-------------------------------------------------
ﺑِﺴۡﻢِ ﭐﻟﻠﻪِ ﭐﻟﺮَّﺣۡﻤَـٰﻦِ ﭐﻟﺮَّﺣِﻴﻢِ
ﻧﺤﻤﺪﻩُ ﻭﻧﺴﺘﻌﻴﻨﻪُ ﻭﻧﺴﺘﻐﻔﺮﻩُ ﻭﻧﺆﻣﻦ ﺑﻪ ﻭﻧﺘﻮﻛﻞ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﻧﻌﻮﺫﺑﺎﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺷﺮﻭﺭ ﺍﻧﻔﺴﻨﺎ ﻭﻣﻦ ﺳﻲﺀﺍﺕ ﺍﻋﻤﺎﻟﻨﺎ ﻣﻦ ﻳﻬﺪﻩ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻼ ﻣﻀﻞ ﻟﻪ ﻭﻣﻦ ﻳﻀﻠﻠﻪ ﻓﻼ ﻫﺎﺩﻱ ﻟﻪ ﻭﻧﺸﻬﺪ ﺍﻥ ﻻ ﺍﻟٰﻪﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺣﺪﻩ ﻻﺷﺮﻳﻚ ﻟﻪ ﻭ ﻧﺸﻬﺪ ﺍﻥّ ﺳﻴﺪ ﻧﺎ ﻭ ﺣﺒﻴﺒﻨﺎ ﻭ ﺣﺒﻴﺐ ﺭﺑﻨﺎ ﻭﻃﺒﻴﺐ ﻗﻠﻮﺑﻨﺎ ﺩﺍﻭﻟٰﻨﺎ ﻭﻣﻮﻟٰﻨﺎ ﻣﺤﻤﺪﺍ ﻋﺒﺪﻩ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ . ﺍﻣّﺎ ﺑﻌﺪ ! ﻧﺎﻥ ﺧﻴﺮ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺧﻴﺮ ﺍﻟﻬﺪﻱ ﻫﺪﻱ ﻣﺤﻤّﺪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻭﺷﺮﺍﻻﻣﻮﺭ ﻣﺤﺪﺛﺎﺗﻬﺎ ﻭﻛﻞ ﻣﺤﺪﺛﺖ ﺑﺪﻋﺔ ﻭﻛﻞ ﺑﺪﻋﺔ ﺿﻼﻟﺔ ﻭﻛﻞ ﺿﻼﻟﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ .
.
খিলাফত ও রাজতন্ত্রের পার্থক্য দেখাতর গিয়ে আল্লামা মওদুদী রাহিমাহুল্লাহ 'খিলাফত ও রাজতন্ত্র' গ্রন্থে বলেনঃ
"রাজতান্ত্রিক শাসনামলে মুসলমানদের উপর সবচেয়ে বড় যে বিপদ নিপতিত হয় তা হচ্ছে এই যে, সে সময় আইনের প্রাধান্যের নীতি ভঙ্গ করা হয়। অথচ তা ছিল ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি।
ইসলাম যে ভিত্তির উপর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে তা হচ্ছে এই যে, শরীয়ত সব কিছুর ঊর্ধে, সকলের উপরে। ........।
খোলাফায়ে রাশেদীন তাদের গোটা শাসনামলে এ নীতি কঠোর ভাবে অনুসরণ করে চলেছিলেন। এমনকি হযরত উসমান (রা) ও হযরত আলী (রা) অত্যন্ত নাজুক এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতেও শরীয়তের সীমা লংঘন করেননি। এসব সত্যাশ্রয়ী খলিফাদের শাসনের বৈশিষ্ট্য ছিল এই যে, তা শরীয়ত নির্ধারিত সীমা মেনে চলত, যথেচ্ছাচারী ও বগ্লাহীন ছিল না।
খোলাফায়ে রাশেদীন তাদের গোটা শাসনামলে এ নীতি কঠোর ভাবে অনুসরণ করে চলেছিলেন। এমনকি হযরত উসমান (রা) ও হযরত আলী (রা) অত্যন্ত নাজুক এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতেও শরীয়তের সীমা লংঘন করেননি। এসব সত্যাশ্রয়ী খলিফাদের শাসনের বৈশিষ্ট্য ছিল এই যে, তা শরীয়ত নির্ধারিত সীমা মেনে চলত, যথেচ্ছাচারী ও বগ্লাহীন ছিল না।
.
কিন্তু রাজতন্ত্রের যুগেরা রাজা-বাদশারা ব্যক্তিস্বার্থ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং বিশেষ করে নিজেদের শাসন পাকাপোক্ত করার ব্যাপারে শরীয়ত নির্ধারিত বিধি-বিধান লংঘন এবং তার সীমারেখা অতিক্রমে কুণ্ঠাবোধ করেনি। যদিও তাদের সময়েও দেশের আইন ইসলামী-ই ছিল, তাদের কেউ আল্লাহর কিতাব এবং রাসূলুল্লাহ (সা) এর সুন্নাহর আইনগত মর্যাদা অস্বীকার করেনি। এ আইন অনুযায়ী আদালত ফায়সালা করতো, সাধারণ পরিস্থিতিতে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী সকল সকল বিষয়ে মীমাংসা হতো। কিন্তু এ সকল বাদশার রাজনীতি দ্বীনের অনুবর্তী ছিল না। বৈধ্য অবৈধ সকল উপায়ে তারা রাষ্ট্রের দাবী মিটাতেন। এ ব্যাপারে হালাল হারামের কোন পার্থক্য করতেন না। বনী উমাইয়ার বিভিন্ন খলিফাদের শাসনামলে আইনের বাধ্যবাধকতা কোন পর্যায়ে ছিল, এখানে আমরা তা উল্লেখ করবো।"
এরপর আল্লামা মওদুদী রাহিমাহুল্লাহ আরো বলেনঃ
"হযরত মুয়াবিয়া (রা) শাসনামল থেকেই এ নীতির। সূচনা হয়।"
(খেলাফত ও রাজতন্ত্র, অধ্যায় ৫ম, পৃঃ১৪৭-১৪৮)
.
এর প্রমাণে তিনি কিছু দলিলসহ বর্ণনাও পেশ করেছেন। আর এটাই হলো আল্লামা মওদুদী রাহিমাহুল্লাহ এর বড় অপরাধ(?)। ফলে ত্বকী উসমানী (হাফিঃ) মওদুদী রাহিমাহুল্লাহ এর বক্তব্য খন্ডন করার চেষ্টা করেছেন। হযরত মুয়াবিয়া (রা) এর শাসনামল যে খোলাফায়ে রাশেদীনের চেয়ে কিছুটা নিম্নমানের ছিল তা তিনি কিছুতেই মেনে নিতে চাননি বরং তিনি বলেছেনঃ
"হযরত আলী (রা) মর্মান্তিক শাহাদতের পর তাঁর (মুয়াবিয়া রা) শাসনামলই ছিল ইসলামী সোনালী ইতিহাসের উজ্জলতম যুগ। অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে তখন বিরাজমান ছিল সুখ-শান্তি, স্থিতি ও নিরাপত্তা।"
[ইতিহাসের কাঠঘরায় হযরত মুয়াবিয়া (রা), পৃঃ১৯]
.
এ কথা দ্বারা তিনি কি বুঝাতে চাচ্ছেন, তা ঠিক পরিষ্কার হলো না। খোলাফায়ে রাশেদীনের চেয়ে কি মুয়াবিয়া (রা) এর শাসনামলই ইসলামী সোনালী ইতিহাসে উজ্জলতম যুগ ছিল? না কি হযরত আলী (রা) বেঁচে থাকার কারণে সে যুগ উজ্জলতম ছিল না? আর হযরত আলী (রা) শাসনামলে অশান্তি বিরাজ করার জন্য দায়ী কে ছিলেন? খলিফাতুল মুসলিমীন হযরত আলী (রা)?
তিনি এখানে আমীরে মুয়াবিয়া (রা) কে মহানায়ক বানাতে গিয়ে খলিফাতুল মুসলিমীন হযরত আলী (রা) কে খলনায়ক (ভিলেন) বানিয়ে ফেললেন কি না সেটাও ভাবনার বিষয়!
.
এবার সহীহ হাদীসের আলোকে দেখুন, আল্লামা মওদুদী রাহিমাহুল্লাহ যা বলেছেন ("হযরত মুয়াবিয়া (রা) শাসনামল থেকেই এ নীতির সূচনা হয়।") তা ঠিক, নাকি ত্বকী উসমানী (হাফিঃ) কথা ("হযরত আলী (রা) মর্মান্তিক শাহাদতের পর তাঁর শাসনামলই ছিল ইসলামী সোনালী ইতিহাসের উজ্জলতম যুগ। অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে তখন বিরাজমান ছিল সুখ-শান্তি, স্থিতি ও নিরাপত্তা।") ঠিক!
.
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺯُﻫَﻴْﺮُ ﺑْﻦُ ﺣَﺮْﺏٍ، ﻭَﺇِﺳْﺤَﺎﻕُ ﺑْﻦُ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﻗَﺎﻝَ ﺇِﺳْﺤَﺎﻕُ ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﻭَﻗَﺎﻝَ، ﺯُﻫَﻴْﺮٌ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺟَﺮِﻳﺮٌ، ﻋَﻦِ ﺍﻷَﻋْﻤَﺶِ، ﻋَﻦْ ﺯَﻳْﺪِ ﺑْﻦِ ﻭَﻫْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻜَﻌْﺒَﺔِ، ﻗَﺎﻝَ ﺩَﺧَﻠْﺖُ ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪَ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦُ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺍﻟْﻌَﺎﺹِ ﺟَﺎﻟِﺲٌ ﻓِﻲ ﻇِﻞِّ ﺍﻟْﻜَﻌْﺒَﺔِ ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻣُﺠْﺘَﻤِﻌُﻮﻥَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﺄَﺗَﻴْﺘُﻬُﻢْ ﻓَﺠَﻠَﺴْﺖُ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻛُﻨَّﺎ ﻣَﻊَ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓِﻲ ﺳَﻔَﺮٍ ﻓَﻨَﺰَﻟْﻨَﺎ ﻣَﻨْﺰِﻻً ﻓَﻤِﻨَّﺎ ﻣَﻦْ ﻳُﺼْﻠِﺢُ ﺧِﺒَﺎﺀَﻩُ ﻭَﻣِﻨَّﺎ ﻣَﻦْ ﻳَﻨْﺘَﻀِﻞُ ﻭَﻣِﻨَّﺎ ﻣَﻦْ ﻫُﻮَ ﻓِﻲ ﺟَﺸَﺮِﻩِ ﺇِﺫْ ﻧَﺎﺩَﻯ ﻣُﻨَﺎﺩِﻱ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ ﺟَﺎﻣِﻌَﺔً . ﻓَﺎﺟْﺘَﻤَﻌْﻨَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓَﻘَﺎﻝَ " ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﻧَﺒِﻲٌّ ﻗَﺒْﻠِﻲ ﺇِﻻَّ ﻛَﺎﻥَ ﺣَﻘًّﺎ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﻥْ ﻳَﺪُﻝَّ ﺃُﻣَّﺘَﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺧَﻴْﺮِ ﻣَﺎ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻪُ ﻟَﻬُﻢْ ﻭَﻳُﻨْﺬِﺭَﻫُﻢْ ﺷَﺮَّ ﻣَﺎ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻪُ ﻟَﻬُﻢْ ﻭَﺇِﻥَّ ﺃُﻣَّﺘَﻜُﻢْ ﻫَﺬِﻩِ ﺟُﻌِﻞَ ﻋَﺎﻓِﻴَﺘُﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺃَﻭَّﻟِﻬَﺎ ﻭَﺳَﻴُﺼِﻴﺐُ ﺁﺧِﺮَﻫَﺎ ﺑَﻼَﺀٌ ﻭَﺃُﻣُﻮﺭٌ ﺗُﻨْﻜِﺮُﻭﻧَﻬَﺎ ﻭَﺗَﺠِﻲﺀُ ﻓِﺘْﻨَﺔٌ ﻓَﻴُﺮَﻗِّﻖُ ﺑَﻌْﻀُﻬَﺎ ﺑَﻌْﻀًﺎ ﻭَﺗَﺠِﻲﺀُ ﺍﻟْﻔِﺘْﻨَﺔُ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻦُ ﻫَﺬِﻩِ ﻣُﻬْﻠِﻜَﺘِﻲ . ﺛُﻢَّ ﺗَﻨْﻜَﺸِﻒُ ﻭَﺗَﺠِﻲﺀُ ﺍﻟْﻔِﺘْﻨَﺔُ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻦُ ﻫَﺬِﻩِ ﻫَﺬِﻩِ . ﻓَﻤَﻦْ ﺃَﺣَﺐَّ ﺃَﻥْ ﻳُﺰَﺣْﺰَﺡَ ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻭَﻳَﺪْﺧُﻞَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻓَﻠْﺘَﺄْﺗِﻪِ ﻣَﻨِﻴَّﺘُﻪُ ﻭَﻫُﻮَ ﻳُﺆْﻣِﻦُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ ﺍﻵﺧِﺮِ ﻭَﻟْﻴَﺄْﺕِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳُﺤِﺐُّ ﺃَﻥْ ﻳُﺆْﺗَﻰ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻭَﻣَﻦْ ﺑَﺎﻳَﻊَ ﺇِﻣَﺎﻣًﺎ ﻓَﺄَﻋْﻄَﺎﻩُ ﺻَﻔْﻘَﺔَ ﻳَﺪِﻩِ ﻭَﺛَﻤَﺮَﺓَ ﻗَﻠْﺒِﻪِ ﻓَﻠْﻴُﻄِﻌْﻪُ ﺇِﻥِ ﺍﺳْﺘَﻄَﺎﻉَ ﻓَﺈِﻥْ ﺟَﺎﺀَ ﺁﺧَﺮُ ﻳُﻨَﺎﺯِﻋُﻪُ ﻓَﺎﺿْﺮِﺑُﻮﺍ ﻋُﻨُﻖَ ﺍﻵﺧَﺮِ " . ﻓَﺪَﻧَﻮْﺕُ ﻣِﻨْﻪُ ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ ﺃَﻧْﺸُﺪُﻙَ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺁﻧْﺖَ ﺳَﻤِﻌْﺖَ ﻫَﺬَﺍ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓَﺄَﻫْﻮَﻯ ﺇِﻟَﻰ ﺃُﺫُﻧَﻴْﻪِ ﻭَﻗَﻠْﺒِﻪِ ﺑِﻴَﺪَﻳْﻪِ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺳَﻤِﻌَﺘْﻪُ ﺃُﺫُﻧَﺎﻯَ ﻭَﻭَﻋَﺎﻩُ ﻗَﻠْﺒِﻲ . ﻓَﻘُﻠْﺖُ ﻟَﻪُ ﻫَﺬَﺍ ﺍﺑْﻦُ ﻋَﻤِّﻚَ ﻣُﻌَﺎﻭِﻳَﺔُ ﻳَﺄْﻣُﺮُﻧَﺎ ﺃَﻥْ ﻧَﺄْﻛُﻞَ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻨَﺎ ﺑَﻴْﻨَﻨَﺎ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﻭَﻧَﻘْﺘُﻞَ ﺃَﻧْﻔُﺴَﻨَﺎ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﻳَﻘُﻮﻝُ } ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦْ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍ ﺃَﻧْﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ { ﻗَﺎﻝَ ﻓَﺴَﻜَﺖَ ﺳَﺎﻋَﺔً ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﻃِﻌْﻪُ ﻓِﻲ ﻃَﺎﻋَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻋْﺼِﻪِ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ .
.
আবদুর রহমান ইবনু আবদ রাব্বিল কা'বা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা মাসজিদে প্রবেশ করলাম। তখন 'আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাযিঃ) কাবার ছায়ায় বসেছিলেন। লোকজন তাকে চারপাশ থেকে ঘিরেছিল। আমি তাদের নিকট গেলাম এবং তার পাশেই বসে পড়লাম। তখন তিনি বললেন, কোন সফরে আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। আমরা একটি অবস্থান গ্রহণ করলাম। আমাদের মধ্যকার কেউ তখন তার তাবু ঠিকঠাক করছিল, কেউ তীর ছুড়ছিল, কেউ তার পশুপাল দেখাশুনা করছিল। এমন সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নকীব হাঁক দিল নামাযের ব্যবস্থা প্রস্তুত! তখন আমরা গিয়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশে মিলিত হলাম। তিনি বললেনঃ আমার পূর্বে এমন কোন নাবী অতিবাহিত হননি যার উপর এ দায়িত্ব বর্তায়নি যে, তিনি তাদের জন্য যে মঙ্গলজনক ব্যাপার জানতে পেরেছেন তা উম্মাতদেরকে নির্দেশনা দেননি এবং তিনি তার জন্য যে অনিষ্টকর ব্যাপার জানতে পেরেছেন, সে বিষয়ে তাদেরকে সাবধান করেননি। আর তোমাদের এ উম্মাত (উম্মাতে মুহাম্মাদ)-এর প্রথম অংশে তার কল্যাণ নিহিত এবং এর শেষ অংশ অচিরেই নানাবিধ ফিতনা ও বিপর্যয়ের এবং এমন সব ব্যাপারের সম্মুখীন হবে, যা তোমাদের নিকট অপছন্দনীয় হবে। এমন সব ফিতনা একাদিক্রমে আসতে থাকবে যে, একটি অপরটিকে ছোট প্রতিপন্ন করবে। একটি ফিতনা আসবে তখন মু'মিন ব্যক্তি বলবে- এটা আমার জন্য ধ্বংসাত্মক, তারপর যখন তা দূর হয়ে অপর ফিতনা আসবে তখন মুমিন ব্যক্তি বলবে, আমি তো শেষ হয়ে যাচ্ছি ইত্যাদি।
.
সুতরাং, যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে দূরে থাকতে চায় এবং জান্নাতে প্রবেশ করতে চায় তার মৃত্যু যেন এমন অবস্থায় আসে যে, সে আল্লাহ ও আখিরাতের দিবসের প্রতি ঈমান রাখে এবং সে যেন মানুষের সাথে এমনি আচরণ করে যে আচরণ সে তার নিজের জন্য পছন্দ করে। আর যে ব্যক্তি কোন ইমাম (বা নেতা) এর হাতে বাই’আত হয়— আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করে তার হাতে হাত দিয়ে এবং অন্তরে সে ইচ্ছা পোষণ করে, তবে সে যেন সাধ্যানুসারে তার আনুগত্য করে যায়। তারপর যদি অপর কেউ তার সাথে (নেতৃত্ব লাভের অভিলাষে) ঝগড়ায় প্রবৃত্ত হয় তবে ঐ পরবর্তী জনের গর্দান উড়িয়ে দেবে। (রাবী বলেন) তখন আমি তার নিকটে ঘেষলাম এবং তাকে বললাম, আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি সত্যিই আপনি (নিজ কানে) কি তা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর নিকট থেকে শুনেছেন? তখন তিনি তার দু’কান ও অন্তঃকরণের দিকে দু'হাত দিয়ে ইশারা করে বললেন, আমার দু’কান তা শুনেছে এবং আমার অন্তঃকরণ তা সংরক্ষণ করেছে।
.
তখন আমি তাকে লক্ষ্য করে বললাম, ঐ যে আপনার চাচাতো ভাই মুয়াবিয়া (রা) তিনি আমাদেরকে আদেশ দেন যেন আমরা আমাদের পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করি আর নিজেদের মধ্যে পরস্পরে হানাহানি করি অথচ আল্লাহ বলেছেন,
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦْ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍ ﺃَﻧْﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ
.
"হে মু’মিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, ব্যবসার মাধ্যমে পারস্পরিক সন্তুষ্টির ভিত্তিতে ব্যতীত এবং তোমরা পরস্পরে হানাহানি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি
অত্যন্ত মেহেরবান- (সূরা আন নিসা"
৪:২৯)।
.
রাবী বলেন, তখন তিনি (আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা) কিছুক্ষণের জন্য চুপ থাকলেন। তারপর বললেন, আল্লাহর আনুগত্যের ব্যাপারসমূহে তুমি তার আনুগত্য করবে এবং আল্লাহর অবাধ্যতার বিষয়গুলোতে তার অবাধ্যতা করবে।
[সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ইমারাহ, হাঃ৪৬৭০; ইসলামিক ফাউন্ডেশন হাদীস নং৪৬২৪, ইসলামিক
সেন্টার হাদীস নং৪৬২৫]
.
সম্মানিত পাঠক! এখন আপনাদের নিকট এ বিষয়ে শালীনতা বজায় রেখে মন্তব্য আশা করছি।
------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা ও মাওলান।
0 Comments