Recent Tube

তুরস্কে ইংরেজ রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টিতে ইসলামের সফস্টিকেশন ! জিয়াউল হক।




তুরস্কে ইংরেজ রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টিতে ইসলামের সফস্টিকেশন !
                   ----------------- 

  ইসলামের যে দর্শন, যে শিক্ষা, তার ভেতরেই লুকিয়ে আছে এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি, যা মানুষকে নির্ভীক করে তোলে তার ভেতর থেকে। তার ভেতরে রয়েছে এমন আত্মিক শক্তি যা ব্যাক্তির  চরিত্রে , মেধা ও মননে ফুটে উঠে যখন সে ইসলামকে তার পূর্ণ তাৎপর্য ও সূষমায় ধারন করে। এরকম একটা অবস্থায় ব্যক্তির মধ্যে, তার শরিরের সাড়ে তিন হাত ভূমির প্রতি ইঞ্চি পরতে পরতে ফুটে উঠে অপ্রতিরোধ্য এক আকর্ষণ, যা অন্তর ছুঁয়ে যায় আশে পাশে সকলের। 

  বিষয়টা হাড়ে হাড়ে টের পেয়ছিল ঔপনিবেশকালে ইংরেজ সরকার। বিশ্বের বিভিন্ন কলোনিতে বসবাসরত ইংরেজ দায়িত্বশীলরা বলা নেই কওয়া নেই রাজশক্তি নিজ গোষ্ঠী ইংরেজদের ধর্ম; খৃষ্টধর্ম  ত্যাগ করে মুসলমান হয়ে যেতেন। এদের মধ্যে সাধারণ সৈনিক থেকে শুরু করে সরকারের অনেক উঁচুশ্রেণির কর্তাব্যক্তিও ছিলেন। 

  মিশরে নিযুক্ত ইংরেজ রাষ্ট্রদূত Benjamin Bishop , হায়দ্রাবাদের রাজদরবারে ইংরেজ রাষ্ট্রদূত James Achilles Kirkpatrick, ভারতের মাটিতে ইংরেজ সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ ও সিনিয়ার আমলা Francis Breton এরকম ব্যক্তিও ছিলেন এ দলে। 

  তুরস্কের মাটিতেও একই অবস্থা। ইস্তাম্বুলে নিয়োজিত অনেক ইংরেজ কুটনীতিবীদ , ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মচারী খৃষ্টধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করছিল এবং দিনে দিনে সে সংখ্যা বেড়েই চলছিল। 

  বিষয়টা ইংল্যান্ড সরকারকে খুব পেরেশানিতে ফেলে দেয়। কারণ মুসলমান এবং ইসলাম, এটাই তো তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ। নিজেদের অতি আস্থাভাজন কর্মচারীও যখন খৃষ্টধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়ে যায়, তখন আদর্শিক দিক বিচারে আর তাকে কি সহজে বিশ্বাস করা সম্ভব! কেমন একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি! ব্রিটেন এ অবস্থা মোকাবেলা করতে হিমশিম খাচ্ছিল। 

  ঠিক সে সময় তুরস্কে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত Sir Thomas Shirley গোপনে লন্ডনে তার সরকারকে বিশ্বজুড়ে ইংলিশ কলোনীসমূহে ইংরেজদের ইসলাম গ্রহণ ঠেকাতে করণীয় ও পরামর্শ দিয়ে লিখেন;                              The more time Englishmen spent in the East, the closer they moved to adopting manners of the Muslim.

  ভাবানূবাদ: পূর্বাঞ্চলে (মুসলিম প্রধান অঞ্চল) একজন ইংরেজ যত বেশি সময় কাটাবে, তত বেশি তাদের জীবনদর্শনকে ধারন করার সম্ভবান তার মধ্যে তৈরি হবে।

   তার পরামর্শ ছিল কোন ইংরেজকে যেন বেশিদিন মুসলমানদের সংস্পর্শে না রাখা হয়। কারন, মুসলমানদের সংস্পর্শে এলেই বিপদ, ইসলাম তাকে আকৃষ্ঠ হবার ঝুঁকিতে ফেলে দেয়।

  ইংলিশরা কেন ইসলাম গ্রহণ করে, কখন করে, তার সেই চিঠিতে তিনি সেটাও লিখেন;
Islam overcame the English more by its sophistication and power of attraction than by sword

  ভাবানূবাদ; তলোয়ারের চেয়ে ইসলামের বনেদি আভিজাত্যই ইংরেজ মানসকে জয় করে ফেলে।

  জ্বী, ইসলামের শক্তি হলো এর সেই সুপ্ত আভিজাত্য। ফিলিস্তিনি এই বৃদ্ধ কিংবা আয়েশী ভংগীতে বসে থাকা এই নারীর দিকে একবার চেয়ে দেখুন মন দিয়ে। দখলদার অস্ত্রধারী  ইসরাইলী সৈন্য পরিবেশিষ্ঠত হয়েও নিরস্ত্র এই মুসলমান নারী পুরুষের বডি ল্যাংগুয়েজ দেখুন, কিছু বুঝতে পারছেন? কিছু দেখতে পাচ্ছেন? এটাই হলো ইসলামের সফিস্টিকেশন (sophistication)। এটাই আমাদেরকে বিশ্বের বুকে অজেয় করে রাখে।
---------------------------- 
লেখক : ইসলামি চিন্তাবিদ, লেখক, ইতিহাস বিশ্লেষক গবেষক ও দাঈ।

Post a Comment

0 Comments