মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য,
=============================
আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। উদ্দেশ্য হ’ল, তারা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না। আল্লাহ বলেন,
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ
‘আমি সৃষ্টি করেছি জিন এবং মানুষকে এজন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে’।
সূরা যারিয়াতঃ ৫৬
তিনি অন্যত্র বলেন,
لَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوْحًا إِلَى قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ إِنِّيْ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيْمٍ
‘আমরা তো নূহকে পাঠিয়েছিলাম তার সম্প্রদায়ের নিকটে এবং সে বলেছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহর ইবাদত কর, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ নেই। আমি তোমাদের জন্য মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করছি’।
সূরা আ‘রাফঃ ৫৯
এই আহবান শুধুমাত্র নূহ (আঃ)-ই তাঁর কওমকে করেননি। বরং আল্লাহ প্রেরিত প্রত্যেক নবী-রাসূলই তাদের কওমকে আল্লাহর ইবাদত করার আহবান জানিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَسُوْلٍ إِلاَّ نُوحِيْ إِلَيْهِ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنَا فَاعْبُدُوْنِ-
‘(হে মুহাম্মাদ!) আমরা তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল প্রেরণ করিনি যার প্রতি আমরা এই অহী অবতরণ করিনি যে, ‘আমি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত কর’।
সূরা আম্বিয়াঃ ২৫
তিনি অন্যত্র বলেন,
وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِيْنُ
‘তোমার মৃত্যু উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদত কর’
সূরা হিজরঃ ৯৯
ইবাদতের অর্থ
আরবি ‘ইবাদত’ শব্দটি ‘আব্দ’ শব্দ হতে এসেছে। আর ‘আব্দ’ অর্থ হলো দাস বা গোলাম। সুতরাং ‘লিয়া’বুদুন তথা ইবাদত’ মানে হলো- আল্লাহর গোলামি বা বন্দেগি করা। আর দুনিয়াতে যে ব্যক্তি আল্লাহর গোলামি করবে, ওই ব্যক্তিই সফলকাম।
মানুষ সৃষ্টির মৌলিক ৩টি উদ্দেশ্য
মানুষের মাধ্যমে সম্পাদিত ইবাদতের মানে কি? কোন প্রক্রিয়ায় মানুষ আল্লাহ হুকুম-আহকাম পালনের মাধ্যমে ইবাদত করবে তথা মানুষ সৃষ্টির শুকরিয়া জ্ঞাপন করবে?
মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে আগমনের কারণে যে প্রক্রিয়ায় ইবাদত তথা সৃষ্টির উদ্দেশ্য সফল হবে তা হলো-
প্রথমত আল্লাহ তাআলাকে রব হিসেবে মেনে নেয়া এবং তাঁর দাসত্ব স্বীকার করা।
আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মেনে তাঁর পরিপূর্ণ আনুগত্য স্বীকার করা।
সর্ব বিষয়ে আল্লাহ তাআলার সম্মান ও সম্ভ্রম রক্ষা করা অর্থাৎ আল্লাহ তাআলাকে প্রভূ বলে স্বীকার করা; অন্য কাউকে নয়।
আল্লাহ হুকুম-আহকাম তথা হালালকে হালাল আর হারামকে হারাম বলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মেনে নেয়া।
শুধুমাত্র আল্লাহর সম্মান ও সম্ভ্রমের প্রতি লক্ষ্য রেখে শুধুমাত্র তাঁর সামনে মাথা নত করা বা সিজদা করা।
পরিশেষে
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যাবতীয় কাজ-কর্মে আল্লাহর হুকুম আহকাম মেনে চলাই হলো মানুষ সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য। আর তার হুকুম-আহকাম পালনের আমলই হলো ইবাদত। কুরআনুল কারিমের ঘোষণাও এ রকমই।
---------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।
0 Comments