Recent Tube

রক্তাক্ত প্রান্তর: একটি নতুন সূর্য্যের প্রত্যাশায়.. --- আখতার বিন আমীর।



   রক্তাক্ত প্রান্তর: একটি নতুন সূর্য্যের    
    প্রত্যাশায়... 


  ❏ এক

     জাতি হিসেবে আমরা অনেক আগেই নিজের স্বকীৃয়তা হারিয়ে ফেলেছি। সামাজিক অপরাধ, ধর্মীয় অবক্ষয়, রাজনৈতিক সহিংসতা, সন্ত্রাসবাদ, বেকারত্ব,শিক্ষাখাতে অবনতি, অর্থনৈতিক বিপর্যয়, মানবাধিকার লংগন, বিচার বর্হিরভুত হত্যাকান্ডসহ অযোগ্য নেতৃত্বের যাঁতাকলে পিষ্ঠ হয়ে রাষ্ট্রের মেরুদন্ড শেষ। প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আই. সি.ইউ-তে মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে। স্বাধীন দেশের সু-নাগরিক হয়েও আপনার-আমার বাকস্বাধীনতা নেই বললেই চলে। হিসেব করে বলতে ও লিখতে হয়। উনিশ-বিশ হলেই জেল-জরিমানা কিংবা গুম-খুন। এক যুগ আগেও এমন পরিস্থিতি ছিলনা। ন্যায অধিকার হনন করে জোরপূর্বক গোলামীর জিঞ্জিরা পড়িয়ে দেয়া হয়েছে। 

     পরিবর্তন কিংবা সংশোধন চাইবেন তো "স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি" অপ-ট্যাগের শিকার হবেন। অন্যদিকে চেতনায় ফেরিওয়ালারা "ভারত মাতা-কি জয়-হো" স্লোগান বুকে ধারণ করেও "মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি" হিসেবে বীরদর্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কার্যত এরাই জাতিকে দুইভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে। আপনি যদি তাদের দলভুক্ত হন, তাহলে আপনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি  আর বিপক্ষে গেলেই মুলতানের টিকেট রেডি। তাদের মুলনীতি হচ্ছে, আপনি হয় দিল্লি আর না হয় মুলতান,  সুলতান শুধু তারাই। এক কথায় বলতে গেলে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো বিদেশী প্রভুদের গোলামে পরিনত হয়েছে। ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা কুক্ষিগত করে রাখার ক্ষেত্রে তারা সবসময় বিদেশী প্রভুদের কাছে দরনা দেয়। ইলেকশনের আগে বিএনপিও গোপনে কুটনৈতিক আলাপ চালিয়েছিল, যদিও তেমন লাভ হয়নি। কেননা অতীতের রাজনীতি থেকে প্রমাণিত যে, বিদেশী প্রভুরা কাউকে পছন্দ করার ক্ষেত্রে তার শক্তি আছে কি-না এবং সেই শক্তির সাহায্যে তাদের দাসত্ব করে কি-না, তা দেখে তারপর তাদের সাহায্যের হাত বাড়ায়। সুতরাং এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনরা একপ্রকার সফলই বটে। তারা শক্তি ও দাসত্বের পুরোটা ঢেলে দিয়ে দাদাবাবুদের বিশ্বস্ততা অর্জন করতে পেরেছে। 


 ❏ দুই,

বিগত এক যুগ ধরে ক্ষমতাসীনরা ভারতের গোলামীতে নিজেদেরকে যতটা সঁপে দিয়েছে তা স্বাধীনতার পর থেকে এ-পর্যন্ত অন্য কোন সরকার দিয়েছে কিনা জানা নেই। বাংলাদেশ এখন দাদাদের একটি অঙ্গরাজ্য বলতেও ভূল হবেনা। লিডারদের ভাষায় স্বামী-স্ত্রী আরকি । আপনি জেনে আরও অবাক হবেন, এ-দেশ থেকে ৫ম সর্বোচ্চ রেমিটেন্স নিয়ে যাচ্ছে দাদারা। প্রায় আড়াই লাখ দাদা মোটা অংকের স্যালারীতে সরকারী-বেসরকারী খাতে চাকুরী করছেন, যাদের অধিকাংশই আবার অবৈধ প্রবেশকারী, অথচ এদেশেরই প্রায় বিশ লাখ শিক্ষিত যুবক-যুবতী বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে স্যান্ডেল ক্ষয় করছে। এটা শুধুমাত্র "মাদার অফ হিউম্যানিটির" কৃপায় সম্বব হয়েছে। 

'র'-এর এজেন্ট রবীন্দ্র কৌশিকের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে? যে-কিনা গুপ্তচর হয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিল, এমনকি মেজর পদ অবধি গিয়েছিল! এরকম বহু রবীন্দ্র কৌশিক আমাদের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ভিতরেও যে নেই তারই বা গ্যারান্টি কি? থাকতেও তো পারে। পিলখানা হত্যাকান্ড, শাপলা চত্ত্বর কিংবা কথিত ইলেকশনের দিকে তাকালে এই সন্দেহ আরও তীব্র হয়। যাগগে সেসব আলাপ, স্ত্রীর বেডরুমে স্বামীদের থাকাই বরং স্বাভাবিক। ফেলানীরা বিচারবিহীন অবস্থায় ঝুলে থাকুক, আমাদের বাসর-রাতও চলতে থাকুক।


 ❏ তিন,

  এক কোটি যুবককে ইয়াবা খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। বাকিদের বস্তাপচা গল্প শুনানো হচ্ছে। জোর করে আদর্শ গেলানো যায় না --- সেটা হয়ত তিনি বেমালুম ভুলে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিতে বলীয়ান বদ রাজনীতিবিদগন বিগত পাঁচ বছরে যত টাকা বিদেশে পাচার করেছেন, তা বিগত ৫০ বছরেও পাচার হয়েছে কিনা সন্দেহ। কয়েকটা পাকা রাস্তা আর ব্রিজ বানিয়ে উন্নতির শ্লোগান দিয়ে 'কানাকে হাইকোর্ট দেখানোর' নাটক-টা আর কতদিন চলবে? বাঙালী জাতি কি এতটাই বলদ? শিক্ষাখাত পুরোপুরি ধংস। গলাবাজ শিক্ষামন্ত্রী প্রায় দেড় ডজন ব্যাচ এই জাতিকে উপহার দিয়ে গেছেন যারা কিনা GPA-এর মিনিং-ই জানে না। এসকল শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করা মাত্রই নিজেদের অক্ষমতা টের পাবে। তবুও তিনি হাসেন,  উন্নয়নের গল্প মারেন। 

    যা চলছে আর যা হচ্ছে তাতে অতীতের সকল রেকর্ড ব্রেক করেছে যালিমরা। নির্বিচারে মানুষ হত্যার লাইসেন্সটা ফিউচার গভর্নমেন্ট পেয়েই গেল, যা অশুভ সংকেত বৈ কিছু নয়। যাইহোক, আমাদের ভবিষ্যৎ আপাতত লীগময়! তবে আশার কথা হল গত কয়েক বছর ধরে দেখছি, প্রচন্ড দাদাবাবু ও তাদের দোসর বিদ্বেষী একটি যুবসমাজ তৈরি হচ্ছে। আপনি তাদেরকে পাকপন্থী বলতে পারেন অথবা মৌলবাদী, তবে সুযোগ পেলে আপনার কথিত বাসরঘরে উঁকি দেবার চেষ্টা করবেনা - এমনটা ভাববার কারণ নেই। কেননা তারা জানে আপনি যাওয়ার পরেও পুরো জাতিকে তার খেসারত দীর্ষসময় ধরে বহন করতে হবে।

     শেষ কথা, যালিম হাজ্জাজ বিন ইউসুফ-এর মৃত্যুর সংবাদ শুনে ইমাম হাসান আল-বাসরী (রাহিমাহুল্লাহ্) আল্লাহর শুকরিয়ায় সিজদায় লুটে পড়েন। আমরা বিশ্বাস করি ফ্যাসিবাদীদের মাত্রাতিরিক্ত যুলুম ও অরাজকতা কারণে এদেশের নব্বইভাগ মানুষ  আকস্মিক মৃত্যু কিংবা পতনে আল্লাহর দরবারে সিজদায় লুটিয়ে পড়বেন। সেইসাথে দেওলিয়া হয়ে যেতে পারে হায়েনার পাল। একটি নতুন সূর্য্যের প্রত্যাশায় আজকের মত এখানেই ইতি টানলাম ----------------.

Post a Comment

0 Comments