Recent Tube

জালিম শাসকরা সম্মানিত লোকদের অপমান অপদস্থ করেঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।





  জালিম শাসকরা সম্মানিত লোকদের অপমান   অপদস্থ করেঃ


     হেফাজত নেতা মামুনুল হকের সাথে যা হয়েছে তা অন্যায় হয়েছে। তাকে লাঞ্ছিত, অপমানিত ও অপদস্থ করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এদের অপমান অপদস্থ থেকে আমাদের মজলুম জামায়াত নেতারাও রক্ষা পাননি। যাঁরা সারা জীবন খুন, গুম, হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগ্রম করেছেন, তাঁদের খুন, ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। যাঁর হাতে হাত রেখে শত শত কাফির মুসলিম হয়েছে, যাঁর ওয়াজ নসীহতে হাজার হাজার যুবক হকের দিশা পেয়েছে, সেই আল্লামা সাঈদ (হাফিঃ) কেও তারা খুনী, ধর্ষক, যুদ্ধাপরাধীর মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে অপমান অপদস্থ করেছে এবং যাবত জীবন জেল দিয়েছে। 

   আফসোস ও পরিতাপের বিষয় হলো, এসব মিথ্যা অভিযোগ শয়তানেও বিশ্বাস করবে না, তারপরও একশ্রেণীর লোক মজলুমদের পক্ষে কথা না বলে বরং নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। আবার অনেকেই জালিমদের তালে তাল মিলিয়ে মজলুমদের বিরোধীতা করেছে। যদিও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ ও আলেম ওলামাদের অপমান অপদস্থ করা জালিম শাসকদের চিরাচরিত রীতি। কুরআনের ভাষায়,
إِنَّ الْمُلُوكَ إِذَا دَخَلُوا قَرْيَةً أَفْسَدُوهَا وَجَعَلُوا أَعِزَّةَ أَهْلِهَا أَذِلَّةً ۖ وَكَذَٰلِكَ يَفْعَلُونَ-
 নিশ্চয় (জালিম) রাজা-বাদশাহরা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে তখন তাকে বিপর্যস্ত করে এবং সেখানকার সম্মানিত অধিবাসীদেরকে অপমান-অপদস্থ করে। আর এরূপ করাই তাদের রীতি।" (সূরা নামাল : ২৭/৩৪)
এ আয়াতের ব্যাখায় আত-তাফসীর আল মুইয়াসসারে বলা হয়েছে, "রাজা বাদশাহগণ কোন দেশ জোর করে দখল করেন তখন সেখানকার সম্মানিত অধিবাসীদের অপমানিত করে তাদের মনে ভয়-ভীতি ঢুকিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা তাদের চিরাচরিত নিয়ম।" (মুইয়াসসার, সূরা নামাল: ২৭/৩৪)

    অনেক দরবারী আলেম আবার জালিম শাসকের জুলুম সহ্য তাদের আনুগত্য করার সবক দেয়। অথচ মুসলিমদের নেতৃত্ব দেওয়ার কোনো অধিকার জালিমদের নেই। মহান আল্লাহ ইবরাহীম (আ) কে বলেছিলেন,
إِنِّي جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ إِمَامًا ۖ قَالَ وَمِنْ ذُرِّيَّتِي ۖ قَالَ لَا يَنَالُ عَهْدِي الظَّالِمِينَ-
‘আমি তোমাকে মানুষ জাতির নেতা বানাব’। ইবরাহী বলল, ‘আমার বংশধরদের থেকেও’? আল্লাহ বললেন, ‘জালিমরা আমার ওয়াদাপ্রাপ্ত হয় না’। (সূরা বাকারা: ২/১২৪)
আল্লামা আবু বকর আল-জাসসাস (রহ:) এই আয়াতের ব্যাখ্যার এক পর্যায়ে বলেন এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে, জালিম ফাসিকের নেতৃত্বদান অগ্রহণযােগ্য। সে খলিফাহও হতে পারবে না। যদি কোন ব্যক্তি ফাসেক অবস্থায় এই দায়িত্ব গ্রহণ করে, তাহলে জনসাধারণের উপর তার অনুসরণ ও আনুগত্য আবশ্যক হবে না। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেমনটি বলেছেন,
لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق-
"স্রষ্টার অবাধ্যতায় সৃষ্টির কোন আনুগত্য নেই।" (ইবনে আবী শায়বা হাঃ ৩৩৭১৭; মুয়াত্তা মালিক হাঃ ১০; মুসনাদে আহমদ হাঃ ১৯৪০৩; জামেউল আহাদীস হাঃ ১৩৪০৫; মুজামুল কাবীর হাঃ ৩৮১; মুসনাদে শিহাব হাঃ ৮৭৩; কানযুল উম্মাল হাঃ ১৪৮৭৫) আয়াতটি এই প্রমাণও বহন করে যে, ফাসেক বিচারক হতে পারবে না। যদি সে বিচারকের পদ দখল করে, তাহলে তার (ইসলাম বিরোধী) বিধান বাস্তবায়ন করা যাবে না। (আহকামুল কুরআন, জাসসাস, সূরা বাকারা:২/১২৪)
--- --------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ গ্রন্থপ্রনেতা আলোচক শিক্ষক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments