Recent Tube

বিতি কিচ্ছা- নূর মুহাম্মদ চৌধূরী।

   
       
                                বিতি কিচ্ছা;
                                           পর্ব-৬০;
----------------
        মারাত্মক একটি রোগের নাম হিংসা। হিংসার আগুনে জ্বলে পুড়ে ছাই হয় অন্তর। এবং অনন্তর এ আগুন জ্বলতেই থাকে। এ আগুন আপনা থেকেই জ্বলে, কেউ তাকে জ্বালিয়ে দিতে হয় না। ওখানে ফায়ার ব্রিগেড পৌঁছতে পারে না কস্মিনকালেও। এ দহনে বাদী যদিও নিজেই আসামি, কিন্তু সে তা কখনও অনুধাবন করে না। উল্টো সে তাকেই দায়ী করে যার প্রতি তার হিংসা বিরাজিত। অথচ বেচারা বিবাদী নিজেই জানেনা তার প্রতি হিংসায় কার এমন জ্বালাতন।

            অত:পর জ্বলতে থাকে হিংসুক। জ্বালার অন্তর্দহনে আবুল তাবুল বাক্যবাণে সে নিজেই বাড়িয়ে দেয় স্বীয় অন্তর্দহন। এটাতো একটা স্বাভাবিক প্রক্রীয়া। কারণ ভাগ্যবান ঐ ব্যাক্তিটি; যাকে হিংসা করা হচ্ছে ; তার খ্যাতির প্রচার করছে সয়ং ঐ হিংসুক। ফলে কথিত এ বিবাদীর জনপ্রীয়তা, তার সুনাম, তার সম্মান কোন কিছুই ক্ষুন্ন হচ্ছে না, বরং তা ষোল-কলায় পর্যবষিত হয়ে পরিপক্বতা লাভ করছে। 

         অথচ হিংসার আসল ঔষধটি হাতের কাছে থাকলেও হিংসুকরা তা প্রয়োগ থেকে বিরত থেকেছে আজীবন। বরং আগুন জ্বালাতে যা দরকার তা ই করেছে হাজারবার। 

         হিংসার ঔষধ হল, যার প্রতি হিংসা হয় তার জন্য মহান রবের দরবারে দোওয়া করা ;যেন আল্লাহ তাকে আরোও বাড়িয়ে দেন, বাড়িয়ে দেন  তার যশ্, খ্যাতি। বাড়িয়ে দেন তার  সম্মান।  এতে আসমানের সকল ফেরেস্তারা দোওয়া করবে হে আল্লাহ এই দোওয়াকারীকেও বাড়িয়ে দিন। বাড়িয়ে দিন  তার খ্যাতি, যশ্,  প্রতিপত্তি। আর আল্লাহ তায়ালার দরবারে ফেরেস্তাদের দোওয়া কবুলতো হতেই পারে। এটা হচ্ছে হিংসার ঔষধ।  অথচ হিংসুক তা না করে উল্টো আগুন জ্বালানোর কাজে থাকে মহাব্যস্ত।

           হিংসুকরা প্রথমত: অহংকারীই হয়। অহংকার একটি মারাত্মক বিনাশী রোগ। যার থেকেই জন্ম হয় হিংসা নামক দ্বিতীয় এই মারীর। এটা কোন সংক্রামক রোগ বা মহামারী নয়। যার অন্তরে বাসা বেঁধে অহংকার পরিপুষ্ট হয় তাকে ছাড়া আর কাউকেই  সে ক্ষয় করতে পারে না। এভাবে অহংকারের বশবর্তী হয়ে মরদূদ ইবলিশ লানতের তখ্ত নিজের গলায় ঝুলিয়ে নিল। আর আজীবন হিংসায় মেতে উটলো আদম সন্তান তথা মানব জাতীর প্রতি। আজও সমাজে ইবলিশ সূলভ এই অপতৎপরতায় মেতে উটে তার অনুুচরেরা অন্ধের মত মাথা কুটে মরছে। ফল যা হবার তা ই হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা মানীর মান আরোও বাড়িয়ে দিচ্ছেন। হিংসুকের মুখোসও দিন দিন সুস্পষ্ট হয়ে ভেষে উটছে জন মানুষের দৃষ্টি সম্মুখে।

            " পরম করুনাময়( আল্লাহ তায়ালা)। যিনি কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি মানুষ বানিয়েছেন। তিনি তাকে (কথা) বলা শিখিয়েছেন"। পবিত্র কোরআনুল করিমে সুরা আর-রাহমানের প্রথম এই আায়াত চারের দাবী অনুযায়ী বক্তা তার বক্তৃতায় কোরআানের শিক্ষা অনুযায়ী কথা বলবে। অথচ হিংসুক কথা বলে  তাকে নিয়ে, যাকে সে হিংসা করে আপনা আপনিই আপন প্রতিপক্ষ বানিয়ে নিয়েছে।

           লক্ষনীয় যে হিংসুকরা অহংকারী হবার পিছনে প্রধান কারণ এই যে, তারা জ্ঞানী বটে। এ জ্ঞান জনকল্যাণকর কাজে লাগালে তা আপন গতিতে বহমান থেকে জাতীর প্রভূত কল্যান সাধন করতে পরতো। তবে হিংসুকরা অহংকার বশতঃ তার প্রাপ্ত এ জ্ঞানকে বিনিয়োগ করে সেচ্ছায় কাউকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে নিয়ে তার পিছনে লেগে থাকার মাধ্যমে। মোয়াল্লিমুল মালাইকা খ্যাত ইবলিশতো এই একটি মাত্র অপরাধের কারণই চিরতরে ধ্বংস টেনে নিল নিজের জন্যে।

         ইতিহাস সাক্ষী, পৃথিবীতে মনুষ্য বসতির প্রায় সূচনালগ্ন থেকেই কিছু কিছ লোক ধর্মীয় বিকৃতিকে  ধর্মীয় সংস্কৃতির মৌল উপাদান হিসাবে গ্রহন করে নিয়ে সন্তুষ্ট থেকেছে। এবং এর উপর তাদের দুনিয়াবি স্বার্থ প্রতিষ্ঠা করে নিয়ে বহাল তবিয়তে নিজেদের কামাই রোজগার অব্যাহত রেখেছে। যখনই কেউ এই বিকৃতির সংস্কার সাধনে অত্ননিয়োগ করছে, তখনই তৎকালীন জ্ঞানপাপীরা এই সামাজিক সংস্কারকে  ধর্মীয় সংস্কার হিসাবে চিত্রিত করে তার বিরুধীতায় উটে পড়ে লেগেছে। এবং ওরে বাটপার ওরে বাটপার ইত্যাদি বাক্যবাণে মজলিশ কলুশিত করেছে। আমরা দেখতে পাই এমন একজন নবীও পাওয়া যায় নাইই: যার বিরুধীতায় তৎকালীন আলেম সমাজ তাবৎ বাতিল শক্তির সাথে ঘাটছড়া বেঁধে আন্দোলন করেনি। আর আমরা কিন্তু এই সমীকরণ থেকেই আসল ও নকলের তথা হক ও বাতিলের সরূপ স্পষ্টরুপে পেয়ে যাচ্ছি আলহামদুলিল্লাহ্‌

Post a Comment

0 Comments