গোসলের প্রকারভেদ, সাধারণ গোসলের নিয়ম ও ১০টি ইসলামি আদব।
--------------◖◉◗--------------
প্রশ্ন: প্রতিদিন কী নিয়মে গোসল করব? এ সম্পর্কে ইসলামের বিধান জানতে চাই।
উত্তর:
নি:সন্দেহে ইসলাম একটি পবিত্র, পরিচ্ছন্ন এবং স্বভাবজাত উন্নত জীবন ব্যবস্থার নাম। ইসলামের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পবিত্রতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বিষয়টি ফুটে উঠেছে। বিভিন্ন ইবাদতের পূর্বে, ওজু, গোসল, মিসওয়াক, কাপড় ও শরীরের পরিচ্ছন্নতা, টয়লেটের পর ইস্তিনজা, ও ঢিলা-কুলুপ ব্যবহার, নখ কাটা, বগল ও নাভির নিচের লোম পরিষ্কার, খতনা ইত্যাদি সবই এর স্পষ্ট প্রমাণ।
যাহোক নিম্নে গোসল সংক্রান্ত আলোচনা করা হল:
আমাদের জানা দরকার যে, গোসল তিন প্রকার। যথা:
❖ ১) ফরজ গোসল (জানাবাত তথা স্ত্রী সহবাস, স্বপ্নদোষ ইত্যাদির কারণে গোসল, হায়েজ-নেফাস থেকে পবিত্রতার উদ্দেশ্যে গোসল ইত্যাদি)
❖ ২) মুস্তাহাব (উত্তম) গোসল। যেমন: জুমা, দু ঈদ, ইহরাম ইত্যাদির জন্য গোসল। এতে সওয়াব রয়েছে কিন্তু না করলে গুনাহ নেই।
❖ ৩) মুবাহ (বৈধ) গোসল। যেমন: পরিচ্ছন্নতা অর্জন, গরমের দিনে শরীরে শীতলতা আনয়ন, শারীরিক ক্লান্তি ও অস্বস্থিভাব দূর করা ইত্যাদি।
❑ নিম্নে কেবল মুস্তাহাব এবং মুবাহ (সাধারণ) গোসলের পদ্ধতি ও ইসলামি আদব (শিষ্টাচার) সম্পর্কে আলোচনা করা হল:
১) মুস্তাহাব (উত্তম) গোসল হোক বা মুবাহ (বৈধ) হোক- সওয়াবের নিয়ত করা। ইসলামে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব এসেছে। তাই গোসলের সময় কেউ যদি সওয়াবের নিয়ত করে তাহলে মহান আল্লাহ তাকে তা দান করবেন ইনশাআল্লাহ। (দুনিয়াবি কাজও কেউ যদি সৎ নিয়তে সম্পাদন করে তাতেও সওয়াব হয়-আল হামদুলিল্লাহ।
২) গোসলের পূর্বে বিসমিল্লাহ বলা। (গোসলখানায় থাকা অবস্থায় মনে মনে বিসমিল্লাহ বলবে এবং অন্যান্য জিকির-আজকার মুখে উচ্চারণ করা থেকে বিরত থাকবে)।
৩) পবিত্র পানি দ্বারা গোসল করা।
৪) শরীরে কমপক্ষে তিন বার পানি ঢালা অথবা নদী-পুকুরে গোসল করলে কম পক্ষে তিন বার ডুব দেয়া উত্তম। তবে এর চেয়ে কম বা বেশি হলেও কোন আপত্তি নাই।
৫) প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি অপচয় না করা।
৬) শরীরে পানি ঢালার ক্ষেত্রে ডান দিক থেকে শুরু করা উত্তম।
৭) এমনভাবে শরীর ধৌত করা যেন, শরীর থেকে ময়লা ও দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।
৮) যথাসম্ভব গোসলখানা বা ঘেরা স্থানে গোসল করা। (মহিলাদের পর্দা সহকারে গোসল করা আবশ্যক-যেন গোসল অবস্থায় তার দিকে কোনভাবে পরপুরুষের দৃষ্টি না যায়)।
৯) বাইরে গোসল করার প্রয়োজন হলে লজ্জাস্থান যেন প্রকাশিত না হয় অথবা ভেজা কাপড়ের উপর দিয়ে শরীরের গোপনাঙ্গ ফুটে না উঠে সে বিষয়ে সতর্ক থাকা।
১০) গোসলের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় অপচয় না করা (যা কিছু মানুষের বদ অভ্যাস)। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
------------------◖◉◗------------------
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।
0 Comments