ফেবু পাড়া গরম করতে মাদখালি শায়খদের বিস্ফোরক মন্তব্য পরিকল্পিত নাকি অন্য কিছু?
আহলে হাদিস তথা মাদখালি শায়খদের বিস্ফোরক মন্তব্য নিয়ে মাঝে মধ্যে ফেবু পাড়া গরম হয়। তাদের নিয়ে আমি আগে লিখেছি,এখন আর সেই আগ্রহ নেই,লিখিনাও তেমন।কেন?
আল্লামা সাঈদীর পরিবার নিয়ে মতিউর রহমান মাদানির বিস্ফোরক মন্তব্যের ভিডিও আপলোড দিয়ে অনেকেই লিখছেন।ভিডিওটি দেখার আগ্রহ হয়নি,দেখিওনি।
কারণ,তাদের বক্তব্য মুসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষে কোনদিনও যায়নি,যাবেও না।ইংরেজ বিতাড়ন আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন মাদখালিদের পক্ষ থেকে ফতুৃয়া জারি করা হল,ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হারাম।এটা নিয়ে আমার দলিল ভিত্তিক বেশ কিছু লিখা আছে।
যা হোক,কুরাবানী ঈদের আগে হটাৎ করেই তারা দুইটি বিষয় নিয়ে বাজার গরম করল।
এক.'সাত ভাগে কুরবানি হবে না।গরু খাওয়া জাহেলী।রাসুল(সা.)গরুর গোশত খেয়েছেন এরকম কোন হাদিস নেই।'
অথচ,রাসুল(সা.)গরু কুরবানী করেছেন,গোশত খেয়েছেন পরিবার নিয়ে।রাসুল(সা)ভাগে কুরবানী দিয়েছেন এর উপর শক্ত দলিল আছে।
দুই. 'গোমূত্র হালাল। এক বালতি গাভির প্রসাবে পোশাক আশাক ডুবিয়ে নিয়ে নামাজ পড়লে নামাজ হবে।কোন সমস্যা নেই।'
'গোমূত্র হালাল' এই কথা দিয়ে তারা কি বুঝাতে চায়? এই কথার দ্বারা তারা গোমূত্র খেতে মুসলিমদেরকে উদ্বৃদ্ধ করছে। যেহেতু গোমূত্র হালাল,পোশাক ডুবিয়ে নিলেও সমস্যা নেই,খেলেও সমস্যা নেই!বলবেন,তারা তো গোমূত্র খেতে বলেনি,হালাল বলেছে।এটা কি তাদের প্রতি অপবাদ হয়ে গেল না?
একটা উদাহারণ নিলে বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে।
"হযরত উমরের আমলে দু’জন লোকের মধ্যে গালিগালাজ হয়। একজন অন্য জনকে বলে, “আমার বাবাও যিনাকারী ছিল না, আমার মাও যিনাকারীনী ছিল না।” মামলাটি হযরত উমরের দরবারে পেশ হয়।
তিনি উপস্থিত লোকদেরকে জিজ্ঞেস করেন, আপনারা এ থেকে কি মনে করেন? কয়েকজন বলে, “সে নিজের বাবা-মার প্রশংসা করেছে।দ্বিতীয় ব্যক্তির বাবা-মা’র উপর আক্রমণ করেনি।”
আবার অন্য কয়েকজন বলে, “তার নিজের বাবা-মা’র প্রশংসা করার জন্য কি শুধু এ শব্দগুলোই রয়ে গিয়েছিল? এ বিশেষ শব্দগুলোকে এ সময় ব্যবহার করার পরিষ্কার অর্থ হচ্ছে, দ্বিতীয় ব্যক্তির বাবা-মা ব্যভিচারী ছিল।”
হযরত উমর (রাঃ) দ্বিতীয় দলটির সাথে একমত হন এবং ‘হদ’ জারি করেন। (জাস্সাস, ৩য় খণ্ড, ৩৩০ পৃষ্ঠা)
তাহলে বোঝা গেল দ্বিতীয় ব্যক্তির বাবা মাকে "ব্যবিচারী" অপবাদ দিতেই প্রথম ব্যক্তি তার বাবা মার প্রশংসা করেছিলেন।কিন্ত "ব্যবিচারী" কথাটি উহ্য ছিল।
'গোমূত্র হালাল, এখানে 'খাও' 'খাওয়া যাবে' 'খেলে সমস্যা নেই' ইত্যাদি কথাগুলো উহ্য রয়েছে।গরুর গেশত রাসুল(সা.) খাননি,'খাওয়া 'জাহেলি' 'সাত ভাগে রাসুল(সা.) কুরবানী দেননি'
ইত্যাদি কথা দিয়ে গরুর গোশত খেতে এবং কুরবানী দিতে পরোক্ষভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
গোমূত্র খাওয়া,গোমাতা রক্ষা করা এগুলো কাদের কাজ? ভারতের প্রধানমন্ত্রী দামাদর নরেন্দ্র মোদি ও তার অনুসারীদের কাজ এগুলো। তাহলে মতিউর রহমান তথা মাদখালি কথিত শায়খদের ফতুয়ার উৎস কি এবং কার স্বার্থে ফতুয়ার ডেলিভারি সেটাও কি বলে দিতে হবে?
---------------------------------
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।
0 Comments