Recent Tube

তালেবান বর্বরোচিত একটি জাতি। বিশ্বের পরাশক্তিগুলো তাদের উত্থান নিয়ে শঙ্কিত।কেন? ইবনে যুবাইর।





 
 তালেবান বর্বরোচিত একটি জাতি। বিশ্বের পরাশক্তিগুলো তাদের উত্থান নিয়ে শঙ্কিত 
কেন?

    তালেবানকে মধ্য এশিয়ার জন্য বড় হুমকি হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কেন হচ্ছে সেই বয়ানে আসা যাক।

     আগস্ট ১১-২০২১ মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের একটি পর্যালোচনায় জানানো হয়েছে, 'আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল ৯০ দিনের মধ্যে তালেবান গোষ্ঠীর হাতে পতন হতে পারে।' 

   এই আশঙ্কার কথা প্রকাশ করা হল তখন,যখন শুধুমাত্র গত শুক্রবার থেকে ৯টি প্রাদেশিক রাজধানী; ফৈজাবাদ, ফারাহ, পুল-ই- খুমরি, সার-ই-পুল, শেবেরগান, আয়বাক, কুন্দুজ, তালুকান ও জারাঞ্জ এর নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান যোদ্ধারা।

   আগস্ট ১৩-২০২১ গজনি দখল নিয়েছে তালিবান বাহিনী।পতন ঠেকাতে এবার তালেবানকে ক্ষমতার ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ গনির সরকার।

   এদিকে আগস্ট ১২,২০২১ পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তালেবানের দায়িত্বশীল সূত্রের বরাত দিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন,'ঘানি যতদিন প্রেসিডেন্ট ততদিন তালেবান আলোচনায় বসবে না।'

    ইমরান খানের কথায় বোঝা যায় ,তালেবান গনির সরকারকে ভারত ও ন্যাটোর পুতুল সরকার বলেই জ্ঞান করে এবং গনি সরকার ভারত ও ন্যাটোর পুতুল সরকার এটা গোপন কোন বিষয় নয়। 

    ভারত পশ্চিমাদের মুৃখপাত্র সেজে তালেবানদেরকে সন্ত্রাসী,ইসলামী জঙ্গি,বর্বর গোষ্ঠী বলে দুই দশকধরে প্রচার প্রচরণা চালিয়ে আসে এবং জঙ্গি উৎখাতে গানি সরকারকে পরোক্ষ প্রত্যক্ষ মদদ দিলেও- জুন ১০,২০২১ তাদের উক্ত বয়ান থেকে সরে এসে অবশেষে প্রথম তালেবানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে এবং মুচেলকা দিয়েও হলেও তালেবানদের সাথে আলোচনার জন্য ভারত এক পায়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে।

    আরও মজার বিষয় হলো,আজ শুক্রবার আফগান সরকারকে তালেবানের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউ-এর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন।এ খবর দিয়েছে  আল জাজিরা।
তালেবানের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগির জন্য এই আলোচনা মানে প্রাশ্চাত্য সভ্যতার চোখে আপাতত তারাএখন আর জঙ্গি নয়,সভ্য জাতি গোষ্ঠী।  

    জোসেফ বোরেল আরও বলেন,' আফগানিস্তানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের অব্যাহত সহায়তার চাবিকাঠি হচ্ছে বিদ্যমান সংকটের একটি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধান। এর পাশাপাশি নারী, সংখ্যালঘু নির্বিশেষে সব আফগানদের মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।
'নারী'-'সংখ্যালঘু'- 'সব আফগানদের মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে"-এই শব্দগুলো দিয়ে জোসেফ বোরেল পাশ্চাত্য সভ্যতা বনাম ইসলামের দ্বন্দ্বকে সুকৌশলে সামনে আনতে চেয়েছেন।আরও সহজ করে বললে তালেবান তাদের সমস্যা নয় মূল সমস্যা হচ্ছে ইসলাম।

     বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের সাথে খ্রিস্টানদের দ্বন্দ্ব বা যুদ্ধ একুশ শতকের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে এ ধরনের একটি আভাস ওয়াশিংটন দিয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। হান্টিংটন ১৯৯৩ সালে মার্কিন ফরেন এফেয়ার্স জার্নালে একটি প্রবন্ধ লিখেন , পরবর্তীতে যা তিনি আরো সুসংবদ্ধ আকারে বই হিসেবে প্রকাশ করেন(The Clash of Civilisations and the Remarking of the World Orders).
ইহুদী পন্ডিত শ্যামুয়েল হান্টিংটন “সভ্যতার সংঘাত” নামক  বইটিতে তিনি পাশ্চত্য সভ্যতার অস্তিত্ত্বের জন্য ইসলামকে হুমকি হিসাবে উপস্থাপন করেন এবং এ হুমকি মোকাবেলায় পাশ্চাত্য বিশ্বকে ইসলাম নির্মূলের অভিযানে নামার  পরামর্শ দেন।

    এরই পেক্ষিতে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনাবলির পর প্রেসিডেন্ট বুশ এজন্য আফগানিস্তানে আশ্রয়গ্রহণকারী ওসামা বিন লাদেন ও তার আল কায়দাকে দোষী সাব্যস্ত করে সে দেশটির উপর হামলা শুরু করে।

   যেহেতু আশরাফ গনির মত অসংখ্য পশ্চিমা গোলাম  পাশ্চাত্য সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে ইসলামের সাথে সরাসরি যুদ্ধে নেমেছে,যেহেতু তালেবান একটি ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে ২০ বছর লড়ে যাচ্ছে এবং বিজয় যখন তাদের দ্বারে কড়া নাড়ছে তখন পশ্চিমা মদদপৃষ্ট গনিদের সাথে তালেবান যোদ্ধারা আলোচনার টেবিলে বসে আফগানে মরে যাওয়া পাশ্চাত্য সভ্যতাকে আবার তারা অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে কি না সেটা দেখার জন্য আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।
--------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments