Recent Tube

গালিব সাহেবের প্রধান দুই সিপাহসালার মুযাফফর ও আঃ রাজ্জাক সাহেব 'আহলে হাদীছ আন্দোলন' বর্জন করে এখন নতুন ২ দলের নেতাঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।





 



গালিব সাহেবের প্রধান দুই সিপাহসালার মুযাফফর ও আঃ রাজ্জাক সাহেব 'আহলে হাদীছ আন্দোলন' বর্জন করে এখন নতুন ২ দলের নেতাঃ
-------------------------------------
  
     আব্দুলাহেল কাফী ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন 'নিখিল বংগ ও আসাম জমিয়তে আহলে হাদীস'। পরবর্তীতে তা থেকে জন্ম নেয় 'বাংলাদেশ জমিয়ত আহলে হাদীস'। সম্ভাবত মাযহাব ও ইকামতে দ্বীনের বিরোধীতার ফলে আল্লাহর গযবে তা ভেেঙ  'আহলে হাদীস তাবলীগে ইসলাম' নামে আরেক দল গজে ওঠে। অন্য দিকে ১৯৭৮ সালে মাযহাব ও ইকামতে দ্বীনের বিরোধীতাকারী ড. গালিব 'বাংলাদেশ আহলে হাদীস যুবসংঘ' গঠন করে সভাপতির আসন দখল করেন। এবং তা জমিয়তে আহলে হাদীসে অঙ্গ সংগঠন হিসাবে কাজ করে। জমিয়ত সভাপতি ড. আঃ আব্দুল বারী যুবসংঘের ক্রেন্দ্রীয় কাউন্সিল সম্মেলনে উপস্থিত থেকেছেন, যুবসংঘ কর্মীদের শপথ নিয়েছেন। এভাবে জমিয়ত যুবসংঘ একই সাথে থেকে মাযহাব ও ইকামতে দ্বীনের বিরোধীতা করে। তারা এখানেও ঐক্য ধরে রাখতে পারেনি। ১৯৮৯ সালের ২১ জুলাই জমিয়ত যুবসংঘ এর সাথে সম্পর্কহীনতা ঘোষণা করে এবং ১৯৮৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর জমিয়ত 'জমিয়তে শুব্বানে আহলেহাদীস' নামে যুবসংঘ গঠন করে। 

      মাযহাব ও ইকামতে দ্বীনের বিরোধীতা এবং মাদখালী মতবাদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য ড. আসাদুল্লাহ আল-গালিব সাহেব আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ ও মুযাফফর বিন মুহসীনগণদের নিয়ে ১৯৯৪ সালে ২৩শে সেপ্টেম্বর 'আহলে হাদীছ আন্দোলন' প্রতিষ্ঠা করে আমীরের আসন দখল করেন এবং অঙ্গ সংগঠন হিসাবে থাকে 'আহলে হাদীছ যুবসংঘ'। এ যুবসংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন মুযাফফর বিন মুহসীন। মজার ব্যাপার হল, মাযহাব ও ইকামতে দ্বীনের বিরোধীতা এবং অর্থ ও নেতৃত্বের কারণে ড. গালিবও অন্য আহলে হাদীসের শায়েখদের মত তার দলের ভাঙ্গন রক্ষা করতে পারেননি। ২০০৯ সালের তার দল থেকে কিছু আহলে হাদীস বের হয়ে' আহলে হাদীস জামা'আত' ও 'আহলে হাদীস ছাত্রসমাজ' গঠন করেন। এখানে আহলে হাদীস ভাঙ্গনের খেলা শেষ নয়।
  
    সাম্প্রতিক মুযাফফর সাব 'আহলে হাদীস আন্দোলন' ও যুবসংঘ ত্যাগ করে 'আহলে হাদীস তাবলীগে ইসলাম' সংগঠনে যোগ দিয়ে আমীরের আসন দখল করেছেন। আর আঃ রাজ্জাক ও তার ছেলে তো বহু দিন পূর্বে ড. গালিবের দল ত্যাগ করে তারা নারায়নগঞ্জে 'জামিয়া আস সালাফিয়া' নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন। ড. গালিব এখান 'আহলে হাদীস আন্দোলন' এর আমীর আর তার ছেলে 'আহলে হাদীস যুবসংঘ' এর সভাপতি। 

   'আহলেহাদীছ আন্দোলন' প্রতিষ্ঠা করার পর থেকে ড. গালিব, আঃ রাজ্জাক ও মুযাফফরগণ ঐক্যবদ্ধভাবে খারেজীদের মতো নিজেদের একমাত্র জান্নাতী ফিরকা আর বাকি সকল মুসলিমদের জাহান্নামী ফিরকা বলে ফতোয়া প্রসব করে এবং তীব্রভাবে মাযহাব ও ইকামতে দ্বীনের বিরোধীতা করতে শুরু করে। তবে তারা সকল মাযহাবের মধ্যে যেমন সবচেয়ে বেশি হানাফী মাযহাবের সমালোচনা ও বিরোধীতা করে তেমনি সকল ইসলামী সংগঠনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি 'জামায়াতে ইসলামী' এবং তাবলিগ ও কওমি ওলামায়ে কেরামের সমালোচনা ও বিরোধিতা করে। একেই তারা সবচেয়ে বড় নেকীর কাজ বলে মনে করে। তাদের নিকট জামায়াতের অপরাধ(?) 'জামায়াতে ইসলামী' আল্লাহ জমিন থেকে কুফুরী বিধান অপসরণ করে 'ইকামতে দ্বীন' এর নামে ইসলামের যাবতীয় হুকুম-আহকাম, বিধি-বিধান ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র তথা মানব জীবনের সর্বক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করতে চায়। এ জন্য জামায়াতের বিরুদ্ধে তারা সর্বশক্তি ব্যয় করে। তারা যত বই রচনা করেছে তার ৯০% মাযহাব ও জামায়াতের বিরুদ্ধে লিখা। কারণ তারা চায়, মানুষ মাযহাবের ইমামদের বর্জন করে তাদের তাকলিদ করুক আর আল্লাহর আইন ত্যাগ করে তাদের প্রভূদের বানানো আইন মেনে চলুক। তাই তারা ইকামতে দ্বীনের কাজকে 'ক্ষমতা দখল' বলে ব্যঙ্গ করে। আর নিজেরা তাগুতের পদলেহন করে যাচ্ছে। তাদের কাছে দীন মানে কিছু মতপার্থক্যপূর্ণ মাসআলার ক্ষেত্রে হানাফিদের বিরোধিতা করা। এই দেশে যেসব বিষয় নিয়ে মতবিরোধ ছিল না, সেসব বিষয় সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দিয়ে নিকৃষ্ট কাজ করেছে। তারা নিজেরা বিভিন্ন দল উপদলে বিভক্ত। এবং একেকজনে একেকরকম ফতোয়া দেয়, তার নজিরও অনেক। 

     আহলে হাদিসের বিবেকবান ভাইদের বলব, আপনারা প্রকৃত সালাফি হোন। চার ইমামের মাঝে ইমাম আবু হানিফা রহ. সকলের আগে। আপনারা কথায় কথায় ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. ইমাম ইবনুল কাইয়িম রহ. এর কথা বলেন। তারা কত হিজরির? ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল, ইমাম মুহাম্মদ, ইমাম আবু ইউসুফ, ইমাম মালেক রহ. সহ অসংখ্য সালাফদের বাদ দিয়ে মাত্র ৩/৪ জন ইমামের অনুসরণ করা কতটুকু যৌক্তিক? 

  সাহাবায়ে কেরামের মাঝেও মতপার্থক্য ছিল। কেউ কেউ বলেন, মিরাজ ছিল স্বপ্নে, কেউ বলেন জাগ্রত অবস্থায় হয়েছে। মৃতব্যক্তি কবরে শুনতে পায় কিনা, এসব বিষয়ে বড় বড় সাহাবিদের মধ্যে মতপার্থক্য হয়েছে। মতপার্থক্য খুবই স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু আপনাদের শায়খগণ যেভাবে অন্য মতকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন, তা কতটুকু বিবেকসম্মত? 

তানজীল ইসলাম (জয়পুরহাট)
লেখাটি ঈষৎ সম্পাদিত

Post a Comment

0 Comments