Recent Tube

জালিমদের পতন ঘটানো ও মজলুমদের ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করা আল্লাহর রীতিঃ মুহাম্মদ তানজিল ইসলাম।




জালিমদের পতন ঘটানো ও মজলুমদের ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করা আল্লাহর রীতিঃ
----------------------------

আল্লাহ তা'য়ালা বলেন, 
أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَأْتِكُمْ مَثَلُ الَّذِينَ خَلَوْا مِنْ قَبْلِكُمْ ۖ مَسَّتْهُمُ الْبَأْسَاءُ وَالضَّرَّاءُ وَزُلْزِلُوا حَتَّىٰ يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ مَتَىٰ نَصْرُ اللَّهِ ۗ أَلَا إِنَّ نَصْرَ اللَّهِ قَرِيبٌ.
তোমরা কি ভেবেছ যে, এমনি এমনি জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ এখনো তোমাদের নিকট তাদের মত কিছু আসেনি, যারা তোমাদের পূর্বে বিগত হয়েছে। তাদেরকে (জালিম কর্তৃক) স্পর্শ করেছিল দুঃখ-কষ্ট ও নির্যাতন-দুর্দশা এবং তারা (জালিমদের জুলুম নির্যাতনের ভয়ে) কম্পিত হয়েছিল। এমনকি রাসূল ও তার সাথি মুমিনগণ বলছিল, ‘কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে? জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী। (সূরা বাকারাঃ ০২/২১৪)

  এ আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের জন্য পরিশ্রম ও মেহনত ব্যতীত এবং বিপদ-আপদে পতিত হওয়া ছাড়া কেউই জান্নাত লাভ করতে পারবে না। এ থেকে আরো বোঝা যায় যে, আল্লাহ তা'য়ালার রীতি হল, জালিমদের জুলুম যখন সীমালঙ্ঘন করে তখন মুমিনদের উপর তাঁর সাহায্য নেমে আসে। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা'য়ালা জালিমদের পতন ঘটান এবং মজলুমদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দান করেন। ইতিহাস থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। 

 ০১. হযরত নূহ (আঃ) সাড়ে নয়শত বছর দ্বীনের দাওয়াত দেন। কিন্তু হাতেগোণা কয়েকজন ব্যক্তি ছাড়া তাঁর কওমের সবাই তাঁকে প্রত্যাখ্যান করে এবং জালিমরা তাকে সহ তাঁর অনুসারীদের উপর জুলুম, নির্যাতন, অন্যায়, অত্যাচার করে ফলে আল্লাহর গযবে তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। আল্লাহ তা'য়ালা নূহ (আঃ) ও তাঁর অনুসারীদের খিলাফত দান করেন। আল্লাহ ভাষায়-
فَنَجَّيْنَاهُ وَمَنْ مَعَهُ فِي الْفُلْكِ وَجَعَلْنَاهُمْ خَلَائِفَ وَأَغْرَقْنَا الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا ۖ فَانْظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُنْذَرِينَ.
আমি তাকে ও নৌকাতে যারা তার সাথে ছিল তাদেরকে নাজাত দিলাম এবং আমি তাদের খিলাফাত দান করে ছিলাম। (সূরা ইউনুসঃ ১০/৭৩)

 ০২. হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর উপরেও জালিম শাসক নমরুদ জুলুম নির্যাতন করে, তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে তাকে দেশ ছাড়া করে। আল্লাহ তা'য়ালা জালিমদের পতন ঘটান এবং ইবরাহীম (আঃ) কে বিশ্বমানবতার নেতৃত্বের পদে অধিষ্ঠিত করেন আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ
إِنِّي جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ إِمَامًا.
‘আমি তোমাকে মানুষের জন্য নেতা বানাব’। (সূরা বাকারাঃ ২/২৪) আল্লামা ইবনে কাসীর রাহঃ বলেন, আল্লাহ তা'য়ালা হযরত ইবরাহীম (আ) কে উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে তাকাতে বলেন এবং এ সুসংবাদ দেন যে, এই সমুদয় স্থান তোমাকে ও তোমার উত্তরসূরীদের দান করব। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১/৩৪৭)

  ০৩. যুলায়খার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে হযরত ইউসুফ (আঃ) কারাবন্দী হন। অন্যূন সাত বছর জেল খাটার পর বাদশাহর এক স্বপ্নের ব্যাখ্যা দানের পুরস্কার স্বরূপ তাঁর মুক্তি হয়। কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে এসে বাদশাহর সাথে কথোপকথনের এক পর্যায়ে বাদশাহ যখন দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় দক্ষ ও বিশ্বস্ত লোক কোথায় পাবেন বলে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করছিলেন, তখন ইউসুফ (আঃ) নিজেকে এজন্য পেশ করেন। আল্লাহর ভাষায়- 
ﻗَﺎﻝَ ﺍﺟْﻌَﻠْﻨِﻲْ ﻋَﻠَﻰ ﺧَﺰَﺁﺋِﻦِ ﺍﻷَﺭْﺽِ ﺇِﻧِّﻲْ ﺣَﻔِﻴْﻆٌ ﻋَﻠِﻴْﻢٌ -
ইউসুফ বলল, আপনি আমাকে দেশের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে নিয়োজিত করুন। আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও (এ বিষয়ে) বিজ্ঞ’ (ইউসুফ ১২/৫৫)। 
তিনি অব্যাহতভাবে বাদশাহকে ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেন। তার অবিরাম দাওয়াত ও প্রচেষ্টার ফলে শেষ পর্যন্ত বাদশাহও মুসলিম হয়ে যান। (তাবারী; কুরতুবী; ইবন কাসীর) এই সময় বাদশাহ তাঁকে কেবল খাদ্য মন্ত্রণালয় তথা অর্থমন্ত্রী নয়, বরং পুরা মিসরের শাসন ক্ষমতা অর্পণ করেন এবং বলেন, আমি আপনার চাইতে বড় নই, কেবল সিংহাসন ব্যতীত’। ইবনু ইসহাকের বর্ণনা মতে এ সময় বাদশাহ তাঁর হাতে মুসলমান হন। একথাও বলা হয়েছে যে, এই সময় ‘আযীযে মিসর’ ক্বিৎফীর মারা যান। ফলে ইউসুফকে উক্ত পদে বসানো হয় এবং তার বিধবা স্ত্রী যুলায়খাকে বাদশাহ ইউসুফের সাথে বিবাহ দেন। (আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ ১/১৯৬-১৯৭) 
এভাবে আল্লাহর ইচ্ছায় ইউসুফ (আঃ) মিসরের সর্বোচ্চ পদে সসম্মানে বরিত হলেন এবং অন্ধকূপে হারিয়ে যাওয়া ইউসুফ পুনরায় দীপ্ত সূর্যের ন্যায় পৃথিবীতে বিকশিত হয়ে উঠলেন। আল্লাহ বলেন, 
ﻭَﻛَﺬَﻟِﻚَ ﻣَﻜَّﻨَّﺎ ﻟِﻴُﻮﺳُﻒَ ﻓِﻲ ﺍﻷَﺭْﺽِ ﻳَﺘَﺒَﻮَّﺃُ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﺣَﻴْﺚُ ﻳَﺸَﺂﺀُ ﻧُﺼِﻴْﺐُ ﺑِﺮَﺣْﻤَﺘِﻨَﺎ ﻣَﻦْ ﻧَﺸَﺂﺀُ ﻭَﻻَ ﻧُﻀِﻴﻊُ ﺃَﺟْﺮَ ﺍﻟْﻤُﺤْﺴِﻨِﻴْﻦَ -
এমনিভাবে আমি ইউসুফকে সেদেশে (রাষ্ট্রীয়ভাবে) প্রতিষ্ঠা করি। সে তথায় যেখানে ইচ্ছা স্থান করে নিতে পারত। আমি আমাদের রহমত যাকে ইচ্ছা তাকে পৌঁছে দিয়ে থাকি এবং আমি সৎকর্মশীলদের প্রতিদান বিনষ্ট করি না’ (ইউসুফ ১২/৫৬)। 

 ০৪. ফিরআউনের অত্যাচারে অতুষ্ট হয়ে বনী ইসরাঈলরা হযরত মূসা (আ) কে বলেছিল أُوذِينَا مِنْ قَبْلِ أَنْ تَأْتِيَنَا وَمِنْ بَعْدِ مَا جِئْتَنَا 'তুমি আমাদের নিকট আসার পূর্বে আমরা নির্যাতিত হয়েছি এবং তুমি আসার পরেও'। জবাবে মূসা (আ) বলেছিলেন قَالَ عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَنْ يُهْلِكَ عَدُوَّكُمْ وَيَسْتَخْلِفَكُمْ فِي الْأَرْضِ. 'অচিরেই তোমাদের রব তোমাদের শত্রুকে ধ্বংস করবেন এবং জমিনে তোমাদেরকে খিলাফাত প্রদান করবেন'। (সূরা আ'রাফঃ৭/১২৯) আল্লাহ তা'য়ালা বলেনঃ
ﺇِﻥَّ ﻓِﺮْﻋَﻮْﻥَ ﻋَﻠَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﻭَﺟَﻌَﻞَ ﺃَﻫْﻠَﻬَﺎ ﺷِﻴَﻌًﺎ ﻳَﺴْﺘَﻀْﻌِﻒُ ﻃَﺎﺋِﻔَﺔً ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻳُﺬَﺑِّﺢُ ﺃَﺑْﻨَﺎﺀَﻫُﻢْ ﻭَﻳَﺴْﺘَﺤْﻴِﻲ ﻧِﺴَﺎﺀَﻫُﻢْ ۚ ﺇِﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﻔْﺴِﺪِﻳﻦَ . ﻭَﻧُﺮِﻳﺪُ ﺃَﻥْ ﻧَﻤُﻦَّ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺍﺳْﺘُﻀْﻌِﻔُﻮﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﻭَﻧَﺠْﻌَﻠَﻬُﻢْ ﺃَﺋِﻤَّﺔً ﻭَﻧَﺠْﻌَﻠَﻬُﻢُ ﺍﻟْﻮَﺍﺭِﺛِﻴﻦَ . ﻭَﻧُﻤَﻜِّﻦَ ﻟَﻬُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﻭَﻧُﺮِﻱَ ﻓِﺮْﻋَﻮْﻥَ ﻭَﻫَﺎﻣَﺎﻥَ ﻭَﺟُﻨُﻮﺩَﻫُﻤَﺎ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻣَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳَﺤْﺬَﺭُﻭﻥ.
নিশ্চয় ফির‘আউন (মিশর) দেশে স্বৈরাচারী হয়েছিল এবং তার অধিবাসীকে নানা দলে বিভক্ত করেছিল। তাদের একদলকে সে দুর্বল করে রেখেছিল, যাদের পুত্রদেরকে সে হত্যা করত আর কন্যাদেরকে বাঁচিয়ে রাখত। নিশ্চয় সে ছিল বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অন্যতম। আর আমি চাইলাম সেই দেশে যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল তাদের (বানী ইসলাঈলদের) প্রতি অনুগ্রহ করতে এবং তাদেরকে নেতৃত্ব প্রদান করতে, আর তাদেরকে উত্তরাধিকারী বানাতে। আর জমিনে তাদেরকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে এবং ফিরআউন, হামান ও তাদের সৈন্যদেরকে দেখিয়ে দিতে, যা তারা তাদের কাছ থেকে আশঙ্কা করছিল। (সূরা কাসাসঃ ২৮/৪-৬) ৩. আল্লাহ তা'য়ালা আরো বলেনঃ وَلَقَدْ بَوَّأْنَا بَنِي إِسْرَائِيلَ مُبَوَّأَ صِدْقٍ وَرَزَقْنَاهُمْ مِنَ الطَّيِّبَاتِ. আর অবশ্যই আমি বনী ইসরাঈলকে উত্তম বাসভূমিতে আবাস দিলাম এবং তাদেরকে উত্তম রিযিক দিলাম। (সূরা ইউনুসঃ১০)

 আল্লাহ তা'য়ালা আরো বলেনঃ
 وَأَوْرَثْنَا الْقَوْمَ الَّذِينَ كَانُوا يُسْتَضْعَفُونَ مَشَارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا ۖ وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ الْحُسْنَىٰ عَلَىٰ بَنِي إِسْرَائِيلَ بِمَا صَبَرُوا.
আর যে জাতিকে (মজলুম) দুর্বল মনে করা হত আমি তাদেরকে জমিনের পূর্ব ও তার পশ্চিমের উত্তরাধিকারী বানালাম, যেখানে আমি বরকত দিয়েছি এবং বনী ইসরাঈলের উপর তোমার রবের উত্তম বাণী পরিপূর্ণ হল। কারণ তারা ধৈর্য ধারণ করেছে। (সূরা আ'রাফঃ ৭/১৩৭) জমিন বলতে এক্ষেত্রে অধিকাংশ মুফাসসিরীনের মতে শাম বা সিরিয়া ও মিশর ভূমিকেই উদ্দেশ্য করা হয়েছে- যাতে আল্লাহ তা'আলা বনী-ইসরাঈলকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন এবং শাসনক্ষমতা দান করেছিলেন। (তাফসীরে ইবন কাসীর; তাফসীরে সা’দী)

 ০৫. হযরত ঈসা (আঃ) ও তাঁর অনুসারীদের উপরও সে সময়ের জালিম শাসক নির্মমভাবে জুলুম নির্যাতন করে। এমনকি তাকে হত্যা করারও চেষ্টা করে, কিন্তু তারা তাকে হত্যা করতে পারেনি। (নিসাঃ ৪/১৫৭) বরং তার মত কাউকে তারা হত্যা করেছিল। আর তাকে উঠিয়ে নেওয়া হয়। দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুসলিম উম্মাহকে হেফাজত করার জন্য এবং সমগ্র পৃথিবীতে ইসলামী রাজত্ব কায়েম করার জন্য মহান আল্লাহ তা'য়ালা হযরত ঈসা (আ) কে পৃথিবীতে পাঠাবেন। (সহীহ বুখারী হাঃ ২২২২, ৩৪৪৮; সহীহ মুসলিম হাঃ ২৯৩৭; তিরমিযী হাঃ ২২৪০, ৪০০১; আবূ দাউদ হাঃ ৪৩২১; ইবনে মাজাহ হাঃ ৪০৭৫; আহমদ হাঃ ৭৬৮৩, ১৭১৭৭) 
প্রায় সকল বড় বড় নবীই হিজরত করেছেন। পৃথিবী থেকে আসমানে উঠিয়ে নেওয়া, অতঃপর পুনরায় পৃথিবীতে ফিরিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক মৃত্যু দান করা- এটা ঈসা (আঃ)-এর জন্য এক ধরনের হিজরত। পার্থক্য এই যে, অন্যান্য নবীগণ দুনিয়াতেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে হিজরত করেছেন। পক্ষান্তরে ঈসা (আঃ) দুনিয়া থেকে আসমানে হিজরত করেছেন। অতঃপর আসমান থেকে দুনিয়াতে ফিরে আসবেন। কিয়ামত প্রাক্কালে ইমাম মাহদী ও হযরত ঈসা (আ) এর নেতৃত্বে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক বিজয় সংঘটিত হবে এবং সারা পৃথিবী শান্তির রাজ্যে পরিণত হবে। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَيُوشِكَنَّ أَنْ يَنْزِلَ فِيكُمْ ابْنُ مَرْيَمَ حَكَمًا مُقْسِطًا فَيَكْسِرَ الصَّلِيبَ وَيَقْتُلَ الْخِنْزِيرَ وَيَضَعَ الْجِزْيَةَ وَيَفِيضَ الْمَالُ حَتَّى لاَ يَقْبَلَهُ أَحَدٌ 
শপথ সেই সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ। অচিরেই তোমাদের মাঝে ন্যায়পরায়ণ শাসকরূপে মারইয়ামের পুত্র ঈসা (আ.) অবতরণ করবেন। তারপর তিনি ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন, জিযিয়া কর রহিত করবেন এবং ধন-সম্পদের প্রাচুর্য হবে যে, কেউ তা গ্রহণ করবে না। (সহীহ বুখারী হাঃ ২২২২, ২৪৭৬, ৩৪৪৮; সহীহ মুসলিম হাঃ ১৫৫, ২৪৩; মুসনাদে আহমাদ হাঃ ৭৬৮৩)

 ০৬. রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর ঘটনা তো সবারই জানা। মক্কার নেতারা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর ইকামাতে দ্বীনের মিশনকে ঠেকানোর বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করে, অন্যায় অত্যাচারের পথ বেছে নেয়। তাঁকে ও তাঁর সহযোগীদের দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়, এমনকি তাঁকে হত্যা করারও ষড়যন্ত্র করা হয়। আল্লাহ তা'য়ালা জালিমদের সকল ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করেন এবং জালিমদের পতন ঘটান। 

 ০৭. সাধারণ মানুষের এ রীতি প্রযোজ্য। পাকিস্তানিরা যখন বাঙালিদের উপর জুলুম করেছে, আল্লাহ তা'য়ালা তখন তাদের হটিয়ে মজলুম বাঙালিদের ক্ষমতায় বসান। বঙ্গবন্ধু তার পরিবার সহ নিহত হলে আল্লাহ এক পর্যায়ে তার মেয়েকে ক্ষমতায় বসান। তারপর আবার জিয়াউর রহমান নিহত হলে আল্লাহ তা'য়ালা তার স্ত্রীকে ক্ষমতায় বসান। এখন ক্ষমতায় আছেন শেখ হাসিনা। তিনি জালিমের ভূমিকা পালন করছেন আর মজলুম হলেন জামায়াতে ইসলাম ও ওলামায়ে কেরাম। কারণ তাদের অনেক নেতা মজলুম অবস্থায় নিহত হয়েছেন। অনেকে এখনো জালিমের জেলখানায় বন্দী আছে। এবার আ'লীগের পতন ও মজলুম সংগঠন জামায়াতের ক্ষমতায় যাবার পালা। আর হবেও তাই, ইনশাআল্লাহ।
------------ 
লেখক ঃ  ইসলামি চিন্তাবিদ প্রবন্ধ লেখক গ্রন্থপ্রণেতা ও দাঈ।

Post a Comment

0 Comments