Recent Tube

বিতি কিচ্ছা পর্ব-৩৬; নুর মুহাম্মদ চৌধূরী।

                           বিতি কিচ্ছা
                              পর্ব-৩৬;
-------------------------, 
      যুগে যুগে ষড়যন্ত্রকারী শয়তান তার কর্ম প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন পরিবর্ধন করে ষড়যন্ত্রকে নতুন রুপে জাহির করে থাকে। যাতে লক্ষ্য বস্তুর দৃষ্টি ফাঁকি দেয়া সহজ ও সম্ভব হয়। ষড়যন্ত্রকারীর অভীষ্ট লক্ষ্যে যার অবস্থান সে যদি আনুপাতিক হারে বেশী চৌকশ না হয় তবে নিঃশ্চয়ই প্রতিপক্ষের ছুড়ে দেয়া অস্ত্রে সে ধরাশায়ী হয়েই যাবে। এই পৃথীবিতে মানব জাতির আদি ও চিরন্তন শত্রু শয়তান। সে বসে থাকে নাই, বসে থাকার জন্য সে সৃষ্টিও হয় নাই। প্রতিনিয়ত  রকমারি কৌশল জাহির করে সে মানব জাতিকে ধ্বংসের অতলে তলিয়ে দিতে তৎপর। এবং দেখা যায় সে তার কৌশল প্রয়োগে বেশীরভাগই সফল। প্রকৃতিগত ভাবে দুর্বল এই মানবজাতি কখনওই নিজ বুদ্ধি ও কৌশল বলে এই চির শত্রুর মোকাবিলা করতে অপারগ। তাই সে তার মালিকের সাহায্য নিয়েই শয়তানের সাথে এক অসম যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। মালিক চাইলে সে জয়লাভ করে, আর মালিকের সাহায্য নিতে ব্যর্থ হলেই সে হয় ব্যর্থ। 
     আত্মম্ভরিতায় অন্ধ মানুষ যারা, তারা সৃষ্টিকর্তার রহস্য বুঝতে অপারগ। তারা যুক্তি, বুদ্ধিবলে এগিয়ে যাবার চ্যালেঞ্জ নিয়ে অকুল সাগরে হাবুডুবু খায়। শয়তান তাদের কার্যাবলীকে তাদের দৃষ্টির সামনে চাকচিক্যময় করে তোলে। অতঃপর জীবন সয়াহ্নে দাঁড়িয়ে তারা আপনার নামে ধীক্ষার দিতে থাকে। সুন্দর এক পৃথীবি গড়ার স্বপ্নে বিভোর এই মানুষগুলোকে শয়তান প্রতিনিয়ত আশার বাণী শুনিয়েছে, দেখিয়েছে নিকটবর্তী সফলতা। অথচ তা ছিল মরুভুমির মরিচিকার মত শুধুই ধোকা।

      একবিংশ শতকে এসে শয়তানের চেলা চামুণ্ডারা কিন্তু তাদের গুরুর চেয়ে এক হাত এগিয়ে। নির্জলা মিথ্যা মামলা ও বানোয়াট সাক্ষী গোপাল দিয়ে দেশের সর্বাধিক সৎ প্রবৃত্তির মানুষগুলোকে জেলখানায় বন্দি রেখে, ফাঁসিতে ঝুলিয়ে, অপহরন,  গুম, ও ক্রসফায়ার নামক নাটকীয় খুনে দৃষ্টির অন্তরালে নিয়ে দেশ ও জাতিকে কলংক মুক্ত করার আনন্দে আজ তারা আত্বহারা। এমন সময়ে পুরো দেশব্যাপী সকল মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, ক্লাব, বাজার কমিটি, স্কল কমিটি,সহ এমন কোন ক্ষুদ্রতম সংস্থাও বাকি নাই যেখানে শাষক দল তাদের একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্টা করে নাই। অতঃপর সুস্পষ্ট শাষকগোষ্টীর মদদে দেশব্যাপী ব্যাপক হারে খুন, অপহরন,আার ধর্ষনের সেঞ্চুরী করা শুরু হল। সুতরাং বুঝাই যায় এবার দেশটা পুরোদমে কলংকমুক্ত ও পবিত্র হয়েছে। 
             (১) প্রকাশ্য দিবালোকে ও সুস্পষ্ট ভিডিও ফুটেজে প্রমানিত বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের আসামীদের মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।  অপরদিকে  ২৫ বছর আগে শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে বোমা হামলা ও গুলির ঘটনায় কোন খুন যখম না থাকলেও বিতর্কিত এই মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ২৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। দুর্মুখেরা বলে সংঘটিত ঘটনা সহ সাজানো মামলা আর তার রায় এবং বিশ্বজিৎ হত্যার রায় সবই রাজনৈতিক উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিত।     
           (২) বরগুনা শহরে শাহনাজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার প্রধান আসামী সাব্বির আহমদ ওরফে নয়ন বণ্ডকে ক্রস ফায়ার নামক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সরিয়ে দেয়া মুলত অপরাধ জগতের নাটের গুরুদের আড়াল করাই মুল উদ্দ্যেশ্য।

      তবে পরিতাপের বিষয় হচ্ছে যাদের দিলে আল্লাহ তায়ালা মোহর মেরে দিয়েছেন তারা এই সমস্থ সকল অপকর্মের দায়ভার ইসলামের উপরই চাপিয়ে দিতেই ব্যাস্ত। এই সমস্থ লোক অন্ধ না হলে দেখতেই পেত সমুদয় অপকর্মের নেপত্যে তার বড় কাকার মত বড় বড় শয়তানরাই জড়িত। আসলে শয়তানের কৌশল এটাও যে তার চামুণ্ডাদেরে পাঞ্জাবী জড়ায়ে, টুপি পরায়ে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষের চেয়ারে বসায়ে অপকর্ম সম্পাদন করাবে, আর ইসলামের নামে বদনাম রটাবে। যাতে আদম সন্তানরা তাদের পিতামাতার হাত ধরেই মাদ্রাসা বিমুখ, ইসলাম বিমুখ তথা ধর্ম বিমুখ হতে পারে।

        সুতরাং আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, আজ যে হত্যাযঙ্গে দেশ উত্তাল-উন্মাদ,  যে ধর্ষনের সেঞ্চুরিতে দেশ কালিমালিপ্ত, তার দায় ভার কোন ক্রমেই ইসলামের নয়,  মুসলমানের নয়, তার দায়ভার সম্পুর্ণই শয়তানের  দোসর দেশের এই সমস্থ শাষকগোষ্টীর। যে সমস্থ বদ ইমেজের পণ্ডিতরা এই সমস্থ অপকর্মের দায় ইসলাম এবং মুসলমানদের উপর চাপায়, বা চাপাইতে চেষ্টা করে অথবা এই ভাবদ্বারা অবলম্বনে কলাম লিখে অথবা কাব্য চর্চ্চা করে, তাদের জেনে রাখা উচিৎ আমার মত আর তার বা তাদের মত কারো বাহ্যিক লেবাস অথবা বিতর্কিত অপতৎপরতা কখনওই ইসলাম আর মুসলমানের ব্যাখ্যা বহন করে না। ইসলাম খোদ আল্লাহ মনোনীত একমাত্র জীবন ব্যবস্থা। যার প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ হয়ে যাবার ভয়েই এযুগের বড় বড় শয়তান ও তার দোসররা যুগের সর্বাপেক্ষা সচ্চরিত্রবান লোকদেরে বানোয়াট মামলা দিয়ে, মিথ্যা মামলা দিয়ে, জেল দিয়ে, ফাঁসি দিয়ে অন্তরাল করার চেষ্টা করছে।

        পরিশেষে বলি ইসলামকে জানার জন্য প্রয়োজন কোরআন অধ্যয়ন, আর কোরআন থেকে হেদায়ত লাভ করতে হলে প্রয়োজন একটি সন্দেহ ও সংশয় মুক্ত মন।
------------------------------
    

Post a Comment

0 Comments