Recent Tube

হাদীস থেকে কিয়ামতের আলামতের কয়েকটি উদাহরণ পেশ করুন।

হাদীস থেকে কিয়ামতের আলামতের কয়েকটি উদাহরণ পেশ করুন। 

উত্তরঃ হাদীসে কিয়ামতের অনেক আলামত বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে আমরা এমন কয়েকটি হাদীছ বর্ণনা করব যাতে কিয়ামতের বড় বড় আলামতের উল্লেখ আছে।

(১) পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয়ঃ এ সম্পর্কে অনেক হাদীস রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا فَإِذَا طَلَعَتْ وَرَآهَا النَّاسُ يَعْنِي آمَنُوا أَجْمَعُونَ فَذَلِكَ حِينَ ( لَا يَنْفَعُ نَفْسًا إِيمَانُهَا لَمْ تَكُنْ آمَنَتْ مِنْ قَبْلُ أَوْ كَسَبَتْ فِي إِيمَانِهَا خَيْرًا )

‘‘যতদিন পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবেনা ততদিন কিয়ামত হবেনা। যখন পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবে এবং মানুষ তা দেখতে পাবে তখন সকলেই ঈমান আনবে। তখন এমন ব্যক্তির ঈমান কোন উপকারে আসবেনা যে পূর্ব থেকে বিশ্বাস স্থাপন করেনি কিংবা স্বীয় বিশ্বাস অনুযায়ী কোন সৎকাজ করেনি’’।[1]

(২) দাববাতুল আরযঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

تَخْرُجُ الدَّابَّةُ فَتَسِمُ النَّاسَ عَلَى خَرَاطِيمِهِمْ ثُمَّ يَغْمُرُونَ فِيكُمْ حَتَّى يَشْتَرِيَ الرَّجُلُ الْبَعِيرَ فَيَقُولُ مِمَّنِ اشْتَرَيْتَهُ فَيَقُولُ اشْتَرَيْتُهُ مِنْ أَحَدِ الْمُخَطَّمِينَ

‘‘দাববাতুল আরদ্ নামক একটি প্রাণী বের হবে এবং মানুষের নাকে চিহ্ন দিবে। অতঃপর মানুষেরা তোমাদের মধ্যে জীবন যাপন করবে। এমনকি উট ক্রয়কারীকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় তুমি এটি কার কাছ থেকে ক্রয় করেছো? সে বলবেঃ আমি এটি নাকে দাগ ওয়ালা একজন ব্যক্তির নিকট থেকে ক্রয় করেছি’’।[2] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ

تَخْرُجُ الدَّابَّةُ مَعَهَا عَصَا مُوسَى وَخَاتَمُ سُلَيْمَانَ فَتَجْلُو وَجْهَ الْمُؤْمِنِ بِالْعَصَا وَتَخْتِمُ أَنْفَ الْكَافِرِ بِالْخَاتَمِ حَتَّى إِنَّ أَهْلَ الْخِوَانِ لَيَجْتَمِعُونَ فَيَقُولُ هَذَا يَا مُؤْمِنُ وَيَقُولُ هَذَا يَا كَافِرُ

‘‘দাববাতুল আরদ্ বের হবে। তার সাথে থাকবে মূসা (আঃ)এর লাঠি এবং সুলায়মান (আঃ)এর আংটি। কাফেরের নাকে সুলায়মান (আঃ)এর আংটি দিয়ে দাগ লাগাবে এবং মূসা (আঃ)এর লাঠি দিয়ে মু’মিনের চেহারাকে উজ্জল করে দিবে। লোকেরা খানার টেবিল ও দস্তরখানায় বসেও একে অপরকে বলবেঃ হে মু’মিন! হে কাফের![3]

(৩) দাজ্জালের আগমণঃ দাজ্জাল সম্পর্কে হাদীছগুলো মুতাওয়াতির সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। অধিকাংশ হাদীছই বুখারী ও মুসলিম শরীফে রয়েছে। এখানে শুধু দু’টি হাদীছ উল্লেখ করব। ইবনে উমার (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেনঃ

قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي النَّاسِ فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ ذَكَرَ الدَّجَّالَ فَقَالَ إِنِّي لَأُنْذِرُكُمُوهُ وَمَا مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا وَقَدْ أَنْذَرَهُ قَوْمَهُ وَلَكِنِّي سَأَقُولُ لَكُمْ فِيهِ قَوْلًا لَمْ يَقُلْهُ نَبِيٌّ لِقَوْمِهِ إِنَّهُ أَعْوَرُ وَإِنَّ اللَّهَ لَيْسَ بِأَعْوَرَ 

‘‘একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন। অতঃপর দাজ্জালের আলোচনা করতে গিয়ে বললেনঃ আমি তোমাদেরকে তার ফিতনা থেকে সাবধান করছি। সকল নবীই তাদের উম্মাতকে দাজ্জালের ভয় দেখিয়েছেন। কিন্তু আমি তোমাদের কাছে দাজ্জালের একটি পরিচয়ের কথা বলব যা কোন নবীই তাঁর উম্মাতকে বলেন নাই। তা হলো দাজ্জাল অন্ধ হবে। আর আমাদের মহান আল্লাহ্ অন্ধ নন’’।[4] হুযায়ফা বিন ইয়ামান হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ

لَأَنَا أَعْلَمُ بِمَا مَعَ الدَّجَّالِ مِنْهُ مَعَهُ نَهْرَانِ يَجْرِيَانِ أَحَدُهُمَا رَأْيَ الْعَيْنِ مَاءٌ أَبْيَضُ وَالْآخَرُ رَأْيَ الْعَيْنِ نَارٌ تَأَجَّجُ فَإِمَّا أَدْرَكَنَّ أَحَدٌ فَلْيَأْتِ النَّهْرَ الَّذِي يَرَاهُ نَارًا وَلْيُغَمِّضْ ثُمَّ لْيُطَأْطِئْ رَأْسَهُ فَيَشْرَبَ مِنْهُ فَإِنَّهُ مَاءٌ بَارِدٌ وَإِنَّ الدَّجَّالَ مَمْسُوحُ الْعَيْنِ عَلَيْهَا ظَفَرَةٌ غَلِيظَةٌ مَكْتُوبٌ بَيْنَ عَيْنَيْهِ كَافِرٌ يَقْرَؤُهُ كُلُّ مُؤْمِنٍ كَاتِبٍ وَغَيْرِ كَاتِبٍ

‘‘দাজ্জালের সাথে যা থাকবে তা আমি অবগত আছি। তার সাথে দু’টি নদী প্রবাহিত থাকবে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে একটিতে সুন্দর পরিস্কার পানি দেখা যাবে। অন্যটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যাবে। যার সাথে দাজ্জালের সাক্ষাৎ হবে সে যেন দাজ্জালের আগুনে ঝাপ দিয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে পান করে। কারণ উহা সুমিষ্ট পানি। তার চোখের উপরে মোটা আবরণ থাকবে। কপালে ‘‘কাফের’’ লেখা থাকবে। মূর্খ ও শিক্ষিত সকল ঈমানদার লোকই তা পড়তে সক্ষম হবে’’।[5]

(৪) ফিতনা ও যুদ্ধবিগ্রহঃ এ সম্পর্কে অসংখ্য হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

(إِنَّهَا سَتَكُونُ فِتَنٌ أَلَا ثُمَّ تَكُونُ فِتْنَةٌ الْقَاعِدُ فِيهَا خَيْرٌ مِنَ الْمَاشِي فِيهَا وَالْمَاشِي فِيهَا خَيْرٌ مِنَ السَّاعِي إِلَيْهَا أَلَا فَإِذَا نَزَلَتْ أَوْ وَقَعَتْ فَمَنْ كَانَ لَهُ إِبِلٌ فَلْيَلْحَقْ بِإِبِلِهِ وَمَنْ كَانَتْ لَهُ غَنَمٌ فَلْيَلْحَقْ بِغَنَمِهِ وَمَنْ كَانَتْ لَهُ أَرْضٌ فَلْيَلْحَقْ بِأَرْضِهِ قَالَ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ مَنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ إِبِلٌ وَلَا غَنَمٌ وَلَا أَرْضٌ قَالَ يَعْمِدُ إِلَى سَيْفِهِ فَيَدُقُّ عَلَى حَدِّهِ بِحَجَرٍ ثُمَّ لِيَنْجُ إِنِ اسْتَطَاعَ النَّجَاءَ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ قَالَ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ إِنْ أُكْرِهْتُ حَتَّى يُنْطَلَقَ بِي إِلَى أَحَدِ الصَّفَّيْنِ أَوْ إِحْدَى الْفِئَتَيْنِ فَضَرَبَنِي رَجُلٌ بِسَيْفِهِ أَوْ يَجِيءُ سَهْمٌ فَيَقْتُلُنِي قَالَ يَبُوءُ بِإِثْمِهِ وَإِثْمِكَ وَيَكُونُ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ)

‘‘অচিরেই বিভিন্ন রকম ফিতনার আবির্ভাব ঘটবে। ফিতনার সময় বসে থাকা ব্যক্তি ফিতনার দিকে পায়ে হেঁটে অগ্রসরমান ব্যক্তির চেয়ে এবং পায়ে হেঁটে চলমান ব্যক্তি আরোহী ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক নিরাপদ ও উত্তম হবে। ফিতনা শুরু হয়ে গেলে যার উট থাকবে সে যেন উটের রাখালি নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং যার ছাগল আছে সে যেন ছাগলের রাখালি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আর যার চাষাবাদের যমিন আছে, সে যেন চাষাবাদের কাজে ব্যস্ত থাকে। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলোঃ হে আল্লাহর নবী! যার কোন কিছুই নেই সে কি করবে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ পাথর দিয়ে তার তলোয়ারকে ভোঁতা করে ফেলে নিরস্ত্র হয়ে যাবে এবং ফিতনা থেকে বাঁচতে চেষ্টা করবে। অতঃপর তিনি বলেনঃ হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছি? অতঃপর অন্য এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলোঃ হে আল্লাহর রাসূল! কেউ যদি আমাকে জোর করে কোন দলে নিয়ে যায় এবং সেখানে গিয়ে কারো তলোয়ার বা তীরের আঘাতে আমি নিহত হই তাহলে আমার অবস্থা কি হবে? উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘‘সে তার পাপ এবং তোমার পাপের বোঝা নিয়ে জাহান্নামের অধিবাসী হবে’’।[6]

(৫) ঈসা (আঃ)এর আগমণঃ ঈসা (আঃ)এর আগমণের ব্যাপারে অস্যংখ্য সহীহ হাদীছ বিদ্যমান রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَيُوشِكَنَّ أَنْ يَنْزِلَ فِيكُمُ ابْنُ مَرْيَمَ حَكَمًا عَدْلًا فَيَكْسِرَ الصَّلِيبَ وَيَقْتُلَ الْخِنْزِيرَ وَيَضَعَ الْجِزْيَةَ وَيَفِيضَ الْمَالُ حَتَّى لَا يَقْبَلَهُ أَحَدٌ)

‘‘ঐ আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে! অচিরেই ন্যায় বিচারক শাসক হিসেবে ঈসা (আঃ) তোমাদের মাঝে আগমণ করবেন। তিনি ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শুকর হত্যা করবেন এবং জিযিয়া (কর) রহিত করবেন। ধন-সম্পদ প্রচুর হবে এবং তা নেয়ার মত কোন লোক পাওয়া যাবেনা’’।[7]

(৬) ইয়াজযুজ-মাজুজের আগমণঃ বুখারী ও মুসলিম শরীফে যায়নাব বিনতে জাহ্শ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ عَلَيْهَا فَزِعًا يَقُولُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَيْلٌ لِلْعَرَبِ مِنْ شَرٍّ قَدِ اقْتَرَبَ فُتِحَ الْيَوْمَ مِنْ رَدْمِ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مِثْلُ هَذِهِ وَحَلَّقَ بِإِصْبَعِهِ الْإِبْهَامِ وَالَّتِي تَلِيهَا قَالَتْ زَيْنَبُ بِنْتُ جَحْشٍ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَهْلِكُ وَفِينَا الصَّالِحُونَ قَالَ نَعَمْ إِذَا كَثُرَ الْخَبَثُ

‘‘একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর নিকটে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে প্রবেশ করলেন। তিনি বলছিলেনঃ (لَا إلَهَ إلَا اللَّهُ)। আরবদের জন্য ধ্বংস! একটি অকল্যাণ তাদের অতি নিকটবর্তী হয়ে গেছে। আজ ইয়াজুয-মা’জুযের প্রাচীর এই পরিমাণ খুলে দেয়া হয়েছে। এ কথা বলে তিনি হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী ও তার পার্শ্বের আঙ্গুল দিয়ে বৃত্ত তৈরী করে দেখালেন। যায়নাব বিনতে জাহ্শ (রাঃ) বলেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মাঝে সৎ লোক থাকতেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, যখন পাপ কাজ বেড়ে যাবে’’।[8]

(৭) বিশাল একটি ধোঁয়ার আগমণঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

إِنَّ رََّبكُمْ أَنْذَرَكُمْ ثَلَاثًا: الدُّخَانَ يَأْخُذُ الْمُؤْمِنِ كَالزَّكَمَةِ وَيَأْخُذُ الْكَافِرَ فَيَنْتَفِخُ حَتَّى يَخْرُجُ مِنْ كُلِّ مَسْمَعٍ مِنْهُ وَالثَّانِيَةَ الدَّابَّةَ وَالثَّالِثَةَ الدَّجَّالَ

‘‘নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে তিনটি বিষয়ে সতর্ক করেছেন। (১) ধোঁয়া, যা মু’মিনকে কেবল এক প্রকার সর্দিতে আক্রান্ত করে দেবে এবং কাফেরের শরীরের প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করে প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে বের হতে থাকবে। (২) দাববাতুল আরয্ তথা ভূগর্ভ থেকে নির্গত অদ্ভুত এক জানোয়ারের আগমণ। (৩) দাজ্জালের আগমণ।[9]

(৮) কোমল ও ঠান্ডা বাতাসের মাধ্যমে মু’মিনদের রূহ কবজঃ আখেরী যামানায় কোমল ও ঠান্ডা বাতাসের মাধ্যমে মু’মিনদের রূহ কবজ সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

إِنَّ اللَّهَ يَبْعَثُ رِيحًا مِنَ الْيَمَنِ أَلْيَنَ مِنَ الْحَرِيرِ فَلَا تَدَعُ أَحَدًا فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ إِيمَانٍ إِلَّا قَبَضَتْهُ

‘‘আল্লাহ তা’আলা ইয়ামানের দিক থেকে রেশমের চেয়ে অধিক নরম একটি বাতাস প্রেরণ করবেন। সেদিন যার অন্তরে অণু দানা পরিমাণ ঈমান থাকবে সেও এ বাতাসের কারণে মৃত্যু বরণ করবে’’।[10]

(৯) হেজায থেকে বিরাট একটি আগুন বের হবেঃ কিয়ামতের পূর্বে হেজাযের (আরব উপদ্বীপের) যমিন থেকে বড় একটি আগুন বের হবে। এই আগুনের আলোতে সিরিয়ার বুসরা নামক স্থানের উটের গলা পর্যন্ত আলোকিত হয়ে যাবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَخْرُجَ نَارٌ مِنْ أَرْضِ الْحِجَازِ تُضِيءُ أَعْنَاقَ الْإِبِلِ بِبُصْرَى

‘‘হেজাযের ভূমি থেকে একটি অগ্নি প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত কায়েম হবেনা। উক্ত অগ্নির আলোতে বুসরায় অবস্থানরত উটের গলা পর্যন্ত আলোকিত হবে’’।[11]

(১০) তিনটি বড় ধরণের ভূমিধ্বসঃ কিয়ামতের পূর্বে তিনটি স্থানে বিশাল আকারের ভূমিধ্বস হবে। এগুলো হবে কিয়ামতের বড় আলামতের অন্তর্ভূক্ত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

(لَنْ تَقُومَ حَتَّى تَرَوْنَ قَبْلَهَا عَشْرَ آيَاتٍ فَذَكَرَمِنْهَا وَثَلَاثَةَ خُسُوفٍ: خَسْفٌ بِالْمَشْرِقِ وَخَسْفٌ بِالْمَغْرِبِ وَخَسْفٌ بِجَزِيرَةِ الْعَرَبِ)

‘‘দশটি আলামত প্রকাশ হওয়ার পূর্বে কিয়ামত সংঘটিত হবেনা। তার মধ্যে থেকে তিনটি ভূমিধ্বসের কথা উল্লেখ করলেন। একটি হবে পূর্বাঞ্চলে, একটি হবে পশ্চিমাঞ্চলে এবং আরেকটি হবে আরব উপদ্বীপে’’।[12] উম্মে সালামা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ

سَيَكُوْنُ بَعْدِىْ خَسْفٌ بِالْمَشْرِق وَ خَسْفٌ بِالْمَغْرِبِ وَ خَسْفٌ بِجَزِيْرَةِ الْعَرَبِ قُلْتُ: يَا رَسٌولُ اللَّهُ! أَ يُخْسَفُ بِالْاَرْضُ وَ فِيْهَا الصَالِحِيْنَ؟ قَالَ لَهاَ رَسُوْلُ اللَّهُ صلى الله عليه و سلم أَكْثَرَ أَهْلُهَا الخَبَثُ

‘‘আমি চলে যাওয়ার পর অচিরেই তিনটি স্থানে ভূমিধ্বস হবে। একটি হবে পূর্বাঞ্চলে, একটি হবে পশ্চিমাঞ্চলে এবং আরেকটি হবে আরব উপদ্বীপে। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! সৎ লোক বর্তমান থাকতেই কি উহাতে ভূমিধ্বস হবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, যখন পৃথিবীর অধিবাসীরা ব্যাপকভাবে পাপকাজে লিপ্ত হবে’’।[13]

[1] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুর্ রিকাক। [2] - মুসনাদে আহমাদ। সিলসিলায়ে সাহীহা, হাদীছ নং- ৩২২। [3] - মুসনাদে ইমাম আহমাদ। আহমাদ শাকের সহীহ বলেছেন, হাদীছ নং- ৭৯২৪। [4] - বুখারী, অধ্যায়ঃ আহাদীছুল আম্বীয়া। [5]- মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান। [6] - মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ঈমান। [7] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবু আহাদীছুল আম্বীয়া। মুসলিম, অধ্যায়ঃ ঈসা (আঃ)এর অবতরণ। [8] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল আম্বিয়া। [9] - তাফসীরে তাবারী, ইবনে কাছীর। [10] - মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান। [11] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান। [12] - মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান। [13] - ইমাম হায়ছামী বলেনঃ তাবারানী তাঁর আওসাতে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। 
 
প্রশ্নঃ (১০৭) মওতের প্রতি ঈমান আনয়নের দলীল কী? 

উত্তরঃ মওত চির সত্য। এ ব্যাপারে অনেক দলীল রয়েছে। আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ

قُلْ يَتَوَفَّاكُمْ مَلَكُ الْمَوْتِ الَّذِي وُكِّلَ بِكُمْ ثُمَّ إِلَى رَبِّكُمْ تُرْجَعُونَ

‘‘হে নবী! আপনি বলুনঃ তোমাদের প্রাণ হরণের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবেন। অতঃপর তোমরা তোমাদের প্রতিপালনকর্তার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে’’। (সূরা সিজদাহঃ ১১) আল্লাহ্ তাআ’লা আরও বলেনঃ

كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُورَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

‘‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর তোমরা কিয়ামতের দিন উত্তম প্রতিদান প্রাপ্ত হবে।’’ (সূরা আলইমরানঃ ১৮৫) আল্লাহ্ তাআলা তাঁর নবীকে উদ্দেশ্য করে বলেনঃ

إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُمْ مَيِّتُونَ

‘‘নিশ্চয়ই আপনি মৃত্যু বরণ করবেন। তারাও মৃত্যু বরণ করবে’’। (সূরা যুমারঃ ৩০) আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ

وَمَا جَعَلْنَا لِبَشَرٍ مِنْ قَبْلِكَ الْخُلْدَ أَفَإِنْ مِتَّ فَهُمُ الْخَالِدُونَ

‘‘আপনার পূর্বে আমি কোন মানুষকে অনন্ত জীবন দান করি নি। সুতরাং আপনার মৃত্যু হলে তারা কি চিরঞ্জীব হবে?’’ (সূরা আম্বীয়াঃ ৩৪) আল্লাহ তাআ’লা আরও বলেনঃ

كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ

‘‘ভূপৃষ্ঠের সবকিছুই ধ্বংসশীল। একমাত্র আপনার মহিমাময় ও মহানুভব পালনকর্তার চেহারা (সত্তা) ব্যতীত’’। (সূরা আর্ রাহমানঃ ২৬-২৭) আল্লাহ্ তাআ’লা আরও বলেনঃ

كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلاَّ وَجْهَهُ

‘‘আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সবকিছুই ধ্বংস হবে’’। (সূরা কাসাসঃ ৮৮) আল্লাহ্ তাআ’লা আরও বলেনঃ

وَتَوَكَّلْ عَلَى الْحَيِّ الَّذِي لاَ يَمُوتُ

‘‘আপনি সেই চিরঞ্জীবের উপর ভরসা করুন, যার মৃত্যু নেই’’। (সূরা ফুরকানঃ৫৮)

মৃত্যুর উপর ঈমান আনয়নের ব্যাপারে হাদীছগুলো গণনা করে শেষ করা যাবে না। মৃত্যু একটি বাস্তব বিষয়। এটি কারো অজানা নয়। এতে কোন সন্দেহ নেই। এর বাস্তবতা হতে চক্ষু বন্ধ করে রাখা অহঙ্কার ছাড়া আর কি হতে পারে? আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাগণই কেবল মৃত্যু ও তার পরবর্তী বিষয়ের প্রতি বিশ্বাসের দাবী অনুযায়ী আমল করে থাকে। আমরা বিশ্বাস করি, যে কেউ মৃত্যু বরণ করুক, চাই তার মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে হোক বা নিহত হোক বা অন্য যে কোন কারণে হোক না কেন, সেটিই ছিল তার নির্ধারিত মৃত্যুর সময়। নির্ধারিত সময়ের একটু আগেও হয়নি, পরেও নয়। আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

كُلٌّ يَجْرِي لأَجَلٍ مُسَمًّى

‘‘প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য চলমান’’। (সূরা রা’দঃ ২)

فَإِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ لاَ يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلاَ يَسْتَقْدِمُونَ

‘‘যখন তাদের নির্দিষ্ট সময় চলে আসবে, তখন তারা না এক মুহূর্ত পিছে যেতে পারবে আর না এগিয়ে আসতে পারবে’’। (সূরা আ’রাফ

 
প্রশ্নঃ (১০৮) কবরের ফিতনা, নেয়ামত ও আযাবের ব্যাপারে কুরআনে কোন দলীল আছে কি? 

উত্তরঃ কবরের আযাব ও নেয়ামতের বিষয়ে কুরআনে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ

حَتَّى إِذَا جَاءَ أَحَدَهُمْ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُونِي لَعَلِّي أَعْمَلُ صَالِحًا فِيمَا تَرَكْتُ كَلَّا إِنَّهَا كَلِمَةٌ هُوَ قَائِلُهَا وَمِنْ وَرَائِهِمْ بَرْزَخٌ إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ

‘‘যখন তাদের কারো কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলেঃ হে আমার পালনকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে) প্রেরণ করুন। যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করি নি। কখনই নয়, এটি তো তার একটি কথা মাত্র। তাদের সামনে রয়েছে বারযাখ (একটি পর্দা) কিয়ামত দিবস পর্যন্ত’’। (সূরা মুমিনূনঃ ৯৮-১০০) আল্লাহ্ তাআ’লা বলেনঃ

وَحَاقَ بِآلِ فِرْعَوْنَ سُوءُ الْعَذَابِ النَّارُ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا غُدُوًّا وَعَشِيًّا وَيَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ أَدْخِلُوا آلَ فِرْعَوْنَ أَشَدَّ الْعَذَابِ

‘‘ফিরআউন সম্প্রদায়কে নিকৃষ্ট শাস্তি পরিবেষ্টন করল। সকাল-সন্ধ্যায় তাদেরকে উপস্থিত করা হয় আগুনের সামনে আর যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন বলা হবে ফিরআউন সম্প্রদায়কে কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর’’। (সূরা গাফেরঃ ৪৫-৪৬) আল্লাহ্ তাআ’লা আরও বলেনঃ

يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ

‘‘যারা বিশ্বাসী তাদেরকে ইহজীবনে ও পরজীবনে আল্লাহ্ সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন মজবুত বাক্যের উপর’’। (সূরা ইবরাহীমঃ ২৭) আল্লাহ তাআলা আরও বলেনঃ

وَلَوْ تَرَى إِذْ الظَّالِمُونَ فِي غَمَرَاتِ الْمَوْتِ وَالْمَلَائِكَةُ بَاسِطُوا أَيْدِيهِمْ أَخْرِجُوا أَنفُسَكُمْ الْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الْهُونِ بِمَا كُنتُمْ تَقُولُونَ عَلَى اللَّهِ غَيْرَ الْحَقِّ وَكُنتُمْ عَنْ آيَاتِهِ تَسْتَكْبِرُونَ

‘‘আপনি যদি জালিমদেরকে ঐ সময়ে দেখতে পেতেন যখন তারা মৃত্যু যন্ত্রনায় থাকবে এবং ফেরেশতাগণ হাত বাড়িয়ে বলবেনঃ তোমরা নিজেরাই নিজেদের প্রাণ বের করে আন। তোমাদের আমলের কারণে আজ তোদেরকে অবমাননাকর আযাব দেয়া হবে। কারণ তোমরা আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ করেছিলে এবং তোমরা তাঁর আয়াতের বিরুদ্ধে অহংকার করেছিলে’’। (সূরা আনআমঃ ৯৩) আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

سَنُعَذِّبُهُمْ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ يُرَدُّونَ إِلَى عَذَابٍ عَظِيمٍ

‘‘আমি তাদেরকে দু’বার শাস্তি দিব। অতঃপর তাদেরকে প্রত্যাবর্তিত করা হবে কঠিন শাস্তির দিকে’’। (সূরা তাওবাঃ ১০১) এখানে একবার কবরের শাস্তি ও আর একবার কিয়ামতের শাস্তি উদ্দেশ্য। এ ছাড়াও এ বিষয়ে আরও অনেক আয়াত বিদ্যমান রয়েছে।

 
প্রশ্নঃ (১০৯) কবরের আযাবের ব্যাপারে সুন্নাতে রাসূল হতে দলীল দিন 

উত্তরঃ কবরের আযাবের ব্যাপারে হাদীছগুলো মুতাওয়াতের (ধারাবাহিক) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

(إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ وَتَوَلَّى عَنْهُ أَصْحَابُهُ وَإِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ أَتَاهُ مَلَكَانِ فَيُقْعِدَانِهِ فَيَقُولاَنِ مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ لِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَّا الْمُؤْمِنُ فَيَقُولُ: أَشْهَدُ أَنَّهُ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ فَيُقَالُ: لَهُ انْظُرْ إِلَى مَقْعَدِكَ مِنَ النَّارِ قَدْ أَبْدَلَكَ اللَّهُ بِهِ مَقْعَدًا مِنَ الْجَنَّةِ فَيَرَاهُمَا جَمِيعًا- قَالَ : قَتَادَةُ وَذُكِرَ لَنَا أَنَّهُ يُفْسَحُ لَهُ فِي قَبْرِهِ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى حَدِيثِ أَنَسٍ قَالَ: وَأَمَّا الْمُنَافِقُ وَالْكَافِرُ فَيُقَالُ لَهُ مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ، فَيَقُولُ: لَا أَدْرِي كُنْتُ أَقُولُ: مَا يَقُولُ النَّاسُ فَيُقَالُ: لاَ دَرَيْتَ وَلاَ تَلَيْتَ وَيُضْرَبُ بِمَطَارِقَ مِنْ حَدِيدٍ ضَرْبَةً فَيَصِيحُ صَيْحَةً يَسْمَعُهَا مَنْ يَلِيهِ غَيْرَ الثَّقَلَيْنِ)

‘‘বান্দাকে যখন কবরে রেখে তার আত্মীয়রা ফিরে যায় তখন সে তাদের জুতার আওয়াজ শুনতে পায়। এমন সময় দু’জন ফেরেশতা তার কাছে আগমণ করেন। তাকে বসিয়ে জিজ্ঞেস করেনঃ এই ব্যক্তি তথা মুহম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে তুমি কি বলতে? মুমিন ব্যক্তি উত্তরে বলেঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে তিনি হলেন আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। তখন তাকে বলা হয়ঃ তুমি জাহান্নামে তোমার ঠিকানার দিকে একটু দৃষ্টি দাও। আল্লাহ্ তাআলা তা পরিবর্তন করে জান্নাতে তোমার ঠিকানা তৈরী করেছেন। সুতরাং সে জান্নাত ও জাহান্নাম উভয়ই দেখতে পাবে। কাফের অথবা মুনাফেক বান্দাকে যখন বলা হয়ঃ এই লোকটি সম্পর্কে তোর ধারণা কি? সে উত্তরে বলেঃ হায় আমি তা জানিনা। তার সম্পর্কে মানুষ যা বলত আমিও তাই বলতাম। তখন তাকে বলা হয়ঃ তুমি জানার চেষ্টা করো নাই এবং অনুসরণও করো নাই। আর তাকে লোহার হাতুড়ী দিয়ে কঠোরভাবে আঘাত করা হয়। তাতে সে এমন প্রকটভাবে চিৎকার করতে থাকে, যার আওয়াজ জিন-ইনসান ব্যতীত নিকটবর্তী সকল সৃষ্টিজীবই শুনতে পায়’’।[1]

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا مَاتَ عُرِضَ عَلَيْهِ مَقْعَدُهُ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ إِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَمِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَمِنْ أَهْلِ النَّارِ فَيُقَالُ هَذَا مَقْعَدُكَ حَتَّى يَبْعَثَكَ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ)

‘‘নিশ্চয়ই তোমাদের কেউ যখন মারা যায় তখন সকাল-সন্ধ্যায় তার সামনে তার ঠিকানা পেশ করা হয়। সে জান্নাতের অধিবাসী হলে জান্নাতে আর জাহান্নামী হলে জাহান্নামে তার ঠিকানা দেখানো হয়। বলা হয়ঃ এটিই হচ্ছে তোমার ঠিকানা। কিয়ামতের দিন পুনরুত্থিত হওয়ার পর আল্লাহ্ তোমাকে এই ঠিকানায় পাঠাবেন’’।[2] ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত,

(مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحَائِطٍ مِنْ حِيطَانِ الْمَدِينَةِ أَوْ مَكَّةَ فَسَمِعَ صَوْتَ إِنْسَانَيْنِ يُعَذَّبَانِ فِي قُبُورِهِمَا فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَذَّبَانِ وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ ثُمَّ قَالَ بَلَى كَانَ أَحَدُهُمَا لَا يَسْتَتِرُ مِنْ بَوْلِهِ وَكَانَ الْآخَرُ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ ثُمَّ دَعَا بِجَرِيدَةٍ فَكَسَرَهَا كِسْرَتَيْنِ فَوَضَعَ عَلَى كُلِّ قَبْرٍ مِنْهُمَا كِسْرَةً فَقِيلَ لَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ فَعَلْتَ هَذَا قَالَ لَعَلَّهُ أَنْ يُخَفَّفَ عَنْهُمَا مَا لَمْ تَيْبَسَا أَوْ إِلَى أَنْ يَيْبَسَا)

‘‘একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা বা মক্কার কোন একটি বাগানের পাশদিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তথায় তিনি দু’জন এমন মানুষের আওয়াজ শুনতে পেলেন যাদেরকে কবরে শাস্তি দেয়া হচিছল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তাদেরকে আযাব দেয়া হচ্ছে অথচ বড় কোন অপরাধের কারণে আযাব দেয়া হচ্ছে না। অতঃপর তিনি বললেনঃ তাদের একজন পেশাব করার সময় আড়াল করতোনা। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি একজনের কথা অন্যজনের কাছে লাগাত। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি কাঁচা খেজুরের শাখা আনতে বললেন। অতঃপর উক্ত খেজুরের শাখাটিকে দু’ভাগে বিভক্ত করে উভয় কবরের উপর একটি করে রেখে দিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞেস করা হলো আপনি কেন এরকম করলেন? উত্তরে তিনি বললেনঃ হয়ত খেজুরের শাখা দু’টি জীবিত থাকা পর্যন্ত তাদের কবরের আযাব হালকা করা হবে’’।[3]

আবু আইয়্যুব আনসারী (রাঃ) বলেনঃ

(خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ وَجَبَتِ الشَّمْسُ فَسَمِعَ صَوْتًا فَقَالَ: يَهُودُ تُعَذَّبُ فِي قُبُورِهَا)

‘‘একদা নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য অস্তমিত হওয়ার সময় ঘর থেকে বের হয়ে এসে এক বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে বললেনঃ কবরে ইহুদীদেরকে আযাব দেয়া হচ্ছে’’।[4] আসমা বিনতে আবু বকর (রাঃ) বলেনঃ

(قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَطِيبًا فَذَكَرَ فِتْنَةَ الْقَبْرِ الَّتِي يَفْتَتِنُ فِيهَا الْمَرْءُ فَلَمَّا ذَكَرَ ذَلِكَ ضَجَّ الْمُسْلِمُونَ ضَجَّةً)

‘‘একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বক্তৃতা দেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে কবরে মানুষ যে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হবে সে সম্পর্কে আলোচনা করলেন। মুসলমানগণ কবরের আযাবের ভয়াবহতার কথা শুনে চিৎকার করে কেঁদে উঠলেন’’।[5] আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ

(فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدُ صَلَّى صَلاَةً إلاَّ تَعَوَّذَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ)

‘‘আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে প্রত্যেক নামাযের পর কবরের আযাব হতে আশ্রয় প্রার্থনা করতে দেখেছি’’।[6]

সূর্যগ্রহণের হাদীছের শেষাংশে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে কবরের আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করার আদেশ দিলেন।[7] উপরোক্ত সকল হাদীছই সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বিদ্যমান। লেখক বলেনঃ আমি মা’রিজুল কবুল নামক গ্রন্থে বিভিন্ন সনদে একদল সাহাবী থেকে ৬০টি হাদীছ উল্লেখ করেছি। সবগুলো হাদীছই মারফু। বিস্তারিত জানার জন্য আমার উক্ত কিতাবটি পাঠ করার পরামর্শ দেয়া হল।

[1] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল জানায়েয। [2] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল জানায়েয। [3] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ওযু। কবরের উপর খেজুর গাছের তাজা ডালা পুঁতা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে খাস ছিল। কারণ সাহাবীদের কোন কবরের উপর এমনটি করার কথা বর্ণিত হয় নি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও অন্য কোন কবরে তা স্থাপন করেন নি। সুতরাং বুঝা গেল এটি একটি নির্দিষ্ট ঘটনা। এর উপর কিয়াস করে বর্তমানে যেভাবে নতুন কবরের উপর খেজুর গাছে শাখা পুঁতা হয়ে থাকে তা ঠিক নয়। [4] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল জানায়েয। [5] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল জানায়েয। [6] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল জানায়েয। [7] - বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল কুসুফ।  নাজাত প্রাপ্ত দলের আকীদাহ
অধ্যায়ঃ প্রশ্ন এবং তাঁর উত্তরসমুহ

 
প্রশ্নঃ (১১০) কবর থেকে পুনরুত্থানের দলীল কী? 

উত্তরঃ কবর থেকে পুনরুত্থানের দলীলগুলো নিম্নরূপঃ আল্লাহ্ তাআ’লা বলেনঃ

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنْ كُنْتُمْ فِي رَيْبٍ مِنَ الْبَعْثِ فَإِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ مِنْ مُضْغَةٍ مُخَلَّقَةٍ وَغَيْرِ مُخَلَّقَةٍ لِنُبَيِّنَ لَكُمْ وَنُقِرُّ فِي الأَرْحَامِ مَا نَشَاءُ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى

‘‘হে লোক সকল! যদি তোমরা পুনরুত্থানের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ কর, তবে শুন! আমি তোমাদেরকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছি। এর পর বীর্য থেকে, এরপর জমাট রক্ত থেকে তারপর পূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট ও অপূর্ণাকৃতিবিশিষ্ট মাংস পিন্ড হতে, তোমাদের নিকট (আমার কুদরত) বর্ণনা করার উদ্দেশ্যে। আর আমি এক নির্দিষ্ট কালের জন্যে মাতৃগর্ভে যা ইচ্ছা রেখে দেই’’। (সূরা হজ্জঃ ৫) আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ

ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّهُ يُحْيِي الْمَوْتَى وَأَنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ * وَأَنَّ السَّاعَةَ آتِيَةٌ لاَ رَيْبَ فِيهَا وَأَنَّ اللَّهَ يَبْعَثُ مَنْ فِي الْقُبُورِ

‘‘এটা এ জন্যে যে, আল্লাহ্ সত্য। তিনিই মৃতকে জীবন দান করবেন। আর তিনি প্রত্যেক বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। আর কিয়ামত অবশ্যই সংঘটিত হবে। তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর কবরে যারা আছে তাদেরকে আল্লাহ অবশ্যই পুনরুত্থিত করবেন’’। (সূরা হজ্জঃ ৬-৭) আললাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ

وَهُوَ الَّذِي يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ وَهُوَ أَهْوَنُ عَلَيْهِ

‘‘তিনিই আল্লাহ, যিনি প্রথমবার সৃষ্টি করেন। অতঃপর তিনিই পুনরায় সৃষ্টি করবেন। আর এটি তাঁর জন্যে অধিকতর সহজ’’। (সূরা রূমঃ ২৭) আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ

كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُه

‘‘যেভাবে আমি সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব’’। (সূরা আম্বিয়াঃ ১০৪) আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ

وَيَقُولُ الإِنْسَانُ أَئِذَا مَا مِتُّ لَسَوْفَ أُخْرَجُ حَيًّا * أَوَلاَ يَذْكُرُ الإِنْسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِنْ قَبْلُ وَلَمْ يَكُ شَيْئًا

‘‘মানুষ বলেঃ আমার মৃত্যু হলে আমি কি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হব? মানুষ কি স্মরণ করে না যে, আমি তাকে পূর্বে সৃষ্টি করেছি যখন সে কিছুই ছিল না’’। (সূরা মারইয়ামঃ ৬৬-৬৭) আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ

أَوَلَمْ يَرَ الإِنْسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِنْ نُطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُبِينٌ * وَضَرَبَ لَنَا مَثَلاً وَنَسِيَ خَلْقَهُ قَالَ مَنْ يُحْيِي الْعِظَامَ وَهِيَ رَمِيمٌ * قُلْ يُحْيِيهَا الَّذِي أَنْشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ

‘‘মানুষ কি দেখে না যে, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি শুক্রবিন্দু হতে? অথচ হঠাৎ সে হয়ে গেল প্রকাশ্য বাকবিতন্ডাকারী। আর সে আমার সম্পর্কে উপমা রচনা করে অথচ সে নিজের সৃষ্টির কথা ভুলে যায়। সে বলেঃ হাড্ডিতে কে প্রাণ সঞ্চার করবে, যখন ওটা পচে গলে যাবে’’? আপনি বলুনঃ ওর মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করবেন তিনিই, যিনি এটা প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন’’। (সূরা ইয়াসীনঃ ৭৭-৭৯) আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ

أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللَّهَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ وَلَمْ يَعْيَ بِخَلْقِهِنَّ بِقَادِرٍ عَلَى أَنْ يُحْيِيَ الْمَوْتَى بَلَى إِنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

‘‘তারা কি দেখে না যে, আল্লাহ্ আকাশমন্ডলী ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং এসবের সৃষ্টিতে কোন ক্লান্তিবোধ করেন নি। তিনি মৃতকে জীবন দান করতে সক্ষম। তিনি প্রত্যেক বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান’’। (সূরা আহকাফঃ ৩৩) আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেনঃ

وَمِنْ آيَاتِهِ أَنَّكَ تَرَى الأَرْضَ خَاشِعَةً فَإِذَا أَنْزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَاءَ اهْتَزَّتْ وَرَبَتْ إِنَّ الَّذِي أَحْيَاهَا لَمُحْيِي الْمَوْتَى إِنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

‘‘আর তাঁর আরেকটি নিদর্শন এই যে, আপনি ভূমিকে দেখবেন অনুর্বর পড়ে আছে। অতঃপর আমি তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করলে তা শস্যশ্যামল এবং বৃদ্ধি হয়। নিশ্চয়ই যিনি একে জীবিত করেন, তিনিই মৃতের জীবন দানকারী। তিনি প্রত্যেক বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান’’। (সূরা হা-মীম সাজদাহঃ ৩৯) এছাড়াও আরো আয়াত রয়েছে।

উপরোক্ত দৃষ্টান্তগুলো ছাড়াও আল্লাহ্ তা’আলা অসংখ্যবার পানির মাধ্যমে মৃত যমীনকে জীবিত করার দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন। ফলে মৃত যমীন আন্দোলিত হয় এবং তা সবুজ আকার ধারণ করে। অথচ সেটি ছিল অনাবৃষ্টির কারণে মৃত ও শুস্ক। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উকাইলীর দীর্ঘ হাদীছে মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের উদাহরণ এভাবে পেশ করেছেন যে, তোমার মা’বুদের জীবনের শপথ! প্রত্যেক নিহত এবং প্রত্যেক মৃতের কবর বিদীর্ণ করা হবে। সে তার মাথার দিক থেকে জীবিত হয়ে উঠে বসবে। তোমার প্রতিপালক তোমাকে জিজ্ঞেস করবেঃ তোমার অবস্থা কি? সে বলবেঃ হে আমার প্রতিপালক! গতকালের কথা। আমি আমার পরিবার ও সন্তানদের সাথে ছিলাম। সাহাবী বলেনঃ আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! কিভাবে আমাদেরকে একত্রিত করা হবে? অথচ আমরা পচে গলে শেষ হয়ে যাব, বাতাস আমাদেরকে উড়িয়ে নিবে এবং হিংস্র প্রাণীরা আমাদেরকে খেয়ে ফেলবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আমি তোমার কাছে ঐ রকমই আল্লাহর নিদর্শন বর্ণনা করব। আমি একটি যমীন দেখেছি। সেটি পোড়া মাটির ন্যায় শক্ত হয়ে গিয়েছিল। আমি বলেছিলামঃ এটি পুনরায় কখনও জীবিত হবে না। আল্লাহ্ তাআলা সেখানে বৃষ্টি বর্ষণ করলেন। কয়েক দিন পর আমি সেখান দিয়ে অতিক্রম করলাম। আমি দেখলামঃ সেটি পানি বিশিষ্ট একটি শস্য ক্ষেতে পরিণত হয়েছে। তোমার প্রভুর হায়াতের শপথ! যমীনকে পানি দ্বারা জীবিত করার চেয়ে তিনি তোমাদেরকে কবর থেকে জীবিত করে হাশরের মাঠে উপস্থিত করতে অধিক ক্ষমতাবান।[1] এ রকম আরো অনেক হাদীছ রয়েছে।

[1] - এটি একটি দীর্ঘ হাদীসের অংশ, যা ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রঃ) মুসনাদে বর্ণনা করেছেন। ইমাম আলবানী (রঃ) হাদীসটিকে যঈফ বলেছেন। দেখুনঃ যিলালুল জান্নাত হাদীস নং- ৬৩৬।

Post a Comment

0 Comments