Recent Tube

আসলে এখানে প্রসংগ হচ্ছে দুটিঃ নুর হোসাইন।



   আসলে এখানে প্রসংগ হচ্ছে দুটিঃ

১) জামায়াত বদ্ধ থাকা ফরজ 
২) ইক্বামতে দ্বীন এর কাজ করা ফরজ

  এ ব্যাপারে অনেকেই তালগোল পাকিয়ে ফেলতেছেন। তাই একটি পরিস্কার ধারণা থাকা দরকার। নিম্নে এ ব্যাপারে সংক্ষেপে আলোকপাত করা হলো, ইনশাআল্লাহ।  

-----------------

  ১) জামায়াত বদ্ধ থাকা ফরজ - এর অর্থ কি সকল মুসলিমের ঐক্যবদ্ধ থাকা ফরজ নাকি কোনো ইসলামী সংগঠন এর সাথে থাকা ফরজ। এর উত্তর নিঃসন্দেহে প্রথমটি। কিন্তু এর ব্যাখ্যায় অধ্যাপক গোলাম আজম স্যার যে কথা বলে গিয়েছেন, সেটিই এর পরিস্কার ব্যাখ্যা হতে পারে। 

  তিনি যা বলেছেন, তার সার কথা হলো "রাসুল সাঃ এর সময় " আল জামায়াত" বর্তমান ছিল, তাই সে জামায়াত এর সাথে থাকা ছিল ফরজ এবং তা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা ছিল জাহেলিয়াত।  হাদিসের বক্তব্য,  যে ব্যাক্তি ইসলামী জামায়াত থেকে এক বিঘত পরিমাণ দূরে সরে গেল, সে ইসলামের রজ্জু নিজের গর্দান থেকে খুলে ফেললো। এ অবস্থায় সে মৃত্যু বরণ করলে তার মৃত্যু হবে জাহেলিয়াত এর মৃত্যু - এই বক্তব্যটি খাস ভাবে রাসুলের সময়ের সেই আলজামায়াতের জন্য প্রযোজ্য ছিল। 

  এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বর্তমানে মুসলমানদের নানা কারণে সেই আল জামায়াত বর্তমান নেই। তাহলে মুসলমানদের জামায়াত বদ্ধ থাকার সেই ফরজিয়াত, বাইয়াত এর ফরজিয়াত, প্রয়োজনে জিহাদ ক্বিতাল ইত্যাদির ফরজিয়াত মুসলমানগণ কিভাবে পালন করবে? 

  সুতরাং,  মুসলিম উম্মাহকে পুনরায় একতাবদ্ধ করার জন্য কতিপয় লোকদেরকে জামায়াত গঠন করেই অগ্রসর হতে হবে। এরকম জামায়াত বহু হতে পারে। 

  আর এসব মুখলিস জামায়াতের যে কোনো একটিতে যোগদান করলেই কোনো ব্যাক্তির জামায়াত বদ্ধ থাকার ফরজিয়াত আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।  " 

  মাওলানা মওদুদী রাহঃ এর মতে "এসব দল কেবলমাত্র ফিরকা বা দলাদলিতে তখনই রূপান্তরিত হবে, যদি কোনো দল মনে করে জান্নাত একমাত্র তাদের দলেই আছে। এছাড়া যারা মনে করে মুসলমান এর ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরী এবং ইক্বামতে দ্বীনের ফরজিয়াত অনুভব করে, তারা যে কোনো দলে যোগদান করতে পারে, যে কোনো দল এই লক্ষ্যে গঠন করতে পারে"।

  সত্য পথের পথিকেরা পথের যে কোনো বাকে গিয়ে এক হয়ে যাবেই, এটাই সত্য পথের সুবিধা, আর এভাবেই ইক্বামতে দ্বীনের পথিকদের মাধ্যমে এক সময় সাড়া পৃথিবী ব্যাপী আবার আল জামায়াত গড়ে উঠবে। 

  আর যে কোনো দেশে দ্বীন ক্বায়েম, খিলাফত আর ইক্বামত ক্বায়েম হলে সেখানে নগদ জামায়াত আর বাইয়াতের একটা অংশ তো তারা পেয়েই যাবে। 

  সুতরাং, সেই বৃহত জামায়াতের লক্ষ্যে ইক্বামতে দ্বীন ও মুসলিম উম্মাহ গঠনের তাগিদে এখন যে ছোট ছোট মুখলিস জামায়াত গড়ে উঠছে এগুলোর কোনোনা কোনোটির সাথে আপনাকে যুক্ত থাকতে হবে।  এগুলোর কোনো একটির বাইরে থাকা নিঃসন্দেহে জাহেলিয়াত। 

------------------

  ২) পৃথিবী থেকে মানুষের প্রভুত্ব দূর করে আল্লাহর প্রভুত্ব ক্বায়েমই হলো ইক্বামতে দ্বীন। পৃথিবীটা চলবে আল্লাহর কথায়, কুরআন হাদিস অনুযায়ী পৃথিবী চলবে, সারা পৃথিবীর আইন কানুন হবে কুরআন হাদিস অনুযায়ী,   কোনো বেদ্বীন কাফির মুশরিকের কথায় পৃথিবীর একটি গ্রামও শাসিত হবেনা, যেখানেই শাসন কর্তৃত্বের প্রশ্ন, সেখানেই কুরআনের বিধান আর মুমিন দ্বারা তা শাসিত হবে। 

  এই বিরাট সাহসী কনসেপ্ট হচ্ছে ইক্বামতে দ্বীন। পৃথিবীর এক ইঞ্চি মাটিও এর বাইরে থাকবেনা।  

   তো যে শায়েখরা ইক্বামতে দ্বীন এর এই ধারণাই বুঝেনা, রাসুল সাঃ এর মক্কা বিজয়ের পরে রোম পারস্য সিরিয়ায় তার পাঠানো চিঠি গুলো যারা পড়ে বুঝেনি, তাদের কাছে ইক্বামতে দ্বীন, সংগঠন, জিহাদ ইত্যাদি প্রশ্ন করাটা নিরেট বোকামী। 

  এমনকি কুরআন এর শত শত হাজার হাজার আয়াত, নবীদের সংগ্রামী জীবন এবং আজীবন ত্বাগুত্বের বিরুদ্ধে লড়াই আর ত্যাগ তিতিক্ষা যাদের চোখ খুলতে পারেনাই, তাদের কাছ থেকে দ্বীন সম্বন্ধে প্রশ্নের উত্তর জানারও কোনো প্রয়োজন পড়ে না, যেখানে নবীদের কার্যক্রমের ফরজিয়াতই তারা পালন করছেনা, ত্বাগুত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছেনা, সেখানে তাদের কাছ থেকে ফতোয়া জানাতো দূর কি বাত, তাদের ঈমানের কমতি নিয়েই তো সংশয় আছে।

Post a Comment

0 Comments