Recent Tube

আর্মেনিয়া বনাম আজারবাইজান যুদ্বের পরিণতি কি হতে পারে? --কুতুব শাহ।


একজন জিজ্ঞেস করলো, আর্মেনিয়া বনাম আজারবাইজান যুদ্বের পরিণতি কি হতে পারে? 

 বল্লাম, মানুষের জীবনের মত জটিল সমীকরণ। অঙ্ক মিলানো বেশ কঠিন। তুরস্ক, ইরান, রাশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যে সবাই ধাঁধায় পড়ে গেছে। তা কেমন?

রাশিয়াঃ 
আর্মেনিয়ায় রাশিয়ার সামরীক ঘাঁটি এবং তাদের বন্ধু দেশ। আজারবাইজান উদয়মান অর্থনৈতিক শক্তি রাশিয়ার অস্ত্রক্রেতা এবং বিপুল বানিজ্যিক সম্পর্ক। এছাড়া রাশিয়ায় আর্মেনিয়ান, আজারী, দু'দেশের বিপুল সংখ্যক লোকের বসবাস প্রায় বিশ লক্ষ্যের উপরে হবে। তাই রাশিয়া চোখ বন্ধ করে কোন এক পক্ষ নিলে রাশিয়ার ক্ষতি। আজারবাইজান যদি রাশিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে পশ্চিমাদের দিকে ফিরে তখন বিপদ বাড়বে। আবার আর্মেনিয়াকেও ফেলতে পারছেনা তাই বাঁশের চিপায় আছে।

ইরানঃ
আরো বড় সমস্যায় পড়েছে আজারবাইজান শক্তিশালী হয়ে উঠলে ইরানের দু'টি অঞ্চল দাবী করতে পারে যা এখন ইরানের দখলে।  যেখানে বাস করেন আজারী যারা জাতিগতভাবে তুর্কী এবং ধর্মে শিয়া। তাই আজারবাইজান শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ  হলেও ভবিষ্যত চিন্তা করে আর্মেনিয়ান কট্র খৃষ্টানদের পক্ষে নিতে হচ্ছে অপ্রকাশ্যে।

মধ্যপ্রাচ্যেঃ
মধ্যপ্রাচ্যে অনেক রাষ্ট্র থাকলেও এসব ক্ষেত্রে খেলার মাঠে থাকে আরব আমিরাত আর সৌদি। আজারী মুসলীম রাষ্ট্র এবং ও আইসির সদস্য। তাই আজারীদের পক্ষে নেয়াই স্বাভাবিক কিন্তু তুরস্ক যেহেতু আযারীর প্রধান মিত্র তাই জাত যাবে অবস্থা। আরব আমিরাত, সৌদি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইরানকে টেক্কা দেয়ার জন্য যদি আযারীর পক্ষ নেয় তখন তুরস্কের মিত্র শক্তিকে জিতানোর মত হবে। তাই তারা চিপায় পড়েছে! আপাতত চুপ।

তুরস্কঃ 
বর্তমানে তুরস্ক এবং আর্মেনিয়া পৃথক দুইটি সার্বভোম রাষ্ট্র হলেও বিংশ শতকের শুরুতে তুর্কী এবং আর্মেনিয়ানরা অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে তুরস্ক রাষ্ট্রের অন্তর্গত ছিল। প্রথম বিশ্ব যুদ্বের পর নিজ রাষ্ট্রের বিরুদ্বে বেঈমানীর অভিযোগে গাদ্দার আর্মেনিয়ান খৃষ্টানদের শক্ত শাস্থি দেয়া হয়। আর্মেনীয়রা ২৪ এপ্রিল দিনটিকেই তুরস্কের বিরুদ্ধে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে। এই অংশটুকু উল্লেখ করলাম আর্মেনিয়ান খৃষ্টানদের সাথে মুসলীমদের তিক্ততার পুরানো মূল বুঝার জন্য। যদিও বর্তমান যুদ্বে তুরস্কের হিসাব অর্থনৈতিক স্বার্থ মাত্র।

আর্মেনিয়া হল, চরম উগ্রবাদী অর্থোডক্স খৃষ্টান রাষ্ট্র যারা মুসলীমদের চরম শত্রু। আর্মেনিয়ান অর্থোডক্স পাদ্রী বিশ্বের খৃষ্টানদেরকে  মুসলীমদের বিরুদ্বে ক্রোসেডের ডাক দিয়েছে। এটা হল,শয়তানি। কারণ, চলমান যুদ্ব ধর্মীয় ইস্যুতে নয় বরং আজারীদের দখলকৃত ভূমি পুনঃরুদ্বারের পাশাপাশি অর্থনৈতিক হিসাব নিকাশে। জিতবে কারা?
---------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।         

Post a Comment

0 Comments