Recent Tube

মরুভূমির হাতছানিঃ, - মাহিম চৌধুরী

   
  মরুভূমির হাতছানি,
             পর্ব-৬,
             
   আমরা মদীনা অাল মোনাওয়ারায় পৌছে সর্বপ্রথম হোটেলে উঠলাম । তখন প্রায় সকাল সাড়ে সাতটা বাজে । গাড়ী থেকে লাগেজপত্র নামানো হল । এত মানুষের লাগেজ । নিজেদের লাগেজ খুঁজে পেতে প্রায় সাড়ে নয়টা বাজলো। 
অামাদের নির্ধারিত রুমে অামরা প্রবেশ করলাম। অামরা ভাইবোন তিনজনের জন্য ট্রাভেলস কর্তৃপক্ষ বিশেষ যত্ন সহকারেই রুমটি রেখেছিলেন । সাজানো গোছানো রুমের সাথে রয়েছে এটাচ্ড বাথরুম। অাছে টেলিফোন । সেই সাথে ভালোভাবে থাকার মত সকল ব্যাবস্থাই তারা করে রেখেছেন । এরই ভেতরে হোটেল বয় এসে অামাদের কোন অসুবিধা হবে কিনা বা কোন সমস্যা অাছে কিনা জানতে চাইলো। চট্রগ্রামের ছেলে।  খুবই বিনয়ী এবং সদালাপি বলে মনে হল । যে কোন প্রয়োজনে তাকে ডাকার জন্য বলে গেল। যে কয়দিন অামরা মদীনার এই হোটেলে থেকেছি সে কয়দিন হোটেল ম্যানেজার,হোটেল বয় এবং অামাদের এজেন্সীর অান্তরীক সেবায় অামরা মুগ্ধ হয়েছি।

     বাথরুমে ঢুকে তড়িঘড়ি করে গোসল সারলাম। হাল্কা নাস্তা করে সামান্য একটু বিশ্রাম  নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে পড়লাম জোহরের নানাজের জন্য মসজিদে নববীর উদ্দেশ্যে । হোটেল থেকে নামতেই ৪৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উত্তাপ এসে মুখে লাগলে । বইছে লু-হাওয়া । এর ভেতরেও যেন অন্যরকম এক স্বস্থি মনকে প্লাবিত করতে থাকলো ।
ছয় নম্বর গেইট দিয়ে অামি অার অামার দুই বোন মাত্র
  
পাঁচ মিনিটের ভেতরে প্রবেশ করলাম মসজিদে নববীর সীমানায় ।  মসজিদে নববীর বিশাল চত্বরে গরমের তীব্রতা কমানোর জন্য ''হিউমিডিফায়ারে পানি ছিটানোর দৃশ্যটা ছিল চোখে পড়ার মত । 

   অতঃপর অামরা প্রবেশ করলাম অাজন্ম কাংখিত প্রিয় নবীর প্রিয় মসজিদ,মসজিদে নববীতে । 
  মুখে মুখে,লেখনিতে,গান-গজলে শুনতাম সোনার মদীনার কথা।  অার হৃদয়ের রংতুলিতে অাঁকতাম যেই মদীনার ছবি। অাজ সেই মদীনা অাল মোনাওয়ারায় প্রবেশ করেই বুঝতে পারলাম এটিতো সত্যিই সোনা দিয়ে মোড়ানো এক পবিত্র ঘর । 
মসজিদে ঢুকে বসলামনা। কারণ এখনও দেখা হয়নি মদীনা ওয়ালা যেখানে শুয়ে অাছেন সে পবিত্র জায়গাটি। 
বসার অাগেই একপাশে দাঁড়ানো একজন পুলিশ সদস্যকে  জিজ্ঞেস করলাম  Which side of Rasulullah's (s) Rawza Mubarak?
সে অামাকে সামান্য এগিয়ে দিয়ে একজন পরিচ্ছন্ন কর্মীকে ডেকে অামার সাথে দিয়ে দিল।  লোকটি ছিল ভারতীয়। বেচারা অারও কিছুটা সামনে নিয়ে দেখিয়ে দিল হুজুর (স) এর রওজা ।  একটি গেট ক্রস করলাম। দেখলাম লিখা রয়েছে ''বাবে অাবু বকর সিদ্দীক (রা)। 
এর পরবর্তী গেটে লিখা রয়েছে ''বাবে জিব্রীল''। এই গেট দিয়েই ওহী নিয়ে হযরত জিব্রাইল (অা) নবীজির কাছে অাসতেন । বাবে জিব্রীল থেকে রাসূলুল্লাহ (স) এর মাক্ববারা পর্যন্ত  প্রচন্ড ভীড় লেগে অাছে । ইলেক্ট্রনিক সালাত টাইমার স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলাম জেহরের অাজান অত্যাসন্ন । অার এগুলামনা। বেক করে একটি সুবিধাজনক জায়গা দেখে বসে অপেক্ষা করতে থাকলাম সালাতুজ্জোহরের অাজানের । নির্ধারিত সময়ে অাজান হলো। মদীনার অাজান!  অাহ কী অপূর্ব সেই সূরের মূর্চনা । মনে হলো যেন হযরত বেলাল বুঝি এখনও মিনারে দাঁড়িয়ে অাছেন ।  
অাজান হলো,ইক্বামাত হলো,নামাজ হলো। নামাজের ইমামতি করলেন শায়েখ সালেহ অাল বুদাইর । 
নামাজ শেষ করে আপাততঃ ফিরে আসলাম হোটেলে।
চলবে,,,,
------------------------------------------------
লেখকঃ কলামিস্ট ও প্রবন্ধ লেখক।        

Post a Comment

0 Comments