Recent Tube

সৌদী আরবের সবচাইতে বড় ফতোয়া কমিটির ফাতওয়াঃ১. ‘ফাজায়েলে আমল’ নামক বেদাতী পড়া জায়েজ নয়;২. ফাজায়েলে আমলে বর্ণিত ভ্রান্ত ‘শিরকি ও কুফুরী কাহিনী’ বিশ্বাস করে, এমন ইমামের পেছনে নামাজ পড়া জায়েজ নয়। মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।

সৌদী আরবের সবচাইতে বড় ফতোয়া কমিটির ফাতওয়াঃ
১. ‘ফাজায়েলে আমল’ নামক বেদাতী পড়া জায়েজ নয়;
২. ফাজায়েলে আমলে বর্ণিত ভ্রান্ত ‘শিরকি ও কুফুরী কাহিনী’ বিশ্বাস করে, এমন ইমামের পেছনে নামাজ পড়া জায়েজ নয়।
_______________________________
      সৌদী স্থায়ী ফতোয়া কমিটির ফতোয়া, ফতোয়া নং- ২১৪১২, ফাতাওয়া লাজনাহ দাইমাহ খণ্ড- ২, পৃষ্ঠা- ২৮২-২৮৪।
___________________________ 
প্রশ্নঃ শাইখ মুহাম্মাদ যাকারিয়া (রহঃ) ভারত ও পাকিস্তানের বিখ্যাত ধর্মীয় পণ্ডিতগণের মধ্যে একজন, বিশেষ করে তাবলীগ জামায়াতের (ইসলামের দিকে ডাকে এমন একটি দলের) অনুসারীদের মধ্যে। তার লিখা অনেকগুলো কিতাব রয়েছে যার মধ্যে “ফাজায়েলে আমল” একটি, যেটি তাবলীগ জামাত দলের ধর্মীয় আলোচনার সময় পড়া হয়ে থাকে এবং যেটিকে এই দলের সদস্যরা সহীহ বুখারীর মতই শ্রদ্ধা করে। আমি তাদের মধ্যে একজন ছিলাম। এই বইটি পড়তে গিয়ে আমি দেখলাম এর মধ্যে কিছু কিছু বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য ও অবিশ্বাস্য। সুতরাং আমি আমার এই সমস্যাটা আপনাদের সুবিখ্যাত কমিটির কাছে পেশ করছি, এই আশায় যে, আপনারা হয়তো এর সমাধান দিতে পারবেন। এই বর্ণনাগুলো আহমেদ রিফাঈর লিখা থেকে নেয়া, যেখানে তিনি দাবী
করেছেন যে, হজ্জ্ব শেষে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা জেয়ারত করতে যান এবং এই কবিতাংশটি পাঠ করেনঃ
যখন আমি দূরে ছিলাম, আমি আমার আত্মাকে আপনার কাছে পাঠিয়ে দিতাম আমার পক্ষ থেকে মাটিকে চুম্বন করার জন্যে এখন যেহেতু আমি স্বশরীরে ও আত্মায় উপস্থিত (হে নবী আপনি) আপনার ডান হাত বাড়িয়ে দিন, যেন আমি চুম্বন করতে পারি।

এই বাক্যগুলো বলার পর রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ডান হাত তাঁর কবর বের হয়ে আসে, আর রিফাঈ তাতে চুম্বন করেন।
_______________________________
ফাজায়েলে হজ্জঃ ২৫৮ পৃষ্ঠা।
_______________________________
এই ঘটনার বর্ণনা আছে আল-সুয়ূতী রচিত “আল-হাওয়ী” নামক গ্রন্থে। তিনি আরো দাবী করেছেন যে, প্রায় ৯ (অথবা ৯০) হাজার মুসলিম এই মহান ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন, এবং সেই পূন্যময় হাতও সবাই দেখতে পান যার মধ্যে শাইখ আবদুল কাদের জ্বিলানী (রহঃ) ও তখন মসজিদে নববীর মধ্যে থেকে তা প্রত্যক্ষ করেছেন। এই কাহিনীর আলোকে আমি নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলো করতে চাইঃ
_______________________________
১. এটি কী কোন সত্য ঘটনা নাকি অবাস্তব কল্পকাহিনী?
২. সুয়ূতী রচিত কিতাবটি “আল-হাওয়ী” সম্বন্ধে আপনাদের মত কী যেটির মধ্যে এই কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে?
৩. যদি এই গল্প সঠিক না হয়, এমন কোন ঈমামের পেছনে নামাজ পড়া জায়েজ হবে কী, যেই ইমাম এই গল্প বয়ান করে ও বিশ্বাস করে?
৪. এমন কিতাব কোন মসজিদে কোন ধর্মীয় আলোচনা সভায় পড়া জায়েজ হবে কী, যেমন ব্রিটেনে তাবলীগিদের মসজিদে এই কিতাব পড়ে থাকে? এই বইটি সৌদী আরবেও ব্যাপক প্রচলিত, বিশেষ করে মদীনা মুনাওয়ারাতে কারণ এর লেখক এখানে অনেকদিন যাবত বাস করেছিলেন। শ্রদ্ধেয় উলামাবৃন্দ, দয়া করে আমাদেরকে সন্তোষজনক জবাব দিয়ে পথ দেখাবেন কী, যেন
আমি এটিকে স্থানীয় ভাষায় অনুবাদ করে বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী ও অন্য সকল মুসলিম ভাইদের মাঝে বিলি করতে পারি এই বিষয়ে কথা বলার সময়।
_______________________________
উত্তরঃ এই গল্পটি একটি মিথ্যা ও সর্বৈব ভিত্তিহীন কাহিনী। মৃতব্যাক্তি সম্বন্ধে সাধারণ নিয়ম হচ্ছে, নবী রাসুল বা সাধারণ মুসলিম যেই হোন না কেন, তিনি তাঁর কবরে নাড়াচাড়া করতে পারেন না। যে বর্ণনা করা হয় যে, রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রিফাঈর জন্যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বা অন্য কারো জন্যে, এই কাহিনী সত্য নয়; বরং, এটি একটি ভিত্তিহীন গুজব বা মতিভ্রম, যা কোনমতেই বিশ্বাস করা উচিত নয়।

  তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবু বকর (রাঃ) এর জন্যে তাঁর হাত বাড়িয়ে দেন নি, উমার (রাঃ) এর জন্যে দেন নি, অথবা অন্য কোন সাহাবীর জন্যেও না। কারোই উচিত হবে না সুয়ূতীর কিতাব “আল-হাওয়ী” থেকে এই কাহিনী বর্ণনা করে বিভ্রান্ত হওয়া, কেননা অনেক পণ্ডিত মত দিয়েছেন যে সুয়ূতী তার কাহিনী সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই তাঁর কিতাবে উল্লেখ করেছেন।

    তাছাড়া, যে ইমাম এই কাহিনী বিশ্বাস করে তার পেছনে সলাত আদায় করাও জায়েজ হবে না। কারণ তিনি তাঁর আক্কিদাগত দিক দিয়ে খাঁটি মুসলিম নন এবং তিনি কুসংস্কারে বিশ্বাস করেন।
.
      ফাজায়েলে আমল বা এই জাতীয় কিতাব মসজিদে বা অন্য কোথায়ও পড়া জায়েজ নেই যার মধ্যে কুসংস্কার রয়েছে এবং মানুষের কাছে মিথ্যার প্রচার করে, কারণ এসব মানুষকে বিভ্রান্ত করে ও তাদের মধ্যে কুসংস্কার ছড়ায়। সর্বশক্তিমান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ্ সকল মুসলিমকে সত্যের পথে পরিচালিত করুন। তিনি সর্বশ্রোতা ও উত্তরদাতা। আল্লাহ আমাদের সফলতা দান করুন। আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তার পরিবার ও তাঁর সাহাবীগণের উপর আল্লাহ্ শান্তি ও দয়া বর্ষন করুন।
_______________________________

স্থায়ী ফাতওয়া কমিটির সম্মানিত মুফতিদের নামঃ
১. চেয়ারম্যানঃ আল্লামাহ শায়খ আব্দুল আ’জিজ ইবনে আবদুল্লাহ আলে-
শায়খ হা’ফিজাহুল্লাহ।
২. সদস্যঃ আল্লামাহ শায়খ সালেহ আল ফওজান হা’ফিজাহুল্ল...
৩. সদস্যঃ আল্লামাহ শায়খ বাকর আবু জায়েদ রাহি’মাহুল্লাহ।
৪. সদস্যঃ আল্লামাহ আব্দুল্লাহ ইবনে গুদাইয়্যান রাহি'মাহুল্লাহ।
_______________________________
মূল ফতোয়ার লিংকঃ-
http://alifta.net/Search/ResultDetails.aspx?
languagename=en&lang=en&view=result&fatwaN
um&FatwaNumID&ID=10995&searchS
cope=7&SearchScopeLevels1&Sear
chScopeLevels2&highLight=1&Sea
rchType=exact&SearchMoesar=fal
se&bookID&LeftVal=0&RightVal=0
&simple&SearchCriteria=allwords&PagePath&site
Section=1&searchkeyword=084097
098108105103104032103114111117
112#firstKeyWordFound
_______________________________
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা ও মাওলানা।       

Post a Comment

0 Comments