুই পেল না। সুতরাং আমি তা তাকে দিয়ে দিলাম। মহিলাটি তার দু’মেয়েকে খুরমাটি ভাগ করে দিল এবং সে নিজে তা থেকে কিছুই খেল না, অতঃপর সে উঠে বের হয়ে গেল। ইতোমধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন। আমি তাঁকে বিষয়টি জানালাম। তখন তিনি বললেন, ‘‘যাকে এই কন্যা সন্তান দিয়ে কোনো পরীক্ষায় ফেলা হয়, তারপর যদি সে তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করে, তাহলে এ কন্যারা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে অন্তরাল হবে।’’
বুখারী ১৪১৮, ৫৯৯৫, মুসলিম ২৬২৯, তিরমিযী ১৯১৫, আহমাদ ২৩৫৩৬, ২৪০৫১, ২৪০৯০, ২৪৮০৪, ২৫৫২৯, রিয়াদুস সলেহিন ২৭৩

সন্তানদের মধ্যে ন্যায় বিচার
১৭০.
عَنِ النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ أبَاهُ أتَى بِهِ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: إِنِّي نَحَلْتُ ابْنِي هَذَا غُلاَماً كَانَ لِي، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: أَكُلَّ وَلَدِكَ نَحَلْتَهُ مِثْلَ هَذَا ؟» فَقَالَ: لاَ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: فَأَرْجِعهُ 
وَفي رِوَايةٍ: فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: أَفَعَلْتَ هذَا بِوَلَدِكَ كُلِّهِمْ ؟ قَالَ: لاَ، قَالَ: اِتَّقُوا الله وَاعْدِلُوا فِي أَوْلاَدِكُمْ فَرَجَعَ أَبِي، فَرَدَّ تِلْكَ الصَّدَقَةَ .
وفي روايةٍ : فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «يَا بَشيرُ أَلَكَ وَلَدٌ سِوَى هَذَا ؟» فَقَالَ: نَعَمْ، قَالَ: «أكُلَّهُمْ وَهَبْتَ لَهُ مِثْلَ هذَا ؟» قَالَ: لاَ، قَالَ: فَلاَ تُشْهِدْنِي إِذاً فَإِنِّي لاَ أَشْهَدُ عَلَى جَوْرٍ
وفي روايةٍ : «لاَ تُشْهِدْنِي عَلَى جَوْرٍ» .
وفي رواية : «أَشْهِدْ عَلَى هذَا غَيْرِي !» ثُمَّ قَالَ: «أَيَسُرُّكَ أَنْ يَكُونُوا إِلَيْكَ فِي البِرِّ سَواءً؟» قَالَ: بَلَى، قَالَ: «فَلا إِذاً» . متفق عليه

নু’মান ইবনে বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তাঁর পিতা তাঁকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে হাজির হয়ে বললেন, ‘আমি আমার এই ছেলেকে একটি গোলাম দান করেছি। (কিন্তু এর মা আপনাকে সাক্ষী রাখতে বলে।)’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তোমার সব ছেলেকেই কি তুমি এরূপ দান করেছ?’’ তিনি বললেন, ‘না।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তাহলে তুমি তা ফেরৎ নাও।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘তোমার সব ছেলের সঙ্গেই এরূপ ব্যবহার দেখিয়েছ?’’ তিনি বললেন, ‘না।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের সন্তানদের মাঝে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা কর। সুতরাং আমার পিতা ফিরে এলেন এবং ঐ সাদকাহ (দান) ফিরিয়ে নিলেন।’’
আর এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘হে বাশীর! তোমার কি এ ছাড়া অন্য সন্তান আছে?’’ তিনি বললেন, ‘জী হ্যাঁ।’ (রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘তাদের সকলকে কি এর মত দান দিয়েছ?’’ তিনি বললেন, ‘জী না।’ (রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘তাহলে এ ব্যাপারে আমাকে সাক্ষী মেনো না। কারণ আমি অন্যায় কাজে সাক্ষ্য দেব না।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘আমাকে অন্যায় কাজে সাক্ষী মেনো না।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘এ ব্যাপারে তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে সাক্ষী মানো।’’ অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘তুমি কি এ কথায় খুশী হবে যে, তারা তোমার সেবায় সমান হোক?’’ বাশীর বললেন, ‘জী অবশ্যই।’ তিনি বললেন, ‘‘তাহলে এরূপ করো না।’’

বুখারী ২৫৮৬, ২৫৮৭, ২৬৫০, মুসলিম ১৬২৩, তিরমিযী ১৩৬৭, নাসায়ী ৩৬৭২-৩৬৮৫, আবূ দাউদ ৩৫৪২, ইবনু মাজাহ ২৩৭৫, ২৩৭৬, আহমাদ ১৭৮৯০, ১৭৯০২, ১৭৯১১, ১৭৯৪৩, মুওয়াত্তা মালিক ১৪৭৩, রিয়াদুস সলেহিন ১৭৮২

সন্তানদের জন্য খরচ করা সওয়াবের কাজ 
১৭১.
وَعَن أمِّ سَلمَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ : قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، هَلْ لِي أَجرٌ فِي بَنِي أَبي سَلَمَة أنْ أُنْفِقَ عَلَيْهِمْ، وَلَسْتُ بِتَارِكَتِهِمْ هكَذَا وَهكَذَا إنَّمَا هُمْ بَنِيّ ؟ فَقَالَ: «نَعَمْ، لَكِ أجْرُ مَا أنْفَقْتِ عَلَيْهِمْ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

উম্মে সালামাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকে বর্ণিতঃ:

একদা আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি যদি (আমার প্রথম স্বামী) আবূ সালামাহর সন্তান-সন্ততির উপর ব্যয় করি, তাতে কি আমি নেকী পাব? আমি তো তাদেরকে এভাবে ছেড়ে দিতে পারছি না, তারা তো আমারই সন্তান।’ তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ, তুমি তাদের উপর ব্যয় করার দরুন নেকী পাবে।’’  
বুখারী ১৪৬৭, ৫৩৬৯, মুসলিম ১০০১, আহমাদ ২৫৯৭০, ২৬১০২, ২৬১৩১, রিয়াদুস সলেহিন ২৯৭

নিরূপায় কন্যার ভরণপোষণ করা সর্বোত্তম সাদকা
১৭২.
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُلَىٍّ، سَمِعْتُ أَبِي يَذْكُرُ، عَنْ سُرَاقَةَ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ "‏ أَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى أَفْضَلِ الصَّدَقَةِ ابْنَتُكَ مَرْدُودَةً إِلَيْكَ لَيْسَ لَهَا كَاسِبٌ غَيْرُكَ ‏"‏ ‏.‏

সুরাকাহ বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি কি তোমাদেরকে সর্বোত্তম দান-খয়রাতের পথ নির্দেশ করবো না? তোমার যে কন্যা তোমার নিকট ফিরে এসেছে এবং তুমি ছাড়া তার আর কোন উপার্জনকারী নেই, তার জন্য কৃত দান-খয়রাত সর্বোত্তম।
আহমাদ ১৭১৩৬। মিশকাত ৫০০২, দঈফাহ ৪৮২২, ইবনে মাজাহ ৩৬৬৭

ইয়াতীম ছেলেমেয়ের প্রতিপালনের জন্য দ্বিতীয় বিয়ে থেকে বিরত থাকা 
১৭৩.
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا النَّهَّاسُ بْنُ قَهْمٍ، قَالَ حَدَّثَنِي شَدَّادٌ أَبُو عَمَّارٍ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَنَا وَامْرَأَةٌ سَفْعَاءُ الْخَدَّيْنِ كَهَاتَيْنِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏"‏ ‏.‏ وَأَوْمَأَ يَزِيدُ بِالْوُسْطَى وَالسَّبَّابَةِ ‏"‏ امْرَأَةٌ آمَتْ مِنْ زَوْجِهَا ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ حَبَسَتْ نَفْسَهَا عَلَى يَتَامَاهَا حَتَّى بَانُوا أَوْ مَاتُوا ‏"‏ ‏.‏

আওফ ইবনু মালিক আল্‌-আশজাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, (রাসূলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন ক্বিয়ামাতের দিন আমি এবং কালো গালবিশিষ্ট মহিলা এভাবে থাকবো। বর্ণনাকারী ইয়াযীদ মধ্যমা ও তর্জনী আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে দেখান। অর্থাৎ যে বংশীয়া, সুন্দরী বিধবা মহিলা তার ইয়াতিম বাচ্চাদের স্বাবলম্বী করার জন্য মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত নিজেকে (পুনর্বিবাহ থেকে) বিরত রেখেছে।
যঈফাহ হা/১১২২,  আবু দাউদ ৫১৪৯

ইয়াতীম প্রতিপালন

১৭৪.
وَعَن سَهلِ بنِ سَعدٍ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «أَنَا وَكَافلُ اليَتِيمِ في الجَنَّةِ هَكَذا» وَأَشارَ بالسَّبَّابَةِ وَالوُسْطَى، وَفَرَّجَ بَيْنَهُمَا. رواه البخاري

সাহ্‌ল ইবনু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আমি ও এতীমের তত্ত্বাবধানকারী জান্নাতে এভাবে (পাশাপাশি) থাকব।’’ এ কথা বলার সময় তিনি (তাঁর) তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল মিলিয়ে উভয়ের মাঝে একটু ফাঁক রেখে ইশারা করে দেখালেন।  
বুখারী ৫৩০৪, ৬০০৫, তিরমিযী ১৯১৮, আবূ দাউদ ৫১৫০, আহমাদ ২২৩১৩, রিয়াদুস সালেহিন ২৬৭

সর্বোত্তম ও নিকৃষ্টতম পরিবার 
১৭৫.
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي أَيُّوبَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي عَتَّابٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ "‏ خَيْرُ بَيْتٍ فِي الْمُسْلِمِينَ بَيْتٌ فِيهِ يَتِيمٌ يُحْسَنُ إِلَيْهِ وَشَرُّ بَيْتٍ فِي الْمُسْلِمِينَ بَيْتٌ فِيهِ يَتِيمٌ يُسَاءُ إِلَيْهِ ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মুসলমানদের ঘরসমূহের মধ্যে যে ঘরে ইয়াতীম থাকে এবং তার সাথে সদয় ব্যবহার করা হয়, সেই ঘরই সর্বোত্তম। পক্ষান্তরে মুসলমানদের ঘরসমূহের মধ্যে যে ঘরে ইয়াতীম থাকে এবং তার সাথে নির্দয় ব্যবহার করা হয়, সেই ঘরই সর্বাধিক নিকৃষ্ট।  
ইবনে মাজাহ ৩৬৭৯

ইয়াতীম প্রতিপালনে চারিত্রিক উপকারিতা 
১৭৬.

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَجُلًا شَكَا إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَسْوَةَ قَلْبِهِ فَقَالَ: "امْسَحْ رَأْسَ الْيَتِيمِ، وَأَطْعِمْ الْمِسْكِينَ". رَوَاهُ أَحْمَدُ 
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিজের কঠিন হৃদয় সম্পর্কে অভিযোগ করল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে প্রতিকার হিসেবে বললেন যে, ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলাও এবং নিঃস্বদেরকে খাদ্য খাওয়াও। (আহমাদ, মিশকাত ৫০০১

Post a Comment

0 Comments