Recent Tube

বিতি কিচ্ছা-২২, - -নুর মুহাম্মদ চৌধূরী।

                         বিতি কিচ্ছা পর্ব -২২,
--------------------------------------------------------------   
        মুনাফার ন্যায় ভিত্তিক সীমা নির্ধারনে আমাদের মানসিকতা নিয়তঃ নেতিবাচক। কত শতাংশ মুনাফা হলে চলে, আর কত শতাংশ মুনাফা হলে তা যথেষ্ট হয় তার যেন কোন নীতিমালাই নাই আমাদের দেশে,অথবা আমাদের বিবেকের মনিকোঠায়।  ব্যবসায়ীরা পরষ্পর ধোঁকাবাজীতে লিপ্ত। উৎপাদকরা ব্যস্ত ভেজালের উপর ভেজাল পন্য উৎপাদনের প্রতিযোগিতায়। এদিকে সরকারী আমলারা বিনা পুঁজির ব্যবসায় হাজার কুটি টাকার মালিক বনে গেলেও তা দেখার কোন প্রয়োজন নাই এদেশে। অন্যদিকে বিদেশী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক তাদের কাজ থেকে বেঁচে যাওয়া প্রায় হাজার কুটি টাকা ফেরৎ দিল বাংলাদেশ সরকারকে। কোন কাজের বিশ্লেষণ করবেন কিভাবে? নৈতিক চরিত্র কি পরিমান মার্জিত হলে হেন আচরণ আশা করা যায়-  তা শিক্ষা নেয়া দরকার ওদের কাছ থেকে। আর ক্রম অধঃপতনের সংকীর্ণ গলিপথে হামাগুড়ি দিয়ে কত দ্রুত ইহলীলা সাঙ্গ করতে হয়- তার পথিকৃৎ হচ্ছি আমরা।

        ক'বছর আগে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হয়ে জনৈক মন্ত্রী মহোদয় বলেছিলেন, আমাদের দেশে নাকি মানুষের ক্রয় সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতএব বেশী দামে পণ্য কিনেও মানুষ ভাল আছে। সুতরাং আর যায় কোথায়, - হু হু করে জিনিষপত্রের দাম বাড়তে থাকলো। মন্ত্রীর কথা ক'টি ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো হিসাবে পর্যবসিত হল, জনগনের অবস্থা হল নাকাল। সরকারও আর কম গেল না, দাম বাড়ালো গ্যাসের, দাম বাড়ালো বিদ্যুতের, যেখানে সুযোগ আছে সেখানেই অব্যাহত থাকলো দাম বাড়ানোর এই চর্চা। দেখা গেল দাম যতই বাড়ে, তাতে কোন কিছুই আর আটকে থাকছেনা। সুতরাং সমস্যার কোন কারণ নাই। জনগন যখন পারছে তখন বোঝা আরো বাড়িয়ে দাও। এটাই ইনসাফ। মুলকথা জনগনের জন্য সরকার নয়, বরং সরকারের জন্য পুরো দেশ ও জনগন নিবেদিত।

       কিন্তু জনগণ পারছে কিভাবে -এটা দেখার কোন প্রয়োজন কি হবে কোন কর্তৃপক্ষের? এর আগে নীলকরীদের চাপ সহেওতো ওদের পর্বপূরুষরা সক্ষমতা দেখিয়েছে, আর ওরা তো তাদেরই যোগ্য উত্তরসূরী।

       ব্যাটারি বিহীন একটা বন্ধ ঘড়িও দৈনিক দুইবার সত্য কথা বলে। তবে আমাদের বেলায় ব্যবসা পাতিতে সত্যের কোন অধ্যায় যেন দ্রুতই তার প্রয়োজনীয়তা হারাচ্ছে। যেমন খুশি মূল্য নির্ধারণ আর যেমন খুশি ছাড় প্রদানের নামে গ্রাহক প্রতারনা চলছে সর্বত্র। মিথ্যাচারীতা আর চাতুরতা একটা সূনিপূণ শিল্পকর্ম হিসাবে মর্যাদা পায় এই আশ্চর্য সভ্য ভূখণ্ডে। এমন দেশে জনস্বার্থে কোন কাজটা আছে বলুন? সকল কাজেই ব্যবসা খোজে এই দেশের প্রায় শতভাগ মানুষ।  এখানে বিয়ে শাদীর ঘটকালিও একটা ব্যবসা। যেখানে ঘটক কর্তৃক লাগামহীন মিথ্যাচারীতার ব্যবহার, আর কনের স্বজন কর্তৃক রঙ মাখানো কনে প্রদর্শনই আজকাল সমুহ বিবাহ বিচ্ছেদের প্রধান কারন হয়। তবে ঘটকদের তাতে কোন লোকসান নাই, লাভ ছাড়া-একটা সেকেন্ডহেণ্ড খদ্দের ঝুটলো বলে। এতকিছুর পর পরপারে জবাবদিহীতার বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর কথাতো আজ সেই সেকেলে।  বলুনতো  এগুলো আর চলবে কতদিন? 

        এতএব ইনসাফের দাফন কাফনের এই কাজটা অতি দ্রুত না সেরে চলনা একটু মুখ ফেরাই ওদের দিকে- যাদের ঘামে আর রক্তে স্নাত হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
-------------------------------------------

Post a Comment

0 Comments