Recent Tube

সিয়াম তথা রোজা পালনের ফজিলত ও প্রতিদানঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।

 


 
সিয়াম তথা রোজা পালনের ফজিলত ও প্রতিদানঃ
---------------------------------------
   
         আল্লাহ তা'য়ালা সিয়াম পালনকারী তথা রোজাদারদের জন্য অফুরন্ত ফজিলত ও প্রতিদান রেখেছেন। যেমন- 
(১) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ الْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ مَا شَاءَ اللَّهُ يَقُولُ اللَّهُ إِلَّا الصَّوْمَ فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ.
"আল্লাহর মর্জি হলে আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকাজের প্রতিদান দশ গুণ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। আল্লাহ্ বলেন, তবে রোজা ব্যতীত, (এর প্রতিদান অফুরন্ত); তা আমার জন্যই (রাখা হয়) এবং আমিই তার প্রতিদান দিবো।" (সহীহ মুসলিম হাঃ ১১৫১, ইবনে মাজাহ হাঃ ১৬৩৮, মুসনাদে আহমদ হাঃ ৯৪২১, ৯৮১৯, মুয়াত্তা মালেক হাঃ ৬৯০, সহীহুত তারগীব হাঃ ৯৬৮)

     (২) রোজার বিনিময়ে আল্লাহ তা'য়ালা গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন,
 «مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَاناً وَاحْتِسَاباً، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ»
“যে ব্যক্তি ঈমান সহকারে নেকীর আশায় রমযানের রোজা পালন করে, তার অতীতের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।” (সহীহ বুখারী হাঃ ৩৮, ১৯০১, ২০১৪, সহীহ মুসলিম হাঃ ৭৬০, জামে তিরমিযী হাঃ ৬৮৩, সুনান নাসায়ী হাঃ ২২০৩, ২২০৪, আবূ দাউদ হাঃ ১৩৭১, ইবনে মাজাহ হাঃ ১৬৪১, আহমাদ হাঃ ৭১৩০, ৭২৩৮,  ১০১৫৯, ২৭৬৭৫, দারেমী হাঃ ১৭৭৬, আবী শায়বা হাঃ ৮৮৭৫, ইবনে খুযাইমা হাঃ ১৮৯৪, ইবনে হিব্বান হাঃ ৩৪৩২, সুনানুল কুরবা বায়হাকী হাঃ ৮৫০৬; গৃহীত: আমার সংকলিত, 'নির্বাচিত হাদীস' পৃঃ ৩১)

   (৩) জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম হাতিয়ার সিয়াম তথা রোজা। উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বলেছেন, 
ُالصِّيَامُ جُنَّةٌ مِنْ النَّارِ كَجُنَّةِ أَحَدِكُمْ مِنْ الْقِتَالِ.
"রোজা ঢাল-সরূপ যদ্বারা রোজাদার জাহান্নামের অাগুন থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে, যেভাবে তোমাদের কেউ যুদ্ধে ঢাল দ্বারা নিজেকে রক্ষা করে।" (মুসনাদে আহমদ হাঃ ১৫৮৪৪, ১৭৪৪৫, ইবনে মাজাহ হাঃ ১৬৩৯, সুনান নাসায়ী হাঃ ২২৩০, ২৩৩১, সহীহ ইবনে খুযায়মা ৩/১৯৩, সহীহুত তারগীব হাঃ ৯৭১; গৃহীত: আমার সংকলিত, 'নির্বাচিত হাদীস' পৃঃ ৩১)

  (৪) সিয়াম পালনকারীদের জান্নাতের বিশেষ গেট/দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। সাহল ইবনে সায়াদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন,
«إنَّ في الجَنَّةِ بَاباً يُقَالُ لَهُ: الرَّيَّانُ، يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُونَ يَومَ القِيَامَةِ، لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أحدٌ غَيْرُهُمْ، يقال: أيْنَ الصَّائِمُونَ ؟ فَيَقُومُونَ لاَ يَدخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ، فَإذَا دَخَلُوا أُغْلِقَ فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ».
“জান্নাতের মধ্যে এমন একটি দরজা আছে, যার নাম হল ‘রাইয়ান’; সেখান দিয়ে কেবল সিয়াম পালনকারীগণই কিয়ামতের দিনে প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া আর কেউ সেদিক দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা করা হবে, ‘রোজাদাররা কোথায়?’ তখন তারা দণ্ডায়মান হবে। (এবং ঐ দরজা দিয়ে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে) তারপর যখন তাদের সর্বশেষ ব্যক্তি প্রবেশ করবে, তখন দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর সেখান দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।” 
(সহীহ বুখারী হাঃ ১৮৯৬, ৩২৫৭, সহীহ মুসলিম হাঃ ১১৫২, জামে তিরমিযী হাঃ ৭৬৫, সুনান নাসায়ী হাঃ ২২৩৬, ২২৩৭, ইবনু মাজাহ হাঃ ১৬৪০, আহমাদ হাঃ ২২৩১১, ২২৩৩৫)

   হে আল্লাহ! আমাদের সকলকে রমযান মাসের সব সিয়াম পালন করার তৌফিক দান করুন, বিনিময়ে জীবনের সকল গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং আখিরাতে জান্নাতের বিশেষ দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করার ব্যবস্থা করে দিন। (আমিন!)
-----------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা আলোচক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments