Recent Tube

বিতি কিচ্ছা-৭১; নুর মুহাম্মদ চৌধূরী (মুবিন)





              
                     বিতি কিচ্ছা
               পর্ব-৭১;
--------------------------------- 

৭১ এর চেতনা লোপাট:
--------------------------------- 

       কথায় বলে "চেনা ব্রাম্মনের পৈতা লাগে না" কিন্তু ইদানীং ৭১ এর চেতনা অঙ্কিত ভার্চুয়াল গেজ্ঞী ধারণ কার্যক্রম এত বেশী পরিমানে বিস্তার লাভ করেছে যে , এই সব নকল ব্রাম্মনদের পরিচয় প্রকাশ করে দেয়া , এবং তার বহুল আলোচনা করা অতীব জরুরী একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নয়ত নব  প্রজন্ম এইসব তথ্য সন্ত্রাসী চাটুকার, চামচাদের থুথীর জোরের কাছে হেরে গিয়ে প্রকৃত সত্য থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে। তাই আজ প্রকাশ করতে চাই চেতনা হরণকারীদের মোটামোটী একটা পরিচয়। পাশাপাশী দায়ী করতে চাই অবচেতনভাবে ঘুমিয়ে পড়া প্রকৃত চেতনাধারীদেরকে, যাদের অকল্পনীয় সূধারণাহেতু ডাকাতদের দ্বারা বিস্তর চেতনা ডাকাতী সম্ভব হল। 

      তবে শুনেছি "খোদার ঢোল নাকি ফেরেস্তারা বাজায়" । তাই মাঝে মাঝে কাকতালীয়ভাবে সব গুমড় ফাঁস হয়ে যায় । নইলে বলেন, ''কেন এই অবেলায় বাঁজায় বাঁশী" মুক্তিযাদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের কর্তাব্যক্তিরা। দেখুন কিভাবে বেরিয়ে গেল থলের বিড়াল ? গেল বৎসর ২০১৯ সালের ১৯শে ডিসেম্বর , দেশের স্বাধীনতা বিধ্বংসী অপশক্তির ক্রীড়নক সরকারের মুক্তিযাদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম.মোজাম্মেল হক হঠাৎ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করলেন। মানে ফাঁটা ঢোলে বিষম একটা বাড়ি দিলেন তিনি।

      তালিকায় প্রথম পর্যায়ে প্রকাশিত ১০৮৭৯ জন রাজাকারের নাম প্রকাশ হয় । দেখা যায় উক্ত তালিকায় যাদেরকে আমরা রাজাকার হিসারে দেখতে পাই তাদের  মধ্যে ৯০ শতাংশের চেয়েও বেশী রাজাকার বর্তমানে পোষাক পাল্টিয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত । এখানে উল্লেখ প্রয়োজন যে এই তালিকাটি কোন যদু কিংবা মধু কারো মর্জিমাফিক তৈরী করা হয় নাই। ইহা একটি নির্দিষ্ট দলিল দস্তাবেজ ঘেটে , অর্থাৎ তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের নিয়োগ তালিকা থেকে উৎসারিত। উহা দীর্ঘ্য দিন ধরে বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বশীলদের হেফাজতে রক্ষিত নথিপত্র হিসাবে ছিল। যারা তৎকালীন পাকিস্তান সরকার থেকে নিয়মিত রাজাকার , আল-বদর, আল-শামস্ হিসাবে বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন মর্মে রেকর্ডপত্রে বিদ্যমান। এখন কিভাবে এই তালিকা রদবদল করা হবে? আসলে যার কোন উপায়ই নাই। এই তালিকায় যাদের নাম এসেছে, এটি একটি অকাট্য সত্য যে  এরা তৎকালীন পাক সরকারের সুবিধাভোগী ও তল্পীবাহক ছিল। কেন এরা পাকিস্তানের লেজুড় হয়েছিল? এর কারণ এরা অতি মাত্রায় ধুরন্ধর , লোভাতুর , চতুর সুবিধাভোগী ও বুদ্ধিমান । বৈশিষ্ট্যের দিক বিবেচনা করলে এদেরকে "দুধের মাছি" বলা যায়। বলতে কি , এই স্বভাবে বংশানুক্রমিকভাবে এরা পরিপক্ষ। যার দরুন পাকিস্তানের পট পরিবর্তনের পরক্ষণেই এরা অত্যন্ত তাড়াহুড়া করে পোষাক পরিবর্তনের হিড়িকে মেতে উটে। পাল্টে ফেলে মুখের বুলি। আর এমন লম্ফঝম্ফ শুরু করে যেন তাদের মত স্বাধীনতাকামী এ জগতে আর কেউ কোনদিন ছিল না। যুদধকালীন নয় মাসে এদের অপকর্মের যত সাক্ষী ছিল , এদের সকলকেই এরা আপন স্বার্থ হাসিলের পরিপন্থী বিবেচনার ঘায়েল করেছে। করেছে হত্যা, খুন, গুন, ডাকাতি ও রাহাজানী। যে কাজে তারা সিদ্ধহস্ত ছিল পাক সরকারের পৃষ্টপোষকতায়। আজও তারা হেন অপকর্ম নাই , যা তারা করতে অপারগ। তাইতো দেখা যায় ৭১ সালের সকল আলোচিত অপকর্ম যথা খুন ,গুম, ধর্ষন, নিপীড়ন, জবর দখল , লুটপাট কি না সংগটিত হয়েছে তাদের দ্বারা,- আজও তার পুরোদস্তুর বিদ্যমান এই জনপদে এদেরই দ্বারা। সুতরাং আমাদের এই সমীকরন বলে এরাই রাজাকার, এরাই আওয়ামিলীগ। একইভাবে -,যারাই রাজাকার, তাঁরাই আওয়ামীলীগ। আজ ৭১টেলিভিশনের রঙ্গ মঞ্চে বসে যারা রাজাকারের চৌদ্দ গোষ্টী উদ্ধারের কাজে আদা-পানি খেয়ে দিবানিশী ব্যস্ত আছেন, তারা আর যাই হোক অন্তত: তারা যে মুক্তিযাদ্ধা নয় অথবা মুক্তিযাদ্ধা প্রজন্মও নয় - এটা শতভাগ সত্য। কারণ অসম্ভব রকমের চালাক, ফটকাবাজরা নিজেদের পিট বাঁচানোর তাগিদেই তাদের পোষাক পরিবর্তন করেছে। এরা আজন্ম মিথ্যাবাদী এবং শট।  প্রমান হিসাবে প্রত্যেকেই তার নীজ নীজ এলাকার আওয়ামী নেতাদের নসবনামা তালাশ করে দেখুন। আমি প্রমান করব আমার এলাকার দুষ্টদেরে। 

       কৌশলবশত: এই দুষ্টচক্র আজীবন সরকার দলে থাকে। কারণ কিভাবে কোন জাতের তেল মারলে কোন সরকারে ঠাঁই পাওয়া যায়- তার সব কলা কৌশল ওরা আয়ত্ব করেছে সেই তখনই যখন তারা রাজাকারের প্রশিক্ষণ নিয়েছিল । এইসব কারণেই দেশে দুই প্রকারের মুক্তিযাদ্ধা পাওয়া যায় । এর একটা নাকি আসল মুক্তিযাদ্ধা , আর অন্যটার নাম বললে এ দেশের কোন কোন বিচারপতিদের আঁতে ঘা লাগে। তাই ওটা বলা যাবে না। সম্ভবত থলের বিড়াল বেরিয়ে যেতে না যেন পারে সহজে ,- তাই এই অপচেষ্টা।
---------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক কলামিস্ট ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 

Post a Comment

0 Comments