মরুভূমির হাতছানি...
পর্ব-৩২;
---------------------------------
♥♥ হজ্জ ভ্রমণ '১৭;
♦আরাফাতের ময়দানে ----পূর্বেই বলেছি আমরা প্রথমে প্রিয় নবীর প্রিয় নগরী মদীনা আল মুনাওয়ারায় চলে যাই । সেখানে আট দিন অবস্থানের পর মক্কা আল মুকাররামায় চলে আসি ।
মক্কায় হোটেলে অবস্থানকালীন সময়ে হজ্জের আগে আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে । যেখানে প্রথম মানব এবং প্রথম নবী হযরত আদম (আঃ) ও হযরত হাওয়া (আঃ) এর দেখা বা পরিচয় হয়েছিল। মূলতঃ এ কারণেই এ স্থানটিকে আরাফা বা পরিচয়ের স্থান হিসেবে ডাকা হয় ।
উল্লেখ্য যে মহান আল্লাহর হুকুমে জান্নাত থেকে যখন প্রথম মানব মানবীকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেয়া হয় তখন হযরত আদম (আ) কে নামিয়ে দেয়া হলো সিংহল তথা শ্রীলংকার এক গভীর অরণ্যাবৃত পাহাড়ের মধ্যে । আর হযরত হাওয়া (আঃ) কে নামানে হলো জেদ্দায় ।
দুজনেই আসবেন এই অারাফাতে । এজন্য আদম সফিউল্লাহ (আ) কে অতিক্রম করতে হবে কয়েক হাজার মাইল । আর হযরত হাওয়া (আঃ) কে পাড়ি দিতে হবে মাত্র সত্তর মাইল ।
হযরত আদম (আ) গভীর জঙ্গলাকীর্ণ পাহাড়ের চূড়ায় ক্বিবলামুখী হয়ে ভয় বিহ্বলতার সাথে রব্বকে ডাকতে থাকেন শত শত বছর ধরে । অতঃপর মহান আল্লাহ তাঁর আপন করুনায় পথ নির্দেশনা দান করেন ।
এবং এখানে এসে আমাদের আদি পিতা-মাতা পরস্পর সাক্ষাৎ লাভ করেন ।
কোন কোন মনিষী বলেন,হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কা'বা ঘর নির্মাণের পর হযরত জিব্রাঈল (আঃ) সালাম আমাদের জাতির পিতা ইব্রাহিম আঃ) কে যখন হজ্জের অাহকাম শিক্ষা দেন তখন তারা এই জায়গায় উপস্থিত ছিলেন । জিব্রাঈল (আঃ) হজ্জের বিধান শিক্ষা দিয়ে ইব্রাহিম নবী (আঃ) কে জিজ্ঞেস করেন ''লিমা অারাফতা'' আপনি কি বুঝতে পেরেছেন? । সেই থেকে এই জায়গার নাম হয়েছে আরাফাত ।
আরাফাতের ময়দান পবিত্র মক্কা নগরী থেকে ১৩-১৪ কিলোমিটার পূর্বে জাবালে রহমতের পাদদেশে হেরেমের সীমানার বাইরে অবস্থিত।
তার পাশ ঘেষে চলে গেছে মক্কা-অালহাদা মাউন্টেইন-তায়েফ রিংরোড ।
পবিত্র এই ভূমিতে মুসলিম মিল্লাতের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ সম্মিলন ঘটে । জিলহজ্জ মাসের নয় তারিখ এই আরাফাতের ময়দানে সারা দুনিয়ার হাজীরা একত্রিত হয়ে লাব্বায়িক ধ্বনিতে মুখরিত করে তোলেন আকাশ,বাতাস । হজ্জের দিন এই ময়দানে অবস্থান করাকেই হজ্জ বলে অভিহিত করা হয়েছে ।
আরাফাতের বিস্তীর্ণ সমতল প্রান্তরের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে অাছে দৃষ্টিনন্দন পাথুরে পাহাড় ''জাবালে রাহমাত''।
এই জাবালে রাহমাতের উঁচুতে অারোহন করে রাহমাতের নবী (স) বিদায় হজ্জের ভাষণ দিয়েছিলেন ।
এখানেই কোরআন মাজিদের আয়াত নাজিল হয় ''আল ইয়াওমা আকমালতু লাকুম দ্বিনাকুম ওয়া আতমামতু আলাইকুম নি'মাতি ওযারাদিতু লাকুমুল ইসলামা দ্বিনা'' অর্থাৎ, 'আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। '
---
আজও বিশ্বনবীসহ (স) অসংখ্য নবী রাসূলের স্মৃতিকে শ্রদ্ধায় ধারন করে আছে আরাফাতের ময়দান । অবিকৃত রয়ে গেছে জাবালে রহমতের চূড়া ।
♦অপেক্ষায় থাকুন পরবর্তী পর্বের জন্য।
1 Comments
মা শা আল্লাহ
ReplyDeleteআগামী পর্বেরজন্য অপেক্ষায় রইলাম