Recent Tube

সাম্প্রতিক কবীরা গোনাহকারীরাও একদিন জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে এই আক্বীদা আলোচিত হওয়ার অনেকের শরীরে একটা ভাব এসে গেছে! ---কুতুব শাহ।

  সাম্প্রতিক কবীরা গোনাহকারীরাও একদিন জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে এই আক্বীদা আলোচিত হওয়ার অনেকের শরীরে একটা ভাব এসে গেছে!
আ রে, চুরি,ধর্ষণ, সুদ, অবৈধ উপার্জন, হারাম কাজ যা-ই করি একদিন তো মুক্তি পেয়ে জান্নাতে তো যাবই! এই চিন্তা যাদের মনে এসেছে তারা ভ্রান্ত "মুরজিয়া সম্প্রদায়" এর আক্বীদার দিকে ঝুঁকছে যা ভয়াবহ।

 সিম্পল কয়েকটা পয়েন্ট খেয়াল করেন। জান্নাত, জাহান্নামের  ফায়সালাতো পরের বিষয় এর আগে কবরে কি অবস্থা হবে, কত বছর কবরে থাকতে হবে, কবরের মারাত্মক শাস্থি কি হবে তা কি ভাবছেন? 

হযরত উসমান (রঃ) জান্নাতের সু-সংবাদ প্রাপ্ত একজন। অর্থাৎ নিশ্চিত জান্নাতী। তবু তিনি কবর নিয়ে ভিষণ আতঙ্কিত। তিনি যখন কোন কবরের পাশে দাঁড়াতেন, তখন কান্নায় তাঁর দাড়ি ভিজে যেত। তাঁকে বলা হল, জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা আসলে আপনি কাঁদেন না। অথচ এখানে আপনি কাঁদছেন? জবাবে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,

إِنَّ الْقَبْرَ أَوَّلُ مَنَازِلِ الآخِرَةِ فَإِنْ نَجَا مِنْهُ فَمَا بَعْدَهُ أَيْسَرُ مِنْهُ وَإِنْ لَمْ يَنْجُ مِنْهُ فَمَا بَعْدَهُ أَشَدُّ مِنْهُ، وَقَالَ : مَا رَأَيْتُ مَنْظَرًا قَطُّ إِلاَّ وَالْقَبْرُ أَفْظَعُ مِنْهُ-ُ

‘নিশ্চয়ই কবর হ’ল আখেরাতের মনযিল সমূহের প্রথম মনযিল। যে ব্যক্তি এখানে মুক্তি পাবে, তার জন্য পরবর্তী মনযিলগুলি সহজ হয়ে যাবে। আর যদি সে এখানে মুক্তি না পায়, তাহলে পরবর্তীগুলি কঠিন হবে। তিনি বলেন, কবরের চাইতে ভয়ংকর কোন দৃশ্য আমি দেখিনি’।

কি বুঝলেন? হযরত ওসমান (রঃ) কবরের নিয়ে কেঁদে দাড়ি ভিজিয়ে ফেলতেন আর আপনি আমি ভাবছি আ রে একদিন জান্নাতে যাব তাই বিন্দাজ! আমরা কী অদ্ভুত উদাসীন বোকা তাই না?

(২)
হযরত মা' আয়শা (রঃ) আনহা বলেন, 
رَأيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ صَلَّى صَلَاةً اِلَّا تَعَوَّذَ بِاللهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ.
আমি রাসূল(সা.) -কে যখনই ছালাত আদায় করতে দেখেছি। তখনই তাকে কবরের আযাব হ’তে পরিত্রাণ চাইতে দেখেছি।

কি বুঝলেন? রাসূল (সঃ) তো নিস্পাপ তবু কবরের আযাব থেকে পরিত্রাণের দোয়া করতেন। এখানেই আমাদের জন্য শিক্ষা।

৩...
যাদের মাথায় এই চিন্তা এসে গেছে আ রে একদিন তো জান্নাতে যাবই। এবার যা ইচ্ছা করি। আপনি কত বছর জাহান্নামে থাকার পর আল্লাহ জান্নাতে দিবেন এর কি কোন সময় নির্ধারিত আছে? জাহান্নামের আগুনের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানেন? 

 রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের (ব্যবহৃত) আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের একভাগ মাত্র। বলা হল, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ! জাহান্নামীদের শাস্তির জন্য দুনিয়ার আগুনই তো যথেষ্ঠ ছিল।’ তিনি বললেন, ‘দুনিয়ার আগুনের উপর জাহান্নামের আগুনের তাপ আরো উনসত্তর গুন বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, প্রত্যেক অংশে তার সমপরিমাণ উত্তাপ রয়েছে।’  -সহীহ বুখারী ৩০৩৭ (ইফা:), তিরমিযী শরীফ

কি বুঝলেন? আগুন দূরে থাক শরীরে এক গ্লাস গরম পানি ঢেলে টেস্ট করেন তো! দুনিয়ার আগুনের চেয়ে ৬৯ গুণ বেশী শক্তিশালী। এই আগুনে কত শত বছর বা কত হাজার বছর কিংবা ঠিক কত সময় জ্বালানোর পর আল্লাহর ইচ্ছা হলে জান্নাতে দিবে তা কি চিন্তা করছেন? এই গ্যারান্টি তো কেউ দিতে পারবেনা কত বছর পর আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবে।

শাস্থির সামান্য নমুনাঃ
জাহান্নামীদের শরীরের চামড়া যখন পুড়ে যাবে তখন সাথে সাথে নতুন চামড়া লাগিয়ে দেয়া হবে যেনো আযাবের ধারাবাহিকতায় কোন বিরতি না ঘটে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে অচিরেই আমি তাদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবো, যখনই তাদের চামড়া জ্বলে যাবে তাদেরকে ভিন্ন চামড়া দিয়ে পরিবর্তন করে দিবো যাতে করে তারা পরিপূর্ণভাবে আযাব অনুভব করতে পারে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা মহাপরাক্রমশালী এবং প্রজ্ঞাময়। (সূরা নিসা, আয়াত ৫৬)

শেষ কথাঃ 
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা মতে কেউ ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করলে তার কবীরা গোনা কাহের কারণে যদি জাহান্নামে যায় আল্লাহর ইচ্ছায় এক সময় জাহান্নাম থেকে মুক্ত হয়ে জান্নাতে যাবেন। কিন্তু কত সময় জাহান্নামে জ্বলতে হবে তা কারো জানা নাই। তাই পাপের ব্যাপারে উদাস হওয়ার কি সুযোগ আছে? আল্লাহ আমাদেরকে হেদায়েত দান করুন,জাহান্নামের ভয় অন্তরে দান করুন যাতে পাপের প্রতি উদাসীন না হই।
---------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।          

Post a Comment

0 Comments