Recent Tube

একটু ভাবেন প্লিজ, ইবনে যুবাইর।




                একটু ভাবেন প্লিজ,                                       - ইবনে যুবাইর। 

মুহতারাম,
Mawlana Abdul Hai Zihadi সাহেব। 
মামুনুৃল হক মোদির এই বাংলাদেশ সফরকে পশ্চিমবঙ্গের ভোটের রাজনীতিতে ফায়দা নেয়ার সফর বলে মন্তব্য করেছেন এবং তার এই  মন্তব্যকে আপনি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে আপত্তি জানিয়েছেন। 

আমি সেটা যথার্থ বলে মনে করতে পারিনি।

  যদি মামুনুৃল হক উক্ত মন্তব্য করে থাকেন তবে তিনি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেননিবরং  তার এই মন্তব্য সঠিক বলে মনে হয়েছে।

    উল্লেখযোগ্য কারণ,
   সাউথ এসিয়া মনিটরের সূত্রমতে,মোদি শুধু বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী কিংবা ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে ঢাকা সফর করছেন না, তার এই সফর পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের আগে হিন্দুত্ববাদীদের মনোবল চাঙ্গা করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার চেষ্টা হচ্ছে। সফরকালে তিনি দুটি মন্দির পরিদর্শনে যাবেন, তার মধ্যে গোপালগঞ্জের মন্দিরটি বিশেষভাবে উল্লেখ করার মতো এবং পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত।

        মোদির সফরসূচিতে সাতক্ষীরা ও গোপালগঞ্জে দুটি মন্দির পরিদর্শন রাখা হয়েছে, যেখানে তিনি স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত পরিসরে মতবিনিময় করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে সফরে মোদি যাতে গোপালগঞ্জ জেলায় মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত হিন্দুদের পবিত্র তীর্থস্থান ওড়াকান্দি গ্রাম দর্শনে যেতে পারেন, সে জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে ভারত।

     নরেন্দ্র মোদির এই প্রস্তাবিত ওড়াকান্দি সফরের তাৎপর্য অবশ্য পুরোপুরি রাজনৈতিক। সেই কারণে ভারতীয় সুধী সমাজের একটি অংশ প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকার মোদির দল বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে কিনা? 

     ওড়াকান্দির মতুয়ারা হলো নিম্নবর্ণীয় বা নমঃশূদ্র হিন্দুদের একটি শাখা-সম্প্রদায় বা ‘সেক্ট’, যারা উনিশ শতকের ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুর ও তার পুত্র গুরুচাঁদ ঠাকুরের প্রবর্তিত মতবাদের অনুসারী। হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুর দুজনেরই জন্মস্থান ওড়াকান্দি। আর সেই গ্রামের ‘ঠাকুরবাড়ি’ বিশ্বময় ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি মতুয়ার কাছে এক পবিত্র পুণ্যভূমি।

    ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রী এর আগে কখনও বাংলাদেশ সফরে এসে ওড়াকান্দি যাননি। সফরে এসে তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দির কিংবা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাচ্ছেন না, যাচ্ছেন ওড়াকান্দি। ফলে নরেন্দ্র মোদি যদি সেখানে যান, তা যে রাজনৈতিক এবং পশ্চিমবঙ্গের মতুয়াদের ভোট বিজেপির বাক্সে যাওয়ার জন্য চাল তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ভদ্র ভাষায় বললে মতুয়াদের কাছে তিনি ইতিবাচক একটি বার্তা পৌঁছে দিতে চান।

     গোটা পশ্চিমবঙ্গে প্রায় দেড় কোটি মতুয়ার বাস। রাজ্যের অনেক আসনে মতুয়া ভোট জয়-পরাজয় নিষ্পত্তি করে দেয় বলে ধারণা করা হয়। বিশেষ করে ২৪ পরগনা এবং নদীয়া জেলার ছয়-সাতটি নির্বাচনি আসনের ভোটে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে এই মতুয়ারা। সেই জায়গায় পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক মুখে প্রধানমন্ত্রী মোদির ওড়াকান্দি যাওয়াটা বিজেপির জন্য রাজনৈতিক সুফল বয়ে আনতে পারে।

      ঘটনাচক্রে, নরেন্দ্র মোদি যেদিন ওড়াকান্দি সফর করছেন (২৭ মার্চ) সেদিনই পশ্চিমবঙ্গে আট পর্বের বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে। সেখানে ভোট চলবে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত। এরমধ্যে ১৭ এপ্রিল পঞ্চম এবং ২৬ এপ্রিল সপ্তম পর্বের যে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেখানে মতুয়ারা ভূমিকা রাখবে। এই পটভূমিতে ভারত সরকার যেনতেন-প্রকারে ওড়াকান্দিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির সফর চূড়ান্ত করতে মরিয়া ছিল, যদিও ওড়াকান্দি ভিভিআইপি যাতায়াতের ক্ষেত্রে খুব সুবিধাজনক না। ওই গ্রামে যাওয়ার রাস্তাটি মোদির কনভয় যাওয়ার পক্ষে বেশ সরু এবং কাছাকাছি হেলিপ্যাড তৈরির উপযুক্ত জায়গারও অভাব ছিল।

    ভারতে প্রায় সোয়া বছর আগে পার্লামেন্টে পাস হওয়া নাগরিকত্ব আইন এখনও বাস্তবায়ন শুরু না হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাড়ি দেওয়া মতুয়ারা বেশ হতাশ। এই আইন তাদের ভারতের স্থায়ী নাগরিকত্ব দেবে বলে তারা আশা করেছিলেন। যে স্বপ্ন এখনও পূরণ হয়নি। তাদের সেই ক্ষতেও প্রলেপ দিতে পারে মোদির ঠাকুরবাড়ি দর্শন।

    ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও বিভিন্ন দফতরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মোদির সফরসঙ্গী হিসেবে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। তার সফরসঙ্গী হবেন হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুর বংশের উত্তরাধিকারী মতুয়া নেতা ও বিজেপির এমপি শান্তনু ঠাকুরও।

     উল্লেখ করা দরকার এটি, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরেও মতুয়া সম্প্রদায়ের অনেকের পশ্চিমবঙ্গে যাওয়া অব্যাহত ছিল। হরিচাঁদ-গুরুচাঁদের বংশধর পি আর ঠাকুর ১৯৬২ সালে কংগ্রেসের মন্ত্রী ছিলেন এবং তার বিধবা স্ত্রী বিনপনি দেবী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে মোদি তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর ২০২১ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় মাতুয়ারা বিজেপির দিকে সরে এসেছে।

    মমতাও তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন যে কেন্দ্র সিএএ প্রয়োগের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। করোনার টিকাদান কর্মসূচি শেষ হলে সিএএ বাস্তবায়ন করে মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।'
পশ্চিমবঙ্গে মমতা মুসলমানদের জন্য ঢাল স্বরুপ বললে বাড়িয়ে বলা হবে না।বাংলাদেশ কেন চয়ছে  গুজরাটের কসাইমোদির ক্ষমতার সিড়ি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের দুর্ভোগ বাড়াতে?
--------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক কলামিস্ট ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments