Recent Tube

একটু ভাবেন প্লিজ? ইমাম নূরুর রহমান।


  
                  একটু ভাবেন প্লিজ? 

‎رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا 
عَذَابَ النَّارِ

আজ থেকে ২০০ বছর পর আমার বাড়িতে, আমার ঘরে যারা বসবাস করবে, যারা আমার জায়গা জমি ভোগ করবে আমি তাদের ছিনিনা। 
তারাও আমাকে ছিনবেনা।
কারন তাদের জন্মের অনেক আগেই আমি কবরবাসি হয়ে যাব।
আর ততদিন মুছে যাবে আমার নাম নিশানা। 
কবরটাও নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
আমার সন্তানরা যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন তারা হয়ত মনে পড়লে দীর্ঘ নিশ্বাস পেলবে!

কিন্তু তাদের মৃত্যুর পর তাদের সন্তানরা তাদের যতটুকু মিস করবে আমাকে ততটুকু মিস করবে না।
হয়ত বাবার কবর জিয়ারত করে দোয়া করার সময় দাদার জন্যও একটু করবে।
কিন্তু তার পরের প্রজন্ম আর মনে রাখবেনা।

প্রায় ২০০ বছর আগে মারা গেছে আমার দাদার দাদা।
যিনি আমার পূর্ব পুরুষদের জন্য ঘর বাড়ি, জায়গা জমি রেখে গেছেন। একিই বাড়ি, একিই জায়গা জমি আমরা এখন ভোগ করছি।
কিন্তু উনার কবরটা কোথায় সেটা আমরা জানিনা।
হয়ত আমার দাদার পিতা জানতেন।
কিন্তু দাদার পিতা তো বেঁচে নেই, দাদাও বেঁচে নেই।

আর এমন সময় প্রায় ২০০ বছর পর আল্লাহর হুকুমে উনি একদিন কবর থেকে জীবিত হয়ে নিজের বাড়িতে এসে দাবী করলেন যে এই বাড়ি এই জায়গা জমি সব আমার।
পরিচয় দিয়ে বললেন আমি অমুক, এই বাড়িতে আমার সন্তানদের রেখে গিয়েছিলাম। 
তোমরা কারা?
আমার বাড়ি ঘর ছেড়ে দাও।

তখন হয়ত আমরা সোজা উত্তর দিব আপনাকে তো চিনিনা, নামও শুনিনি কোনদিন!

কিন্তু দেশে যদি আইন থাকে যে কোন কারনে মৃত ব্যক্তি যদি আল্লাহর হুকুমে জীবিত হয়ে এসে তার রেখে যাওয়া জায়গা জমি দাবী করে তাহলে তার জায়গা জমি ফেরত দিতে হবে।

তাহলে জায়গা জমি ছাড়বোই না বরং পুরো গুষ্টি শুদ্ধ একত্রিত হয়ে ঐ ব্যাক্তিকে পিটিয়ে বের করে দিব। 
এর পর শুরু হবে মামলা মকদ্দমা।

কাকে পিটাব?
যিনি আমার পূর্ব পুরুষদের জন্ম দিয়ে লালনপালন করে নিজের তীল তীল করে গড়া জায়গা জমি দিয়ে গিয়েছিলেন তাকে!

এখন হয়ত ভাবছেন আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে? অথবা মেয়াদ উত্তীর্ণ গাজা খেয়ে লিখছি?  
তা না হলে ২০০ বছর আগের মৃত মানুষ কি করে জীবিত হয়ে সম্পত্তির দাবী করবে?

না, জীবিত হয়ে আপনার সম্পত্তি দাবী করার কোন সম্ভবনা নেই।
নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন। 

তবে সাত পাঁচ করে যে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সেটা কবরে নিয়ে যেতে পারবেননা।
আর যাদের জন্য রেখে যাচ্ছেন তারা ও আপনাকে মনে রাখবেনা এটা নিশ্চিত!

অন্যের সম্পত্তি জবর দখল করে ভাবছেন আপনি জিতে গেছেন?
সুদ, ঘুষ, কমিশন বাণিজ্য করে সম্পদের পাহাড় গড়ে ভাবছেন আপনি জিতে গেছেন?
তাহলে আপনি আস্ত একটা বোকা !
এই শব্দটা ব্যবহার করার জন্য স্যরি!
ক্ষমা করবেন।
আমাদের সময় খুব কম! তাই এই সুদ, ঘুষ ,দুর্নীতি ক্ষমতার অপব্যবহার , সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ ইত্যাদি । কোন লাভ নেই ভাইজান ।। সময় থাকা কালীন ভালো হয়ে কবরের খোরাক সংগ্রহ করুন ঐটাই বুদ্ধিমানের কাজ।। আসুন নিজেকে  সৎ মানুষ হিসেবে তৈরি করি পরকালের জন্য পূর্ণতা সন্ধয় করি।। ঐটাই  আপনার জন্য প্রকৃত সম্পদ।। 
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে ক্ষমা করে দাও। আমিন 
——
পৃথিবীতে কেউ চিরস্থায়ী নয়। সবাইকে চলে যেতে হয়।

যাওয়ার সময় কেউ সঙ্গে যাবে না। যাবে শুধু নিজের কৃত আমল।

কিয়ামতের দিন কঠিন সময়ে তারাই মুক্তি ও সফলকাম হবে যাদের সৎ আমলের পাল্লা ভারি হবে। আর মৃত্যুর পরও সৎ আমলের পাল্লা ভারি হতে পারে একমাত্র সদকায়ে জারিয়ার মাধ্যমে।

হাদিসে বর্ণিত আছে, মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার আমলের সব দরজা বন্ধ হয়ে যায়, শুধু তিনটি আমল চালু থাকে। ক. সদকায়ে জারিয়া, খ. ইলম, যার দ্বারা মানুষের উপকার হয় ও গ. সুসন্তান, যে পিতামাতার জন্য দোয়া করে।

-সহিহ মুসলিম শরিফ

সদকায়ে জারিয়া আরবি শব্দ। সদকা শব্দের অর্থ দান করা এবং জারিয়া অর্থ প্রবহমান, সদাস্থায়ী প্রভৃতি। সদকায়ে জারিয়া হলো- এমন দান যার কার্যকারিতা কখনো শেষ হবে না এবং তা কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। অর্থাৎ এই পৃথিবী যত দিন থাকবে তত দিন পর্যন্ত কবরে শুয়ে শুয়ে সদকাকারী ব্যক্তি এর সওয়াব পেতেই থাকবে। বিধায় প্রত্যেক মুসলমানের উচিত সদকায়ে জারিয়ার আমলের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখা। তবে দান কাউকে দেখানোর উদ্দেশ্যে নয় বরং শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের নিয়তে করতে হবে।
সদকায়ে জারিয়া সম্পর্কে অনেক হাদিস রয়েছে। যেমন হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, একজন মুমিন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার আমলনামায় যা থেকে নেকি যোগ হবে তা হলো- যদি সে শিক্ষা অর্জনের পর তা অপরকে শিক্ষা দেয় ও প্রচার করে, অথবা সৎ সন্তান রেখে যায়, অথবা ভালো বই রেখে যায়, অথবা মসজিদ নির্মাণ করে দেয়, অথবা মুসাফিরের জন্য সরাইখানা নির্মাণ করে, অথবা নদী খনন করে দেয় অথবা জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য সম্পদ থেকে সদকা করে। ’ -সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৪২
সদকায়ে জারিয়ার কাজগুলো এমন হতে পারে-
১. রক্ত দান করার মাধ্যমে। 
২. এতিমের লালন-পালনের দায়িত্ব নেওয়া। 
৩. মসজিদ নির্মাণ কিংবা মসজিদের প্রয়োজনীয় আসবারের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা। 
৪. প্রয়োজনীয় এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেওয়া।
৫. কোরআন শিক্ষা দেওয়া বা কোরআন শিক্ষা ব্যবস্থাপ করে দেওয়া। 
৬. অসহায়-দুঃস্থ মানুষের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থায় হাসপাতাল নির্মাণ কিংবা চিকিৎসা সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেওয়া।
৭. কবরস্থানের জন্য জমি দান করা কিংবা জমি ক্রয়ে আর্থিক সহায়তা করা। মৃতদের সৎকারের খরচ জোগানো কিংবা বহনের জন্য এ্যাম্বুলেন্স ক্রয়ে সাহায্য করা। 
৮. মুসলমানদের কল্যাণে আসে এমন ইসলামি বই-তাফসির, হাদিস, ফিকাহ শাস্ত্রের বই-পুস্তক মুদ্রণ কিংবা বিতরণে সহায়তা করা। 
৯. অত্যাচারিত মুসলমান সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়ানো।
--------------------------------- 

Post a Comment

0 Comments