Recent Tube

কাশ্মিরে জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে দিনভর তল্লাশি অভিযান। সম্পাদনায়: ইবনে যুবাইর।





    
 কাশ্মিরে জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়ি ও    
     প্রতিষ্ঠানে দিনভর  তল্লাশি অভিযান।

    ভারত শাসিত কাশ্মিরের ৪০টিরও বেশি জায়গায় রোববার সকাল থেকে জামায়াত-ই-ইসলামীর নেতাকর্মীদের বাসভবন ও বিভিন্ন কার্যালয়ে ব্যাপক তল্লাশি শুরু করেছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ। ওই সংস্থাটির তরফে জানানো হয়েছে, কাশ্মিরে উগ্র ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জামাতের কথিত মদতের তদন্ত করতেই এই অভিযান। তবে প্রায় আড়াই বছর আগেই কাশ্মিরে জামাতকে নিষিদ্ধ ঘোষিত করা হয়েছে। এই সংগঠনটি কাশ্মিরের কোনো নির্বাচনেও কখনো অংশ নেয়নি।

    এই পটভূমিতে বর্তমানে কাশ্মিরে জামাত-ই-ইসলামীর প্রভাব ঠিক কোথায় আর কতটা, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলের দ্বিমত আছে।

    রোববার সকাল থেকেই কাশ্মির উপত্যকার অনন্তনাগ ও শোপিয়ান এবং জম্মুর ডোডা, কিশতওয়ার, রামবান ও রাজৌরি জেলার বিভিন্ন লোকেশনে একযোগে হানা দেয় এনআইএ’র অনেকগুলো দল।

    ভারতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তদন্তে সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এই সংস্থাটির তরফে জানানো হয়, কাশ্মিরে জামাতের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন উগ্রপন্থী কার্যকলাপে সরাসরি অর্থ জোগাচ্ছেন ও মদত দিচ্ছেন। নির্দিষ্ট এই অভিযোগের ব্যাপারে তারা মাসকয়েক আগে থেকেই যে তদন্ত শুরু করেছে এই অভিযান তারই অংশ। কিন্তু ২০১৯ সালে পুলওয়ামাতে উগ্রপন্থী হামলার পরই কাশ্মিরে যে জামাত-ই-ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেটি এখনো ওই অঞ্চলে কতটা সক্রিয় বা তাদের আদৌ কতটা প্রভাব আছে?

    কাশ্মিরে জামাতের কাজ নিয়ে বহুদিন ধরে গবেষণা করেছেন ও 'কে-ফাইলস' নামে একটি অনুসন্ধানী বইও লিখেছেন বশির আসাদ। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, সংগঠন হিসেবে ততটা নয়। কিন্তু জামাত-ই-ইসলামীকে নিয়ে মূল ভয় হলো, তারা যে আদর্শ প্রচার করে।

    তিনি বলেন, কাশ্মিরে একটা আদর্শিক যুদ্ধ চলছে। আমরা সবাই জানি। ...ভারতের মূল ভূখণ্ডে জামাত-ই-ইসলামী হিন্দ কিন্তু দেশের রাজনীতির মূল ধারায় মিশে গেছে। কিন্তু মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মিরে বাস্তবতা আলাদা। কাশ্মিরের তরুণদের ওপর জামাতের প্রভাব যে বিশাল, এই সত্যিটা আসলে মেনে নেয়াই ভালো।

   বশির আসাদ জানাচ্ছেন, কাশ্মির ভ্যালিতেই জামাতের পরিচালিত স্কুলের সংখ্যা ১০ হাজার দু’শ’রও বেশি। যে সব দুর্গম জায়গায় সরকারি স্কুলের অস্তিত্ত্ব নেই, সেখানেও জামাতের স্কুল আছে। এগুলো মাদরাসা ধাঁচের নয়। বরং সব ধরনের আধুনিক সুযোগ সু্বিধা-সম্পন্ন এসব স্কুল। ফলে সরকারি কর্মকর্তা বা আমলারাও তাদের ছেলেমেয়েদের এই সব স্কুলে পাঠাতে পছন্দ করেন।

   কাশ্মির ইউনিভার্সিটির প্রবীণ অধ্যাপক ও অ্যাক্টিভিস্ট হামিদা বানো মনে করেন, কাশ্মিরে জামাত-ই-ইসলামীর প্রভাবকে একটু বেশিই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছে। প্রফেসর হামিদা বানো বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় রাষ্ট্র জামাতের ক্ষমতাকে অতিরঞ্জিত করে দেখাতে চাইছে, যাতে তাদের নেতাকর্মীদের বদনাম করে মেরে ফেলা সহজ হয়।

    তিনি বলেন, জামাতের নেতাকর্মীদেরকে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী একে একে হত্যা করছে। আমি তো বলব, কাশ্মিরে জামাতের রাজনৈতিক অস্তিত্ত্বই এখন বিপন্ন।

    বিশেষ স্বীকৃতি বাতিলের দু’বছর পরও কাশ্মির জুড়ে সমাজকর্মী, রাজনীতিবিদ বা অ্যাক্টিভিস্টদের বাড়িতে ও কার্যালয়ে যেভাবে হানা দেয়া হচ্ছে ও তাদের ভয় দেখানো হচ্ছে- এনআইয়ের রোববারের অভিযানকেও ওই পটভূমিতেই দেখতে চান প্রফেসর হামিদা বানো।

    এদিকে জামাতের বিরুদ্ধে দিনভর তল্লাশি চালিয়ে তারা কী পেয়েছে, এ ব্যাপারে রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এনআইএ কোনো বিবৃতি দেয়নি।
 সূত্র : বিবিসি
--------------------------------- 
সম্পাদনায় ইবনে যুবাইর। 

Post a Comment

0 Comments