Recent Tube

একসাথে দুটি রোজার সওয়াব পাওয়ার উপায় ও রমজানে গর্ভবতী মায়ের রোজা রাখার বিধান:আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।







একসাথে দুটি রোজার সওয়াব পাওয়ার উপায় ও রমজানে গর্ভবতী মায়ের রোজা রাখার বিধান:
----------------------------- 
 প্রশ্ন:
 সবাই বলে যারা প্রেগন্যান্ট তাদের পেটে সন্তান থাকার কারণে রমজান মাসে এক রোজা করলে দুইটি রোজার সওয়াব পাবে-এ কথাটা ঠিক? রমজানে গর্ভবতী ও দুগ্ধ দান কারিণী মা’দের রোজা রাখার বিধান কি এবং এসময় তাদের কী করণীয়?
 
  উত্তর:
  ‘গর্ভবতী মায়েদের পেটে সন্তান থাকার কারণে রমজান মাসে এক রোজা করলে দুই রোজার সওয়াব হবে’ এমন কোন কথা হাদিস সম্মত নয়। তবে কেউ যদি আরেকজন ব্যক্তিকে ইফতার খাওয়ায় তাহলে সে সমপরিমাণ রোজার সওয়াব লাভ করবে তা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন:

  - যায়েদ ইবনে খালেদ আল-জুহানি রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে সে রোজাদারের সম পরিমাণ সওয়াব পাবে; রোজাদারের সওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না।” [সুনানে তিরমিযি (৮০৭), সুনানে ইবনে মাজাহ (১৭৪৬), ইবনে হিব্বান তাঁর সহিহ গ্রন্থে (৮/২১৬) এ এবং আলবানি তাঁর ‘সহিহ আল-জামে’ গ্রন্থ (৬৪১৫) হাদিসটিকে ‘সহিহ’ বলেছেন।

  - শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন, “রোজাদারকে ইফতার করানো দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, তাকে পেট ভরে তৃপ্ত করানো।” [আল ইখতিয়ারাত, পৃষ্ঠা-১৯]

 - সালফে সালেহিন খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী ছিলেন এবং তাঁরা এটাকে মহান ইবাদত মনে করতেন।

  রমজানে গর্ভবতী মহিলার করণীয়:

দুগ্ধlদান কারিনী ও গর্ভবতী মায়ের দুইটি অবস্থা হতে পারে:

  ১. রোজা রাখার দ্বারা তার স্বাস্থ্যের উপর কোন প্রভাব না পড়া। অর্থাৎ তার জন্য রোজা রাখাটা কষ্টকর না হওয়া এবং তার সন্তানের জন্যেও আশংকাজনক না হওয়া। এমন নারীর উপর রোজা রাখা ফরজ; তার জন্য রোজা ভাঙ্গা নাজায়েজ।

  ২. রোজা রাখলে তার নিজের স্বাস্থ্য অথবা সন্তানের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশংকা করা এবং তার জন্যে রোজা রাখাটা কষ্টকর হওয়া। এমন নারীর জন্য রোজা না-রাখা জায়েজ আছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى وَضَعَ عَنِ الْمُسَافِرِ الصَّوْمَ وَشَطْرَ الصَّلاَةِ وَعَنِ الْحَامِلِ أَوِ الْمُرْضِعِ الصَّوْمَ أَوِ الصِّيَامَ
“আল্লাহ তাআলা মুসাফিরকে রোজা থেকে এবং অর্ধেক নামাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। আর গর্ভবতী ও দুগ্ধ দান কারিণী মহিলাকেও রোজা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।"
অর্থাৎ দয়াময় আল্লাহ এ অবস্থায় মুসাফির, গর্ভবতী ও দুগ্ধ দান কারিনী নারীকে রোজা রাখার আবশ্যকতা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। 
মুসাফির পরবর্তীতে এ রোজাগুলো কাজা করবে। কিন্তু গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারী সেগুলো কাজা করবে কি না তা দ্বিমত পূর্ণ।

  একদল আলেমের মতে, এই দুইজনের জন্যও পরবর্তীতে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় সেগুলো কাজা করা আবশ্যক-যেমন মুসাফিরের জন্য কাজা করা আবশ্যক। যেহেতু উপরোক্ত হাদিসে উক্ত তিন প্রকার ব্যক্তির কথা একসাথে উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং তাদের বিধানও একই রকম হবে। এর বাইরে অন্য কোনও বিধান প্রযোজ্য হবে না। তাছাড়া তারা অসুস্থ ব্যক্তির অনুরূপ।
  এ পক্ষে শাইখ বিন বায, উসাইমিন সহ সৌদি ফতোয়া বোর্ড।
পক্ষান্তরে ইবনে আব্বাস রা. ও ইবনে উমর রা. প্রমূখ একাধিক সাহাবির অভিমত হল, গর্ভবতী ও দুগ্ধ দান কারীনী যদি রোজা রাখতে না পারে তাহলে ফিদিয়া দিবে তথা প্রতিটি রোজার বিনিময়ে একজন গরিব-অসহায় মানুষকে খাবার খাওয়াবে।” [মুগনি, ৩/৩৭]

روى أبو داود (2318) عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ قَالَ كَانَتْ رُخْصَةً لِلشَّيْخِ الْكَبِيرِ وَالْمَرْأَةِ الْكَبِيرَةِ وَهُمَا يُطِيقَانِ الصِّيَامَ أَنْ يُفْطِرَا وَيُطْعِمَا مَكَانَ كُلِّ يَوْمٍ مِسْكِينًا وَالْحُبْلَى وَالْمُرْضِعُ إِذَا خَافَتَا قَالَ أَبُو دَاوُد يَعْنِي عَلَى أَوْلادِهِمَا أَفْطَرَتَا وَأَطْعَمَتَا. قال النووي : إسناده حسن .

وَأَخْرَجَهُ الْبَزَّارُ وَزَادَ فِي آخِرِهِ : وَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَقُولُ لأُمِّ وَلَدٍ لَهُ حُبْلَى : أَنْتَ بِمَنْزِلَةِ الَّتِي لا تُطِيقُهُ فَعَلَيْك الْفِدَاءُ , وَلا قَضَاءَ عَلَيْك , وَصَحَّحَ الدَّارَ قُطْنِيُّ إسْنَادَهُ . قاله الحافظ في "التلخيص" .

  যাহোক, মতবিরোধ থেকে বাঁচার স্বার্থে গর্ভধারণ কারীনী এবং সন্তানকে দুগ্ধ দান কারীনী নারী যদি পরবর্তীতে ছুটে যাওয়া রোজা করতে সক্ষম হয় তাহলে সেগুলো কাজা করে নিবে। এটাই সবচেয়ে উত্তম। কিন্তু তা যদি তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে যায় তাহলে সেগুলোর বিনিময়ে ফিদিয়া দিয়ে দেওয়াই যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।
-------------- 
  -আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
#abdullahilhadi

Post a Comment

0 Comments