Recent Tube

ইসলামের দৃষ্টিতে দাড়ি রাখার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা। শামীম আজাদ।



ইসলামের দৃষ্টিতে দাড়ি রাখার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা;
=============================

মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা হিসাবে আল্লাহ তা‘আলা জ্ঞান, প্রজ্ঞা, আকৃতি-প্রকৃতি সর্বদিক থেকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ গুণে গুণান্বিত করেছেন। আদি পিতামাতা আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ) আল্লাহর ফিতরাতী সৃষ্টির প্রথম মানব-মানবী, পুরুষ ও নারী। আর পুরুষ জাতির অন্যতম  ফেতরাতী তথা আল্লাহ সৃষ্ট নির্দশন হল দাড়ি। দাড়ি রাখা একজন মুসলিম পুরুষের জন্য আবশ্যকীয় কর্তব্য। এতে যেমন দুনিয়াবী কল্যাণ রয়েছে তেমনি আখেরাতে রয়েছে অফুরন্ত প্রতিদান। 
নিম্নে আমরা দাড়ি কেন রাখব? এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা।

দাড়ি রাখা আনুগত্যের প্রতীক :

মহান আল্লাহ বলেন, 
وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ 
‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে ফায়ছালা দিলে কোন মুমিন পুরুষ বা নারীর সে বিষয়ে নিজস্ব কোন ফায়সালা দেওয়ার এখতিয়ার নেই’।
সূরা আহযাবঃ ৩৬

তিনি আরো বলেন
فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ 
‘অতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সাবধান হৌক যে, ফিৎনা তাদেরকে গ্রাস করবে অথবা মর্মন্তুদ শাস্তি তাদের উপর আপতিত হবে’।
সূরা নূরঃ ৬৩

দাড়ি রাখা সম্পর্কে স্পষ্ট হাদীস এসেছে,

وَحَدَّثَنَاهُ قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ نَافِعٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ أَمَرَ بِإِحْفَاءِ الشَّوَارِبِ وَإِعْفَاءِ اللِّحْيَةِ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গোঁফ ছোট করতে এবং দাড়ি লম্বা করতে আদেশ করেছেন। (ই.ফা. ৪৯২, ই.সে. ৫০৮) মুসলিমঃ ৪৮৯

উল্লেখ্য যে, এ নির্দেশটি বিভিন্ন শব্দে ব্যবহার হয়েছে। যেমন :أعفوا، أوفوا، أرخوا   (أرجوا، فرواএই সবগুলি শব্দের অর্থই হলো তার অবস্থার উপরই ছেড়ে দাও।

অন্যত্র এসেছে, 

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ   صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم  جُزُّوا الشَّوَارِبَ وَأَرْخُوا اللِّحَى خَالِفُوا الْمَجُوسَ

আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “মোছ ছেঁটে ও দাড়ি রেখে অগ্নিপূজকদের বৈপরীত্য কর।” (ই.ফা. ৪৯৪, ই.সে. ৫১০) মুসলিমঃ ৪৯১

অন্যত্র এসেছে, ‘দাড়ি কামানো ও মোচ ওয়ালা দুইজন ব্যক্তি রাসূল (সাঃ)-এর নিকট আসল। রাসূল (সাঃ) তাদের দুইজনকে দেখে অপছন্দ করলেন। তাদেরকে বললেন, তোমাদের ধ্বংস হৌক! এটা করতে তোমাদের কে আদেশ দিয়েছে? তারা বলল, আমাদের প্রতিপালক অর্থাৎ ‘সম্রাট কিসরা’। রাসূল (সাঃ) বললেন, কিন্তু আমার প্রভু আমাকে দাড়ি লম্বা করতে ও মোচ ছাঁটতে আদেশ করেছেন’।
আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৪/২৭০, হাদীসটি হাসান- লেখক

এখানে আমর বা নির্দেশ বাচক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যা থেকে বোঝা যায় যে এটি সাধারণ নির্দেশ নয়। বরং তা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে বর্ণনা করে। যার উপর আমলকারী ব্যক্তি নেকী পাবে এবং পরিত্যাগকারী ব্যক্তি শাস্তি পাবে।

দাড়ি কামানো অবাধ্যতার শামিল :

মহান আল্লাহ বলেন, 

وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُبِينًا  
‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা করবে, সে ব্যক্তি স্পষ্ট ভ্রান্তিতে পতিত হবে’।
সূরা আহযাবঃ ৩৬

তিনি আরো বলেন,
وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ لَهُ نَارَجَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا 
‘আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাতে তারা চিরস্থায়ী হবে’ 
সূরা জ্বীনঃ ২৩

দাড়ি রাখা রাসূল (সাঃ)-এর নির্দেশ। সুতরাং এর অবাধ্যতা করা হারাম। মহান আল্লাহ বলেন,
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ 
‘রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে তিনি তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও এবং আল্লাহকেই ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে কঠোর’।
সূরা হাশরঃ ৭

এ সম্পর্কে রাসূল (সাঃ) বলেছেন, 
مَا نَهَيْتُكُمْ عَنْهُ فَاجْتَنِبُوهُ 
‘আমি তোমাদের যে বিষয়ে নিষেধ করি তা থেকে বিরত থাক’।
নাসায়ী ১৭১৯, ১৭২০, ১৭২১, ১৭২২, ১৭২৩, ১৭২৪, ১৭২৫, ১৭৮৯, ২১৭৭, ২১৭৮, ২১৭৯, ২৬১৯, আবূ দাউদ ২৪৩৪, রিয়াদুস সালেহিনঃ ১৬০

সুতরাং নির্দেশ হ’ল দাড়ি রাখা ও বড় করা। আর আবশ্যক হ’ল দাড়ি না কামানো ও সর্বদা ছোট করা থেকে বিরত থাকা। মনে রাখতে হবে দাড়ি ছোট করা যা কামানোর শামিল। কোন বিষয়ে নির্দেশ পাবার অর্থ হ’ল তার বিপরীত বিষয় থেকে বিরত থাকা। রাসূল (সাঃ) বলেন, 
لَا تَنْتِفُوا الشَّيْبَ، فَإِنَّهُ نُورُ الْمُسْلِمِ 
‘তোমরা পাকা চুল তুলে ফেলো না। কেননা সেটা মুসলিমের জন্য আলোকবর্তিকা স্বরূপ’।
আবূ দাউদ ৪২০২, তিরমিযী ২৮২১, নাসায়ী ৫০৬৮, ইবনু মাজাহ ৩৭২১, রিয়াদুস সালেহিনঃ ১৬৫৫

ফলে দাড়ি তোলা ও চুল তোলার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

অন্য হাদীসে এসেছে, 
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ يُكْرَهُ أَنْ يَنْتِفَ الرَّجُلُ الشَّعْرَةَ الْبَيْضَاءَ مِنْ رَأْسِهِ وَلِحْيَتِه-ِ 
আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত ‘কোন ব্যক্তির জন্য তার সাদা চুল তোলা অপসন্দনীয়, সেটা মাথার চুল হোক অথবা দাড়ি’।
মুসলিমঃ ৫৯৭১, ইবনু হিববানঃ ২৯৮৫

যিনি দাড়ি কামান, তিনি কালো চুলের মধ্যে সাদা চুলকে অতিরিক্ত মনে করেন অথচ তা মুসলমানের নূর। ‘ওমর ইবনু খাত্তাব ও আবু ইয়ালা (রাঃ) মদিনায় ফায়ছালা প্রদান কালে দাড়ি কামানো ব্যক্তিদের সাক্ষ্য প্রত্যাখান করতেন’।
ফাতাওয়া শাবাকাতুল ইসলাম ২/৯৭৬ পৃঃ

অন্য হাদীসে এসেছে 
عَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ مِنَّا مَنْ حَلَقَ، وَسَلَقَ، وَخَرَقَ»

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ঐ ব্যক্তি আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়, যে মাথার চুল বা দাড়ি উপড়ে ফেলে সজোরে চিৎকার করে এবং আঁচল ছিঁড়ে ফেলে।
আন-নাসায়ীঃ ১৮৬৬

ইমাম গাযালী ও ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, نتفها)) ‘নাতফ’-এর ব্যাখ্যায় বলেন, তা উপড়িয়ে ফেলা অর্থাৎ দাড়ি উঠার শুরুতেই উপড়িয়ে ফেলা যেটি ‘মুরদ’-এর অনুসরণ করা। আর মুরদ হলো যে লোক মোচ কেটে ফেলে ও দাড়ি উপড়িয়ে ফেলে। যা বড় অন্যায় অপকর্ম’।

দাড়ি লম্বা করা সুন্নাতে মুহাম্মাদীর বৈশিষ্ট্য :

মহান আল্লাহ বলেন,
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ 
‘নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ নিহিত রয়েছে’ 
সূরা আহযাবঃ ২১

তিনি আরো বলেন, 
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُولٍ إِلَّا لِيُطَاعَ بِإِذْنِ اللَّهِ 
‘আমি রাসূল পাঠিয়েছি কেবল এই উদ্দেশ্যে যে, আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী তার আনুগত্য করা হবে’।
সূরা নিসাঃ ৬৪

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, 
خَيْرُ الْهُدَى هُدَى مُحَمَّدٍ 
‘সর্বোত্তম পথ হল রাসূল (সাঃ)-এর পথ’।
মুসলিম ৮৬৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ১০, আত্ তারগীব ৫০, বুলূগুল মারাম ৪৪৮, দারেমী ২০৬, ইবনু মাজাহ্ ৪৫, নাসায়ী ১৫৭৮, সহীহ ইবনু খুযাইমাহ্ ১৭৮৫, মিশকাতুল মাসাবিহঃ ১৪১

রাসূল (সাঃ)-এর চারিত্রিক গুণাবলী থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে তিনি দাড়ি লম্বা রাখার বিষয়ে উৎসাহ প্রদান করতেন। 

এ সম্পর্কে হাদীস, 
عَن أنس كَانَت لحيته قد مَلَأت من هَهُنَا إِلَى هَهُنَا وَمد بعض الروَاة يَدَيْهِ على عارضيه- 
হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) এর দাড়ি এখান থেকে এই পর্যন্ত পরিপূর্ণ; এই বলে তিনি তার হাতকে গালের দুই অংশে নিয়ে যেতেন’।
জামে‘ঊল হাদীসঃ ৩৬১২১; ইবনু আসাকীরঃ ১৮৫৫৫

عَنْ أَبِى مَعْمَرٍ قَالَ قُلْنَا لِخَبَّابٍ أَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِى الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ قَالَ نَعَمْ. قُلْنَا بِمَ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ ذَاكَ قَالَ بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ.
আবু মা‘মার (রাঃ) বলেন, আমরা খাববাব (রাঃ)-কে বললাম, রাসূল (সাঃ) কি যোহর ও আসরের ছালাতে ক্বিরা‘আত পড়তেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা বললাম, আপনারা কিভাবে তা বুঝতেন। তিনি বললেন, তাঁর দাড়ি নড়া দেখে’।

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ قُلْتُ لِخَبَّابٍ بِأَىِّ شَىْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ قِرَاءَةَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ قَالَ بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ ‏.‏

আবূ মা’মার থেকে বর্ণিতঃ:

আমি খাব্বাব (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যোহর ও আসর সলাতের কিরাআত কিসের মাধ্যমে বুঝতেন? তিনি বলেন, তাঁর দাড়ি নড়াচড়ার মাধ্যমে।  
বুখারী ৭৪৬, ৭৬০-৬১, ৭৭৭; আবু দাঊদ ৭৬৪, ৮০১, আহমাদ ২০৫৫২, ২০৫৭৩, ২৬৬৭৩, ইবনে মাজাহ ৮২৬

عَنْ أَنَسٍ يَعْنِي ابْنَ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا تَوَضَّأَ أَخَذَ كَفًّا مِنْ مَاءٍ فَأَدْخَلَهُ تَحْتَ حَنَكِهِ فَخَلَّلَ بِهِ لِحْيَتَهُ وَقَالَ ‏ "‏ هَكَذَا أَمَرَنِي رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو دَاوُدَ ابْنُ زَوْرَانَ رَوَى عَنْهُ حَجَّاجُ بْنُ حَجَّاجٍ وَأَبُو الْمَلِيحِ الرَّقِّيُّ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উযু করার সময় হাতে এক অঞ্জলি পানি নিতেন। তারপর ঐ পানি চোয়ালের নিম্নদেশে (থুতনির নীচে) লাগিয়ে দাড়ি খিলাল করতেন এবং বলতেনঃ আমার মহান প্রতিপালক আমাকে এরূপ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আবু দাউদ ১৪৫, ইবনে মাজাহ ৪৬১

রাসূল (সাঃ)-এর দাড়ি যে লম্বা বড় ছিল তা এ সমস্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়। আশ্চর্যের বিষয় হল যে যারা রাসূল (সাঃ)-কে ভালবাসার দাবীদার অথচ তারা রাসূলের সুশ্রী দাড়িযুক্ত অবয়ব, গঠন-আকৃতি ভালবাসে না। বরং তাঁর শত্রুদের গঠন আকৃতিকে প্রাধান্য দিচ্ছে। আর মহান আল্লাহ বলেন, 
قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ  
‘তুমি বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তবে আমার অনুসরণ কর। তাহ’লে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন’।
সূরা আলে ইমরানঃ ৩১

ভালবাসা হলো প্রেমিক তার মনের মানুষটিকে অজান্তেই ভালবেসে ফেলে তার অনুকরণপ্রিয় হয়ে যায়। জোর করে কোন কিছু আদায়ের নাম ভালবাসা নয়, সেটি অন্য কিছু।

রাসূল (সাঃ) আদর্শের মূর্ত প্রতীক :

হযরত সাদ বিন ইয়াসার (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি ইবনে ওমর (রাঃ)-এর সাথে সফরে ছিলাম। অতঃপর আমি আরোহী থেকে নামলাম ও বিতর পড়লাম। অতঃপর তিনি বললেন, কি কারণে তুমি পরে আসলে। আমি বললাম আমি বিতর ছালাত পড়ছিলাম। তিনি বললেন, রাসূল (সাঃ) কি তোমার জন্য উত্তম আদর্শের ব্যক্তি নন। আমি বললাম, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি বললেন, রাসূল (সাঃ) উটের উপর সাওয়ারী অবস্থাতেই বিতর সালাত পড়তেন’।
ফাতাওয়া শাবাকাতুল ইসলাম ২/৯৭৬ পৃঃ।

হে দাড়ি কর্তনকারী! যখন আপনাকে রাসূল (সাঃ) ধরবেন যে, ‘আমি কি তোমার জন্য উত্তম আদর্শ নই’? তখন আপনার জওয়াব কি হবে বলুন!

দাড়ি কাটা রাসূলের পথ থেকে বিচ্যুতি :

মহান আল্লাহ বলেন, 
مَنْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ وَمَنْ تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا  
‘যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করে, সে আল্লাহর আনুগত্য করে। আর যে ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাদের উপর আমরা আপনাকে রক্ষকরূপে প্রেরণ করিনি’।
সূরা নিসাঃ ৮০

রাসূলের সুন্নাত হল তার কথা, কর্ম ও সমর্থন দাড়ি রাখার উপর। আর দাড়ি কামানো তার সুন্নাত বিরোধী। অথচ রাসূল (সাঃ) বলেছেন, 
فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِى فَلَيْسَ مِنِّى.  (‏‏‏متفق عليه‏‏‏)‏
‘যারা আমার সুন্নাতের প্রতি বিরাগ পোষণ করবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়’।
ইবনে মাজাহ ১২৫৬, মিশকাত ১৪৫, বুখারী ৫০৬৩, মুসলিম ১৪০১, নাসায়ী ৩২১৭, আহমাদ ১৩১২২, ১৩০১৬, ১৩৬৩১, রিয়াদুস সালেহিনঃ ১৪৭
 
রাসূল (সাঃ) বলেছেন, 
مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا، فَهْوَ رَدٌّ 
‘যে ব্যক্তি এমন কাজ করবে যাতে আমার নির্দেশ নেই, তা প্রত্যাখ্যাত’।
বুখারী হা/২০; মুসলিম হা/৪৫৯০।

সুতরাং আপনি কিভাবে দাড়ি কামান? 

যে দৃশ্য দেখে (বাদশাহ কিসরার ঘটনা)  রাসূল (সাঃ) কষ্ট পেয়েছেন এবং ঐ দু’জন ব্যক্তির উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, তোমার ধ্বংস হোক, তোমাকে কে এই নির্দেশ দিয়েছেন?
আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ৪/২৭০ পৃঃ।

দাড়ি লম্বা করা মানবীয় গুণাবলীর অর্ন্তভুক্ত:

আল্লাহ তাআলা বলেন, 
فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا فِطْرَتَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ 
‘অতএব তুমি নিজেকে একনিষ্ঠভাবে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। আল্লাহর ধর্ম, যার উপরে তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই’।
সূরা রূমঃ ৩০

অর্থাৎ তুমি  আল্লাহ প্রদত্ত ইবরাহীমের একনিষ্ঠ দ্বীনের প্রতি অবিচল থাক। আর আল্লাহ তার সৃষ্টিজীবকে তার নিরাপদ ফেতরাতী জীবনব্যবস্থাকে আবশ্যক করতে তাকীদ দিয়েছেন। আর সেটি হলো আল্লাহকে চেনা, তার একত্ববাদকে বুঝা ও তাঁর পথে চলা।

হাদীসে এসেছে, 
وَعَن عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «عَشْرٌ مِنَ الفِطْرَةِ: قَصُّ الشَّارِبِ، وَإِعْفَاءُ اللِّحْيَةِ، وَالسِّوَاكُ، وَاسْتِنْشَاقُ المَاءِ، وَقَصُّ الأَظْفَارِ، وَغَسْلُ البَرَاجِمِ، وَنَتفُ الإِبْطِ، وَحَلْقُ العَانَةِ، وَانْتِقَاصُ المَاءِ». قَالَ الرَّاوِي: وَنَسِيْتُ العَاشِرَةَ إِلاَّ أَنْ تَكُونَ المَضمَضَةُ . قَالَ وَكِيعٌ - وَهُوَ أحَدُ رُواتِهِ - انْتِقَاصُ المَاءِ: يَعْنِي الاسْتِنْجَاءِ . رواه مسلم

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “দশটি কাজ প্রকৃতিগত আচরণ; (১) গোঁফ ছেঁটে ফেলা। (২) দাড়ি বাড়ানো। (৩) দাঁতন করা। (৪) নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করা। (৫) নখ কাটা। (৬) আঙ্গুলের জোড়সমূহ ধোয়া। (৭) বগলের লোম তুলে ফেলা। (৮) গুপ্তাঙ্গের লোম পরিষ্কার করা। (৯) পানি দ্বারা ইস্তেঞ্জা (শৌচকর্ম) করা।” বর্ণনাকারী বলেন, ১০নং আচরণটি ভুলে গেছি, তবে মনে হয়, তা কুল্লি করা হবে। বর্ণনাকারী অকী' বলেন, ‘ইন্তিকাসুল মা’ মানে পানি দিয়ে ইস্তেঞ্জা করা।
মুসলিম ২৬১, তিরমিযী ২৭৫৭, নাসায়ী ৫০৪০-৫০৪২, আবূ দাউদ ৫৩, ইবনু মাজাহ ২৯৬, আহমাদ ২৪৫৩৯, রিয়াদুস সালেহিন ১২১২

ফেতরাতের বৈশিষ্ট্যাবলী :

আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা যে অবস্থায় তাঁর সৃষ্টিকর্ম শুরু করেছেন এবং তাঁর সৃষ্টির মাঝে কাজের প্রবণতা, ঝোঁক,   সৌন্দর্য, ইতিবাচক ও নেতিবাচক মানসিকতা প্রক্ষিপ্ত করেছেন; এমতাবস্থায় যদি সে সেগুলি পরিত্যাগ করতে চায়, তাহলে তা মানবতার সৃষ্টিসত্বা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নামান্তর হবে। তাহলে সে কেমন মুসলমান ও কেমন ফেতরাতী দ্বীনের অনুসারী যে দাড়ি মুন্ডনকারী? এবং সে কিভাবে ফেতরাতী সৌন্দর্যকে অস্বীকার করতে পারে? অপরপক্ষে সে আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল প্রদর্শিত শরী‘আতের কিভাবে অবাধ্যতা করতে পারে? জনৈক পন্ডিত ফেতরাতের ব্যাখ্যায় বলেন, এটি আদি অনুসৃত নীতি যা আম্বিয়ায়ে কেরাম কর্তৃক পসন্দনীয়, ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক প্রদর্শিত; যেন এটি একটি স্বভাবসুলভ আদেশ যা মানবতার একমাত্র প্রেসক্রিপশন।  

দাড়ি কামানো আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন করার শামিল :

মহান আল্লাহ বলেন, 
لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ 
‘আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই’।
সূরা রূমঃ ৩০

এ আয়াতে তাফসীরে বলা হয় যে এটা একটি সংবাদ অর্থাৎ তোমরা আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন করো না আর যে আকৃতির উপর আল্লাহ তোমাদের সৃষ্টি করেছেন। আর তা আল্লাহর একত্ববাদকে জানা, তাঁর সৃষ্টিগত সহজসুলভ বৈশিষ্টগুলিকে মানা। আল্লাহ তা‘আলা ইবলীস সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, 
وَلَآمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللَّهِ
‘এবং তাদেরকে আদেশ করব যেন তারা আল্লাহর সৃষ্টি পরিবর্তন করে’।
সূরা নিসাঃ ১১৯

আর এটা সুস্পষ্ট ভাষ্য যে, শরী‘আতের অনুমতি ব্যতীত আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করা হল শয়তানের আদেশের আনুগত্য করা এবং রহমানের নাফরমানী করা। আল্লাহ বলেন, 
وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ 
‘এবং তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন এবং সুন্দর করেছেন তোমাদের আকৃতি’।
সূরা তাগাবুনঃ ৩

এটি একটি ইঙ্গিতসূচক আদেশ  যে, আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম আকৃতিতে ও পরিপূর্ণ, পরিপাটি করে সৃষ্টি করেছেন। অতএব সেটাকে কিছু করে পরিবর্তন করো না যা তাকে কুৎসিত করবে ও বিকৃতি করে ফেলবে। অথবা সেভাবে হেফাযত কর যেভাবে তার সৌন্দর্যকে অব্যাহত ধারায় বৃদ্ধি করবে। আর তোমরা এ বিষয়ে শয়তানের আনুগত্য করবে না। আল্লাহ সৃষ্টিকে পরিবর্তন করা  থেকে সতর্ক হও। 

وَعَنِ ابنِ مَسعُود رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: لَعَنَ اللهُ الوَاشِمَاتِ وَالمُسْتَوشِمَاتِ وَالمُتَنَمِّصَاتِ، وَالمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْنِ، المُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللهِ، فَقَالَتْ لَهُ امْرَأَةٌ فِي ذَلِكَ فَقَالَ: وَمَا لِي لاَ أَلْعَنُ مَنْ لَعَنَهُ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَهُوَ فِي كِتَابِ اللهِ ؟ قالَ اللهُ تَعَالَى : ﴿‏وما آتاكم الرسول فخذوه وما نهاكم عنه فانتهوا‏﴾ [الحشر: ٧] . متفق عليه

আব্দুললাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, ‘আল্লাহর অভিশাপ হোক সেই সব নারীদের উপর, যারা দেহাঙ্গে উলকি উৎকীর্ণ করে এবং যারা উৎকীর্ণ করায় এবং সে সব নারীদের উপর, যারা ভ্রূ চেঁছে সরু (প্লার্ক) করে, যারা সৌন্দর্যের মানসে দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে, যারা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন আনে।’ জনৈক মহিলা এ ব্যাপারে তাঁর (ইবনে মাসঊদের) প্রতিবাদ করলে তিনি বললেন, ‘আমি কি তাকে অভিসম্পাত করব না, যাকে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন এবং তা আল্লাহর কিতাবে আছে? আল্লাহ বলেছেন, ‘রসূল যে বিধান তোমাদেরকে দিয়েছেন তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে নিষেধ করেছেন, তা থেকে বিরত থাক।’
[সূরা হাশর ৭ আয়াত, বুখারী ও মুসলিম] ( বুখারী ৪৮৮৬, ৪৮৮৭, ৫৯৩১, ৫৯৩৯, ৫৯৪৩, ৫৯৪৮, মুসলিম ২১২৫, তিরমিযী ২৭৮২, নাসায়ী ৫০৯৯, ৫১০৭-৫১০৯, ৫২৫২-৫২৫৪, আবূ দাউদ ৪১৬৯, ইবনু মাজাহ ১৯৮৯, আহমাদ ৩৮৭১, ৩৯৩৫, ৩৯৪৫, ৩৯৪৬, ৪০৭৯, ৪১১৮, ৪২১৮, ৪২৭১, ৪৩৩১, ৪৩৮৯, ৪৪১৪, ৪৪২০, দারেমী ২৬৪৭, রিয়াদুস সালেহিনঃ ১৬৫৪

রাসূল (সাঃ) লা‘নত করার কারণ উল্লেখ করেছেন যা এর হারাম হওয়ার পক্ষে নিম্মোক্ত কথা দলীল হিসাবে বহন করে।
 الْمُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللَّهِ 
‘সে সব নারী আল্লাহর সৃষ্টিতে বিকৃতি আনায়ন করে’। সুতরাং সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে স্বীয় দাড়ি কামানো ব্যক্তি আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তনকারীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। বরং সে সর্বাগ্রে শাস্তির সম্মুখীন হবে। কেননা শরীআতে একজন পুরুষের জন্য যতটুকু সৌন্দর্য নির্ধারণ করেছে সে তার চাইতে অধিক সৌন্দর্যকরণ বিধানভুক্ত করেছে। সুতরাং একজন নারীর ভ্রু এর চুল উপড়ানো আর একজন পুরুষ তার দাড়ি কামানো তার চাইতে অধিক নিকৃষ্ট।

দাড়ি লম্বা করা নবীদের বৈশিষ্ট্য :

দাড়ি লম্বা করা যে নবীদের সুন্নাত তার বর্ণনা পূর্বে দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, 
وَإِذِ ابْتَلَى إِبْرَاهِيمَ رَبُّهُ بِكَلِمَاتٍ فَأَتَمَّهُنَّ 
‘আর যখন ইবরাহীমকে তার প্রতিপালক কতগুলি বিষয়ে পরীক্ষা করলেন, অতঃপর সে তা পূর্ণ করল’।
সূরা বাকারাঃ ১২৪। كَلِمَاتٍ শব্দটির ব্যাখ্যায় ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, এই শব্দটি দ্বারা ইবরাহীম (আঃ)-এর পরীক্ষা করার বুঝানো হয়েছে যা ফেতরাতের বৈশিষ্ট্যের অর্ন্তভুক্ত। যেমনভাবে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে হারূন (আঃ)-এর লম্বা দাড়ির কথা বর্ণনা করা হয়েছে। মুসা (আঃ)-এর শানে মহান আল্লাহ বলেন, 
قَالَ يَبْنَؤُمَّ لَا تَأْخُذْ بِلِحْيَتِي وَلَا بِرَأْسِي 
‘(হারূন বলল) হে আমার সহোদর ভাই! আমার দাড়ি ও মাথার চুল ধরে টেনো না’।
সূরা ত্বহাঃ ৯৪

যদি তার দাড়ি না থাকত তাহলে তিনি তার দাড়ি ধরার কথা ছোট ভাই নবী মুসা (আঃ)-কে এ কথা বলতে পারতেন না। সুতরাং দাড়ি রাখা নবীদের বৈশিষ্ট্য।  আল্লাহ তা‘আলা  আরো বলেন,

أُولَئِكَ الَّذِينَ هَدَى اللَّهُ فَبِهُدَاهُمُ اقْتَدِهْ-
‘এরাই হল ঐসব মানুষ যাদেরকে আল্লাহ হেদায়াত দান করেছেন। অতএব তুমি তাদের পথ অনুসরণ কর’।
সূরা আন‘আমঃ ৯০

আল্লাহ তা‘আলা আমাদের নবীকে আদেশ করেছেন তাঁকে অনুসরণের জন্য। এটি আমাদের জন্য আদেশ এ জন্য যে, কেননা তিনি অনুসরণীয় আদর্শ প্রাণপুরুষ। আল্লাহ বলেন,

لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ-
‘নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ নিহিত রয়েছে’।
সূরা আহযাবঃ ২১

দাড়ি লম্বা করা মুমিনদের বৈশিষ্ট্য :

মহান আল্লাহ বলেন, 
كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ 
‘তোমরাই হ’লে শ্রেষ্ঠ জাতি। যাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে মানবজাতির কল্যাণের জন্য’।
সূরা আল ইমরানঃ ১১০

তিনি আরো বলেন,  
وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ 
‘আর যে ব্যক্তি আমার অভিমুখী হয়েছে, তুমি তার রাস্তা অবলম্বন কর’ 
সূরা লোক্বমানঃ ১৫

রাসূল (সাঃ) বলেছেন,
خَيْرُ النَّاسِ قَرْنِى، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ 
‘সর্বোত্তম মানুষ হ’ল আমার যুগের মানুষ অতঃপর তার পরবর্তীগণ অতঃপর তার পরবর্তীগণ’।
বুখারী ৩৬৫০, ৬৪২৮, ৬৬৯৫, মুসলিম ২৫৩৫, তিরমিযী ২২২১, ২২২২,  আবু দাউদ ৪৬৫৭, আহমাদ ১৯৩১৯, ১৯৩৩৪, ১৯৪৫১ 

অপর হাদীছে রাসূলল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
 فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِى وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ وَعَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُورِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ 
‘তোমরা আমার ও খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে ধারণ কর। তোমরা সেগুলি কঠিনভাবে আঁকড়ে ধর এবং মাড়ির দাঁত দিয়ে কামড়িয়ে ধর। আর তোমরা ধর্মের নামে নতুর সৃষ্টি করা হতে বিরত থাক। কেননা প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিই বিদ‘আত এবং প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা’।
আহমাদ ১৬৬৯৪, আবূ দাঊদ ৪৬০৭, তিরমিযী ২৬৭৬, ইবনু মাজাহ্ ৪২, মিশকাতুল মাসাবিহঃ ১৬৫

এটা প্রমাণিত হয় যে, খুলাফায়ে রাশেদীন, ছাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈনে ঈযাম সকলেই বড় বড় দাড়িওয়ালা ব্যক্তি ছিলেন। যেমন আবু বকর (রাঃ)-এর দাড়ি ঘন ছিল। হযরত ওমর ফারুক (রাঃ)-এর দাড়ি প্রচুর ছিল। হযরত উসমান (রাঃ)-এর দাড়ি অনেক লম্বা ছিল। হযরত আলী (রাঃ)-এর দাড়ি প্রশস্ত ছিল। ঐ সময় তারা সকলের নিকট সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি হিসাবে স্বীকৃত ছিলেন। পরবর্তীতে তাদেরই অনুসরণ করেছিল নেককার, মুজাহিদ ও সত্যবাদী ব্যক্তিরা। তাদের দ্বারা রোম ও পারস্য বিজিত হয়েছিল এবং তাদের পদনমিত হয়েছিল পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত। অথচ তাদের কেউ দাড়ি কামানো ব্যক্তি ছিলেন না। যদি ইসলামের ইতিহাসের পৃষ্ঠাগুলি অনুসন্ধান করা হয় তাহলে কোথাও পাওয়া যাবে না যে, উম্মতের পথ প্রদর্শক ও আলোর কান্ডারী ব্যক্তিরা দাড়ি কামাতেন। নিশ্চয় এই ভ্রষ্টতা আমাদের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। কিছু মুসলমান কাফেরদের সাথে উঠা-বসা, চলাফেরায় দাড়ি না থাকাকে সুখকর মনে করে। ফলে তারা হেদায়াতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পথ ছেড়ে বিপথগামী ব্যক্তিদের অনুসরণ করে থাকে। এমনকি তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে ইহুদী-নাছারাদের হুবহু অনুসরণ করার চেষ্টা করে থাকে।

দাড়ি কামানো কাফেরদের সাদৃশ্য :

মহান আল্লাহ বলেন,
ثُمَّ جَعَلْنَاكَ عَلَى شَرِيعَةٍ مِنَ الْأَمْرِ فَاتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَ الَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ 
‘তারপর আমি তোমাকে দীনের এক বিশেষ বিধানের উপর প্রতিষ্ঠত করেছি। সুতরাং তুমি তার অনুসরণ কর এবং যারা জানে না তাদের খেয়াল- খুশীর অনুসরণ কর না’।
সূরা জাছিয়াঃ ১৮

যারা দাড়ি কামায় তারা শরী‘আত বিরোধী কাজ করে। তার মন যা চায় তাই করে। কিন্তু মুশরিকরা তার হেদায়াতের ধারক বাহক নয়। তাদের ধর্ম হ’ল বাতিল। মহান আল্লাহ  বলেন,
أَلَمْ يَأْنِ لِلَّذِينَ آمَنُوا أَنْ تَخْشَعَ قُلُوبُهُمْ لِذِكْرِ اللَّهِ وَمَا نَزَلَ مِنَ الْحَقِّ وَلَا يَكُونُوا كَالَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلُ فَطَالَ عَلَيْهِمُ الْأَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوبُهُمْ وَكَثِيرٌ مِنْهُمْ فَاسِقُونَ  
‘যারা ঈমান এনেছে তাদের হৃদয় কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য নাযিল হয়েছে তার কারণে বিগলিত হওয়ার সময় হয়নি? আর তারা যেন তাদের মত না হয়, যাদেরকে ইতিপূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল, তারপর তাদের উপর দিয়ে দীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হল, অতঃপর তাদের অন্তরসমূহ কঠিন হয়ে গেল। আর তাদের অধিকাংশই ফাসিক’।
সূরা হাদীদঃ ১৬

মহান আল্লাহর বাণী (وَلَا يَكُونُوا) ‘আর তারা যেন না হয়’ শব্দটি দ্বারা তাদের সাথে সাদৃশ্য না রাখার সাধারণ নিষেধ বুঝায়। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, আল্লাহ  তা‘আলা এই শব্দটি দ্বারা তাদের সাথে জীবনের সকল ক্ষেত্রে সাদৃশ্য রাখতে নিষেধ করেছেন’।
তাফসীর ইবনু কাছীর ৮/২০ পৃঃ

সুতরাং কাফেরদের কথা, কর্ম ও প্রবৃত্তির সাথে সাদৃশ্য রাখা হ’তে বিরত থেকে কুরআনুল কারীম ও হাদীসে বর্ণিত শরী‘আতের বিধি-বিধান মেনে চলা জরুরী। যেমন- সালাত, সিয়াম, আতিথেয়তা, পোশাক-পরিচ্ছেদ, সৌন্দর্য, শিষ্টাচার, আচার-ব্যবহার ইত্যাদি। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, 
لَيْسَ مِنَّا مَنْ عَمِلَ بِسُنَّةِ غَيْرِنَا 
‘সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয় যে অন্যের সুন্নাতকে পালন করে’।
সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৬৭

মনে রাখা জরুরী যে, মদীনার ইহুদীরাও রাসূল (সাঃ) সম্পর্কে বলেছিল, 
مَا يُرِيدُ هَذَا الرَّجُلُ أَنْ يَدَعَ مِنْ أَمْرِنَا شَيْئًا إِلاَّ خَالَفَنَا فِيهِ 
‘মুহাম্মাদ (সাঃ) আমাদের প্রতিটি বিষয়ে বিরোধিতা করতে চায়’।
মুসলিম ৩০২

রাসূল (সাঃ) বলেছেন, 

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ، فَهُوَ مِنْهُمْ» أَخْرَجَهُ أَبُو دَاوُدَ، وَصَحَّحَهُ ابْنُ حِبَّانَ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যে ব্যাক্তি কোন সম্প্রদায়ের অনুকরণ করবে সে এ সম্প্রদায়ের বলেই গণ্য হবে।  
আবু দাঊদ ৪০৩১, মিশকাত হা/৪৩৪৭
 
হযরত হাসান (রহঃ) বলেন, ‘কেউ যদি কোন কওমের সাদৃশ্য রাখে তাহলে সে তাদের সাথেই মিলিত হখে অর্থাৎ দুনিয়া ও আখিরাতে। কয়েকজন আনসারী ব্যক্তি রাসূল (সাঃ) কে বলল, 
يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَهْلَ الْكِتَابِ يَقُصُّونَ عَثَانِينَهُمْ وَيُوَفِّرُونَ سِبَالَهُمْ. قَالَ فَقَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم قُصُّوا سِبَالَكُمْ وَوَفِّرُوا عَثَانِينَكُمْ وَخَالِفُوا أَهْلَ الْكِتَابِ 
‘হে আল্লাহর রাসূল নিশ্চয় আহলে কিতাবরা দাড়িকে ছোট করে এবং মোচকে বড় করে। অতঃপর রাসূল (সাঃ) বললেন, তোমরা মোচকে ছোট কর এবং দাড়িকে বড় কর এবং আহলে কিতাবদের বিরোধিতা কর।
আহমাদ ২২৩৩৮

অপর হাদীসে রাসূল (সাঃ) বলেছেন, 
خَالِفُوا الْمُشْرِكِينَ، وَفِّرُوا اللِّحَى، وَأَحْفُوا الشَّوَارِبَ 
‘তোমরা মুশরিকদের বিরোধিতা কর। মোচ ছোট কর ও দাড়ি লম্বা কর’।
বুখারী ৫৮৯২; মুসলিম ২৫৯; মিশকাত ৪৪২১

অন্য হাদীসে রাসূল (সাঃ) বলেছেন,
جُزُّوا الشَّوَارِبَ وَأَرْخُوا اللِّحَى خَالِفُوا الْمَجُوسَ 
‘তোমরা মোচকে ছাট এবং দাড়িকে লম্বা কর। এবং মূর্তিপূজকদের বিরোধীতা কর’।
মুসলিম হা/২৬০; মিশকাত হা/৪৪২১

আর মোচ কাটার বিষয়ে রাসূল (সাঃ)-এর অপর হাদীস, 
عَن زَيْدِ بن أَرْقَمَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ   صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم   مَنْ لَمْ يَأْخُذْ مِنْ شَارِبِهِ فَلَيْسَ مِنَّا

যায়দ বিন আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি তার মোছ ছাঁটে না, সে আমার দলভুক্ত নয়।” 
আহমাদ ১৯২৬৩, তিরমিযী ২৭৬১, নাসাঈর কুবরা ১৪, তাবরানী ৪৮৯৩-৪৮৯৬, সহীহুল জামে’ ৬৫৩৩

দাড়ি লম্বা করা বীরত্ব ও পুরুষত্বের প্রতীক :

আল্লাহ নারী-পুরুষ সৃষ্টি করেছেন। চুল দাড়ি ও মোচ গজানো উভয়েরই সাধারণ নিয়ম। কেননা এই দু’টি দ্বারা পুরুষকে নারী হতে আলাদা করা যায়। কোন পুরুষ যদি দাড়ি রেখে মহিলার পোষাক পরিধান করে তাহলে তাকে পুরুষই মনে হবে। কেননা দাড়ি হ’ল উভয়ের মধ্যে স্পষ্ট পার্থ্যককারী।

দাড়ি কাটা মহিলাদের সাদৃশ্য স্বরূপ :

ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, 

عَنِ ابنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم المُخَنَّثِينَ مِنَ الرِّجَالِ، وَالمُتَرَجِّلَاتِ مِنَ النِّسَاءِ . وَفِي رِوَايَةٍ : لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم المُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ . رواه البخاري

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীর বেশ ধারণকারী পুরুষদেরকে এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলাদেরকে অভিশাপ করেছেন।’
অন্য বর্ণনায় আছে, ‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী পুরুষদেরকে এবং পুরুষদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী মহিলাদেরকে অভিশাপ করেছেন।’
বুখারী ৫৮৮৫, ৫৮৮৬, ৬৮৩৬, তিরমিযী ২৭৮৪, আবূ দাউদ ৪০৯৭৮, ৪৯৩০, ইবনু মাজাহ ১৯০৪, আহমাদ ১৯৮৩, ২০০৭, ২১২৪, ২২৬৩, ২২৯১, ৩১৪১, ৩৪৪৮, দারেমী ২৬৪৯, রিয়াদুস সালেহিনঃ ১৬৩৯

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) একজন চিকন মহিলাকে দেখলেন, সে পুরুষের ন্যায় হাটছে। অতঃপর তিনি বললেন,
 سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِالرِّجَالِ مِنَ النِّسَاءِ وَلاَ مَنْ تَشَبَّهَ بِالنِّسَاءِ مِنَ الرِّجَالِ. 
‘আমি রাসূল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি সে পুরুষ আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয় যে নারীদের সাদৃশ্য ধারণ করে এবং যে নারী পুরুষের সাদৃশ্য ধারণ করে’।
আহমাদ ৭০৫৪

সুতরাং কোন সন্দেহ নেই যে, দাড়ি কামানো মহিলাদের সাদৃশ্য বহন করে।

দাড়ি লম্বা করা সৌন্দর্য ও সম্মানের প্রতীক :

মহান আল্লাহ  বলেন, 
وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ 
‘আমরা আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি’।
সূরা বনী ইসরাইলঃ ৭০

কিছু ওলামা বলেন, বনী আদমের সৌন্দর্য হ’ল আল্লাহ তাদেরকে পরিপূর্ণ ও সুন্দর আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। কিছু ওলামা বলেন, এই সৌন্দর্য্য হ’ল, পুরুষের দাড়ি এবং মহিলাদের লম্বা চুল মহান আল্লাহ  বলেন, 
لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ 
‘অবশ্যই আমরা মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম অবয়বে’।
সূরা ত্বীনঃ ৪

তিনি আরো বলেন, 
يَاأَيُّهَا الْإِنْسَانُ مَا غَرَّكَ بِرَبِّكَ الْكَرِيمِ- الَّذِي خَلَقَكَ فَسَوَّاكَ فَعَدَلَكَ- فِي أَيِّ صُورَةٍ مَا شَاءَ رَكَّبَكَ 
‘হে মানুষ! কোন বস্ত্ত তোমাকে তোমার মহান প্রভু থেকে বিভ্রান্ত করল? যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাকে সুবিন্যস্ত করেছেন, অতঃপর সুষম করেছেন। তিনি তোমাকে তেমন আকৃতিতে গঠন করেছেন, যেভাবে তিনি চেয়েছেন’।
সূরা ইনফিতারঃ ৬৮

মহান আল্লাহ বলেন, 
صُنْعَ اللَّهِ الَّذِي أَتْقَنَ كُلَّ شَيْءٍ 
‘এটা আল্লাহর কারুকার্য। যিনি সবকিছুকে করেছেন সুসংহত’।
সূরা নামলঃ ৮৮
 
আল্লাহর প্রত্যেক সৃষ্টিই সুন্দর।

সুতরাং দাড়ি আল্লাহ তা‘আলা আমাদের জন্য নে‘মত ও সম্মান স্বরূপ দিয়েছেন। কোন সন্দেহ নেই যে দাড়ি কেটে ফেলা আল্লাহর এই মহিমান্বিত নে‘মতকে অস্বীকার করা এবং রাসূল (সাঃ) এর সঠিক পথ থেকে অবনতি ঘটার শামিল। আল্লাহ আমাদের সকলকেই দাড়ি রাখার তাওফীক দান করুন- আমীন।
----------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments