Recent Tube

কুল ড্রিংকস, জর্দা, সিগরেট নাকি গাঁজা কোনটা? হুজুরেরা যেভাবে জায়েজ বা না জায়েজ করবে! --কুতুব শাহ।

      


 
কুল ড্রিংকস, জর্দা, সিগরেট নাকি গাঁজা কোনটা? হুজুরেরা যেভাবে জায়েজ বা না জায়েজ করবে! 
------------------------

  শায়খ আবদূর রাজ্জাক বিন ইউসুফ কোকাকোলা জাতীয় পানীয় হারাম বলে ক্লীয়ার ফতোয়া দেন।  ( তিনি এসব পান করেন না হয়ত) 

    এই বিষয়ে মতিউর রহমান মাদানীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বেশ ক্ষ্যাপে বলেন, ইসলামে হারামের তালিকা স্পষ্ট। তাই এর বাইরে কোন কিছু হারাম ফতোয়া দিতে হলে দলীল লাগবে। তিনি আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের ফতোয়া উড়িয়ে দেন। এর কারণ, তিনি যেখানে চাকরি করেন সেদেশে কুল ড্রিংক এক ধরণের স্বাভাবিক পানীয়। তাই ফতোয়া সেদিকে করে দিলেন।

    এবার শায়খ মতিউর রহমানকে পান,জর্দা, চুনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি খুব জোর গলায় এসবের বিরুদ্ধে বলেন। কারণ, তিনি যেখানে আছেন সেখানে পান, জর্দা, চুনার ব্যাবহার তেমন নাই। 

    এখন নিরেপক্ষ দৃষ্টিতে ভাবেন স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিবেচনায় যদি পান, চুনা, জর্দা না জায়েজ হয় একই যুক্তি কোকাকোলা জাতীয় পানীয়ও না জায়েজ হওয়ার কথা৷ কারণ, কোকাকোলা টাইপের পানীয়ও স্বাস্থ্যের জন্য চরম ক্ষতিকর।  ( আসল ফ্যাক্ট যে শায়খ যেটা খায়না সেটার বিরুদ্ধে শক্ত ফতোয়া দেয়) 

  ♦ কওমী সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উস্তাজ, তুলাবা সবাই সিগারেটকে শক্ত নফরদ করেন। কিন্তু জর্দা? হ্যাঁ, জর্দার পক্ষে শুধু যুক্তি নয় গতকাল ফতোয়াও দিয়েছেন একদম দলীল সহকারে। 

  √√ এবার গবেষণার ফল দেখেনঃ -

    "ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চ অ্যান্ড হসপিটালের এপিডেমিলজি বিভাগের প্রধান হাবিবুল্লাহ তালুকদার বলেন, তামাকে চার হাজারের মতো রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। এর মধ্যে নাইট্রোসেমিন একটি। কোনো প্রাণীর শরীরে যে পরিমাণ নাইট্রোসেমিন ক্যানসার তৈরির জন্য দায়ী, তার চেয়ে বেশি পরিমাণে নাইট্রোসেমিন থাকে তামাক ও তামাকজাত পণ্যে। তাই ধূমপানের চেয়ে সরাসরি তামাক সেবনে ঝুঁকির মাত্রাও অনেক। মূত্রনালি ও জরায়ুর ক্যানসারেও পরোক্ষ ভূমিকা থাকে তামাকজাত পণ্যের। শ্বাসকষ্টের রোগ সিওপিডি ও হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় এসব পণ্য সেবনে"।

    জায়েজ কি না জায়েজ সেটা আপাতত অফ রাখেন। উল্লেখিত গবেষণা মতে জর্দা সিগারেটের মত মারাত্মক অথবা সিগরেটের চেয়ে বেশী ক্ষতিকারক। তাহলে জর্দার প্রতি ভালোবাসা আর সিগরেটে নফরদ কেন? খাইলে দুটোই খান। এছাড়া একই যুক্তিতে গাঁজাও খেতে পারেন! কারণ, গাঁজা, তামাক, গুল, জর্দা, সিগরেট প্রায় একই হয়ত সামান্য তফাৎ থাকতে পারে। 

  ♦  কুল ড্রিং, তামাক, জর্দা, চুনা, সিগরেট এসব হালাল নাকি হারাম সেই বিতর্কে না গিয়ে প্যাঁচাল না বাড়িয়ে সুন্দর  সমধানের দিকে যাওয়াই বেটার। যেমন....... 

    যেকাউকে প্রশ্ন করেন খাবার, পানীয় হিসাবে প্রচলিত কিছু কুল ড্রিংকস আর তামাক,জর্দা, বিড়িতে কোন উপকার আছে কিনা বা এসব পবিত্র, উত্তম, বিবেচিত কিনা?  যদি উত্তর না হয় তাহলে পবিত্র খাবারের প্রতি অভ্যস্থ হতে এবং মানুষকে উৎসাহ দিতে এগিয়ে আসুন। যেমনটা পবিত্র কোরানে বলা হয়েছে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِن طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ وَاشْكُرُوا لِلَّهِ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ

  ♥ হে ঈমানদারগণ, তোমরা পবিত্র (স্বাস্থ্য সম্মত) বস্তু সামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুযী হিসাবে দান করেছি এবং শুকরিয়া আদায় কর আল্লাহর, যদি তোমরা তাঁরই বন্দেগী কর। (সুরা বাকারা ১৭২)

كُلُوا مِن طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ وَلَا تَطْغَوْا فِيهِ فَيَحِلَّ عَلَيْكُمْ غَضَبِي ۖ وَمَن يَحْلِلْ عَلَيْهِ غَضَبِي فَقَدْ هَوَىٰ

    আমার দেয়া পবিত্র (স্বাস্থ্য সম্মত) বস্তুসমূহ খাও এবং এতে সীমালংঘন করো না, তা হলে তোমাদের উপর আমার ক্রোধ নেমে আসবে এবং যার উপর আমার ক্রোধ নেমে আসে সে ধবংস হয়ে যায়।(সুরা তা হা ৮১)

 ♦ স্ট্যাটাসে উল্লেখিত বস্তু হালাল নাকি হারাম সেই ডিবেটে না গিয়ে বরং স্বাস্থ্যসম্মত, পবিত্র এবং উত্তম খাদ্যাভ্যাসে গড়তে পারলে সুন্দর, সাবলীল, স্বাস্থ্যবান জীবন হবে ইনশাআল্লাহ। ডিবেটে গেলে মুফতী সাহেবদের সাথে জিততে পারবেন না। বুঝলেন?
---------------------------------------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments