Recent Tube

বিতিকিচ্ছা-৪, আত্মপ্রচার।

আত্মপ্রচার 
-------------------
নুর মুহাম্মদ চৌধূরী(মুবিন)
আপনারে বড় বলে বড় সেই নয়"। কিন্তু ইদানিং চর্চা হয় তার বিপরীত। কথা হল আমি কে? আমিতো ছিলামই না কিছু। দয়াময় আল্লাহ তায়ালা আমাকে সৃষ্টি করলেন,ফলে আমি অস্তিত্ব পেলাম। অতঃপর সত্য হল "সমস্ত জ্ঞান ভাণ্ডারের মালিকানা একমাত্র আল্লাহর"। তার জ্ঞান ভাণ্ডার থেকে কেউ কিছুই নিতে পারে না, যদি না তিনি দেন। সেই ধার করা জ্ঞান নিয়েই আমাদের যা বাহাদুরী। কেউ হতে চাই দাতা, কেউ নেতা, যার যা ইচ্ছা তা। কেউ আাকাংখিত বিশেষণে বিশেষায়িত করুক বা না করুক, নিজে নিজেই স্বঘোষিত দাতা, বিধাতা, মনে যা ইচ্ছা তা।  কেউ হই স্বঘোষিত সাহিত্যিক, কবি, বুদ্ধিজীবি ইত্যাদি। 
    
      খ্যাতি প্রচারের এই প্রবণতা দস্তুরমত একটি রোগ বটে। যা ইহলোকে নিঃশ্চিহ্ন করে দেয় ব্যক্তির প্রকৃত ইজ্জত সম্মান। আর পরকালকেও  করে নেকিশুন্য। কোন কোন আত্মপ্রচারকারী মৌরসি তথা পৈত্রিক সূত্রে  প্রাপ্ত ইজ্জতের একচ্ছত্র ঠিকাদারি নিয়ে একটা ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে গলদঘর্ম। যেন তিনিই ইহার যথাযথ  উপযুক্ত পাত্র। তা কস্মিনকালেও অন্যত্র শোভা পাওয়ার জিনিস নয়। তাদের  আচার আচরণ, হাব-ভাব, ভঙ্গিমা এমন যে,"পা যেন না ছু্য়ে মাটি"। 

       এদিকে খ্যাতির ধারাবাহিকতা সতেজ রাখার খায়েশে লব্ধ বিড়ম্বনায় নাকানি-চুবানি খেয়ে খেয়ে কেউ চুপসে যাচ্ছেন, তথাপিও ইস্ত্রি ছুটাতে নারাজ। "যথাশীঘ্র যে সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে শেষ আশ্রয় নিতে হচ্ছে -এ যেন কোন তোয়াক্কাই নাই। 

     অাসলে অহংকার একান্তই সাজে সৃষ্টিকর্তা 'আল্লাহর'। তিনি স্রষ্টা, তিনি দাতা, তিনি সবকিছুর প্রতিপালনে নিয়োজিত। তিনি ছাড়া আর যা সব একান্তই তার মুখাপেক্ষি। তিনিই একমাত্র অমুখাপেক্ষি সত্বা। সৃষ্টির জন্য অহংকার নিতান্তই একটি রোগ।

     ইদানিং আমার দেশে সেলফী চর্চা এই রোগের একটি প্রকাশিত লক্ষন। পথে ঘাটে উদ্ভোধনী বিলবোর্ড, আর নামফলকের ছড়াছড়ি। কর্মে আন্তরিকতার চেয়ে প্রদর্শনেচ্ছা প্রবল। কিছুদিন আগে মহাসড়কের পাশ থেকে একটি সিমেন্টের তৈরী বিদ্যুতের একটি বড খুঁটি গড়িয়ে গড়িয়ে রাস্তায় এনে লাইভে হাউমাউ করল এক ব্যারিষ্টার। ভাগ্যিস্ তাদের অজান্তে আগে থেকেই ক্যমেরা চালু ছিল বলেই জনতার চোঁখে ধরা পড়ে যায় কারসাজি। ঘটনাটি সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার সাদিপুর এলাকার। এভাবে নিজে সমস্যার সূত্রপাত করে লাইভে এসে সমস্যা নিয়ে চেঁচামেচি করে জননেতা হবার খায়েশে আমাদের কতইনা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা। অতঃপর ভাড়াটে জনবল দিয়ে স্বীয় তৎপরতার পক্ষে গোয়েবলসীয় মিথ্যাচারের বিরামহীন প্রচেষ্টা। নেতারা ভাবেন, তেনারাই শুধু চালু মাল- আর বাদবাকি সব আহম্মকের দল।
      
      কিন্তু, বলুন তো -শাক দিয়ে কি মাছ ঢাকা যায়? এই সমস্ত সকল চেষ্টাই যে অপচেষ্টা, সকল অপচেষ্টার গোমর যে ফাঁক হয়ে যায়, আজ হোক আর কাল একদিন জনতার সামনে উন্মোচিত হয়েই যায় ফটকাবাজদের সকল  অপচেষ্টা- তা বোধ হয় খেয়াল করার প্রয়োজনই পড়ে না।
      
      এতএব আসুন জনকল্যানে কাজ করি, লোক দেখানো কাজ পরিহার করি। যা কিছুই করি, উদ্দেশ্য যেন হয় স্বীয় মালিকের সন্তুষ্টি। কারণ আমরা তো তারই আজ্ঞাবহ গোলাম। আর ভাড়াটে লোক দিয়ে দেশ মাতা, নগর পিতা, রূপকার, আর দাতা, নেতা ইত্যাদি লাখো বার জপালেও কোন লাভ নাই। কারণ কে কি তা সচেতন জনগন খুব ভাল করেই জানে।।

Post a Comment

0 Comments