Recent Tube

বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক বিজয় ইসলামের সার্বিক বিজয়ের পথ মসৃণ করে। আব্দুল্লাহ আরমান।


নাপিত আমার চুল কাটার পাশাপাশি সেলুনে বসা আরেক লোকের সাথে গল্প করছিলো। আমি তাদের গল্পের নীরব শ্রোতা।

 গল্পের এক ফাঁকে নাপিত বললো, “সেদিন এক হুজুরের বক্তব্য শুনলাম। তাঁর বক্তব্যের একটা কথা শুনে আশ্চর্য হয়ে গেছি। হুজুর বললো, আমেরিকা এত কিছু বানাতে পারে তাহলে কাপড় কেন বানায় না। আমাদের কাছ থেকে কেন বানিয়ে নেয়.....”। কিছুক্ষণ শুনে বুঝলাম সেই বক্তা আর কেউ নন, তিনি প্রিয় ভাই আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাক।

 কথা প্রসঙ্গে পোশাকের ব্যাপারে নাপিত বললো, “(নারীদের আব্রু রক্ষার জন্য)  শাড়ির চেয়ে মেক্সিই ভালো.... ”।

 ভাবলাম আজকাল অনেক মুসলমানই তো নাপিতের কাজ করে। ইনিও হয়তো মুসলিম। চুল কাটা শেষে টাকা দিতে গিয়ে (যাচাইয়ের উদ্দেশ্য) বললাম,“ ভাই আপনার নাম কী?”।
তিনি উত্তরে বললেন,“ শ্রী ....  ..... ”।

 আব্দুল্লাহ ভাইয়ের যৌক্তিক উপস্থাপনায় তিনি অমুসলিম হয়েও প্রভাবিত হয়েছেন, এটা নিঃসন্দেহে আব্দুল্লাহ ভাই তথা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিজয়। একজন দাঈ যখন ইসলামকে যুগোপযোগী ও যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হন তখন যে কেউ তাতে প্রভাবিত হবে ইন শাআ আল্লাহ। আব্দুল্লাহ ভাই প্রচলিত সস্তা বিতর্ক এড়িয়ে অনেক পড়াশোনা করে গবেষণাধর্মী সাবলীল বক্তব্য দেন, বর্তমানে অনেক দাঈদের মাঝে এই গুণ  অনুপস্থিত।

 পোশাকের (মেক্সি) ব্যাপারে সেই নাপিতের এমন উপলব্ধি অবশ্যই আমাদের “সাংস্কৃতিক বিজয়”। এদেশের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে থেকে তারাও মুসলিম সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত। হয়তো এজন্যই ভারতের চেয়ে বাংলাদেশী হিন্দু নারীরা পোশাকে অনেকটাই মার্জিত।

  ইতিহাসেও এর নজির আছে। স্পেন যখন মুসলিম শাসনাধীন ছিলো তখন খ্রিস্টান পুরুষরা ব্যাপকভাবে মুসলিম পুরুষদের মতো জুব্বা পাগড়ী পড়তো। উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা অষ্ট্রিয়ার খ্রিস্টান শাসকের স্ত্রীরা মুসলিম নারীদের মতো হিজাব পড়তো! এটাকে তৎকালীন  মুসলমানদের সাংস্কৃতিক বিজয় বললে অত্যুক্তি হবে কি?

 ইন শাআ আল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, মা শাআ আল্লাহ ইত্যাদি শব্দের ব্যবহারে অনেক সেক্যুলাঙ্গারদের গাত্রদাহ হয় কারণ এই শব্দগুলো ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ধারক-বাহক। তাই মুসলিমদের সচেতনভাবেই এই ধরণের শব্দের ব্যবহার করা উচিত; কারণ এটাও এক প্রকারের দাওয়াহ্।

 পোশাক ও এর মূলনীতির ব্যাপারে ইসলাম উদার থাকলেও ইসলামি ভাবধারাকে প্রমোট করে এমন পোশাকই আমাদের প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এটাও ইসলামি সংস্কৃতির নীরব দাওয়াহ। প্রতিকূল পরিবেশে এমন পোশাক পরা সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের অংশও বটে।

 ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান হিসেবে ১৪০০ বছরে এর নিজস্ব ধারার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। সচেতন মুসলিম হিসেবে এই সংস্কৃতি চর্চাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা উচিত; কারণ বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক বিজয় ইসলামের সার্বিক বিজয়ের পথ মসৃণ করে।
------------------------- 
লেখক: প্রবন্ধ লেখক,গল্প লিখক,শিক্ষক, অনলাইন একটিভিস্ট,দাঈ। 
#Abdullah_Arman
29/03/2024
Pic: Google

Post a Comment

0 Comments