Recent Tube

প্রিয় যুবক ভাইয়েরা, "জ্ঞানের পুনর্জাগরণ সম্ভব " প্রফেসর ডঃ মেহমেদ গরমেজ।

 



 প্রিয় যুবক ভাইয়েরা, 
"জ্ঞানের পুনর্জাগরণ   সম্ভব " 

মুসলিম উম্মাহ আজ গাজালীদের অপেক্ষায়। মুসলিম উম্মাহ আজ ইবনে সিনাদের অপেক্ষায়। মুসলিম উম্মাহ আজ ফখরুদ্দীন রাজীদের অপেক্ষায়। আমাদের নিকট অতীতের আলেম ও দার্শনিক হলেন আল্লামা ইকবাল, আলিয়া ইজ্জেত বেগভিচ। আজ তােমাদেরকে তাদের শুন্যস্থানকে পূরণ করতে হবে।

সকল নবীগণই ছিলেন যুবকদের মধ্য থেকে। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) যখন নমরুদের প্রতিষ্ঠিত মেসােপটেমিয়ায় তাওহীদের সংগ্রাম' পরিচালনা করেন তখন তিনি একজন যুবক ছিলেন। কোরআনের দিকে যদি তাকাই তাহলে দেখতে পাই যে কোরআন বলেছে,

 قَالُوا سَمِعْنَا فَتًى يَذْكُرُهُمْ يُقَالُ لَهُ إِبْرَاهِيمُ

(কেউ কেউ) বললাে, "আমরা এক যুবককে এদের কথা বলতে শুনেছিলাম, তার নাম ইবরাহীম" (আম্বিয়া-৬০)।

এই যুবক ইব্রাহীম পৃথিবীকে শিরকের নাগপাশ থেকে মুক্ত করার জন্য একাই তাওহীদের এক মহাসংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। হাজার হাজার বছর পরে এসে মুহাম্মাদ  (সাঃ) বলেছিলেন, আমি আমার পিতা ইব্রাহীমের দোয়ার ফল।

হযরত ইসমাইল যখন তার পিতার সাথে এই সংগ্রামে শামিল হােন, তিনিও তখন একজন যুবক ছিলেন।

হযরত ইউসুফ (আঃ) পূর্বে কূপে নিক্ষিপ্ত হােন এবং যুবক বয়সে এসে মিশরের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হােন।

হযরত ঈসা, হযরত মূসা সহ সকল নবীগণ যুবক বয়সে নবুয়ত প্রাপ্ত হয়ে আল্লাহ প্রদত্ত্ব দায়িত্ত্বকে বাস্তবায়ন করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।

যুবকগণ যখন আমাদেরকে প্রশ্ন করেন যে, উত্তাজ আমরা কাকে দেখব? আমাদের সামনে তাে কোন রােল মডেল নাই। আমি মনে করি এই প্রশ্ন করার অধিকার তাদের রয়েছে।

আমি তাদেরকে এই প্রশ্নের জবাবে বলি, কোরআন খুলে দেখ, সেখানে উল্লেখিত নবীগনের সকলেই যুবকদের জন্য রাহবার (অনুকরনীয় ব্যক্তিত্ব)। আল্লাহর নবীদের চেয়ে কী আর কোন বড় রােল মডেল বা অনুকরনীয় আদর্শ হতে পারে?

মহাগ্রন্থ আল কোরআনে বলা হয়েছে,

فَبِهُدَاهُمُ اقْتَدِهْ

তুমিও তাদের পথে চল, তাদের অনুসরণ কর। (সুরা আনআম-৯০)।

নবীগণ শুধুমাত্র যুবক ছিলেন না, তারা তাদের সংগ্রামের জন্য, তাদের সঙ্গীদেরকেও যুবকদেরকে মধ্য থেকে নির্বাচিত করেছিলেন। সকল নবীদের প্রথম সারির সঙ্গী সাথী গণ ছিলেন যুবকদের মধ্য থেকে।

প্রিয় যুবক ভাইয়েরা,

বড় বড় সাহাবীদেরও সকলেই ছিলেন যুবকদের মধ্য থেকে। কিন্তু আজ বই-পুস্তক, উপন্যাস, গল্প এবং সিনেমার মাধ্যমে তাদেরকে বৃদ্ধ বলে আমাদের সামনে উপস্থাপণ করা হয়েছে। মক্কায় রাসূলে আকরাম (সঃ) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হল দারুল আরকাম। আপনারা কি জানেন কে এই আরকাম? যে তার ঘরকে আল্লাহর রাসুলের সাহাবীদের জন্য উম্মুক্ত করে দিয়েছিলেন? যেখানে বসে রাসূল (সঃ) তার সংগ্রামকে পরিচালনা করতেন। এই আরকাম তখন ছিলেন মাত্র ১৯ বছর বয়সী একজন যুবক।

রাসূলে আকরাম (সঃ) এর প্রথম প্রজন্মের সাহাবীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী বয়স্ক কে ছিলেন? হযরত আবু বকর (রাঃ)। হযরত আবু বকর (রাঃ) যখন ইসলাম গ্রহণ করেন তখন তিনি কত বছর বয়স্ক ছিলেন? তখন তার বয়স ছিল ৩৭ বছর! হযরত উমর (রাঃ) যখন ইসলাম গ্রহণ করেন তখন তার বয়স ছিল ৩০ বছর। হযরত উসমান (রাঃ) ৩৩ বছর বয়সী ছিলেন। হযরত আলী (রাঃ) মাত্র ৯ বছর বয়সী ছিলেন এবং তিনি যখন ইসলামের পতাকা হাতে নিয়ে জিহাদের ময়দানে এগিয়ে যান তখন তিনি ছিলেন ২০ বছর বয়সী।

হিজরতও সর্বপ্রথম শুরু করেন যুবকরা। হাবেশিস্তান এবং মদিনায় সর্বপ্রথম হিজরত করেন যুবকগণ। রাসূলে আকরাম (সঃ) বিভিন্ন অঞ্চলে গভর্নর প্রেরণ করেন, এই সকল গভর্নরদের সকলেই ছিলেন যুবক।

ইসলামী সভ্যতার মৌলিক বিষয়সমূহকে শিক্ষাদানকারী হাদীস সমূহের রাবী হযরত মুয়াজ ইবনে জাবালকে যখন ইয়েমেনের গভর্নর হিসেবে পাঠানাে হয় তখন তার বয়স ছিল ২১ বছর।

প্রিয় যুবক ভাইয়েরা,

এই জন্য তােমাদের জন্য সবচেয়ে বড় আদর্শ (রােল মডেল) হলেন নবীগণ, তাদের সাহাবীগণ এবং ইসলামী সভ্যতার মহান আলেমগণ।
--------------------------------- 
লেখকঃ 
প্রফেসর ডঃ মেহমেদ গরমেজ।
সম্পাদনায়,
নুরুল আহাদ। 

Post a Comment

0 Comments