Recent Tube

বন্ধ্যা ব্যক্তির জন্য কি বিয়ে করা জায়েজ? খাসি হওয়ার বিধান কি? আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।


প্রশ্ন: বন্ধ্যা ব্যক্তির জন্য কি বিয়ে করা জায়েজ?  
খাসি হওয়ার বিধান কি?
________◢◯◣________

উত্তর:
কেউ যদি নিজের সম্পর্কে জানতে পারে যে সে বন্ধ্যা, তারপরেও সে বিয়ে করতে পারবে। তবে শর্ত হল, যদি সে স্ত্রীর ভরণপোষণ এবং জৈবিক চাহিদা পূরণে সামর্থ্যবান হয়। অন্যথায় বিয়ে করা বৈধ নয়। কেননা   রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ، مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ، وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ؛ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ.
“হে যুব সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যার সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কেননা বিয়ে চোখকে নিচু রাখতে এবং লজ্জা স্থানকে সংযত করতে সব চেয়ে বেশি সহায়ক। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম (রোজা) পালন করে। কেননা তা প্রবৃত্তিকে দমন করে।” [বুখারী ১৯০৫, ৫০৬৫ ও মুসলিম ১৪০০]

বন্ধ্যত্ব দূর করার জন্য যথাসাধ্য অভিজ্ঞ ডাক্তারের নিকট চিকিৎসা করার পাশাপাশি আল্লাহর নিকট দুয়া ও কান্নাকাটি করতে হবে। আল্লাহর রহমত থেকে হতাশ হওয়া যাবে না। কারণ জীবনের একটা সুদীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও মহান আল্লাহ মানুষকে সন্তান দান করেছেন-এর বহু নজির আছে।
 
মহান আল্লাহ সম্মানিত রসূল ইবরাহীম আলাইস সালাম কে বহু বছর বন্ধ্যত্ব কাটানোর পর বৃদ্ধ বয়সে তাঁর স্ত্রীর সারা আ. এর গর্ভে ইসহাক আ. কে দান করেছিলেন।
মনে রাখতে হবে, আল্লাহ তাআলা যাকে ইচ্ছে সন্তান দান করেন আর যাকে ইচ্ছা  বন্ধ্যা করেন। এটা সম্পূর্ণ আল্লাহর এখতিয়ার ভুক্ত বিষয়। আল্লাহ তা'আলা বলেন:
لِّلَّـهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ ۚ يَهَبُ لِمَن يَشَاءُ إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَن يَشَاءُ الذُّكُورَ أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَاثًا ۖ وَيَجْعَلُ مَن يَشَاءُ عَقِيمًا ۚ إِنَّهُ عَلِيمٌ قَدِيرٌ 
“নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’আলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন। যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল।” (সূরা শূরা: ৪৯ ও ৫০)

সুতরাং বিয়ের পর আল্লাহর রহমত থেকে হতাশ না হয়ে যথাসম্ভব চিকিৎসা গ্রহণের পাশাপাশি আল্লাহর নিকট দুআ করতে হবে। দয়াময় আল্লাহ ইচ্ছা করলে অবশ্যই সন্তান দানের মাধ্যমে তাদের প্রত্যাশা পূরণ করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরম প্রজ্ঞাবান ক্ষমতাশীল।

প্রশ্ন: খাসি হওয়া কি জায়েজ?

উত্তর:
প্রথমে আমরা জানব, খাসি করা বলতে কী বুঝায়?

সহজ কথায়, পুরুষের অণ্ডকোষে অস্ত্রোপচার করে অথবা মেডিসিন বা কেমিক্যাল প্রয়োগের মাধ্যমে তার যৌন ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত করাকে খাসি করা বলা হয়। 

পূর্ব যুগে বিভিন্ন দেশে ধর্ষণ এবং বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি হিসেবে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির অথবা দাস যেন তার মহিলা মনিবের প্রতি যৌন বাসনা অনুভব করতে না পারে সে উদ্দেশ্যে বা আরও বিভিন্ন উদ্দেশ্যে তাদের যৌন ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হতো। 
আবার কিছু মানুষ হয়তো বিশেষ কারণে যেন নারীর প্রতি আকর্ষণ অনুভব না করে সে উদ্দেশ্যে স্বেচ্ছায় এমনটি করত। 

ইসলামের দৃষ্টিতে এটি নিষিদ্ধ কাজ।

খাসি হওয়া জায়েজ নয়। কেননা এ মর্মে হাদিসে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। যেমন:
حديث عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: كُنَّا نَغْزُو مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَلَيْسَ مَعَنَا نِسَاءٌ، فَقُلْنَا: أَلاَ نَخْتَصِي فَنَهَانَا عَنْ ذَلِكَ،
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে যুদ্ধে বের হতাম। তখন আমাদের সাথে স্ত্রীগণ থাকত না। বিধায় আমরা একবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম: আমরা কি খাসি হয়ে যাব না? 
তখন তিনি আমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করেছেন। (বুখারী পর্ব ৬৫/৫ হা/৬১৫, মুসলিম পর্ব ১৬/২, হাঃ ১৪০৪)
আল্লাহু আলাম
________◢◣________
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।
#abdullahilhadi

Post a Comment

0 Comments