Recent Tube

বিতি কিচ্ছা-৩৭, নুর মুহাম্মদ চৌধূরী।

   
                    বিতি কিচ্ছা,
                            পর্ব-৩৭;


         প্রত্যেক বস্তু ও প্রাণী তার আপন বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল, শুধূমাত্র মানুষ ছাড়া। মাটির এই পৃথীবিকে কতইনা বাহারী রঙে ও ঢঙে মাতিয়ে, নাচিয়ে নাস্তানাবুদ করে ছাড়লো বিচিত্র বৈশিষ্ট্যের এই মানুষ নামক দ্বি-পদ প্রাণীগুলো। এরা পাথরের মত কঠিন হয়, বরফের মত গলে, গাছের ন্যায় ঠায় দাড়িয়ে থাকে, আবার কখনও মাটির মত হয় সাবলীল। কোনটা তার নিজস্ব সত্বার একান্ত আপন বৈশিষ্ট্য তা বোধ হয় আজও অনাবিষ্কৃতই থেকে গেল।

    এরা বাঘের মত হিংস্র হয়ে সিংহের মত গর্জে, আর কুমিরের মত সর্বগ্রাসী হয়ে সব কিছু যায় ধ্বংসে। কুকুরের মত নির্লজ্জ হয়ে দিনকে করে রাত। আর নাগিনীর মত ফণা বিস্তারে সর্বত্র শৃংখ্যলা করে নাশ্। 
        বাঘের বাচ্চা বললে খুশিতে গদগদ হয়। বিশেষায়িত  টাইগারদের নিয়ে কম লাফালাফি ধাপাধাপি করা হয় নাই ইদানীং। সিংহের প্রতিকৃতি দিয়ে নির্মান করে আসন, নাম দিয়েছে সিংহাসন। কতইনা গর্বের বিষয় তথায় উপবেশন। অথচ এই বাঘ ও সিংহ দুটোই মারাত্বক রকমের হিংস্র জানোয়ার। আবার "জানোয়ারের মত" বললে বে-সামাল রাগে ফেটে পড়ে, দিগ্বিদিক জ্ঞান শুন্য হয়ে তুলকালাম কাণ্ড বাধিয়ে দিতে কসুর করে না। 
      টিকটকিরা নাকি সাংবাদিকতায় অথবা গোয়েন্দাগিরিতে সিদ্ধহস্ত। চুঁচো ইঁদুর সুলভ মানুষ আছে যারা অন্যের খেত খামারে মাড়াই দিতে বড় ভালবাসে। দু'মুটো ভাতের জন্য বিড়ালের মত মিনমিন করে দুই হাতের তালু কচলিয়ে অথবা ইনিয়ে বিনিয়ে খয়ের-খাঁ গিরি করে দিন যায় কত জনার। ঘাড় বাঁকা গণ্ডার সুলভ মানুষও আছে সমাজে, সহজে কেউই  ঘেষেনা যে তার ধার। গাধার মত কর্কশ আর জিরাফের মত লম্বা গলায় কথার খেউ খোজে তিলকে তাল করতে উস্তাদ আছে অনেকেই। মহিষের মত বেপরওয়া কেউ ঠেস্ ধরে যেখানে সেখানে। তবে পাশের বাড়ির অলস গরুটার কথা বাদই দিলাম। কিন্তু হরিণকে বাদ দিয়ে হরিণীর মত চোখ দিয়ে চাবুক মারতে চাওয়া আর ময়ুরের মত পেখম ধরে নাচতে গিয়ে হোচট খেয়ে পা ভেঙ্গেছে কত নাম জানা মানব মানবীর। এরপরও মানুষের মত মানষ হওয়ার চেষ্টায় রত থাকতে রাজি কে? তাকে খুজে পাওয়া আজ দুষ্কর বৈ কি।

      ইদানিং অনেকেই তাদের স্বপ্নের বাবা কাকাকে মহামানুষ আখ্যায়িত করে কতনা বৈসাদৃশ্যের বিশেষনে ভূষিত করে সমাজের মাথার উপর ঠায় বসিয়ে দিতে মহাব্যস্ত। অথচ এসব নেতা পিতাদের নিজস্ব ডায়েরী থেকেই তাদের কলংক যুক্ত লিখনী ইতিহাস হয়ে সব উপমাকে হাস্যকর বস্তুতে রুপান্তরিত করল। তবুও হাল ছাড়েনি মুরিদানের গোষ্টী। একটা মিথ্যাকে হাজার বার উচ্চারণ করে তাকে সত্যে পরিনত করার অপপ্রয়াস নিয়ে কাঠ-ঠুকরা পাখিটির মত মাথা মারতে আছে। তাদের ধারণা সবই বিবেকহীন মানুষ। এরা বোধ হয় আসল তথ্য জানেই না।

      শিয়াল ধূর্ত বটে। আর বানরেরা আসলেই বড় বান্দর। মানুষের মধ্যেও এদের স্বভাব বিদ্যমান। আর 'পেচা'- সে তো দিনের আলোয় চোখ খুলেইনা। ইচ্ছে কররেই অন্ধ হয়ে থাকে। এতএব,
 সত্য অস্বীকারকারীরা শিয়াল, বানরের মত ধূর্তামী, বাঁদরামি করে আপন অভিলাষের ফুলঝারিতে খৈ ফুটায়ে লিপ্ত, আর পেঁচার মত অন্ধ থেকে প্রকৃত আলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে সমাজকে করছে কলুষিত। শকুনের মত সর্বভূখ হয়ে একাই খাবে সব, আর হুতুম পেচা সুলভ  তাণ্ডব দিয়ে ধ্বংস করে দেবে সব। বিনিময়ে কাকা বাবার নামে ফলক উন্মোচন করতে করতে নিঃশ্বেস করে ছাড়বে তাবৎ মানুষ্য বসতি ও সুকীর্তি।
     সর্ব্বোত্তম চরিত্র মাধুর্যের সনদ কোথায় পাওয়া যায়? আর কে সেই সর্ব্বোত্তম চরিত্রের মানুষটি? কিভাবে তার অনুসরণ করা যায়? আর তার অনুসরণ করলে কি হয়? - ইতিহাসে তার সবই স্পষ্ট আছে। কিন্তু খোলা মন নিয়ে ইতিহাস চর্চ্চা করার মানষিকতা ছাড়া কেউই ইতিহাস থেকে সুফল লাভ করতে পরবে না। ইতিহাস সাক্ষী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (দ:) ওহির সনদে মাকারামে আখলাক।  সর্ব্বোত্তম চরিত্রের মানুষ তিনি। যার সান্নিধ্যে থেকে কত তামা স্বর্ণের মূল্যে মূল্যায়িত হয়েছে তা শুমার করাই দায়। যার চরিত্র মাধুর্যে মোহিত তামাম সৃষ্টি। তবে আমরা আজও অবলীলায় তা শেষ বেলার কাজ হিসাবে রেখে দিলাম। আর অমুক বাবা, তমুক বাবার রঙ ধারণে উটে পড়ে রইলাম।কী নির্বোধ জাতি আমরা ভাববার বিষয় বটে।
------------------------------   

Post a Comment

0 Comments