Recent Tube

কি ছিল সেই দলিলে? ইবনে যুবাইর।

 



          কি ছিল সেই দলিলে?

চীনের সঙ্গে বাণ্যিজ্য সম্পর্ক জোট সরকারের সময়ে বৃদ্ধি পেয়েছিল কিন্ত ২০০৪ সাল নাগাদ চায়নার হাতে বিএনপির বিরুদ্ধে একটি ভুয়া দলিল তুলে দেয় আওয়ামী লীগ।এতে করে বিএনপির প্রতি যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয় চায়না।

    বিএনপির অহংজ্ঞান না কি ভুল রাজনীতির খেসারত জাতি দিয়ে যাচ্ছে  এই নিয়ে আলোচনা সমালোচনা থাকলেও বিএনপি কর্ণধারগণ সেটা নিয়ে কি ভাবছেন এই নিয়ে রহস্য থেকে যেতেই পারছে।পরিবারপতির ভুলে পরিবারের ক্ষতি যেমন ত্বরান্বিত হয় একই কথা সমাজ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য।তবে ভুল থেকে শিক্ষা নেয়াটায় বুদ্ধিমানের কাজ। যারা ভুল থেকে শিক্ষা নেয় না তারা পরিবার, দেশ জাতির জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়।

   ২০০৪ সালের জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশে তাইওয়ানের কনসুল খোলার অনুমতি দিয়েছিল বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ড। এই বোর্ডের আইনের অধীনে নিবন্ধিত নতুন বাণিজ্য প্রতিনিধিত্বমূলক অফিসের মাধ্যমে ম্যান পাওয়ার আমদানি করার সুযোগ পায় তাইওয়ান। 

   ওই সময় পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন শমসের মবিন চৌধুরী। তাইওয়ানকে কনসুল খোলার অনুমতি দেয়ার বিষয়ে গনমাধ্যম কর্মীরদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাইওয়ানে কনসুল চালুর পেছনে বিনিয়োগ বোর্ডের ভূমিকা ছিল। এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিনিয়োগ বোর্ড। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ছিলেন বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান।
তাইওয়ানের কনসুৃল চালুর ব্যাপারে গণমাধ্যম কর্মীরা মাহমুদুর রহমানকে প্রশ্ন করলে তিনি এটাকে বিএনপির ব্যাপার বলে এ ব্যাপারে কোন মন্ততব্য করতে রাজি হননি।

   তবে মাহমুদুর রহমান ওই সময় গণমাধ্যমে কিছু কথা বলেছেন। ২০০৪ সালের ১১ মার্চ ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘বিওআই’র (বিনিয়োগ বোর্ড) নির্বাহী চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, এটা বাণিজ্য সুযোগ সুবিধা ত্বরান্বিত করার অফিস, কূটনীতির সঙ্গে এর কোনও যোগসূত্র  নেই। এক-চীন নীতি থেকে বাংলাদেশের সরে যাওয়ার কোনও ইঙ্গিত এটা নয়। আমি মনে করি না  চীনের উদ্বেগের কোনও কারণ রয়েছে যে বাংলাদেশ নিজেদের পররাষ্ট্র নীতি পাল্টেছে।’’

    ওই সময়ের সংবাদপত্রের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই সময় তাইওয়ানকে বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র খোলার অনুমতি দেওয়া হলেও দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও কূটনীতিক সম্পর্ক নেই। ফলে, কূটনৈতিক সম্পর্ক ছাড়া কোনও দেশকে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র খোলার অনুমতির দেওয়ার ঘটনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কী ভূমিকা ছিল–এটা ওই সময় খোলাসা হয়নি।

   বিএনপি নেতৃত্বাধীন সাবেক জোট সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন এম মোর্শেদ খান। তাইওয়ানের কনসুৃল চালুল ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোর্শেদ খান গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন ‘আমি এ ব্যাপারে অনেক পরে জানতে পারি।’

    কিন্তু সেটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হয়েছিল কী না, এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। কিন্তু তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে আমি বিরোধিতা করেছিলাম।’তিনি বলেন,‘আমার অবস্থান খুব পরিষ্কার ছিল, আমরা আমাদের পরীক্ষিত বন্ধুকে বিরক্ত করতে চাই না।’

    বিনিয়োগ বোর্ডের সদস্য ছিলেন তৎকালীন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু।তাইওয়ানের কনসুল চালুর ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজ হননি।

  ২০১৬ সালে বিনিয়োগ বোর্ড ও প্রাইভেটাইজেশন কমিশন একীভূত করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। বিএনপি-জোট সরকারের সময়ে বেসরকারিকরণ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন ইনাম আহমেদ চৌধুরী। 

     তিনি বিএনপির ফরেইন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে ২০১৫ সাল থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৮ সালের নির্বাচনের আগে তিনি পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
তিনি জানান, তাইওয়ানের কনসুল খোলা যতদূর মনে হয়, ঘটা করে করা হয়নি’।

      বিনিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে তাইওয়ানের কনসুল খোলা হলেও দায় দেওয়া হয়েছে বিএনপির সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদের ওপর। যদিও তাকে পদত্যাগ করতে হয়েছে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের কারণে। 

   ২০০৪ সালের ১১ মার্চ ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অভিযোগ আছে, আমির খসরু পদত্যাগ করেছিলেন একটি সিন্ডিকেটকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য অতিমাত্রায় বৃদ্ধির সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠার জন্য। আর তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বও আরেকটি কারণ বলে মনে করা হয়।’

     কিন্তু বিএনপিতে আলোচনা আছে আমীর খসরুর কারণে কনসুল খোলা হয়েছিল। এমন কি বিএনপির ফরেইন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্যদের অনেকেই বলছেন, তিনি দায়ী।  অথচ সেই সমস্যার পেছনে আমীর খসরুর অবদান সম্পর্কে কোনও তথ্যই নেই কারও কাছে।

   আমীর খসরু ২০০৪ সালে বাণিজ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলে ওই পদে আসেন এয়ার ভাইস মার্শাল অব. আলতাফ হোসেন চৌধুরী। তাইওয়ানের কনসুৃল চালুর ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা হলে গনমাধ্যম কর্মীদের তিনি বলেন, ‘ওই সব নিয়ে কোনও আইডিয়া নেই। চীনের সঙ্গে বাণ্যিজ্য সম্পর্ক জোট সরকারের সময়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।'

   ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এই কনসুল বন্ধ করে দেয়। এই গেল বাইরের খবর। ভিতরে কি ঘেটেছিল?
২০০৪ সাল নাগাদ বিএনপির বিরুদ্ধে একটি ভুয়া দলিল তুলে দেয় আওয়ামী লীগ।
এতে করে বিএনপির প্রতি যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয় চায়না।
কি ছিল সেই দলিলে?
---------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments