Recent Tube

সিসির লাশের রাজনীতিঃ বলির পাঠা মুসলিম ব্রাদারহুড। আহমেদ ইশতিয়াক মাসুদ।





 




 
 সিসির লাশের রাজনীতিঃ 
বলির পাঠা মুসলিম ব্রাদাহুড।


    ক্ষমতায় টিকে থাকতে সিসি এখন লাশের রাজনীতি শুরু করেছে। পৃথিবীর সকল একনায়কের রূপ সম্ভবত এমনই। সিসির লাশের রাজনীতি বুঝতে হলে মিশরের অভ্যন্তরীণ কিছু ঘটনার দিকে নজর দিতে হবে। 

    মিশরের প্রধান নদী নীলনদ যার উপর মিশর সেই প্রাচীনকাল থেকেই নির্ভরশীল। আপনি যদি মিশরের এলাকাভিত্তিক জনসংখ্যার ঘনত্বের চিত্র দেখেন তাহলে লক্ষ্য করবেন মিশরের প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ নীলনদের উপর নির্ভরশীল এবং এই নদীর তীর ঘেষে বসবাস করে। প্রতি বছর মিশরে নীলনদের ৫৫ মিলিয়ন কিউবিক লিটার পানি প্রয়োজন হয়। মিশর মূলত নীলনদের ভাটিতে অবস্থিত এবং দেশটিতে নীলনদের পানি প্রবেশ করে ইথিওপিয়ার মধ্য দিয়ে। 

     কিন্তু ২০১১ সালে ইথিওপিয়া তাদের দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও রপ্তানির জন্য নীলনদে বাধ তৈরির কাজ শুরু করে যা গ্রেট রেনেসান্স ড্যাম বা মিলেনিয়াম ড্যাম নামে পরিচিত। এই বাধ তৈরি করতে তারা ইতোমধ্যে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার বাজেট পাশ করেছে। 

    এই বাধের নির্মাণ কাজ শেষ হলে নীলনদের ভাটিতে থাকা সুদান ও মিশরে পানির সংকট দেখা দিবে ও বন্যার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। যেহেতু মিশরের জনগণ জীবনধারণ নীলনদের পানির উপর নির্ভরশীল তাই মিশর প্রথম থেকেই এই বাধের বিরোধীতা করে এসেছে। 

    এর ফলে মিশর ও সুদান বাধ তৈরির বিষয়টি জাতিসংঘে মীমাংসা করতে চাইলে ইথিওপিয়া জাতিসংঘে যেতে অস্বীকার করে। বাধ তৈরির ব্যাপারটা জাতিসংঘের আওতাধীন নয় এবং মিশর,সুদান ও ইথিওপিয়া এই তিনদেশ মিলে ব্যাপারটা সুরাহা করা উচিত বলে জাতিসংঘ বিবৃতি দেয়। ফলে বাধ তৈরি বন্ধ করতে মিশর আরব লীগের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু সেখানেও তারা ব্যর্থ হয়। জাতিসংঘ ও আরব লীগের পর তারা ইসরাইলের মধ্যস্থতাও কামনা করে কিন্তু ইসরাইল এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকে। 

    ফলে বাধ তৈরির ব্যাপারে মিশরের সিসি সরকারের উপর ক্রমাগত অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়তে থাকে। সিসি সরকার বেশ কয়েকবার ইথিওপিয়ায় সামরিক হামলা চালিয়ে বাধের নির্মাণ কাজ বন্ধের হুশিয়ারী দেয়। এরই মধ্যে মিশরের অভ্যন্তরে বাধ নির্মাণ বন্ধ বা নীলনদের পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ব্যর্থতার জন্য সিসির উপর চাপ বাড়তে থাকে। মিশরের আল আহরাম পত্রিকার সম্পাদক সিসির সমালোচনা করে সম্পাদকীয় ছাপালে পত্রিকার সম্পাদককে জেলে পুরে সিসি। 

     সিসি সরকার প্রথম থেকেই ব্যর্থতা পরিচয় দিয়ে আসলেও বাধ নির্মাণের ব্যাপারে চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ফলে জনগণের অবদমিত ক্ষোভ আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গালাবিয়া আপ্রাইজিং এর ফলে সিসি সরকার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও নিরাপত্তা জোরদার করে ও মিলিটারী অফিসার নিয়োগ দেয়,যা জনতার মনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এত ব্যর্থতা যখন সিসির খাতায় লিপিবদ্ধ হচ্ছে তখনই ব্যর্থতা আড়াল করতে ও জনগণের মনোযোগ ভিন্ন দিকে নিবদ্ধ করতে সিসি ঘটা করে মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যদেরকে ফাসিতে ঝুলাচ্ছে। 

    এভাবেই লাশের রাজনীতি করে মরণকামড় দিয়ে জনগণের উপর টিকে থাকতে চাচ্ছে জালেম ফ্যাসিস্ট সিসি সরকার আর এর বলির পাঠা হচ্ছে মুসলিম ব্রাদারহুড।
--------------------------------- 
লেখকঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 
.

Post a Comment

0 Comments