Recent Tube

অজস্র আলোকোজ্জ্বল সৃষ্টিশীল পাণ্ডিত্য ও কর্মের অম্লান স্মৃতির মাঝে চিরভাস্বর তিনি চলে গেলেন আল্লাহর সান্নিধ্যে...। ওহিদুল ইসলাম।

  

   অজস্র আলোকোজ্জ্বল সৃষ্টিশীল পাণ্ডিত্য ও কর্মের অম্লান স্মৃতির মাঝে চিরভাস্বর তিনি চলে গেলেন আল্লাহর সান্নিধ্যে...
                                       --পর্ব-২;
---------------------------------

  যুগশ্রেষ্ঠ এই স্বপ্নদ্রষ্টা পণ্ডিত ও উম্মাহর সুযোগ্য অভিভাবক শাহ আব্দুল হান্নানের সাথে আমার কিছু সুখকর ব্যক্তিগত স্মৃতি...
--------------------------------- 

     এই পর্বে শাহ আব্দুল হান্নান চাচার সাথে আমার ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণের আগে তার ইন্তেকালের পর হাজার হাজার মানুষের তার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা প্রকাশ ও দোয়া করা দেখে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে, আসমানবাসীর কাছে এবং দুনিয়াবাসীর কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে আমার একটা একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতি ব্যক্ত করতে চাই। আমার দৃঢ বিশ্বাস যে তিনি অনেক সৌভাগ্যবান। তার শেষ বিদায়টা অনেক গৌরবের। তার পরকালীন জীবন হবে অনাবিল শান্তি-সুখের, ইনশা আল্লাহ। আমি কায়মনোবাক্যে দোয়া করি যেনো তিনি দুনিয়ার জীবনের সকল বিতর্কের উর্ধ্বে উঠে এখন পরোপারে আল্লাহর অপার রহমত, মাগফিরাত ও ভালোবাসায় সিক্ত হন। এর একটি সুখকর নমুনা হিসেবে আমরা লক্ষ্য করছি  দুনিয়াবাসীর কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা এবং তার প্রতি সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। এ প্রসঙ্গে একটা হাদীস না বললে নয়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “যখন আল্লাহ তায়ালা তাঁর কোনো বান্দাহকে ভালোবাসেন, তিনি জিবরীলকে (আঃ) ডেকে বলেন, ‘আল্লাহ অমুককে ভালোবাসেন, কাজেই তুমিও তাকে ভালোবাসো।’ জিবরীল তখন ঐ ব্যক্তিকে ভালোবাসেন এবং মহাকাশের অধিবাসীদেরকে (ফেরেস্তাদেরকে) ডেকে বলেন, ‘আল্লাহ অমুককে ভালোবাসেন, কাজেই তোমরাও তাকে ভালোবাসো।‘ তখন মহাকাশবাসীরাও ঐ ব্যক্তিকে ভালোবাসেন। অতঃপর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সাথে ঐ ব্যক্তির গ্রহণযোগ্যতা (কবুল) যমীনে (বসবাসকারীদের মাঝে) প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।“ [عن أبي هريرة رضي الله عنه عن النبي، صلى الله عليه وسلم، قال‏:‏ ‏"‏إذا أحب الله العبد نادى جبريل‏:‏ إن الله تعالى يحب فلانًا، فأحببه، فيحبه جبريل، فينادي في أهل السماء‏:‏ إن الله يحب فلانًا، فأحبوه، فيحبه أهل السماء، ثم يوضع له القبول في الأرض‏"] (সহীহ আল-বুখারী ও সহীহ মুসলিম)। হান্নান চাচার দুনিয়ার ক্ষণকালীন জীবনকে তাই আজ পরকালের অনন্ত জীবনের দৃষ্টিকোণ থেকে সার্থক সফল মনে হচ্ছে।

     আমি হার্ভার্ডের লেখাপড়া শেষ করে ম্যাসাচুসেটস ছেড়ে নিউ ইয়র্কে বসবাস শুরু করলাম। তাতে নিউ জার্সিতে বসবাসকারী এবং নিউ ইয়র্কে কর্মরত ইমরান ভাইয়ের আরও কাছাকাছি হলাম। ইমরান ভাই তখন বড়ো মাপের IT জবের পাশাপাশি Witness-Pioneer এর সেক্রেটারী জেনারেল হিসেবে রাতদিন ব্যস্ত-বিভোর। প্রায়ই ছুটির দিনে নিউ জার্সিতে উনাদের বাসায় গিয়ে ইমরান ভাই ও ববী আপার সাথে আড্ডা দিই, রাত কাটাই। আমার তখনো ল্যাপটপ ছিলোনা, উনাদের বাসায় গেলে আমাকে একটা ল্যাপ্টপ দিয়ে দিতেন।  ইমরান ভাইদের কাছে যাওয়া মানেই হান্নান চাচার সাথে কমবেশী একঘন্টা ফোনে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা। ঐ সময় আমরা আরও কিছু ত্যেজোদ্দ্বীপ্ত ও উচ্চ বুদ্ধিবৃত্তিক গুণাবলী সম্পন্ন ভাইবোনকে  Witness-Pioneer এর সাথে পেলাম। ইমরান ভাইয়ের সাথে আমার মাধ্যমে পরিচিত হয়ে দৃঢ় পারিবারিক সম্পর্কের প্রীতিডোরে আবদ্ধ হলো নিউ ইয়র্কে বসবাসকারী বন্ধুযগল হামিদুর রহমান শিবলী ও তার স্ত্রী মুসলিমা রহমান ফেন্সী। আরও যুক্ত হলো নিউ ইয়র্ক সিটিতে কর্মরত এবং নিউ জার্সিতে বসবাসকারী কাওসার আহমেদ ভাই। আমাদের সবার ভিতরে এক গভীর ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে উঠলো এবং আমরা সবাই Witness-Pioneer কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আকাশচুম্বী স্বপ্নে বিভোর। সবার ল্যাপটপ ছিলো, ছিলোনা শুধু আমার। আমার উপর অনেক কাজ ন্যস্ত হলো এবং সেসব কাজের সুবিধার্থে ল্যাপটপের দরকার ছিলো। ইমরান ভাই এবং কাওসার ভাই দু’জনেই তাদের পুরনো ল্যাপটপ দিতে চায়লেন। পরে কাওসার ভাইয়ের ল্যাপটপ হলো আমার জীবনের নিজস্ব প্রথম ল্যাপটপ। চাচা দেশে বসে অনেক অনুপ্রাণিত এবং বিশ্বব্যাপী এক মহা বিপ্লবের স্বপ্ন-চেতনায় উদ্বেলিত। আমাদেরকে বিভিন্ন বই পড়ার দায়িত্ব দিচ্ছেন, ফোনে এবং ইমেইলে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এবং অভিভাবকসুলভ পথনির্দেশিকা দিচ্ছেন। ফারীনা আলম নামের আরেক বোন যুক্ত হয়েছিলেন লন্ডন থেকে, যিনি এর আগে আমেরিকার কানেক্টিকাটে লেখাপড়া করেছেন। ইমরান ভাইয়ের সাথেই প্রথম পরিচয়। হান্নান চাচার সাহচর্যে এসে ইমরান ভাই  এমনই হয়ে পড়লেন। দুনিয়ার কোথায় কোন মেধা লুকিয়ে আছে তা একটা একটা করে খুঁজে বের করা এবং সে মেধার মধ্যে Witness-Pioneer এর স্বপ্ন ঢুকিয়ে দেয়া। অত্যন্ত কর্মতৎপর, বিচক্ষণ ও চিন্তাশীল তরুণী ফারীনা আলম একবার পারিবারিক কাজে আমেরিকায় এলে ইমরান ভাইয়ের নির্দেশে আমি এবং কাওসার ভাই নিউ ইয়র্কে তাকে অভ্যর্থনা জানিয়ে এক রেস্টুরেন্টে লাঞ্চে মিলিত হলাম। ইমরান ভাই হান্নান চাচাকে এই তরুণী সম্পর্কে জানিয়েছিলেন এবং হান্নান চাচা তাকে শক্তভাবে Witness-Pioneer এর কাজে সম্পৃক্ত করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। চাচার সুস্পষ্ট নির্দেশনা ছিলো যদি কারও সাথে উনি সরাসরি কথা বললে ভালো হয় তাহলে যেনো উনার কথা বলার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়, এবং তিনি অত্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যেও অতি যত্ন সহকারে তা করেছেন। 

      হান্নান চাচা তার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্য থেকে যারা বিয়ের উপযুক্ত তাদেরকে বিয়ের ব্যাপারে খুব উৎসাহিত করতেন। শুধু উৎসাহ দিয়েই তিনি ক্ষ্যান্ত হননি। তিনি অতি যত্ন সহকারে এবং পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে উভয় পক্ষের একান্ত শুভাকাংখী অভিভাবকের মতো দায়িত্ব নিয়ে অনেক ভাইপো-ভাইঝির মধ্যে বৈবাহিক বন্ধন সৃষ্টি করে দিতেন। আমার জানা মতে ইমরান ভাই ও ববী আপার মধ্যে বিয়ে, তুষার আপা ও মাহবুব রাজ্জাক ভাইয়ের মধ্যে বিয়ে, নাহার আপা ও হাফিজ আব্দুর রহমান ভাইয়ের বিয়ে, এবং সারাহ আপা ও তাপস ভাইয়ের মধ্যে বিয়ে সহ আরও অনেক ছাত্র-ছাত্রীর (আসলে ভাইপো-ভাইঝির) বিয়ের ক্ষেত্রে তিনি মুখ্য ভূমিকা রেখে পুত-পবিত্র স্বর্গীয় দাম্পত্য ও পারিবারিক জীবনের ভিত্তি স্থাপন করে দিয়েছেন। এবার এলো আমার পালা। চাচা খুব খোলামেলা কথা বলতে পছন্দ করতেন। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আমি বিয়ের চিন্তা করছি কিনা। আমি উনার প্রশ্নের ইতিবাচক জবাব দিলাম। উনি আমাকে আবারও জিজ্ঞেস করলেন কেমন মেয়ে চাই, কি যোগ্যতা বা গুণাবলীর মেয়ে চাই, ইত্যাদি। তিনি বিয়ের উপযুক্ত তরুণ তরুণীদেরকে বুঝিয়ে দিতেন যে দুজনই একই আদর্শের এবং একই দৃষ্টিভঙ্গির অনুসারী না হলে ইসলামের পথে চলা কঠিন হয়ে যায়। তিনি বলতেন যে বিয়ের প্রথম দিকে যে নিরুদ্বিগ্ন আবেগের সম্পর্ক থাকে সেটা খুব বেশী স্থায়ী নাও হতে পারে। সংসার জীবনে অনেক কঠিন বাস্তবতা, বৃহত্তর পরিবার, সমাজ ও পরিবেশের সাথে সম্পর্কের দোলাচলে দাম্পত্য সম্পর্ককে অনেক চড়াই-উতরাই পার করতে হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধুর ভালোবাসার সম্পর্ক হয়তো কঠিন তিক্ত পরিস্থিতির মুখোমুখী হতে পারে। সেক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আদর্শিক ও দৃষ্টিভঙ্গির মিল একটি বড়ো নিষ্কৃতি। তিনি যে কোনো দাম্পত্য সংকটে, পারিবারিক টানাপোড়েনে অবনত চিত্তে মুক্তমনে সমাধানের জন্য ইসলামের কাছে নিজেদেরকে সমর্পণের পরামর্শ দিতেন এবং ইসলামী সমাধানকে মস্তক অবনত চিত্তে মেনে নিয়ে খুশী থাকতে বলতেন। তিনি বলতেন দাম্পত্য সম্পর্ক এবং সাংসারিক ও পারিবারিক জীবনে শান্তির আর কোনো উপযুক্ত বিকল্প নেই। 

      ইমরান ভাই নিজেও আমার বিয়ের ব্যাপারে অনেক খোলামেলা কথা বললেন। নিজের উদাহরণ দিয়ে আমাকে বুঝালেন যে চাচার কাছে ধর্ণা দিলে উপযুক্ত পাত্রী পাওয়া যাবে। চাচা আমার বিয়ের ব্যাপারে ইমরান ভাইকে বিশেষভাবে দায়িত্ব দিলেন যাতে তিনি চাচাকে সবসময় স্মরণ করিয়ে দেন। ইমরান ভাইকে তিনি আরও দায়িত্ব দিলেন আমার জন্য যেনো তিনি আমেরিকা বা অন্যখানেও উপযুক্ত পাত্রী দেখা অব্যাহত রাখেন।  চাচা কিংবা ইমরান ভাইয়ের মাধ্যমে নয়, বরং আল্লাহ আমার জুটি মিলিয়ে দিলেন অন্য সূত্রে। জুটি নির্বাচনে চাচার দেয়া মানদণ্ড সবসময় মাথায় ছিলো। ফলে মহান আল্লাহর কাছেই চেয়েছি আমার সবকিছুর সাথে মানানসই জীবনসঙ্গী। আমার প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে আল্লাহ আমার জীবনকে অপার করুণায় ভরে দিয়েছেন, চাওয়ার থেকে ঢের বেশী পেয়েছি, আলহামদু লিল্লাহ। বিয়ে করার বাতিক এক জিনিস আর বিয়ের আগে বিয়ের সাথে সম্পৃক্ত পাহাড়সম ঝামেলা আরেক জিনিস। বিয়ের বাতিক সামলানোর জন্য একজনই যথেষ্ট হতে পারে। কিন্তু বিয়ে সংক্রান্ত ঝক্কি-ঝামেলা পেরিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে দুটি প্রাণের একত্রে মিলিত হওয়ার মাহেদ্রক্ষণে উপনীত হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। বিয়ের বাতিকগ্রস্থ ব্যক্তি রাতদিন বিয়ের স্বপ্নে যতোই বিভোর থাকুক না কেনো, বৈবাহিক সম্পর্ককে বাস্তবে রূপ দিতে লাগে অভিভাবক, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন। নিউ ইয়র্কে অবস্থানকালে এসবের কিছুই ছিলোনা আমার আশেপাশে। আমি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলাম। কিন্তু আসলে কি করতে হবে, বিয়ের জন্য কি লাগবে, কিভাবে কি করবো কিছুই জানিনা। একদিকে নতুন আবেগ ও আবেশের বাধভাঙ্গা জোয়ার আর গভীর স্বপ্নের তন্ময়তা, অপরদিকে বিশাল প্রক্রিয়ার পাহাড়। চোখে সরষে ফুল দেখার মতো। 

     আমার বিয়ের ব্যাপারে দুহাত বাড়িয়ে এগিয়ে এলেন ববী আপা ও ইমরান ভাই, এগিয়ে এলো শিবলী-ফেন্সী, এগিয়ে এলেন কাওসার ভাই ও তার স্ত্রী মারিসিয়া সহ আরও অনেকে। তারা আমার আপন অভিভাবক ও আপন পরিবার হয়ে আমার বিয়ের ব্যাপারে যাবতীয় দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন। পাত্রীপক্ষের সাথে যাবতীয় বিষয়ে কথা-বার্তা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে বিভিন্ন তারিখ নির্ধারণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরু দায়িত্বটি নিলেন ইমরান ভাই ও শিবলী। কি কি কেনাকাটা করতে হবে, দেশ থেকে বা অন্য কোথাও হতে কি আনতে হবে সেসব দায়িত্ব নিলেন ববী আপা ও ফেন্সী। কাওসার ভাইও বিভিন্ন ব্যাপারে পরামর্শ, সহযোগিতা ও সমন্বয়ের দায়িত্ব নিলেন, বিশেষ করে আমার মতামতের ভিত্তিতে আমার পক্ষ থেকে কাদেরকে নিমন্ত্রণ জানাতে হবে সে দায়িত্ব তিনি পালন করলেন। 

     ইমরান ভাইয়ের মাথায় এক নতুন আইডিয়া। হান্নান চাচা পড়াবেন আমার বিয়ে। হান্নান চাচার সাথে আলাপ করে উনি কবে দেশ থেকে আমেরিকায় আসতে পারবেন এমন সময় জেনে বিয়ের তারিখ নির্ধারিত করলেন পাত্রী পক্ষের সাথে। চাচা আমেরিকায় এলেন, ইমরান ভাইয়ের বাসায় উঠলেন। বিয়ের দিন তারিখ প্রায় এগিয়ে আসছে। আমার ভিতর ভয় ও ভাবাবেগের মিশ্র অনুভূতি। চাচার সাথে দেখা করে দোয়া, অভয় ও পরামর্শ নিয়ে এলাম। পাত্রীপক্ষ হান্নান চাচাকে তখন এতো চিনতেন না। আর আমরা যে উনাকে এতো শ্রদ্ধা করি তাও তারা জানতেন না। উনাদের দৃষ্টিতে প্রথা অনুযায়ী মেয়ে পক্ষই বিয়ে পড়ানোর জন্য ইমাম নির্ধারণ ও ব্যবস্থা করে থাকে। সে প্রথা অনুযায়ী উনারা আকদ অনুষ্ঠানের জন্য উনাদের পছন্দের এক ইমাম নির্ধারণ করেছেন এবং অনুষ্ঠানের স্থান হিসেবে ঐ ইমামের মসজিদের হলরুম নির্ধারণ করেছেন। আমাদের পক্ষ থেকে হান্নান চাচা বিয়ে পড়াবেন প্রস্তাব দিলে পাত্রী পক্ষ বিব্রতবোধ করলেন এবং নারাজ হয়ে গেলেন। চাচাকে জানানো হলো সার্বিক পরিস্থিতি। উনি বললেন, এই মুহূর্তে তোমরা কোনো ঝামেলায় যাবে না। সবকিছু যদি ঠিক থাকে তাহলে যেভাবে বিয়ে সহজে সম্পন্ন হতে পারে সেভাবেই তোমরা মেনে নাও। আমি শুধু তোমাদের সাথে বিয়েতে উপস্থিত থাকলেই তো তোমাদের চলবে। বেশী কিছু চেয়োনা। চাচা এলেন আমার আকদের অনুষ্ঠানে। আমি সহ আমাদের সবাই সবকিছু বাদ দিয়ে বৃত্তাকারে চাচাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছি। পাত্রীপক্ষ আমাদের কাছে চাচার অবস্থানটা বুঝতে পারলেন। তারা নিজেদের মতামত পাল্টিয়ে প্রস্তাব দিলেন যে চাচাই বিয়ে পড়াবেন আর ইমাম সাহেব মুনাজাত করবেন। চাচা সরাসরি মধ্যস্থতা করে সিদ্ধান্ত দিলেন যে উনি শুধু কিছু কথা বলবেন আর ইমাম সাহেবই বিয়ে পড়াবেন এবং মুনাজাত করবেন। মাত্র দশ মিনিট সময় নিয়ে চাচা আমাকে নসিহত করে এবং সবার উদ্দেশ্যে পরিবার ও পারিবারিক বন্ধনের গুরুত্ব সম্পর্কে কুরআন হাদীসের আলোকে ইসলামের বক্তব্য ব্যাখ্যা করে আমাদের বিয়ের খুতবাহ পেশ করে আমার দাম্পত্য ও পারিবারিক জীবনের ভিত্তি গড়ে দিয়েছিলেন। 
(ইনশাআল্লাহ চলবে),
---------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ কলামিস্ট গ্রন্থপ্রনেতা, এটর্নি এট ল' টেক্সাস ইউএসএ এল এল এম, হার্ভার্ড ল স্কুল। 

Post a Comment

0 Comments