Recent Tube

কি কি কাজ করলে রোযা ভঙ্গ হয় না? শামীম আজাদ।

         
                    সাওম/রোযা ;
                           ৮ম -শেষ পর্ব;

 কি কি কাজ করলে রোযা ভঙ্গ হয় না? 

    রোযা অবস্থায় নিম্নোক্ত কাজ করলে রোযার কোন ক্ষতি হবে না :

 ১. গরম থেকে বাঁচার জন্য মাথায় শীতল পানি দেয়া, গোসল করা, ভিজা কাপড় গায়ে জড়িয়ে রাখা
وَعَنْ بَعْضِ أَصْحَابِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ: لَقَدْ رَأَيْتُ النَّبِىَّ ﷺ بِالْعَرْجِ يَصُبُّ عَلٰى رَأْسِهِ الْمَاءَ وَهُوَ صَائِمٌ مِنَ الْعَطَشِ أَوْ مِنَ الْحَرِّ. رَوَاهُ مَالِكٌ وَأَبُو دَاوُدَ
সাহাবী থেকে বর্ণিতঃ:

  একজন সাহাবী বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ‘আরজ’-এ (মক্কা মাদীনার মাঝখানে একটি জায়গার নাম) সায়িম অবস্থায় পিপাসা দমনের জন্য অথবা গরম কমানোর জন্য মাথায় পানি ঢালতে দেখেছি। 
আবূ দাঊদ ২৩৬৫, মুয়াত্ত্বা মালিক ১০৩২, আহমাদ ১৫৯০৩, মিশকাতুল মাসাবিহ ২০১১

  ২. সুরমা ব্যবহার, চোখে বা কানে ঔষধ ব্যবহার করলে

حَدَّثَنَا أَبُو التَّقِيِّ هِشَامُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ الْحِمْصِيُّ حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ حَدَّثَنَا الزُّبَيْدِيُّ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ اكْتَحَلَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وسلم وَهُوَ صَائِمٌ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

   রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযারত অবস্থায় সুরমা লাগিয়েছেন। 
ইবনে মাজাহ ১৬৭৮

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْمُخَرِّمِيُّ، وَيَحْيَى بْنُ مُوسَى الْبَلْخِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عِيسَى، عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ مَا رَأَيْتُ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِنَا يَكْرَهُ الْكَحْلَ لِلصَّائِمِ وَكَانَ إِبْرَاهِيمُ يُرَخِّصُ أَنْ يَكْتَحِلَ الصَّائِمُ بِالصَّبِرِ ‏.‏

 আল-আ‘মাশ (রহঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ:

    তিনি বলেন, আমি আমাদের কোন সাথীকে সওম পালনকারীর জন্য সুরমা ব্যবহার করাকে অপছন্দনীয় বলতে দেখিনি। ইবরাহিম নাখঈ (রহঃ) সওম পালনকারীর জন্য ‘সিবর’ সুরমা ব্যবহার এর অনুমতি দিয়েছেন।
আবু দাউদ ২৩৭৯

 ৩. স্ত্রীকে স্পর্শ করলে

حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ قَالَ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ الْحَكَمِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُقَبِّلُ وَيُبَاشِرُ وَهُوَ صَائِمٌ وَكَانَ أَمْلَكَكُمْ لإِرْبِهِ

 ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

  তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওমের অবস্থায় চুমু খেতেন এবং গায়ে গা লাগাতেন। তবে তিনি তাঁর প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে তোমাদের চেয়ে অধিক সক্ষম ছিলেন।
ইব্‌ন  ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন , اِربٌ মানে হাজত বা চাহিদা। তাউস (রহঃ) বলেন,  غَيرَ اُولِي الاَربَةِ  মানে  বোধহীন , যার মেয়েদের  প্রতি কোন খাহিশ নেই।
বুখারী ১৯২৭

 ৪. রাত্রিবেলায় স্ত্রী সহবাস করলে

وَعَنْ عَائِشَة رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يُدْرِكُهُ الفَجْرُ وَهُوَ جُنُبٌ مِنْ أَهْلِهِ، ثُمَّ يَغْتَسِلُ وَيَصُومُ . متفقٌ عَلَيْهِ

 আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

   তিনি বলেন, ‘(কখনো কখনো) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভোর এভাবে হত যে, তিনি স্ত্রী-মিলন হেতু অপবিত্র অবস্থায় থাকতেন। অতঃপর তিনি গোসল করতেন এবং রোযা করতেন।’
বুখারী ১৯২৬, ১৯৩০, ১৯৩২, মুসলিম ১১০৯, তিরমিযী ৭৭৯, আবূ দাউদ ১৯৮৪, ১৯৮৫, ২৩৮৮, ২৩৮৯, আহমাদ ২৩৫৪২, ২৩৫৫৪, ২৩৫৮৪, ২৩৫৮৪, ২৩৮৬৪, ২৩৯০৮, ২৪১৮৪, ২৪২৮৫, ২৪২৯৫, ২৪৭০০, মুওয়াত্তা মালিক ৬৪১, ৬৪২, ৬৪৩, ৬৪৪, দারেমী ১৭২৫, রিয়াদুস সলেহিন ১২৫২

  ৫. শিঙ্গা লাগানো;

 وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: إِنَّ النَّبِىَّ ﷺ احْتَجَمَ وَهُوَ مُحْرِمٌ وَاحْتَجَمَ وَهُوَ صَائِمٌ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

 ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

     তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন। ঠিক এভাবে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সায়িম অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন। 
 বুখারী ১৮৩৫, ১৮৩৬, ১৮৩৮, ১৯৩৯, ২১০২, ২১০৩, ২২১০, ২২৭৭, ২২৭৮, ২২৭৯, ২২৮০, ২২৮১, ৫৬৯১, ৫৬৯৫, ৫৬৯৯, ৫৭০১, মুসলিম ১২০২, ১৫৭৮, ১৫৭৯, ১৫৮০, ২২০৯, তিরমিযি ৭৭৫, ৭৭৬, ৭৭৭, ৮৩৯, ১২৭৮, আবু দাউদ ১৮৩৫, ১৮৩৬, ১৮৩৭, ২৩৭২, ২৩৭৩, ৩৪২৩, ৩৪২৪, ৩৮৬৩, ৩৮৬৭, দারিমী ১৮১৯, ১৮২০, ১৮২১, ১৮২২, মুয়াত্তা মালিক ৭৮৪, ১৮২১, আহমাদ ৬৯৪, ১১৩২, ১১৩৩, ১১৩৯, ১৮৫২, ১৩৫৯১, ইবনে মাজাহ ৩০৮১, ইরওয়া ৯৩২, মিশকাতুল মাসাবিহ ২০০২

 ৬. রোযা অবস্থায় ভুলবশত কিছু খেলে

حَدَّثَنَا عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا ابْنُ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا نَسِيَ فَأَكَلَ وَشَرِبَ فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ فَإِنَّمَا أَطْعَمَهُ اللهُ وَسَقَاهُ

 আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

    নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সওম পালনকারী ভুলক্রমে যদি আহার করে বা পান করে ফেলে, তাহলে সে যেন তার সওম পুরা করে নেয়। কেননা আল্লাহ্‌ই তাকে পানাহার করিয়েছেন।
বুখারী ১৯৩৩

 ৭. অনিচ্ছাকৃত বমি হলে

و حَدَّثَنِي عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ مَنْ اسْتَقَاءَ وَهُوَ صَائِمٌ فَعَلَيْهِ الْقَضَاءُ وَمَنْ ذَرَعَهُ الْقَيْءُ فَلَيْسَ عَلَيْهِ الْقَضَاءُ.

  নাফি’ (র) থেকে বর্ণিতঃ:

    আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলতেন, যে রোযা অবস্থায় স্বেচ্ছায় বমি করে, তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে। আর যার অনিচ্ছাকৃত বমি হয়, তাকে করতে হবে না।
মুয়াত্তা ইমাম মালিক ৬৬৩

   আরো যে সব কারণে রোযা ভঙ্গ হয়না তা হল :
১. স্বপ্নদোষ হলে 
২. স্ত্রীর দিকে দৃষ্টিপাতের দরুন বীর্যপাত হলে 
৩. তেল মালিশ করলে  
৪. মূত্রনালীতে ঔষধ দিলে 
৫. কানে পানি গেলে
৬. ধূলা প্রবেশ করলে।

     আল্লাহ তা'আলা সকলকে সঠিকভাবে  উপলব্ধি করার তৌফিক দান করুন। 
আল্লাহ তা'আলার আদেশ ও নিষেধ মোতাবেক চলার তৌফিক দান করুন। 
আমিন।

Post a Comment

0 Comments