৪র্থ রোজার তারাবীর সালাতে পবিত্র কোরআন থেকে যে অংশটুকু পড়া হবে।
৪র্থ রোজার তারাবীহ!
আজ মঙ্গলবার এশার নামাজের পর ৪র্থ রোজার তারাবীহ নামাজে পবিত্র কোরআন থেকে সর্বমোট দেড় পারা (পঞ্চম পারার শেষ অর্ধেকাংশ এবং ষষ্ঠ পারা সম্পুর্ন) তেলাওয়াত করা হবে।
এই দেড় পারা থেকে (সুরা নিসার ৮৮নং আয়াত থেকে সুরা মায়েদার ৮২নং আয়াত পর্যন্ত) সংক্ষেপে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:-
যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাক্রমে কোন মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। [ সুরা নিসা-৯৩ ]
গৃহে অবস্থানরত মুসলমান- যাদের কোন সঙ্গত ওযর নেই, এবং ঐ মুসলমান যারা জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জেহাদ করে, সমান নয়। যারা জান ও মাল দ্বারা জেহাদ করে- আল্লাহ তাদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন, গৃহে অবস্থানরতের তুলনায় এবং প্রত্যেকের সাথেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহেদীনকে গৃহে অবস্থানরতের উপর মহান প্রতিদানে শ্রেষ্ঠ করেছেন। [ সুরা নিসা-৯৫ ]
যে কেউ আল্লাহর পথে দেশত্যাগ করে, সে এর বিনিময়ে পৃথিবীতে বহু প্রশস্ত স্থান ও সচ্ছলতা প্রাপ্ত হবে। যে কেউ নিজ গৃহ থেকে বের হয় আল্লাহ ও রসূলের প্রতি হিজরত করার উদ্দেশ্যে, অতঃপর মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তবে তার সওয়াব আল্লাহর কাছে অবধারিত হয়ে যায়। আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। [ সুরা নিসা-১০০ ]
নিশ্চয় নামাজ মুমিনদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। [ সুরা নিসা-১০৩ ]
যে গুনাহ করে, কিংবা নিজের অনিষ্ট করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়। [ সুরা নিসা-১১০ ]
যে ভুল কিংবা গুনাহ করে, অতঃপর কোন নিরপরাধের উপর অপবাদ আরোপ করে, সে নিজের মাথায় বহন করে জঘন্য মিথ্যা ও প্রকাশ্য গুনাহ। [ সুরা নিসা-১১২ ]
নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়। [ সুরা নিসা-১১৬ ]
যে আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে পতিত হয়। [ সুরা নিসা-১১৯ ]
যে লোক পুরুষ হোক কিংবা নারী, কোন সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়, তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রাপ্য তিল পরিমাণও নষ্ট হবে না। [ সুরা নিসা-১২৪ ]
যা কিছু নভোমন্ডলে আছে এবং যা কিছু ভুমন্ডলে আছে, সব আল্লাহরই। সব বস্তু আল্লাহর মুষ্ঠি বলয়ে। [ সুরা নিসা-১২৬ ]
যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে, তবে পরস্পর আপোষ মীমাংসা করে নিলে তাতে তাদের উভয়ের কোন গুনাহ নাই। বস্তুত আপোষ মীমাংসাই উত্তম। [ সুরা নিসা-১২৮ ]
হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান কর; তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্নীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাঙ্খী তোমাদের চাইতে বেশী। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজকর্ম সম্পর্কেই অবগত। [ সুরা নিসা-১৩৫ ]
আর কোরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারি করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহ তা'আলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন। [ সুরা নিসা-১৪০ ]
আল্লাহ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ শ্রবণকারী, বিজ্ঞ। [ সুরা নিসা-১৪৮ ]
সৎকর্ম ও আল্লাহভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা কঠোর শাস্তিদাতা। [ সুরা মায়েদা-২ ]
আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম, এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। [ সুরা মায়েদা-৩ ]
তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী; এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে। যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর তাদেরকে স্ত্রী করার জন্যে। কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে কিংবা গুপ্ত প্রেমে লিপ্ত হওয়ার জন্যে নয়। [ সুরা মায়েদা-৫ ]
হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাযের জন্যে উঠ, তখন স্বীয় মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত কর এবং পদযুগল গিটসহ। যদি তোমরা অপবিত্র হও তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও এবং যদি তোমরা রুগ্ন হও, অথবা প্রবাসে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর, অতঃপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-অর্থাৎ, স্বীয় মুখ-মন্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না। কিন্তু তোমাদেরকে পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান-যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। [ সুরা মায়েদা-৬ ]
হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে অবিচল থাকবে এবং কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতার কারণে কখনও ন্যায়বিচার পরিত্যাগ করো না। সুবিচার কর এটাই খোদাভীতির অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে খুব জ্ঞাত। [ সুরা মায়েদা-৮ ]
আল্লাহকে ভয় কর এবং মুমিনদের আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত। [ সুরা মায়েদা-১১ ]
যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হলো তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা, আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি। [ সুরা মায়েদা-৩৩ ]
তোমরা মানুষকে ভয় করো না এবং আমাকে ভয় কর; এবং আমার আয়াত সমূহের বিনিময়ে স্বল্পমূল্যে গ্রহণ করো না। যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের। [ সুরা মায়েদা-৪৪ ]
যারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী। [ সুরা মায়েদা-৪৭ ]
তারা কি জাহেলিয়াত আমলের ফয়সালা কামনা করে? আল্লাহ অপেক্ষা বিশ্বাসীদের জন্যে উত্তম ফয়সালাকারী কে? [ সুরা মায়েদা-৫০ ]
হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। [ সুরা মায়েদা-৫১ ]
তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ, তাঁর রসূল এবং মুমিনবৃন্দ- যারা নামাজ কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং বিনম্র। [ সুরা মায়েদা-৫৫ ]
আর যারা আল্লাহ, তাঁর রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহর দল এবং তারাই বিজয়ী। [ সুরা মায়েদা-৫৬ ]
--------------
লেখক ঃ ইসলামিক আর্টিকেল লেখক কলামিস্ট, গবেষক, আইনজীবী ও অনলাইন এক্টিভিস্ট।
0 Comments