Recent Tube

মরুভূমির হাতছানি. --মুহিউল ইসলাম মাহিম চৌধুরী

মরুভূমির হাতছানি.
                 --৩য় পর্ব
===========®=========

    ইথারে ভর করে বাতাসের বুক চিরে হজ্বযাত্রীদের বহনকারী প্লেনটি অগ্রসর হচ্ছে ৩৫০০০ ফিট উপর দিয়ে সামনের দিকে । আর আমি ভাবছি মহান অাল্লাহর অসংখ্য দৃশ্যমান নিদর্শনাবলী নিয়ে । জানালা দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে বাইরে তাকিয়ে আছি । 

 স্বচ্ছ আকাশ । সাদা পেজা পেজা হয়ে উড়ছে মেঘেদের দল ।মনে হল ঘমঘন রং বদলাচ্ছে নীলাভ আসমান । রং বদলের এই দৃশ্য মনে প্রশ্নের সৃষ্টি করলো  আকাশের রং কী আসলেও নীল ? জবাবটা নিজেই উদ্ঘাটন করলাম । অাসলে কি জানেন?  আকাশ নীল বলে মানুষের মুখে পরিচিত হলেও বাস্তবে আকাশের সুনির্দিষ্ট কোনো রং নেই। বায়ুমণ্ডলের ক্ষুদ্র অণুগুলো দৃষ্টিসীমার প্রান্তে নীল হয়ে দেখা দেয়। প্রকৃতপক্ষে অবস্থাভেদে আকাশ বিভিন্ন আকৃতি ধারণ করে। আবার কখনও একই সঙ্গে সাত রঙেও সেজে ওঠে। যাকে অামরা রংধনু বলি৷ । আকাশের এই বহুরূপী সজ্জার বর্ণনা পবিত্র কোরআন এভাবে দিয়েছে- 
‘'কসম ওই আকাশের, যা বিভিন্ন রূপে আত্মপ্রকাশ করে''। (আল-কোরআন)

আকাশের বুকে বসে মহাকাশ নিয়েই ভাবনাগুলি আবর্তিত হতে থাকলো । 
কে আগে সৃষ্ট, অনন্ত মহাকাশ নাকি পৃথিবী? মহাশূন্য, ( Deep Space) সোলার স্পেয়ার,  গ্রহ-নক্ষত্ররাজী, নাকি পৃথিবীর পাহাড়,নদী,তরুলতা,বৃক্ষরাজি ! কোনটি আগে সৃষ্টি হয়েছে? উত্তর খুঁজতে বেশি দূর যেতে হলো না। মনে পড়লো পবিত্র কোরঅানের আয়াত । 
'‘ ( হে নবী) আপনি বলুন, সত্যিই কি তোমরা সেই মহাপ্রভুকে অস্বীকার করছ! যিনি পৃথিবীকে মাত্র দু‘দিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তার অংশীদার নির্ধারণ করছ? তিনি তো সমস্ত জগতের প্রতিপালক। যিনি পৃথিবীতে তার উপরাংশে পাহাড় স্থাপন করেছেন এবং জমিনের ভিতরাংশ বরকতপূর্ণ করেছেন আর ভূগর্ভে সুষমরূপে খাদ্যদ্রব্য মজুদ করেছেন মাত্র চার দিনে। সব যাচনাকারীর জন্য সমানভাবে। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করলেন আর তা ছিল ধোঁয়াশাচ্ছন্ন।
 (সূরা : ফুসিসলাত, আয়াত : ৯-১১)।

  এসব ভাবনায় প্লেনে ঘুম তেমন হল না। কখনও হাল্কা ঘুমুচ্ছি,কখনওবা  ঝিমুচ্ছি । হঠাৎ চোখ পড়লো ইলেক্ট্রনিক্স বোর্ডের দিকে । দেখলাম প্রায় ছয় ঘণ্টা কেটেছে।তাহলে প্লেন নামতে চলেছে জেদ্দা বিমানবন্দরে । ওখানকার সময়ের সাথে আমাদের সময়ের তিন ঘণ্টা ব্যবধান । অর্থাৎ অ
আমাদের দেশে  সাড়ে ন'টা ওখানে তখন  সাড়ে ছ'টা।
ইতিমধ্যে একজন ঘোষিকা ঘোষণা দিলেন,আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে জেদ্দা এয়ারপোর্টে অবতরণ করবো। আপনাদের সিটবেল্ট ভাল করে বেঁধে নিন । জেদ্দার তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেঃ । জেদ্দার  আবহাওয়া ভাল ।  অাপনার এ যাত্রায় বাংলাদেশ বিমানকে বেছে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ।  আমরা আশা করবো পরবর্তী যাত্রায়ও আপনি বাংলাদেশ বিমানকে বেছে নেবেন । 
ঘোষণার পর জানালা দিয়ে নিচের দিকে তাকালাম।  দেখলাম উপর থেকে জেদ্দা এয়ারপোর্টের আলোকিত বাতিগুলো জ্বলজ্বল করছে ।  ( চলবে ) 

 চতূর্থ পর্বটি পড়ুন---
জেদ্দা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে মদীনা আল মুনাওয়ারা।
---------------------------------------------------
লেখকঃ কলামিস্ট ও প্রবন্ধ লেখক।   
   

Post a Comment

0 Comments