Recent Tube

শায়েখদের অভিশাপ Vs জামায়াতের উপর জুলম-নির্যাতন: মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।




  
  শায়েদের অভিশাপ 
                VS
  জামায়াতের উপর    
  জুলম-নির্যাতন:
-------------------------------------- 

   রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নবুওয়্যাতের প্রাথমিক পর্যায়ে দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করে দ্বীনের উপর অবিচল থাকার অপরাধে(?) আরবের কাফির নেতারা দুর্বল মুসলিমদের উপর অন্যায়-অত্যাচার ও জুলম-নির্যাতন চালাতো। কাফির নেতাদের অনুসারীরা মনে করত, আমাদের দেবদেবীর অভিশাপে তারা আজ জুলম-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। একই ভাবে দ্বীনের উপর অটল থেকে দ্বীন প্রচার ও প্রতিষ্ঠার কাজ করার অপরাধে(?) জামায়াতের নেতা কর্মী জালিমদের দ্বারা অকথ্য জুলম-নির্যাতন শিকার হলে, গুম-খুন ও কারাগারে জীবন কাটালে এমনকি বিনাদোষে ফাঁসি দেওয়া হলে; এক শ্রেণীর শায়েখদের অন্ধভক্তরা মনে করছে, আমাদের শায়েখদের অভিশাপে জামায়াত ধ্বংস হচ্ছে। তা না হলে, আমাদের শায়েখরা এসি রুমে বসে আরমে দিন কাটাচ্ছেন আর তারা জুলম-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে কেন?

    এর কারণ হল- মাদখালী শায়েখরা আল্লাহর দ্বীন ততটুকু পালন ও প্রচার করেই সন্তুষ্ট থাকে যতটুকু বাতিলশক্তি সুযোগ দেয়। ফলে বাতিলশক্তির সাথে এসব শায়েখদের কোন টক্কর বা সংঘর্ষ হয় না। আর বাতিলশক্তি ততটুক দ্বীন পালনের সুযোগ দেয়, যতটুকুতে তাদের স্বার্থে আঘাত না লাগে। যেমন, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭' এর ২য় ধারাতে বলা হয়েছে, "এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য কোন আইন যদি এই সংবিধানের সহিত অসামঞ্জস্য হয়, তাহা হইলে সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইবে।" ('বাংলাদেশের সংবিধান ও সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা' চতুর্দশ সংশোধনী পরবর্তী প্রকাশিত, এম এ সালাম রচিত, কালার সিটি কর্তৃক মুদ্রিত, পৃঃ৯) 
এ দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, বাতিলশক্তি আল্লাহর দ্বীন ততটুকু সমর্থন করে যতটুকু তাদের রচিত মতবাদের সাথে সামঞ্জস্য হয়। বাতিল সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা পরিপূর্ণ ইসলামকে কখনও সহ্য করতে রাযী না। তাই যারা পরিপূর্ণ দ্বীন ইসলাম পালন ও প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাদের উপর বাতিলশক্তি অকথ্য জুলম-নির্যাতন চালায় এবং তাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করে থাকে। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন,
وَلَا يَزَالُونَ يُقَاتِلُونَكُمْ حَتَّىٰ يَرُدُّوكُمْ عَنْ دِينِكُمْ إِنِ اسْتَطَاعُوا.
"তারা তোমাদের সাথে লড়াই করতে থাকবে, যতক্ষণ না তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন থেকে ফিরিয়ে দেয়, যদি তারা সক্ষম হয়।" (সূরা বাকারাঃ ২/২১৭)

   আর বাতিলশক্তি যদি কোনো ব্যক্তি বা দলের বিরোধীতা না করে বরং সন্তুষ্ট থাকে তাহলে বুঝতে হবে সে ব্যক্তি/দল পূর্ণাঙ্গ দ্বীনের উপর অটল নেই। জান্নাতে প্রবেশ করাও তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আল্লাহ তা'য়ালা বলেন,
أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَأْتِكُمْ مَثَلُ الَّذِينَ خَلَوْا مِنْ قَبْلِكُمْ ۖ مَسَّتْهُمُ الْبَأْسَاءُ وَالضَّرَّاءُ وَزُلْزِلُوا حَتَّىٰ يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ مَتَىٰ نَصْرُ اللَّهِ.
"তোমরা কি মনে করেছ যে, 'তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে'? অথচ এখনো তোমাদের নিকট তাদের মত অবস্থা আসেনি, যারা তোমাদের পূর্বে বিগত হয়েছে। তাদেরকে (জালিম কর্তৃক) স্পর্শ করেছিল দুঃখ-কষ্ট ও দুর্দশা এবং তারা কম্পিত হয়েছিল। এমনকি রাসূল ও তার সাথি মুমিনগণ বলছিল, ‘আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে’? (সূরা বাকারা : ২/২১৪),

     এ আয়াত প্রমাণিত যে, দ্বীন প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্য পরিশ্রম ও মেহনত ব্যতীত এবং বিপদ-আপদে পতিত হওয়া ছাড়া কেউই জান্নাত লাভ করতে পারবে না। সুতরাং ইকামতে দ্বীনের কাজ করতে গিয়ে জালিম কর্তৃক নির্যাতিত হওয়া জান্নাতী দলের বৈশিষ্ট্য। অতএব এসি রুমে বসে নিরাপদে থেকে সেসব শায়েখ মজলুম সংগঠন জামায়াতের বিরুদ্ধে ফতোয়াবাজী করেন এবং নিজেদের জান্নাতের মালিক মনে করেন, তারা ও তাদের ভক্তবৃন্দ বিষয়টি ভেবে দেখবেন।
---------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা আলোচক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 
.

Post a Comment

0 Comments