Recent Tube

বিতি কিচ্ছা-৪৫; --নুর মুহাম্মদ চৌধূরী।


                         বিতি কিচ্ছা;
                                পর্ব-৪৫;

শরমের জানাজা ও কুলখানি;
--------------------------------- 
সাকরাতুল মাওতের হালে আছেন শরম আলী। শরম আলী তার ডাক নাম। আসল নাম লাজ্ বলে ডাকলেও সকলেই তাকে চিনত আগে। তবে ইদানীং কেন জানি লাজ্ শরমের কথা তেমন মনে পড়ে না কারো। সবাই যেন একরকম জোর করেই ভুলতে বসেছেন ওর কথা। তাইতো সাকরাতুল মাওতের হালে তিনি কাতরাচ্ছেন এই মনুষ্য সমাজে।
ঈমানের ভূষন এই লাজ, সমাজে বিলুপ্তপ্রায় আজ। বেলাজের অনেক অগ্রগামীতা আজ এই লাজের সংজ্ঞাকেও পরিবর্তন করে দিয়েছে। ইদানিং এমন অনেক অপকর্ম সচরাচর করা হয়, যা ইতিপূর্বে নিদারুন লজ্জাকর বিষয় হিসাবে ধর্তব্য হত, ভয়ানক শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে সাব্যস্ত হত, অথচ আজ তা নেহায়েত চক্ষুলজ্জার বিষয় হয়েও থাকেনি।
অপরাধ জগতের তালিকাভুক্ত সমস্ত ক্রীয়ায় প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে অংশগ্রহণ লজ্জাকর। আবার অপরাধ হিসাবে সাব্যস্ত নয় এমন অনেক কাজও আছে যা সর্বসমক্ষে পরিত্যজ্য তথা লজ্জাকর। কিন্তু দিন কে দিন এই নির্দিষ্ট লজ্জাটুকুর বিলুপ্তি সমাজকে পুরোদস্তুর বেহায়া করে ছাড়ছে। এইভাবে এমন অনেক অপরাধ আজ সহজভাবে, সহজ ভঙ্গিমায় অবলীলায় সংঘটিত হয়- যার ইউটার্ণ আজ সময়ের দাবি।
হালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কোন এক পুলিশ অফিসারকে দেখলাম বখাটে ষ্টাইলে চুল কাটার বিরুদ্ধে বেশ সোচ্চার হতে। আমরা তার এই কর্যক্রমকে সাধুবাদ জানাই। বর্তমানে অভিজাত ঘরের ধনীর দুলালেরা হাফপ্যন্ট পরে বাজারে ঘুরাফেরা করে, উদল গায়ে রাস্তায় নেমে মোটর বাইক হাঁকায়, মাথার চুল অস্বাভাবিক লম্বা করে, তাতে মহিলাদের মত করে বেণী পরে, হাতে চুড়ি ও কর্ণে দুল পরে। এছাড়া ইদানিং দাড়ি রাখার আজব ষ্টাইলগুলোও বেশ আলোচনার দাবি রাখে এই প্রসঙ্গে। এসব কাজ তাদের কাছে বাহারী, দৃষ্টিনন্দন ঠেকলেও প্রকৃত ভদ্র মহল তথা সূশীল সমাজে তাহা নেহায়েত দৃষ্টিকটু। আমাদের কিন্তু লজ্জাই হয় তাদের দিকে তাকাতে। কিন্তু তারা তাতে নির্বিকার। অর্থাৎ শরমের কুলখানি সম্পন্ন করে তারা কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছে যে, যতই তাদেরে এ ব্যপারে চোখে অঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেন- তারা তাতে কর্ণপাতও করবে না। উল্টো বরং নির্দেশককে তারা সেকেলে ও প্রগতিবিরুদী হিসাবে সাব্যস্ত করে ইজ্জত ছেড়াবেড়া করে ছাড়বে। ভদ্র সমাজের অনেকেই মান সম্নানের ভয়ে এদেরকে এড়িয়ে যান বটে, তবে সমাজ যে ক্রমশঃ অপ-সংস্কৃতির করাল থাবায় ক্ষয়ে ক্ষয়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে- সে খেয়ালটুকু করার ফুরসৎ পাচ্ছেন না কেউই। আমরা মনে করি আল্লাহর নবী (দঃ) এর সুন্নাত দাঁড়ি যেন তেন ভঙ্গিমায় সাজিয়ে সেই সাথে আল্লাহর ফরজ বিধান হাটু ঢেকে না রেখে যে নির্লজ্জ ব্যবহার করা হয় আল্লাহ ও তার রাসুলের সাথে, তাতে খুব শীগগিরই আল্লাহর গজব এসে পতিত হবে মনুষ্য সমাজে। তখন খেসারত শুধু ওরাই দেবে না, সকলেই তাতে ভাগ পাবে।
এ তে গেল ছেলে ছোকরাদের কথা। ছোকরিদের বেলায় আর কম যায় কি? সঠিক ভাবে ও সঠিক স্থানে নাই ওড়নার ব্যবহার। উদম মাথায় অাঁটসাট পোষাকে হাত পাঁ ছুড়ে বেমালুম ঘোরাঘুরি। যেন লাজ শরমের কোন পাঠই ওদের অজানা। এ অবস্থায় নাই ঠাঁই ফুটপাতে, পার্কে, কিংবা অফিস আদালতে। আজ দেখলাম শুধুমাত্র সেন্ডো গেজ্ঞি ও থ্রী-কোয়ার্টার শেলওয়ার পরে ৩০ বৎসর বয়সী এক মহিলা এলো ঔষধ কিনতে বাজারে। কত ইমার্জেন্সি বিষয় কি না, কে জানে?
এইভাবে শরমের জানাজা ও কুলখানি, চলছে তা প্রতিহাটে প্রতিদিনই। মোরা না রুখে তা যদি থাকি বসিয়া, তবে অচীরেই হবে গ্রাস দুনিয়া।

Post a Comment

0 Comments