যে আশায় হেফাজত
উঠেছিল নৌকায়;
শেখ হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে কওমী ভাইদের ভূমিকা অনেক বেশি। তারা মনে করছিল যদি হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখা যায় তবে জামায়াতকে আমরা ফতুয়ার মেশিন দিয়ে দু চার যুগেও দমাতে পারেনি বরং দিন দিন তাদের উত্থান চোখে পড়ার মত,তাই জামায়াতের অগ্রযাত্রা ঠেঁকাতে ও তাদের নির্মূল করতে শেখ হাসিনা সরকারকেই ক্ষমতায় থাকা দরকার।
এই পরিকল্পনা ছিল তাদের বিশ্ব রাজনীতি ও সমসাময়িক জ্ঞানের দৈন্যতা এবং অতীতে শেখ হাসিনা কতৃত কওমী মাদরাসায় জঙ্গি আবিস্কারের নাটক,কওমী আলেম ওলামাকে উগ্র মৌলবাদি বলে বিশ্ব দরবারে চিত্রিত করার আওয়ামী সরকারের যে ভূমিকা সেই নিরেট সত্য অতীতকে কওমী সমাজ অস্বীকার করা বা উপেক্ষার নীতি গ্রহণ করা।
যা হোক,জামায়াত নির্মূলের এক বুক আশা নিয়ে এবং জামায়াতের জায়গায় নিজেদের অবস্হান গড়ার লক্ষ্যে আমাদের কওমী ভাইয়েরা অতীতকে বেমালুম ভুৃলে গিয়ে নৌকায় উঠে পড়ে এবং সরকারের সাথে তারা হাত মিলায়।সরকার তাদেরকে জামায়াতের বিকল্প হিসাবে মাঠে খেলার স্পেস তৈরি করে দেয়।
আল্লামা আহমাদ শফি সাহেব মারা যাবার পর হেফাজতের শীর্য পদে আনাস মাদানিগ্রুপ এবং চোরমোনই গ্রুপের হাতে যাবার পরিকল্পনা ও খসড়া সরকারের পক্ষ থেকে চুড়ান্ত করা হয়।
কিন্তু কওমী ছাত্র জনতার প্রবল চাপে সরকারের পরিকল্পনা যায় ভেস্তে। হেফাজত হয়ে যায় সরকাকের হাত ছাড়া।এহেন পরিস্তিতিতে সরকারের নীতি নিধারক মহলের সাথে ফরিদ মাসুদ,চোরমোনই পীর ও প্রধান মুরিদান হাবিবুর রহমান মেসবাহ,হাফিজুর রহমান কুয়াকাটাগং ও আনাস মাদানিগং সরকারের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে করণীয় ঠিক করে এবং একটি সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকে।
পূর্বপরিকল্পনা মাফিক বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ইস্যুতে মামুনুল হকে মাঠ গরম করার পরামর্শ দেন ফরিদ মাসুদ ও পীর চরমোনাই গ্রুপ।যেটা মামুনুল হক নিজেই স্বীকার করছেন এবং কোন বাছবিচার ছাড়ায় মুরুব্বীদের পরামর্শকে লুফে নিয়ে হেফাজত সংগনের কেন্দ্রীয় পরামর্শ ছাড়ায় মামুনুল হক মাঠ গরম করার কাজে দলবল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
নিজেকে বড় মাপের লিডার হিসাবে জাহির করার এই সুবর্ণ সুযোগকে তিনি হাত ছাড়া করতে চান নি।তার পিঠে মুরুব্বীর হাত নয়,এই হাত যে কুমিরের হাত পড়েছে এই কথা মামুনুল হক ঘুণাক্ষরেও স্বরণে নেন নি।মামুনুল হককে দিয়ে ফরিদ মাসুদ ও পীর চোরমোনই এর মাঠ গরম করার পরামর্শ একদিকে যেমন মামুনুৃল হকের সাথে বিশ্বাসের অমর্যদা, যেটাকে সহজ করে বললে বিশ্বাসঘাতকতা বলে-তেমনি অপরদিকে মামুনুৃল হকে জ্ঞানের বড় মাপের দৈন্যতাও ছিল বটে।
পরের নাটক মোদি বিরোধী আন্দোলন।সদ্য ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলন থেকে শিক্ষা না নিয়ে আবার মোদি নাটকে পা জড়িয়ে ফেলেন হেফাজত নেতারা।জামায়াত নির্মূলের স্বপ্নে যে নৌকার যাত্রী হলেন আজ সেই নৌকার মাঝি মাল্লারাই উত্তাল সাগরে ডুবিয়ে মারার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলেছে।
যে আশায় হেফাজত উঠেছিল নৌকায় সে আশার রং আজ তাদের সামনে অনেকটায় ফিকে হয়ে গেছে।এই দিনের জন্য কওমী ভাইয়েরা নিজের দায় এড়াতে পারে না।যাদেরকে তোমরা নির্মূল করার জন্য ইসলাম ও আলেম বিদ্ধেষী সরকারের সাথে হাত মিলিয়েছিলে, চেয়ে দেখ,আজ তারা তোমাদের বন্ধু,না শত্রু!!
---------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।
0 Comments