Recent Tube

মনোকথন-১ জিয়াউল হক।


                      মনোকথন-১;
--------------------------------- 
     মানুষের মন, সবচেয়ে বিষ্ময়কর এবং বড়ো অদ্ভূত এক জগত। এখানে লুকিয়ে আছে বিষ্ময়কর শক্তি, অকল্পনীয়, অপ্রত্যাশিত এবং অনাকাংক্ষিত দূর্বলতাও। মনের ভেতরে যে শক্তি সুপ্তাবস্থায় লুকায়িত রয়েছে তা যদি মানুষ যথাসময়ে জানতে পারতো, তা হলে তার দ্বারা এক অসম্ভব সাধিত হতে পারতো। কখনও কখনও কোন কোন মানুষকে দেখি বিষ্ময়কর সব কাজ করে বসেন, এমন সব কাজ তারা করে বসেন যা দেখে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় এটা তার পক্ষে কিভাবে সম্ভব হলো? বলে উঠি তিনি অসাধ্য সাধন করে ফেলেছেন।  

     আবার এর বিপরিতে আমরা কখনও কখনও এমনও দেখি, কোন কোন মানুষ এমনসব কাজ করে বসেন, যা দেখ মনে প্রশ্ন জাগে, এ ধরনের শিশুসূলভ বালখিল্য একটা কাজ লোকটা কি করে করতে পারলো? উভয় ক্ষেত্রেই আমরা বিষ্মিত হই। 

     এসবের পেছনে যে মূখ্য ভূমিকা পালন করে , সেটা হলো মানুষের মন। মনের একটা সুপ্ত শক্তি থাকে। প্রত্যেক মানুষের মনেই সেটা থাকে। কেউ কেউ হয়তো কবরে পৌছে যাওয়া পর্যন্ত তার ভেতরে সুপ্ত সে শক্তির সন্ধানই পান না। সকল শক্তি আর যোগ্যতাকে অব্যবহৃত রেখেই তিনি কবরে পৌছে যান। 

     মনকে একটা হাতির সাথে তুলনা করা যেতে পারে। হাতির বিশাল দেহ ও তার অকল্পনীয় শক্তির বাস্তবতায় তার চোখজোড়া খুবই ছোট।  হাতি যদি নিজের দেহকে নিজের চোখ দিয়ে দেখতে পারতো, নিজের শক্তি সন্মন্ধ্যে সচেতন হতে পারতো, তা হলে সম্ভবত পৃথিবীর বুকে সে অন্য কোন প্রাণীকে বাস করতেই দিতো না। এই হাতিকেই তার তুলনায় ক্ষুদ্র ও দূর্বল মানুষ পোষ মানিয়ে নেয়, তার শক্তি ও কৌশল সন্মন্ধ্যে নিয়ন্ত্রিত প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা দান করে। 

    এটাকেই আমরা বলি 'পোষ মানানো'। হাতিকে পোষ মানিয়ে তাকে দিয়ে মানুষ ইচ্ছামত সেই সব কাজ করিয়ে নেয়, যা সে নিজে অন্য কোনভাবে করতে পারতো না। একই কথা অন্যান্য হিংস্র পশু পাখির বেলাতেও ঘটে থাকে।   

   আমাদের সমাজে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক যে শিক্ষাব্যবস্থা, পরিবারে ও সমাজে আত্মিক উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের যে৩ করুণ অবস্থা, তাতে এটা্এক তিক্ত সত্য যে, বহু যুবক যুবতি তাদের মধ্যে লুকায়িত শক্তি ও যোগ্যতা বিষয়ে উপলব্ধী করার আগেই প্রৌঢ়ত্বে উপনীত হচ্ছেন। সমাজ ও সভ্যতায় তারা তেমন কোন কার্যকর ভুমিকা তো রাখতে পারছেনই না, এমনকি, নিজেদের ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনেও করুণভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছেন।  

   জীবনে সবাই সমানভাবে সফল হতে পারনে না। সফলতার সঙ্গা ও মানদন্ড এক একজনের কাছে এক এক রকম। এ বিষয়ে বিস্তর কথা রয়েছে, মতপার্থক্যও প্রচুর। ব্যক্তি নিজ নিজ শিক্ষা, আদর্শবোধ ও রুচির উপরে ভিত্তি করে নিজের জীবনের লক্ষ্য, গন্তব্য, সফলতা ও ব্যর্থতা যাচাই করে নেবেন।  

    আমরা বরং বলছি, ব্যক্তি তার নিজের আসল শক্তি আর সামর্থটাকে উপলব্ধী করবেন আগে। তারপরে তিনি নিজের চলার পথটাকে বেছে নেবেন। এ লক্ষেকে সামনে রেখে আমরা আগামি কয়েকটা পর্বে আলোচনা করবো মানসিক উন্নয়নের বিভিন্ন কলা কৌশল নিয়ে। 

    বিস্তারিত ফেসবুকে হয়তো আলোচনা সম্ভবপর হবে না, তবে সংক্ষেপে কিছু কৌশল তুলে ধরা হবে, আর বরাবরের মতোই যথাসময়ে এই আলোচনাকে বিস্তারিতভাবে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা হবে ইনশাআল্লাহ। আশা করি, আমি নিজে এবং সেই সাথে আমার শ্রদ্ধেয় পাঠকবৃন্ধ সকলেই এ থেকে উপকৃত হবো। সাথে থাকবেন ইনশাআল্লাহ্।

Post a Comment

0 Comments