Recent Tube

একটু ভাবেন প্লীজ ; মাওলানা লোকমান আহমেদ।






 

      একটু ভাবেন প্লীজ ;




 এক,
 বিয়ে,শিরনি জাতীয় অনুষ্ঠান গুলোয় সাধারণত যাওয়া হয় না ইদানিং।
কেন যেন ভেতর থেকেই দুমড়ে মুচড়ে যাই এমন জাতীয় আয়োজন গুলোয় অংশ নেওয়ার কথা চিন্তা করলেই।তবে এ বিষয়ে খোলাসা করার আগে কিছু স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করি। 

 দুই (),
 কোনো এক বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে হাবিব হোসেন সেন্টারে গিয়েছিলাম।সেখানে সাংগঠনিক পরিবেশ ছিলো বিধায় সম্মানিত অনেক দায়িত্বশীল এসেছিলেন।খাবারে বসার পর দেখলাম পাশের টেবিলে দুই যুবকের খাদ্য ভর্তি প্লেট নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।কারণ ওরা বিনা দাওয়াতে অংশগ্রহণ করেছে।অল্প কিছু বললাম আয়োজকদের।নিজের সামর্থের মধ্যে।পরে বসে পড়লাম।হতবাক হয়ে।নিজেকে অসহায় বোধ করে 

 দুই,(
 এমন অনেক বিয়ের সেন্টার আছে যেগুলোয় নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণীর লোক ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশের অধিকার রাখে না।যেমনঃকুশিয়ারা,ময়ূরকুঞ্জ,আমানউল্লাহ ইত্যাকার সেন্টার গুলোয়।তবে এমন কিছুও আছে যেগুলোয় সমাজের একটা শ্রেণীর প্রবেশের অনুমতি আছে।এবং তাও শুধু রয়ে যাওয়া উচ্ছিষ্ট খাবার সংগ্রহের।আমাদের চন্ডীপুল ফুলকলি এর সামনে বসা ভিক্ষুক মহিলাদের মই বলে ডাকতাম।দেখলাম উনাদের মধ্যে একজনকে ময়ূরকুঞ্জে উচ্ছিষ্ট খাবার সংগ্রহ করতে।কিছুক্ষন পর একজন উনাকে এসে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিলো।সাথে ছিনিয়ে নিলো উনার সংগ্রহ করা উচ্ছিষ্ট খাবার।আর ফেলো দিলো ডাস্টবিনে।শুধু চেয়ে রইলাম।আকাশস্পর্শী পার্থক্য মানুষে মানুষে।অথচ উভয়ই মানুষ।একজন ভাবতেই পারে না নিজের খাবার উচ্ছিষ্ট ছাড়া।আরেকজন সেই উচ্ছিষ্ট ছিনিয়ে নিতে দ্বিধাবোধ ও করে না। 

 তিন,
 একসময় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা এই জনপদের একজন প্রতিনিধি মনোনীত করেছিলেন।তার আগে কবুল করেছিলেন উনার দ্বীনের একজন দ্বায়ী হিসেবে।অন্তরে সেটা গেঁথে দিয়েছিলেন যে দুনিয়ার যেকোনো শ্রেণীর মানুষ মাত্রই উনার সৃষ্টি।উনি নিতান্ত ভালোবেসেই সব শ্রেণীর মানুষদের এই পৃথিবীর জন্য কবুল করেছিলেন।সব মানুষকে মানুষ হিসেবে ভালোবাসা মানে আল্লাহকেই ভালোবাসা।আর কোনো শ্রেণীর মানুষকে ঘৃণা করা নিচ হিসেবে দেখা,মানে আল্লাহকে ঘৃণা করা নিচ হিসেবে দেখা।কারণ ওদের এই দুনিয়াতে উনিই তো পাঠিয়েছেন।তাই চেয়ারম্যান হিসেবে কোনো ধনী গরীবের উপকার না মানুষের উপকার করতে চেয়েছিলাম।নিজের সামর্থের মধ্যে।এই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার দাবারের আয়োজন দোয়া পাওয়ার জন্যই তো।তাহলে যেখানে সীমাবদ্ধ দোয়ার আশা রাখেন না সেখানে খাবার খাওয়াতে কেনই বা এই সংকীর্ণতা।এই জৌলুশ মার্কা সেন্টারগুলো খোলার পেছনের কারণটা কি?এই দুনিয়ায় বেচে থাকার জন্য,ভালো থাকার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন সেগুলো উপার্জন করতেই তো।অথচ এই দুনিয়াটাই তো রবের।কিন্তু সেখানে উনার সৃষ্টি মানুষের মধ্যে সিসাঢালা প্রাচীরের মতো ভেদ।এবং তা মানুষেরই তৈরি।আজ আপনি মানুষ হিসেবে অন্য আরেক মানুষের সাথে যে নিষ্ঠুর ব্যবহার করছেন,পার্থক্যরেখা টানছেন।কাল মানুষ হিসেবে আপনার সাথে অন্য আরেকজন তদ্রুপ ব্যবহার করবে না এর নিশ্চয়তাই বা দেবে কে? আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে বোঝার তৌফিক দেন। 
---------------------------- 
লেখকঃ
লোকমান আহমেদ, 
সাবেক চেয়ারম্যান দক্ষিণ সুরমা উপজেলা, পরিষদ সিলেট।

Post a Comment

0 Comments